রাশোমোন

রাশোমোন (জাপানি ভাষায়: 羅生門 রাশোওমোং) আকিরা কুরোসাওয়া পরিচালিত ১৯৫০ সালের জাপানি চলচ্চিত্র। এটি নির্মাণের জন্য কুরোসাওয়া বিখ্যাত চিত্রগ্রাহক কাজুও মিয়াগাওয়ার অনেক সহযোগিতা পেয়েছেন। রিউনোসুকে আকুতাগাওয়া রচিত দুটি গল্প অবলম্বনে এই ছবির কাহিনী তৈরি হয়েছে। রাশোমোন গল্পটি ছবির মূল সেটিং গঠন করেছে এবং চরিত্র ও কাহিনীর উপাদান সরবরাহ করেছে ইয়াবুনো নাকা (藪の中 য়াবুনো নাকা অর্থাৎ "বনের অন্তরে") গল্পটি। বলা হয়ে থাকে, রাশোমোন জাপানি চলচ্চিত্রকে পশ্চিমা দর্শকদের কাছে পরিচিত করে তুলেছে। একে বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা কীর্তির মর্যাদা দেয়া হয়।

羅生門
রাশোমোন
পরিচালকআকিরা কুরোসাওয়া
প্রযোজকমিনোরু জিঙ্গো
রচয়িতাআকিরা কুরোসাওয়া
শিনোবু হাশিমোতো
রিউনোসুকে আকুতাগাওয়া (ছোট গল্প)
সুরকারফুমিও হায়াসাকা
চিত্রগ্রাহককাজুও মিয়াগাওয়া
সম্পাদকআকিরা কুরোসাওয়া
পরিবেশকদাইএই (জাপান)
ক্রাইটিরিওন (রিজিওন ১ ডিভিডি)
বিএফআই (রিজিওন ২ ডিভিডি)
মুক্তিজাপান ২৫শে আগস্ট, ১৯৫০
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২৬শে ডিসেম্বর, ১৯৫১
দৈর্ঘ্য৮৮ মিনিট
দেশজাপান
ভাষাজাপানি

সিনেমাটি ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন লায়ন অর্জন করে এবং ২৫তম একাডেমি পুরস্কার অনুষ্ঠানে একাডেমি সম্মানসূচক পুরস্কার অর্জন করে। এই পুরস্কারটি সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র হিসেবে দেয়া হয়েছিল।

কাহিনীর সারাংশ

বনের মধ্য দিয়ে রাস্তা। এই রাস্তার পাশে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছিল কুখ্যাত ডাকাত তাজোমারু। পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো সস্ত্রীক এক সামুরাই। সামুরাইয়ের স্ত্রীকে দেখে তাজোমারু। সেখান থেকেই কাহিনীর সূচনা। খুন হয় সামুরাই। তাজোমারু বন্দী হয়। আদালতে স্বীকারোক্তি দেয় চারজন: তাজোমারু, ধর্মপ্রচারক যে খুনের আগে সামুরাই ও তার স্ত্রীকে দেখেছিল, কাঠুরে যে প্রথমে বিচারালয়ে সামুরাই মৃত্যুর খবর দেয়, সামুরাইয়ের স্ত্রী এবং তাজোমারুকে বন্দী করে যে আদালতে হাজির করেছিল সে। আদালতের পক্ষ থেকে মৃত সামুরাইয়ের আত্মার সাথে যোগাযোগ করা হয়। সাক্ষ্য দেয় মৃত সামুরাই। একেকজনের সাক্ষ্য একেক রকম। দর্শককেই বেছে নিতে হবে কে সত্য বলছে। এই নিয়েই রাশোমোন।

