রাজ বাব্বর
রাজ বাব্বর (হিন্দি: राज बब्बर, পাঞ্জাবি: ਰਾਜ ਬੱਬਰ; জন্ম: ২৩ জুন, ১৯৫২) উত্তরপ্রদেশের তুন্দলায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত হিন্দি ও পাঞ্জাবি চলচ্চিত্র অভিনেতা এবং বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সক্রিয় সদস্য তিনি। লোকসভায় তিনবার সংসদ সদস্যরূপে দলীয় প্রতিনিধিত্ব করেন। ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ হিসেবে পরিচিত রাজ্যসভায়ও দুইবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি। বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
রাজ বাব্বর | |
---|---|
উত্তরাখণ্ড রাজ্যসভার এমপি | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ১৪ মার্চ, ২০১৫ | |
সংসদীয় এলাকা | উত্তরাখণ্ড |
উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ১২ জুলাই, ২০১৬ | |
আগ্রা আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ২০০৪-২০০৯ | |
ফিরোজাবাদ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ নভেম্বর, ২০০৯-এর উপ-নির্বাচন | |
রাজ্যসভা আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৯৯৪-১৯৯৯ | |
আগ্রা আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৯৯৯-২০০৪ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | তুন্দলা, উত্তরপ্রদেশ | ২৩ জুন ১৯৫২
জাতীয়তা | ভারতীয় |
রাজনৈতিক দল | ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (বর্তমান), সমাজবাদী পার্টি (পূর্বতন) |
দাম্পত্য সঙ্গী | নাদিরা জহির (১৯৭৫-বর্তমান, ২ সন্তান) স্মিতা পাতিল |
সন্তান | আর্য্য বাব্বর জুহি বাব্বর প্রতীক বাব্বর |
আত্মীয়স্বজন | অনুপ সোনি (জামাতা) কাজরি বাব্বর (নাতনি) |
জীবিকা | অভিনেতা, রাজনীতিবিদ |
সক্রীয় বছর | ১৯৭৯-বর্তমান |
স্বাক্ষর | |
৫ জানুয়ারি, ২০১২ অনুযায়ী |
প্রারম্ভিক জীবন
২৩ জুন, ১৯৫২ তারিখে উত্তরপ্রদেশের তুন্দলা এলাকার সম্ভ্রান্ত শিখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[1] আগ্রার ফয়েজ-ই-আজম ইন্টার কলেজে অধ্যয়ন করেন। ১৯৭৫ সালের জাতীয় নাট্য বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ছিলেন ও আগ্রা কলেজে থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
এনএসডিতে স্ট্রিট থিয়েটারের সাথে জড়িত মেথড অভিনয় বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি নতুন দিল্লিতে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুম্বই গমন করেন।
অভিনয় জীবন
মুম্বইয়ে অবস্থানকালে ঐ সময়কার বিখ্যাত অভিনেত্রী রীনা রায়ের সাথে তার চলচ্চিত্র জীবনের সূত্রপাত ঘটে। 'ইনসাফ কা তারাজু' চলচ্চিত্রে অভিনয় করে সুনাম কুড়ান তিনি। ঐ চলচ্চিত্রে তিনি ধর্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। প্রথমে নায়িকা জিনাত আমান ও পরবর্তীতে তার বোনের ইজ্জত হরণ করেন। শেষদিকে স্বীয় কৃতকর্মের জন্য আত্মহননের পথ বেছে নিতে বাধ্য হন তিনি।
বি আর চোপড়ার ব্যানারে নিকাহে দীপক পরশ্বর ও সালমা আগা, আজ কি আওয়াজে স্মিতা পাতিলের সাথে অভিনয় করেন। চাঁন পরদেশী, মার্হি দা দেবা এবং লং দা লিশকারা'র ন্যায় পাঞ্জাবী চলচ্চিত্রে স্মরণীয় সফলতা লাভ করেন।
টেলিভিশনে অভিনয় করেও সফলতা পেয়েছেন তিনি। ১৯৮৮ সালে প্রচারিত জনপ্রিয় ভারতীয় টিভি সিরিজ মহাভারতের সূচনা পর্বগুলোয় রাজা ভরতের চরিত্রে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। এছাড়াও ১৯৮৬ সালে অভিষিক্ত জুহি চাওলার সাথে বাহাদুর শাহ জাফর এবং ২০১০ সালে নিজের সংস্থা থেকে মহারাজা রঞ্জিত সিং নির্মাণ করেন। সবগুলোই দূরদর্শন থেকে প্রচারিত হয়। তার অভিনীত সাড়াজাগানো সিনেমাগুলির মধ্যে আছে হাম পাঁচ, উমরাও জান, জীভন ধারা, দৌলত, আজ কি আওয়াজ, অঙ্গারে, মির্চ মশালা, রুদালী, দালাল, বরসাত, গুপ্ত: দি হিডেন ট্রুথ, বান্টি ওউর বাবলি ইত্যাদি।
