রাজাদের উপত্যকা
রাজাদের উপত্যকা (আরবি: وادي الملوك, প্রতিবর্ণী. ওয়াহিদ্ আল্ মূল্ক্)[1] হচ্ছে মিশরে অবস্থি একটি উপত্যকা। খ্রিস্টপূর্ব ১৬ শতক থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ১১ শতক পর্যন্ত এখানে মিশরের নিউ কিংডমের (প্রাচীন মিশরের ১৮তম ও ২০তম যুগ) ফারাওদের জন্য মন্দির নির্মাণ করা হতো।[2][3] উপত্যকাটি নীল নদের পশ্চিম তীরে, তেহবাস শহরের (বর্তমানে লুক্সোর শহর) বিপরীতে, তেহবান নেক্রোপলিসের কেন্দ্রে অবস্থিত।[4] এই উপত্যকার দুইটি অংশ, একটি হচ্ছে পূর্ব উপত্যকা, যেখানে বেশিরভাগ রাজকীয় মন্দিরগুলো অবস্থিত, এবং অপরটি হচ্ছে পশ্চিম উপত্যকা।
২০০৬ সালে একটি নতুন প্রকোষ্ঠ, এবং ২০০৮ সালে আরো নতুন দুটি মন্দিরের প্রবেশমুখ আবিস্কারের পর,[5] জানা যায় যে, এই উপত্যকায় মোট ৬৩টি মন্দির রয়েছে। এগুলো মধ্যে কিছু সাধারণ গর্তের মতো প্রকোষ্ঠের সাথে ১২০ প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট মন্দিরও রয়েছে।[6] এটি ছিলো প্রাচীন মিশরের নিউ কিংডমের রাজন্যবর্গের সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত প্রধান কবরস্থান। এই মন্দিরগুলোর নকশায় তৎকালীন মিশরীয় পুরাণের বিভিন্ন চরিত্রের ছবি আঁকা রয়েছে যার থেকে সেই সময়কার বিশ্বাস ও মৃত্যু পরবর্তী বিভিন্ন সৎকার কর্ম ও সংস্কৃতির সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। সবগুলো মন্দিরেই মূল্যবান দ্রব্যাদি থাকার কারণে লুট হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। কিন্তু এখনো যা আছে তা তৎকালীন শাসকদের ক্ষমতা সম্পর্কে একটি ধারণা লাভে সহায়তা করে।
১৮ শতক থেকেই এই স্থানটি প্রত্নতাত্ত্বিক ও ইজিপ্টোলজির একটি আগ্রহের কেন্দ্র হয়ে ওঠে। এর মন্দিরগুলো মানুষের আকর্ষণ ও প্রত্নতাত্ত্বিকদের গবেষণার বিষয় হয়ে ওঠে। বর্তমান সময়ে এই উপত্যকাটি ফারাও তুতাংখামুনের মমি আবিষ্কার ও তার সমাধিস্থ মন্দির কেভি৬২-এর আবিস্কারের জন্য বিখ্যাত। কারণ তুতাংখামুনের মমির মাধ্যমেই ফারাওদের অভিশাপের গুজব বিস্তৃতি লাভ করে।[7] এটি বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। ১৯৭৯ সালে এটি বাদবাকি তেহবান নেক্রোপলিস অংশের সাথে একত্রে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হওয়ার মর্যাদা লাভ করে।[8]
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- Reeves and Wilkinson (1996), p.6
- Maspero (1913), p.182
- "Theban Mapping Project"। Theban Mapping Project। ২০০৬-১২-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১২-০৪।
- Siliotti (1997), p.13
- Zahi Hawass। "Spotligh Interview: 2008"। The Plateau: Official Website for Dr. Zahi Hawass। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৮-১৫।
- "Valley of the Kings"। Theban Mapping Project। ২০০৮-০৭-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৮-০৯।
- "Egypt's "King Tut Curse" Caused by Tomb Toxins?"। National Geographic। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১২-০৮।
- "Ancient Thebes and its necropolis"। UNESCO Work Heritage Sites। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১২-০৪।