কাহিনী

সামুরাইয়ের মৃত্যু এবং তাজোমারু কর্তৃক তার স্ত্রীর ধর্ষণের ঘটনার সাক্ষী এবং প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে চারজনের নাম করা হয়েছে: ডাকাত তাজোমারু, নিহত সামুরাই, সামুরাইয়ের স্ত্রী এবং এক বেনামী কাঠুরে। বনের মধ্যে এক বিকেলে ঘটে যাওয়া একটিমাত্র ঘটনাকে এই চারজন চারভাবে বর্ণনা করেছে। তাদের ফ্ল্যাশব্যাকের মাধ্যমে ঘটনাগুলো দেখানো হয়েছে। কিন্তু, ফ্ল্যাশব্যাকের মধ্যে আবার ফ্ল্যাশব্যাক রয়েছে এই ছবিতে। কারণ প্রত্যক্ষদর্শীদের স্বীকারোক্তিগুলো আবার কাঠুরে এবং জনৈক ধর্মপ্রচারক বলেছে, এক স্থূলভাষী সাধারণ লোককে। অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়ছে। এক ফটকে বসে বৃষ্টি থামার জন্য অপেক্ষা করছে তিনজন: কাঠুরে, ধর্মপ্রচারক এবং সাধারণ লোকটি। সাধারণ লোকটি শ্রোতা, অন্য দুজন বক্তা। এভাবেই ফ্ল্যাশব্যাকের মধ্যে ফ্ল্যাশব্যাক। প্রথমে কথা বলে কাঠুরে, তারপর একে একে ধর্মপ্রচারক, তাজোমারু, সামুরাইয়ের স্ত্রী, মৃত সামুরাই এবং সবশেষে আবার কাঠুরে।

বেনামী কাঠুরে

বেনামী কাঠুরে প্রথমে স্থূলভাষী লোকটিকে বলা শুরু করে সে আদালতে কি সাক্ষ্য দিয়েছে। আদালতে সে বলেছে: তিন দিন আগে কাঠ কাটার জন্য বনমধ্যে বিচরণ করছিল। চলতে পথে একটি টুপি খুঁজে পায়, কিছুদূরে একটা দড়ি। সামান্য এগিয়েই এক সামুরাইয়ের লাশ দেখতে পেয়ে। সেখান থেকে দৌড় শুরু করে সে। উদ্দেশ্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে খুঁজে বের করে খুনের বিষয়টি জানানো।

ধর্মপ্রচারক

বৌদ্ধ ধর্মপ্রচারক (তাবি হোশি) দাবী করে তিন দিন আগে সে বনের মাঝ দিয়ে যাওয়া রাস্তা ধরে হাটছিল। উল্টো দিক থেকে এক সামুরাইকে আসতে দেখে। সামুরাই ঘোড়ার লাগাম ধরে হাটছিল, ঘোড়ার উপর বসে ছিল তার স্ত্রী। এই একই দিনে সামুরাই হত্যার ঘটনাটি ঘটে।

নিরাপত্তা রক্ষী

নিরাপত্তা রক্ষী নদীর পার ধরে হাটছিল। দূরে এক লোককে বালির মধ্যে শুয়ে কাতরাতে দেখে। কাছে গিয়ে দেখে সেটা তাজোমারু, পেটের পীড়ায় কাতরাচ্ছে। কুখ্যাত ডাকাত তাজোমারুকে বন্দী করে আদালতে নিয়ে আসে। সাথে তীর-ধনুকও ছিল। এই তীর-ধনুক সামুরাইয়ের কাছ থেকেই নেয়া। তার ধারণা ঘোড়ার পিঠ থেকে পড়ে গিয়েছিল তাজোমারু।

