রুদ্রবীণা

রুদ্রবীণা (বা উত্তর ভারতে বীন নামে পরিচিত) একটি সুবৃহৎ টানটান তারের বাদ্যযন্ত্র যা হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীত এ ব্যবহৃত হয়। এটি ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের বীণা বাদ্যযন্ত্রের একটি প্রকরণ।

রুদ্রবীণা
তথ্যসমূহ
অন্য নামরুদ্র বীণা, বীন, বিন
শ্রেণিবিভাগ সরু টানটান তারের বাদ্যযন্ত্র
আরো নিবন্ধ
বীণা, সরস্বতী বীণা, বিচিত্র বীণা, চিত্র বীণা

উদ্ভব

পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী পার্বতী কর্তৃক অনুপ্রাণিত হয়ে শিব রুদ্রবীণা সৃষ্টি করেন। রুদ্র শিবের অপর নাম; রুদ্রবীণা বলতে ‘রুদ্রের বীণা’ বা ‘শিবের বীণা’ বোঝায়।

বীণা মহারাজ দত্তাত্রেয় রাম রাও পার্বতীকর(১৯১৬-১৯৯0) রুদ্রবীণা বাদন করছেন
বাহাউদ্দিন ডাগর দক্ষিণী ঘরানায় রুদ্রবীণা বাজাচ্ছেন

গঠন ও যন্ত্রাংশ

এতে ৫৪-৬২ ইঞ্চি দীর্ঘ কাঠ বা বাঁশ দ্বারা নির্মিত একটি নলাকার অংশ দণ্ডী থাকে। লাউ এর খোল থেকে নির্মিত দুটি ফাঁপা গোলাকার অনুনাদক তুম্বা নলাকার অংশটির নিচে দুদিকে যুক্ত করা হয়। মোমের সাহায্যে ২৪টি পিতল সংযুক্ত কাঠের আড়া নির্দিষ্ট দূরত্ব অনুযায়ী দণ্ডীর উপর বসানো হয়, যেগুলো ঘাট নামে পরিচিত। রুদ্রবীণার সাতটি তারের মধ্যে চারটি প্রধান তার এবং তিনটি চিকাই। বীণাতন্ত্রসমূহ ইস্পাতনির্মিত এবং ০.৪৫-০.৪৭ মিলিমিটার ব্যাসবিশিষ্ট। তারগুলো টানটান করে বেঁধে মিজরাবের সাহায্যে বাজানো হয় এবং তারের কম্পন গম্ভীর সুমিষ্ট ধ্বনি উৎপন্ন করে।[1]

ইতিহাস

রুদ্রবীণা একটি সুপ্রাচীন বাদ্যযন্ত্র যার ব্যবহার বর্তমানে প্রায় বিরল। উনিশ শতকের প্রথমভাগে লঘু ধ্রুপদরাগ (সংগীত) এর আলাপ সহজে উপস্থাপন করার জন্য সেতারবাদকগণ সুরবাহার নামক বীণাযন্ত্র ব্যবহার শুরু করলে রুদ্রবীণার জনপ্রিয়তা কমে আসে। বিশ শতকে উত্তর ভারতীয় সংগীতজ্ঞ জিয়া মহিউদ্দিন ডাগর রুদ্রবীণার গঠনে পরিবর্ধন ও পরিবর্তন আনেন, তিনি বড় তুম্বা, স্থূল দণ্ডী ও সরু তন্ত্র (তার) ব্যবহার করেন। বিশ্ববাসীর কাছে রুদ্রবীণার নবপরিচয়দানে ডাগর পরিবারের বিশেষ কৃতিত্ব রয়েছে। ওস্তাদ আসাদ আলী খান, ওস্তাদ শামসুদ্দীন ফরিদি দেসাই এবং ওস্তাদ বাহাউদ্দীন ডাগর রুদ্রবীণা বাজিয়ে খ্যাতিলাভ করেন। পরবর্তীকালে লালমনি মিশ্র যন্ত্রটির আরও সংস্কার করে ‘শ্রুতিবীণা’ গঠন করেন।[2]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.