রাখাইন
রাখাইন বাংলাদেশ ও মায়ানমারের একটি জনগোষ্ঠীর নাম। এরা আরাকানী এবং মগ নামেও পরিচিত।[1] রাখাইনরা মঙ্গোলীয় বংশোদ্ভূত। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে এরা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী। আঠারো শতকের শেষে এরা আরাকান তথা রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে এসে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও পটুয়াখালীতে বসতি স্থাপন করে।[2] বর্তমানে রাখাইন সম্প্রদায়ের বসবাস মূলত কক্সবাজার, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলায়। এ ছাড়া রাঙামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায়ও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে কিছু রাখাইন বসতি দেখা যায়। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায়ও রাখাইন সম্প্রদায়ের বসতি রয়েছে।
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল | |
---|---|
মায়ানমার, বাংলাদেশের পূর্ব প্রান্তে | |
ভাষা | |
আরকানিজ | |
ধর্ম | |
থেরবাদ |
ইতিহাস
রাখাইন শব্দটির উৎস পলি ভাষা। প্রথমে একে বলা হত রক্ষাইন যার অর্থ রক্ষণশীল জাতি। রাখাইন জাতির আবির্ভাব হয় খৃষ্টপূর্ব ৩৩১৫ বছর আগে।[3] ঐতিহাসিক তথ্যানুসারে, ১৭৮৪ সালে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও পটুয়াখালীতে রাখাইনদের আগমন ঘটে। মূলত সেসময় বার্মিজ রাজা 'বোদোপয়া' আরাকান রাজ্য জয় করে। তার জয়লাভে ভয় পেয়ে বিপুল সংখ্যক রাখাইন সম্প্রদায়ের লোক পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আরাকানের মেঘবতির সান্ধ্যে জেলা থেকে দেড়শ রাখাইন পরিবার বাঁচার আশায় পঞ্চাশটি নৌকাযোগে অজানার উদ্দেশ্যে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দেয়। কয়েকদিন পর তারা কূলের সন্ধান পায় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী দ্বীপে। এই দ্বীপে তারা বসতি স্থাপন করে এবং তাদের সঙ্গে করে আনা ধান ও ফল-মূলের বীজ বপন করে সেখানে জমি আবাদ শুরু করে। রাখাইনদের বিভিন্ন দলের নেতৃত্বদানকারী প্রধানগণ ছিলেন ক্যাপ্টেন প্যোঅং, উঃগোম্বাগ্রী ও অক্যো চৌধুরী। কয়েকবছর পর বেশি ফসলের আশায় তারা রাঙ্গাবালী ছেড়ে চলে যান মৌডুবিতে। লোকসংখ্যা বাড়লে তারা ছড়িয়ে পড়ে বড়বাইশদিয়া, ছোটবাইশদিয়া, কুয়াকাটা, টিয়াখালী, বালিয়াতলী, বগীসহ বিভিন্ন দ্বীপ এলাকায়।ক্রমাগত তারা বিলুপ্ত হচ্ছে। বলা যায় বাংলাদেশের উপরে বর্নিত এলাকা থেকে তার বিলুপ্ত জাতি। গুটি কয়েকটি পরিবার আছে। অন্যরা বর্তমান মায়ানমার দেশে চলে যাচ্ছে বা গেছে। [4]
তথ্যসূত্র
- "মগের মুল্লুক ও মগ ধাওনীর গল্প"। দেশ রূপান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-০৭।
- "রাখাইন"।
- "ক্ষয়িষ্ণু উপজাতি রাখাইন"।
- "রাখাইন সম্প্রদায়"। ২৫ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৬।