রাজনীতিতে অংশগ্রহণ
ভিপি সিংয়ের নেতৃত্বাধীন জনতা দলের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তারপর তিনি সমাজবাদী দলে যোগ দেন। এ দলে থাকাবস্থায় তিনবার ভারতীয় সংসদের সদস্যরূপে নির্বাচিত হন। ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০৪ সালে ১৪শ লোকসভার পুণঃনির্বাচনে জয়যুক্ত হয়েছিলেন তিনি। ২০০৬ সালে সমাজবাদী দল থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য হন। এরফলে ২০০৯ সালের নির্বাচনে চতুর্থবার সংসদ সদস্য হন। ঐ নির্বাচনে অখিলেশ যাদবের স্ত্রী ও মুলায়ম সিংহ যাদবের পুত্রবধূ ডিম্পল যাদবকে পরাজিত করেন তিনি।[2] ২০১৪ সালের নির্বাচনে গাজিয়াবাদ সংসদীয় আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জেনারেল ভি কে সিংয়ের কাছ পরাভূত হন।[3] একদা শক্তিশালী দুর্গরূপে চিহ্নিত উত্তরপ্রদেশে বেশ কয়েকবছর কংগ্রেস দল বিরোধী দলে রয়েছে। সেখানে তিনি কংগ্রেস কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
কংগ্রেস দলের মুখপত্র হিসেবে ২০১৩ সালে বিতর্কের জন্ম দেন। তিনি বলেন যে, মুম্বইয়ে ১২ রূপীর বিনিময়ে একজন সাধারণ লোক পর্যাপ্ত খাবার গ্রহণ করতে পারেন। তার এ বক্তব্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়।[4] তিনি আরও বলেন যে, ভারতের দরিদ্র লোকজন দিনে দুইবার পেটপুড়ে খাদ্য গ্রহণ করেন যা ২৮ থেকে ৩২ রূপীর মধ্যে পাওয়া সম্ভবপর। রাজ বাব্বরের এ বক্তব্য বিরোধী দলগুলোর কাছে হাসির খোড়াক যোগায়। পরবর্তীতে অবশ্য এ বক্তব্যের জন্য তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন।[5] জুলাই, ২০১৩ সালে নরেন্দ্র মোদীকে আডলফ হিটলারের সাথে তুলনা করে আবারো বিতর্কের জন্ম দেন।[6]
ব্যক্তিগত জীবন
প্রথিতযশা থিয়েটার ব্যক্তিত্ব সাজ্জাদ জহিরের কন্যা নাদিরা জহিরের সাথে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। এ সংসারে আর্য্য বাব্বর ও জুহি বাব্বর রয়েছে। এরপর তিনি বিখ্যাত অভিনেত্রী স্মিতা পাতিলকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে প্রতীক বাব্বর নামের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। কিষাণ ও বিনোদ নামের ছোট দুই ভাই এবং চার ছোট বোন রয়েছে তার। ভাই কিষাণকে নিয়ে নিজস্ব চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বাব্বর ফিল্মস প্রাইভেট লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন।[7] এ প্রতিষ্ঠানের অধীনে ১৯৯২ সালে যোদ্ধা, ২০০৩ সালে কাশ আপ হামারে হোতে এবং ২০১০ সালে ধারাবাহিক মহারাজা রঞ্জিত সিং নির্মাণ করেন।
তথ্যসূত্র
- "About Raj Babbar"। MTV। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- "Raj Babbar wins in Firozabad, blow to Mulayam"। Indian Express। ১০ নভেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০০৯।
- http://timesofindia.indiatimes.com/news/VK-Singh-wins-Ghaziabad-seat-by-5-67-lakh-votes-creates-history/articleshow/35219679.cms
- "Raj Babbar says he can get a full-meal for Rs 12 in Mumbai"। The Hindu। ২৪ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৩।
- "Raj Babbar eats crow for Rs. 12 meal remark, says sorry"। India today। ২৬ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৩।
- "Congress compares Narendra Modi to Adolf Hitler; targets BJP over election panel"। DNA India। ২০ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুলাই ২০১৩।
- http://www.imdb.com/name/nm1290990/
বহিঃসংযোগ
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে রাজ বাব্বর (ইংরেজি)