রজওয়েলের ঘটনা
রজওয়েলের ঘটনাটি ঘটেছিলো রজওয়েলের (নিউ মেক্সিকোর, আমেরিকার) শহরে, ৮ জুলাই ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে। নিউ মেক্সিকো, রজওয়েলের মরুভূমিতে একটি অশনাক্ত উড়ন্ত বস্তুর (UFO) ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী এবং সরকার এই ব্যাপারটি সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করে। মার্কিন সামরিক বাহিনী জানায় যে, এগুলো একটি পরীক্ষামূলক বস্তুর ধ্বংসাবশেষ এবং একে উচ্চ সতর্ককারী বেলুনে শ্রেণীকৃত করে, এই প্রোগ্রামটি "মুগুল"[1] নামকরণ করা হয়েছিলো। সেখানে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছিলো তা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। অনেক ইউএফও (UFO) বিশেষজ্ঞ এবং সাধারণ জনগণ মনে করেন যে, এটি একটি ভিনগ্রহী মহাশূন্যযান যা এখানে ধ্বংস হবার পরে এর পাইলটের (এলিয়েন) দেহ পুনরুদ্ধার করে সামরিক বাহিনী তা লুকিয়ে ফেলেছে।
তারিখ | ১৯৪৭ |
---|---|
অবস্থান | লিঙ্কন কাউন্টি, নিউ মেক্সিকো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
স্থানাঙ্ক | ৩৩°৫৮.১′ উত্তর ১০৫°১৪.৬′ পশ্চিম |
উইএফও'র ঘটনাটি একটি বিস্তির্ণভাবে পরিচিত জনসংস্কৃতি হয়ে যায় এবং রজওয়েল নাম পরিবর্তন হয়ে একে ইউএফও রজওয়েল বলা হয়। ভিনগ্রহী প্রাণী ধরার ব্যাপারটা তখন মিডিয়া এবং গবেষকদের কাছে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলো।[2] রজওয়েলের ঘটনাকে "বিশ্বের সর্বাধিক বিখ্যাত, সবচেয়ে নিখুঁতভাবে তদন্ত করা হয়েছে, এবং ইউএফও প্রত্যক্ষনের দাবির সর্বাধিক প্রমাণ" হিসাবে বর্ণনা করা হয়।
প্রেক্ষাপট
রজওয়েল, নিউ মেক্সিকোর মরুভূমিতে একটি শহর, ১ জুলাই ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে, রাত্রিতে একটি প্রচন্ড ঝড় ও বজ্রপাতের সময় "৫০৯তম বোমারু দল"-এর বিমান ঘাঁটির রাডারে একটি অদ্ভুত ঘটনা ধরা পড়েছিলো। রাডারে পর্দার এক কোণায় বার বার একটি বস্তু দেখা যাচ্ছিলো। এটি এমন গতিতে যাচ্ছিলো যে, ওই সময়ের সেনাবাহিনীর বিমানগুলোও (বর্তমান গতিরোধক বিমানগুলোও) সেই গতিতে যাওয়ার কথা চিন্তাও করতে পারতো না। রাডারের একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে বজ্রপাতের মতো দিক পরিবর্তন করতে দেখা যায়। এটি ছিলো ব্যাখ্যাতীত বিষয়, তারা রাডারের দ্বারা উৎপাদিত তড়িৎ-চুম্বকীয় সমস্যার জন্য রাডার পরীক্ষা করেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে রাডারে একি জিনিস লক্ষ করা হলো যে, এটি আগের মতোই বজ্রপাতের মতো দিক পরিবর্তন করছে। তারা ভেবেছিলো যে, কোনো সত্যিকার বস্তু, বিপদজনকভাবে অজানা এবং সম্ভবত যুদ্ধপ্রিয় যা তাদের আকাশসীমা পার করছিলো। পরে ৮ জুলাই তারিখে, রজওয়েল দৈনিক রেকর্ড নামে একটি সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় প্রকাশ[3] করেছিলো যে, "রজওয়েলের খামার অঞ্চলে আরএএএফ উড়ন্ত বস্তু ধরা পড়েছে"। ঘটনাটি অন্যান্য স্থানীয় সংবাদপত্রতেও দেখা গিয়েছিলো। ঐ বছর ৮ জুলাইতে, বিমান বাহিনীর রেডিও এবং সংবাদপত্রতে ঘোষণা করা হয়েছিলো যে, রহস্যময় দূর্ঘটনাটি একটি উড়ন্ত বস্তুর দ্বারা ঘটেছিলো। এই ঘটনাটির জন্য রজওয়েল শহরে ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (FBI) এসেছিলো ব্যাপারটি পরীক্ষা করার জন্য। বিতর্কের কিছু দিন পরে, রজওয়েল সামরিক বাহিনীরা একটি বেলুনের ছিন্নাংশ দেখিয়েছিলো, যেটি মুগুল নামের প্রোগ্রামটির জন্য ব্যবহার করা হয়েছিলো। এ সিস্টেমটি পারমাণবিক ক্ষেত্রের ক্রিয়াকলাপ পর্যবেক্ষণ করার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছিলো। কতিপয় বছরগুলোতে রজওয়েলের বাসিন্দাদের থেকে বিভিন্ন সংবাদ এসেছে বিমান বাহিনী এবং ফেডারেলের সম্বন্ধে। কিছু লোক বলেছিল যে, "কখনও কখনও বিমান বাহিনীর কমর্চারীরা ধ্বংসাবশেষ এবং ফেডারেলের ট্রাকে দেহ (মানুষের না) বহন করে"। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের দ্বারা এগুলো সব অস্বীকার করা হয়েছে।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- United States Air Force (Col. Richard L. Weaver, USAF; 1st LT. James McAndrew, USAFR), The Roswell Report: Fact versus Fiction in the New Mexico Desert (1995)
- B.D. Gildenberg. "A Roswell Requiem". Skeptic 10-1 (2003).
- "RAAF CAPTURES FLYING SAUCER ON RANCH IN ROSWELL REGION" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ জুন ২০০৪ তারিখে, এটি শিরোনাম ছিলো।