ডাকাত তাজোমারু

ঘোড়ার পিঠ থেকে পড়ে যাওয়ার কথা শুনে উত্তেজিত হয়ে উঠে সে। আসল কাহিনী বলা শুরু করে। মাঝে এক ঝর্ণা থেকে পানি খেয়েছিল। সেই পানি ছিল বিষাক্ত। এ কারণেই পেটের পীড়ায় কাতরাচ্ছিল। তারপর খুনের বিষয়ে বলতে শুরু করে। বিকেল বেলায় গাছের ছায়ায় বসে ঝিমুচ্ছিল সে। রাস্তা দিয়ে এক সামুরাই যাচ্ছিল, ঘোড়ার পিঠে তার স্ত্রী। এক ঝলক হাওয়ায় তার স্ত্রীর ঘোমটা উড়ে যায়। এই হাওয়ার কারণেই এতো কিছু হয়েছে। কারণ মুখ দেখে এই নারীকে পাওয়ার অদম্য বাসনায় পেয়ে বসে তাকে। মূল্যবান তরবারি কম দামে পাওয়ার লোভ দেখিয়ে সামুরাইকে পাহাড়ের উপর গহীন বনে নিয়ে যায়। সেখানে গাছের সাথে বাঁধে তাকে। তারপর সামুরাইয়ের স্ত্রীকে নিয়ে আসে। স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণ করে। ধর্ষিত হওয়ার পর মেয়েটি তাজোমারুকে তার স্বামীর সাথে দ্বন্দ্বযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে অনুরোধ করে। কারণ এক নারীর লজ্জা দু'জন পুরুষের কাছে প্রকাশিত হওয়ার চেয়ে মৃত্যু উত্তম। মেয়েটি বলে যুদ্ধে বিজয়ীর সাথে সে চলে যাবে। তাজোমারু সসম্মানে সামুরাইয়ের বন্ধন খুলে দেয়। দুজনেই বীরত্বের সাথে লড়ে যায়। তার কথা অনুসারে তারা ২১ বার তরবারি ঠেকিয়েছিল, তাজোমারুর সাথে এতো দৃঢ়তার সাথে আগে কেউ লড়তে পারেনি। পরিশেষে তাজোমারু জয়ী হয় ও সামুরাইকে খুন করে, কিন্তু এর মধ্যে সামুরাইয়ের স্ত্রী পালিয়ে যায়। কথার শেষে তাকে সামুরাইয়ের স্ত্রী'র একটি দামী ড্যাগারের কথা জিজ্ঞেস করা হলে সে বলে: এতো বিশৃঙ্খলার মধ্যে ড্যাগারের কথা সে ভুলে গিয়েছিল। এতো দামী একটা জিনিস ফেলে আসাটা তার সবচেয়ে বড় বোকামি হয়েছে বলে উল্লেখ করে।

সামুরাইয়ের স্ত্রী

এই মেয়েটি আদালতে বলে, ধর্ষণের পর তাকে ক্রন্দনরত অবস্থায় রেখে তাজোমারু চলে যায়। সে কাঁদতে কাঁদতে তার স্বামীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। কিন্তু তার স্বামী শীতল এবং স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। সে স্বামীর বাঁধন খুলে দেয় এবং তাকে মেরে ফেলার জন্য স্বামীকে অনুরোধ করে। তারপরও সেই এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে সামুরাই, কোন ভাবান্তর নেই। বারবার অনুরোধ করতে থাকে তাকে মেরে ফেলার জন্য। এক পর্যায়ে নিজে ড্যাগার হাতে নিয়ে অবচেতন মনে স্বামীর দিকে ঝুঁকে পড়তে থাকে। চেতন ফিরে আসার পর দেখে তার স্বামীর বুকে ড্যাগার গেঁথে আছে। এরপর সে অনেকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে। একবার কাছের হ্রদে ডুবে মরারও চেষ্টা করে। সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়।

মৃত সামুরাই

একটি মাধ্যমের মাধ্যমে সামুরাই তার স্ত্রীর উপর ভর করে তার কথা জানায়। তাজোমারু তাকে বেঁধে রেখে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে। তারপর তার স্ত্রীকে তার সাথে চলে যাওয়ার অনুরোধ করে। তার স্ত্রী রাজি হয় এবং সামুরাইকে মেরে ফেলার অনুরোধ করে। কারণ দুজন পুরুষের কাছে নিজের লজ্জা প্রকাশ করার চেয়ে মৃত্যু উত্তম। এই অনুরোধ শুনে বিস্মিত তাজোমারু রেগে যায়। সে মেয়েটিকে পায়ের নিচে চেপে ধরে সামুরাইকে জিজ্ঞেস করে, মেয়েটিকে মেরে ফেলবে নাকি ছেড়ে দেবে। এই মুহূর্তে সিনেমার শট মৃত সামুরাইয়ের বর্তমানে ফিরে আসে। মৃত সামুরাই বলে, সে তাজোমারুর চেতনায় অভিভূত হয়ে তাকে প্রায় ক্ষমাই করে দিয়েছিল। যাহোক, এই অবস্থা থেকে মেয়েটি পালিয়ে যায় এবং তাজোমারু তাকে ধরার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। অবশেষে সে সামুরাইয়ের বাঁধন খুলে দিয়ে চলে যায়। সামুরাই নিজে তখন ড্যাগার বুকে ঢুকিয়ে আত্মহত্যা করা। ভূতটি পরে বলে, মৃত্যুর পর কেউ তার বুক থেকে ড্যাগার টেনে বের করেছিল। এই কথার পর দুইটি ফ্ল্যাশব্যাক ভেঙে সিনেমার দৃশ্য ফটকের বাড়িতে ফিরে আসে। কাঠুরে বিস্মিত হয় এই ভেবে যে, সামুরাই তরবারির আঘাতে নিহত হয়েছিল। কিন্তু সে বলছে ড্যাগার দিয়ে আত্মহত্যা করেছিল। ধর্মপ্রচারক বলে মৃতরা কখনও মিথ্যা বলতে পারে না।

