রাঙ্গামাটি
রাঙামাটি বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার প্রশাসনিক সদর দফতর। এটি পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজধানী শহরও। শহরটি ২২°৩৮' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°১২' পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত এবং এর উচ্চতা ১৪ মিটার (৪৬ ফু)। [1] জেলা প্রশাসন জেলা রাঙ্গামাটির তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়।
রাঙ্গামাটি | |
---|---|
ডাকনাম: বাংলাদেশের লেক সিটি | |
রাঙ্গামাটি | |
স্থানাঙ্ক: ২২°৩৮′ উত্তর ৯২°১২′ পূর্ব | |
দেশ | Bangladesh |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | রাঙ্গামাটি জেলা |
সংসদীয় আসন | পার্বত্য রাঙ্গামাটি |
সরকার | |
• সংসদ সদস্য | দীপংকর তালুকদার |
উচ্চতা | ১৪ মিটার (৪৯ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৬,২০,২১৪ |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+০৬:০০) |
পোস্ট কোড | ৪৫০০ |
এলাকা কোড | ০৩৫১ |
চট্টগ্রাম থেকে ৭৭ কিলোমিটার (৪৮ মা) দূরে রাঙ্গামাটি। কাপ্তাই হ্রদের পশ্চিম তীরে এই জনপদটি অবস্থিত। রাঙ্গামাটি একটি পর্যটন গন্তব্য কারণ এটির প্রাকৃতিক দৃশ্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, হ্রদ,উদ্ভিদ এবং প্রাণীজগৎ, দেশীয় যাদুঘর, ঝুলন্ত সেতু ইত্যাদি রয়েছে।
অবস্থান
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে ২২°২৭´ থেকে ২৩°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫৬´ থেকে ৯২°৩৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে রাঙ্গামাটির অবস্থান।[2] রাজধানী ঢাকা থেকে দূরত্ব প্রায় ৩০৮ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার।
ইতিহাস
১৮৬০ সালের ২০ জুন রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান- এই তিন পার্বত্য অঞ্চলকে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা সৃষ্টি হয়। জেলা সৃষ্টির পূর্বে এর নাম ছিল কার্পাস মহল। পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা থেকে ১৯৮১ সালে বান্দরবান এবং ১৯৮৩ সালে খাগড়াছড়ি পৃথক জেলা সৃষ্টি করা হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার মূল অংশ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথাগত রাজস্ব আদায় ব্যবস্থায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় রয়েছে চাকমা সার্কেল চীফ। চাকমা রাজা হলেন নিয়মতান্ত্রিক চাকমা সার্কেল চীফ।[3]
ব্রিটিশরা আগমণের পূর্বে কার্পাস মহল ছিল ত্রিপুরা, মুঘল, চাকমা ও আরাকানের রাজাদের যুদ্ধক্ষেত্র। চাকমা রাজা বিজয়গিরি রাজ্য জয় করতে করতে এই অঞ্চল জয় করে নেয় ও রাজ্য স্থাপন করে। ১৬৬৬ সালে এই অঞ্চলের কিছু অংশে মুঘলদের অনুপ্রবেশ ঘটে এবং চাকমা রাজার কাছে পরাজিত হয়। এই যুদ্ধে মুঘলদের দুইটা কামান, একটার নাম ফতেহ্ খাঁ কামান চাকমা রাজার হস্তগত হয়।
১৭৬০-৬১ সালে ইংরেজরা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই অঞ্চলে প্রবেশ করে।। ১৭৩৭ সালে চাকমা রাজা শের মোস্তা খান মুঘলদেরকে পরাজিত করে এই অঞ্চল থেকে বিতাড়িত করেন। বাংলাদেশ হওয়ার পর জিয়া সরকার আশির দশকে এই অঞ্চলে চার লক্ষ চরভাঙা সেটলারদের পুনর্বাসিত করেন। বর্তমানে এই অঞ্চলে ১৪টি ক্ষুদ্র জাতির লোক বসবাস করেন।[4]
নদ-নদী
রাঙ্গামাটি জেলার প্রধান নদী কর্ণফুলি। এ নদী ভারতের লুসাই পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে রাঙ্গামাটি উত্তর-পূর্ব সীমান্ত দিয়ে ঠেগা নদীর মোহনা হয়ে এ অঞ্চলে প্রবেশ করেছে। কর্ণফুলি নদীর উপনদীগুলো হল কাচালং, মাইনী, চেঙ্গি, ঠেগা, সলক, রাইংখ্যং। এছাড়া এ জেলায় রয়েছে বাংলাদেশের বৃহত্তম কাপ্তাই হ্রদ। এ উপনদীগুলো বর্ষাকালে যথেষ্ট খরস্রোতা থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে নাব্যতাসহ পানির পরিমাণ প্রায় থাকেনা।[5]
