রাজাবাবুর লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে অবস্থিত রাজাবাবুর লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির ঢাকা শহরের একটি উল্লেখযোগ্য মন্দির।[1] এটি লক্ষ্মীবাজারের ১৭ নম্বর কে. জি. গুপ্ত লেনে অবস্থিত।

রাজাবাবুর লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির
মন্দিরের বহির্দৃশ্য
বিকল্প নামশ্রী শ্রী লক্ষ্মীনারায়ণ জিউ বিগ্রহ মন্দির
সাধারণ তথ্য
ধরনদ্বিতল ভবন
স্থাপত্য রীতিদালান স্থাপত্য
ঠিকানা১৭ কে.জি. গুপ্ত লেন, লক্ষ্মীবাজার
শহরঢাকা
দেশবাংলাদেশ
খোলা হয়েছে১৮ শতক
উচ্চতা
ছাদসমতল

ইতিহাস

রাজাবাবুর প্রকৃত নাম কীর্তিপ্রসাদ। তাঁর পিতা পাঞ্জাব এর ব্রাহ্মণ ভিখন লাল পাণ্ডে আঠারো শতকে ঢাকায় আসেন। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও নবাব সিরাজউদ্দৌলার যুদ্ধে ভিখন লাল ইংরেজদের সহায়তা করেন, ফলে ইংরেজরা তাকে প্রচুর ভূসম্পত্তির অধিকার দেন।[2]

ভিখন লাল স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে লক্ষ্মী দেবীর মূর্তি লাভ করেন এবং নিজের বাসায় মূর্তিটি স্থাপন করেন। এরপরই ভিখনলালের ব্যবসাবাণিজ্যের প্রভূত উন্নতি হয়। মৃত্যুর পূর্বে তিনি সমস্ত সম্পত্তি দেবীর নামে দেবোত্তর সম্পত্তি করে নিজের উত্তরাধিকারীদের দেবীর সেবায়েত নিযুক্ত করেন। তার ছেলে রাজাবাবু উত্তরাধিকার সূত্রে ভিখনলালের বাড়ি ও মন্দিরের অধিকারী হন। রাজাবাবু ছিলেন মুর্শিদাবাদ এর বিখ্যাত তবলচি আতা হুসেনের পিতা হুসেন বক্সের শিষ্য এবং তৎকালীন ঢাকার গানবাজনার রাজা।[3] তার নামেই মন্দিরটি ‘রাজাবাবুর লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির’ নামে পরিচিতি পায়।

গুরুত্ব

দেবীমূর্তির পাশাপাশি এখানে শালগ্রামশিলাও স্থাপন করা হয়। একদা ভিখন লাল জনৈক সন্ন্যাসীর নিকট ৫টি নারায়ণচক্র বা শালগ্রাম লাভ করেন। তিনি এগুলো ঢাকার নরসিংহজীর আখড়ায়, লক্ষ্মীবাজারে, নারায়ণগঞ্জ বন্দরে, ইদ্রাকপুরে ও পঞ্চমীঘাটে স্থাপন করেন। [4] স্থানীয় হিন্দুরা মন্দিরের ময়দানে হোলি উৎসব উদ্‌যাপন করতেন। [2] এই মন্দিরের নাম থেকে এলাকাটি লক্ষ্মীবাজার নামে পরিচিত হয়।

স্থাপত্য

রাজাবাবুর বাড়ি ও লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির মূলত দ্বিতল ভবন। নিচতলার ঘরগুলো সাধারণ, উপরের তলায় রয়েছে নাচঘর, বারদুয়ারী, অন্তরাল, লক্ষ্মীনারায়ণের বিগ্রহ রাখার ঘর প্রভৃতি। মূর্তিটি কাঠের উপর রূপার কাজ করা সিংহাসনে স্থাপিত ছিল।[2] বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে এর গায়ে লাল রঙের সাইনবোর্ড টানিয়েছে।

চিত্রশালা

তথ্যসূত্র

  1. "ঢাকার মন্দির"। ২১ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  2. বৃহত্তর ঢাকার প্রাচীন কীর্তি, আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া
  3. ঢাকা সমগ্র ১, মুনতাসীর মামুন
  4. ঢাকার ইতিহাস (প্রথম খণ্ড), শ্রীযতীন্দ্রমোহন রায়
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.