আবার কাঠুরে

কাঠুরে সাধারণ লোক এবং ধর্মপ্রচারককে বলে, আদালতে দেয়া তার সাক্ষ্যটি মিথ্যা ছিল। সে বেশি জড়িত হয়ে যাওয়ার ভয়ে এই মিথ্যা বলেছে। এরপর স্বীকার করে, সে আসলে ধর্ষণ এবং খুন দুটোই সচক্ষে দেখেছে। সে বলে ধর্ষণের পর তাজোমারু হাটু গেড়ে বসে মেয়েটিকে তার স্ত্রী হওয়ার অনুরোধ করছিল। মেয়েটি বলে, এই সিদ্ধান্ত সে দিতে পারে না। সে নিজের স্বামীকে মুক্ত করে বুঝিয়ে দেয়, সামুরাই ও তাজোমারুকে লড়তে হবে; তাকে পাওয়ার জন্য। সামুরাই এই নিকৃষ্ট মেয়ের জন্য মরতে অস্বীকৃতি জানায় এবং বলে, স্ত্রী হারানোর থেকে তার কাছে ঘোড়া হারানোর কষ্ট অনেক বেশি। এ কথা শুনে তাজোমারু মেয়েটির প্রতি উৎসাহ হারিয়ে ফেলে এবং চলে যেতে উদ্যত হয়। মেয়েটি অঝোরে কাঁদতে থাকে। এক পর্যায়ে সামুরাই তাকে কান্না থামাতে বলে। তাজোমারু সামুরাইয়ের এই কথাকে অপুরুষোচিত বলে। সে আরও বলে, মেয়েরা দুর্বল এবং কান্না ছাড়া আর কিছু পারে না। এই পর্যায়ে মেয়েটি দুজনকেই ধিক্কার দিতে থাকে; সামুরাইকে নিজের স্ত্রীকে রক্ষা করতে না পারার জন্য এবং তাজোমারুকে নিজের ভালোবাসার গুরুত্ব না বোঝার জন্য। উস্কানিমূলক কথার মাধ্যমে সে দুজনের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধিয়ে দেয়। কিন্তু দুজনে ভয়ংকরভাবে লড়তে শুরু করার পর সে ভীত হয়ে নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হতে শুরু করে। তারা লড়ছিলো নিজেদের সম্মান রক্ষার জন্য, মেয়েটির প্রতি ভালোবাসা কারোই খুব একটা ছিল না। বিভৎস দ্বন্দ্বযুদ্ধ শেষে তাজোমারু জয়ী হয়, কোনরকম দক্ষতা দেখিয়ে নয়, বরং ভাগ্যগুণে। বিজয়ী হওয়ার পর সে সামুরাইকে খুন করে। সচক্ষে স্বামীর বিভৎস মৃত্যু দেখে ভয়ে চিৎকার করে উঠে মেয়েটি। আহত তাজোমারু তাকে ধরতে গেলে সে পালিয়ে যায়। মেয়েটিকে ধরতে না পেরে তাজোমারু সামুরাইয়ের তরবারি নিয়ে খোড়াতে খোড়াতে দৃশ্য ছেড়ে চলে যায়।

