রাইনোভাইরাস

রাইনোভাইরাস ({{(from the Greek ῥίς rhis "নাক", gen ῥινός rhinos "নাক সম্পর্কিত", ও লাতিন ভাইরাস) হলো মানবদেহে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ঘটানো ভাইরাস এবং সর্দি বা ঠাণ্ডা লাগার প্রধান কারণ। রাইনোভাইরাস ৩৩–৩৫ °C (৯১–৯৫ °F) তাপমাত্রায় বংশবৃদ্ধি করে এবং মানুষের নাকে এই তাপমাত্রা বিদ্যমান। রাইনোভাইরাসসমূহ পিকোর্নাভিরিডি গোত্রের এন্টারোভাইরাস গণের অন্তর্ভুক্ত। রাইনোভাইরাসের তিনটি প্রজাতি (এ, বি ও সি) এর মধ্যে প্রায় ১৬০ টি স্বীকৃত ধরন রয়েছে যাদের মধ্যে তাদের তল প্রোটিন সেরোটাইপ অনুযায়ী ভিন্নতা রয়েছে।[1] প্রকৃতিগতভাবে তারা লিটিক কোষ এবং সবচেয়ে ক্ষুদ্র ভাইরাসের অন্তর্ভুক্ত। তাদের ব্যাস ৩০ ন্যানোমিটার। তুলনা করলে দেখা যায়, অন্যান্য ভাইরাস যেমন গুটিবসন্ত, ভ্যাক্সিনিয়া ভাইরাসসমূহ প্রায় দশগুণ বৃহৎ (ব্যাস ৩০০ ন্যানোমিটার প্রায়)। অন্যদিকে ফ্লু ভাইরাসসমূহের ব্যাস প্রায় ৮০-১২০ ন্যানোমিটার হয়।

রাইনোভাইরাস

মানব রাইনোভাইরাসের সমতলে প্রোটিন কাঁটা বিদ্যমান।
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
Included groups
  • Rhinovirus A
  • Rhinovirus B
  • Rhinovirus C
Excluded groups
  • Enterovirus A
  • Enterovirus B
  • Enterovirus C
  • Enterovirus D
  • Enterovirus E
  • Enterovirus F
  • Enterovirus G
  • Enterovirus H
  • Enterovirus I
  • Enterovirus J
  • Enterovirus K
  • Enterovirus L

ইতিহাস

ডা. উইন্সটন প্রাইস জন্স হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৫৪ সালের বসন্তে প্রথম রাইনোভাইরাসের একটা প্রজাতি পৃথক করেছিলেন যেটি ওইসময় ৩০ শতাংশ মানুষের সর্দিকাশির জন্য দায়ী ছিল। তবে তিনি ১৯৫৭ সালে এর টিকা সফলভাবে আবিষ্কারের পূর্বপর্যন্ত এর প্রতিবেদন প্রকাশ করেন নি।[2][3]

বিস্তার ও রোগতত্ত্ব

এই ভাইরাস সরাসরি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি, শ্বাস কণিকা থেকে উদ্ভূত এরোসল ও ফোমাইটস বা সংক্রমিত তলের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। রাইনোভাইরাস সারা বিশ্বব্যাপী ছড়ায় এবং সাধারণ সর্দি-কাশির প্রাথমিক কারণ। উপসর্গগুলো হলো গলবিল প্রদাহ বা গলাব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া, নাসারন্ধ্র বন্ধ হয়ে আসা, হাঁচিকাশি। মাঝে মাঝে এর সাথে মাংসপেশি ব্যথা, পেশি দূর্বলতা, ক্লান্তি, অবসাদ, মাথাব্যথা ও ক্ষুধামান্দ্য থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে শরৎকাল ও শীতকালে এই সংক্রমণ বেশি হয়। সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখা যায় সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত। তাপমাত্রার একটা প্রভাব এই ভাইরাস ছড়ানোর পিছনে থাকতে পারে বলে মনে করা হয়।[4] মানব রাইনোভাইরাস ৩২ °C (৮৯ °F), তাপমাত্রায় বংশবৃদ্ধি করে যা মানব শরীরের গড় তাপমাত্রা হতে কম। এই কারণে এই ভাইরাস ঊর্ধ্ব শ্বাসনালিতে সংক্রমণ করে যেখানে বাহ্যিক পরিবেশের অপেক্ষাকৃত শীতল বায়ুপ্রবাহ বিদ্যমান। শিশু, বয়োবৃদ্ধ ও কম রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা এতে বেশি আক্রান্ত হন[5]

প্রতিরোধ

শরৎ ও শীতকালে মানব রাইনোভাইরাস বেশি সংক্রামক হয়ে থাকে। মানব পোষকের বাইরে ভাইরাসটি তিন ঘণ্টা পর্যন্ত সক্রিয় থাকতে পারে। কোনো ব্যক্তি একবার ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার পর প্রথম তিনদিন অত্যন্ত সংক্রামক থাকে। নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকা ও মুখোশ এবং দস্তানা ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

তথ্যসূত্র

  1. Nicola Davison (6 October 2017). "Why can't we cure the common cold?", The Guardian
  2. Waggoner, Walter H. (১৯৮১-০৫-০২)। "Dr. Price successfully uses vaccine against JH Virus"The New York Times
  3. "JH virus"TheFreeDictionary.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২৩
  4. Ellen F. Foxman; James A. Storera; Megan E. Fitzgerald; Bethany R. Wasike; Lin Houf; Hongyu Zhaof; Paul E. Turnere; Anna Marie Pylec; Akiko Iwasakia (২০১৪)। "Temperature-dependent innate defense against the common cold virus limits viral replication at warm temperature in mouse airway cells"PNAS112 (3): 827–32। ডিওআই:10.1073/pnas.1411030112পিএমআইডি 25561542পিএমসি 4311828বিবকোড:2015PNAS..112..827F
  5. Jacobs, Samantha E.; Lamson, Daryl M.; George, Kirsten St; Walsh, Thomas J. (২০১৩-০১-০১)। "Human Rhinoviruses"Clinical Microbiology Reviews26 (1): 135–62। আইএসএসএন 0893-8512ডিওআই:10.1128/CMR.00077-12পিএমআইডি 23297263পিএমসি 3553670

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:Baltimore classification টেমপ্লেট:Common cold

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.