যোগাযোগ ব্যবস্থা
রাঙ্গামাটির যোগাযোগের প্রধান সড়ক চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহাসড়ক। সব ধরনের যানবাহনে যোগাযোগ করা যায়।
জলবায়ু
রাঙামাটি-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) | ২৫.৭ (৭৮.৩) |
২৮.৫ (৮৩.৩) |
৩২.০ (৮৯.৬) |
৩৩.০ (৯১.৪) |
৩২.৭ (৯০.৯) |
৩১.২ (৮৮.২) |
৩০.৫ (৮৬.৯) |
৩১.০ (৮৭.৮) |
৩১.৫ (৮৮.৭) |
৩১.৪ (৮৮.৫) |
২৯.১ (৮৪.৪) |
২৬.২ (৭৯.২) |
৩০.২ (৮৬.৪) |
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) | ১৪.০ (৫৭.২) |
১৫.৯ (৬০.৬) |
২০.০ (৬৮.০) |
২২.৯ (৭৩.২) |
২৪.০ (৭৫.২) |
২৪.৯ (৭৬.৮) |
২৪.৮ (৭৬.৬) |
২৪.৯ (৭৬.৮) |
২৪.৮ (৭৬.৬) |
২৩.৯ (৭৫.০) |
২০.৬ (৬৯.১) |
১৬.০ (৬০.৮) |
২১.৪ (৭০.৫) |
অধঃক্ষেপণের গড় মিমি (ইঞ্চি) | ৫.১ (০.২০) |
২৪.৩ (০.৯৬) |
৬২.১ (২.৪৪) |
১৪৭.৯ (৫.৮২) |
৩১৯.৭ (১২.৫৯) |
৫০৪.৮ (১৯.৮৭) |
৫৭২.৬ (২২.৫৪) |
৪৩৫.২ (১৭.১৩) |
২৫৯.৬ (১০.২২) |
১৫২.২ (৫.৯৯) |
৫৫.৭ (২.১৯) |
৯.৫ (০.৩৭) |
২,৫৪৮.৭ (১০০.৩২) |
অধঃক্ষেপণ দিনগুলির গড় | ১ | ২ | ৩ | ৮ | ১৩ | ১৮ | ২১ | ২০ | ১৫ | ৮ | ৪ | ১ | ১১৪ |
আপেক্ষিক আদ্রতার গড় (%) | ৭৭ | ৬৯ | ৬৭ | ৭২ | ৭৮ | ৮৪ | ৮৫ | ৮৫ | ৮৫ | ৮৪ | ৮২ | ৮১ | ৭৯ |
উৎস: Bangladesh Meteorological Department[6][7][8][9][10] |
চিত্র গ্যালারী
- রাঙ্গামাটি-কাপ্তাই হাইওয়ে, রাঙ্গামাটি
- রাঙামাটি হ্রদ-কাপ্তাই
- শুভলং ফলনের নিম্ন অংশ
- রাজবানা বিহারে শীর্ষ মহন্তের শবদেহ বডি
- রাঙ্গামাটির বিখ্যাত বৌদ্ধ মন্দির রাজবাণ বিহার
- বন্য এশীয় হাতি, রাঙ্গামাটির পার্বত্য বনাঞ্চলে দেখা যায়
- কাপ্তাই লেক বরকল উপজেলা
- শুকনো মরসুমে শুভলং জলপ্রপাত
- পানিতে জীবন
- ঝুলন্ত সেতু রাঙ্গামাটি
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
- শোভা রানী ত্রিপুরা- লেখক ও গবেষক
- দীপংকর তালুকদার- রাজনীতিবিদ।
- ঊষাতন তালুকদার -রাজনীতিবিদ।
- মনি স্বপন দেওয়ান-রাজনীতিবিদ।
- বিনয় কুমার দেওয়ান- রাজনীতিবিদ।
- পারিজাত কুসুম চাকমা- রাজনীতিবিদ।
- কামিনী মোহন দেওয়ান- রাজনীতিবিদ।
তথ্যসূত্র
- Location of Rangamati - Falling Rain Genomics
- "রাঙ্গামাটি জেলা - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org।
- "এক নজরে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা - রাঙ্গামাটি জেলা - রাঙ্গামাটি জেলা"। www.rangamati.gov.bd। ১৪ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- "জেলার পটভূমি - রাঙ্গামাটি জেলা - রাঙ্গামাটি জেলা"। www.rangamati.gov.bd। ১৫ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- "ভৌগোলিক পরিচিতি - রাঙ্গামাটি জেলা - রাঙ্গামাটি জেলা"। www.rangamati.gov.bd। ৪ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- "Monthly Maximum Temperature"। Bangladesh Meteorological Department। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ৩১, ২০১৬।
- "Monthly Minimum Temperature"। Bangladesh Meteorological Department। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ৩১, ২০১৬।
- "Normal Monthly Rainfall"। Bangladesh Meteorological Department। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ৩১, ২০১৬।
- "Normal Monthly Rainy Day"। Bangladesh Meteorological Department। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ৩১, ২০১৬।
- "Normal Monthly Humidity"। Bangladesh Meteorological Department। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ৩১, ২০১৬।