চরম পরিণতি

মন্দিরের ফটক বাড়িতে কাঠুরে, ধর্মপ্রচারক এবং সাধারণ লোকটির আলোচনা একটি বাচ্চার কান্নার শব্দে ব্যহত হয়। অসহায় নিঃস বাবা-মা ভরণ-পোষণের ভয়ে বাচ্চা ফেলে চলে গেছে। সাধারণ লোকটি বাচ্চার কিমোনো (এক ধরনের কাপড়) এবং তাকে রক্ষার জন্য ঝুড়িতে রেখে দেয়া রুবি হাতিয়ে নেয়। একটি নিঃসহায় বাচ্চার জিনিসপত্র চুরি করতে দেখে রেগে যায় কাঠুরে। সে সাধারণ লোকটিকে বাধা দিতে উদ্যত হয়। ঠিক তখনই সাধারণ লোক মেয়েটির ড্যাগারের কথা জিজ্ঞাস করে কাঠুরেকে। কাঠুরে চুপ মেরে যায়। সাধারণ লোকটি দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে সত্য আবিষ্কার করে: মেয়েটির যে ড্যাগার দিয়ে খুন হয়েছিল সামুরাই সেই ড্যাগার চুরি করেছে কাঠুরে, তাহলে সেও চোর। হাসতে হাসতে সে কাঠুরেকে চড় মারে। বলে, পৃথিবীতে সবাই স্বার্থপর, সবাই সেরকম আচরণই করে যেরকম করলে তার সুবিধা হয়।

এতো মিথ্যা আর অনিষ্টের বর্ণনা শুনে ধর্মপ্রচারক মানুষের সদ্‌গুণের উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে, অবচেতন মনে এইসব ভাকতে থাকে সে। কাঠুরে যখন ধর্মপ্রচারকের কোলের বাচ্চার দিকে হাত বাড়ায় তখনই চেতন ফিরে আসে তার। প্রথমে বাচ্চাকে দূরে সরিয়ে নিয়ে সে কাঠুরের উদ্দেশ্যে বলে, "তুমি কি বাচ্চার বাকি জিনিসপত্রও নিয়ে নিতে চাও?" কাঠুরে জানায়, ঘরে তার ৬টি বাচ্চা আছে। আরেকটি যোগ হলে জীবনে তেমন কঠিন কিছুই হবে না। এই সাধারণ কথাটি কাঠুরের গল্প এবং তার চুরির কাহিনীকে সম্পূর্ণ নতুন এক আলোয় উদ্ভাসিত করে। ধর্মপ্রচারক বলে, এই কথাটি শোনার কারণে সে মানুষের সদ্‌গুণের উপর আস্থা স্থাপন করে যেতে পারবে। একটু আগেই বৃষ্টি থেমে গেছে। কাঠুরে বাচ্চা কোলে বাড়ির দিকে যাচ্ছে, এই দৃশ্য দিয়েই ছবিটি শেষ হয়। এর সাথে দেখানো হয়, মেঘ ঠেলে দিয়ে সূর্য দেখা দিয়েছে। ছবির শুরুতে যেখানে আধো অন্ধকারের আবহ ছিল সেখানে এখন পূর্ণ আলোয় ভেসে যাচ্ছে বিশ্ব চরাচর।

চরিত্রসমূহ

প্রাপ্ত পুরস্কারসমূহ

  • ব্লু রিবন পুরস্কার (১৯৫১) - সেরা চিত্রনাট্য: আকিরা কুরোসাওয়া এবং শিনোবু হাশিমোটো
  • মাইনিচি ফিল্ম কনকাওয়ার্‌স (১৯৫১) - সেরা অভিনেত্রী: মাচিকো কিও
  • ন্যাশনাল বোর্ড অফ রিভিউ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (১৯৫১) - সেরা পরিচালক: আকিরা কুরোসাওয়া এবং সেরা বিদেশী চলচ্চিত্র: জাপান
  • ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব (১৯৫১) - গোল্ডেন লায়ন: আকিরা কুরোসাওয়া এবং ইতালীয় চলচ্চিত্র সমালোচকদের পুরস্কার: আকিরা কুরোসাওয়া
  • সম্মানসূচক পুরস্কার (১৯৫২)
  • ২৫তম একাডেমি পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্র (১৯৫৩) - বিজয়: একাডেমি সম্মানসূচক পুরস্কার, মনোনয়ন: সাদাকালো চলচ্চিত্র সেরা শিল্প নির্দেশনার জন্য একাডেমি পুরস্কার: সো মাতসুইয়ামা এবং এইচ মাতসোমোটো
  • বাফটা পুরস্কার (১৯৫৩) - যেকোন উৎস থেকে সেরা চলচ্চিত্র: জাপান
  • ডিরেক্টর্‌স গিল্ড অফ অ্যামেরিকা, যুক্তরাষ্ট্র (১৯৫৩) - চলচ্চিত্র অনন্যসাধারণ পরিচালনামূলক অর্জন: আকিরা কুরোসাওয়া

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.