যশোর রোড

যশোর রোড[1] হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ও বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের মধ্যে সংযোগকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক মহাসড়ক। এই সড়কটি কলকাতার শ্যামবাজার থেকে বাংলাদেশের যশোর শহর পর্যন্ত বিস্তৃত। এই সড়ক পথটি প্রায় ১২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই সড়কের দমদম থেকে বারাসাত পর্যন্ত অংশ ১২ নং জাতীয় সড়ক, বারাসাত থেকে বনগাঁর নিকট পেট্রাপোল সীমান্ত পর্যন্ত অংশ ১১২ নং জাতীয় সড়ক এবং বেনাপোল থেকে যশোর শহরের দরাটানা পর্যন্ত অংশ জাতীয় মহাসড়ক এন৭০৬-এর অন্তর্ভুক্ত, সম্পূর্ণ যশোর রোড এএইচ১-এর অংশ। এই সড়ক পথে কলকাতা-ঢাকা, কলকাতা-ঢাকা-আগরতলাকলকাতা -খুলনা রুটে আন্তর্জাতিক বাস পরিষেবা চালু রয়েছে।

যশোর রোড
পথের তথ্য
অস্তিত্বকালব্রিটিশ আমল–বর্তমান
প্রধান সংযোগস্থল
পশ্চিম প্রান্ত:কলকাতা, ভারত
প্রধান সংযোগস্থলদমদম, বারাসাত, হাবড়া, বনগাঁ, পেট্রাপোল, বেনাপোল, সারসা, ঝিকরগাছা
পূর্ব প্রান্ত:যশোর, বাংলাদেশ
বাংলাদেশে যশোর রোড
বনগাঁর কাছে যশোর রোড

ইতিহাস

এই মহাসড়কটি নাম বাংলাদেশের যশোর জেলা বা যশোর এলাকার নাম থেকে নেওয়া হয়েছে। কারণ এই মহাসড়কটি ঐতিহাসিক ভাবে কলকাতা থেকে যশোর পর্যন্ত বিস্তৃত। ব্রিটিশ ভারত এ অবিভক্ত বাংলার প্রথম জেলা যশোর এর সাথে ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতার যোগাযোগ সহজ করার জন্য ব্রিটিশ ভারতীয় সরকার এই রাস্তা নির্মাণ করেন। পরে যশোর সেনানিবাস স্থাপিত হলে এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রয়েল বিমান বাহিনী জাপানি আগ্রাসন রুখতে যশোর বিমানবন্দর নির্মাণ করলে যশোর রোড এর গুরুত্ব আরও বহু গুন বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক স্থল বাণিজ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক এই যশোর রোড ।

যশোর রোড দমদম এর অংশ।

বর্তমানেও যশোর রোড বলতে দমদম থেকে বাংলাদেশের এর যশোর শহর পর্যন্ত মহাসড়ককে বোঝায়।[2]

সম্প্রসারণ

বাংলাদেশ

বাংলাদেশের গদখালী এর কাছে যশোর রোড
বেনাপোল শহরের প্রবেশ মুখের যশোর রোড

বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহাসড়কটি অধিক গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার সড়কটির দুই পাশে বর্ধিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং মন্ত্রীসভায় যশোর রোড এ অবস্থিত প্রায় দুইশ বছরের পুরোনো গাছ কেটে বর্ধিত করার জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় কিন্তু প্রকৃতিপ্রেমি ও যশোর জেলার সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ শুরু করে যা সারা দেশে ছড়িয়ে পরে এবং সরকার এই গন বিক্ষোভ এর মুখে প্রকল্প স্থগিত করে পরে সরকার জনগণের দাবি মেনে গাছ রেখে রাস্তা বর্ধিত করার উদ্যোগ নেয় । যা বর্তমানে চলমান অবস্থায় আছে। তবে আশা করা যায় আর কিছু বছরের মধ্যে বাংলাদেশ অংশের বর্ধিত করন সম্পন্ন হবে।।

ভারত

দমদমে যশোর রোড ও বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ে এর ক্রসিং

বারাসত থেকে বনগাঁ পর্যন্ত যশোর রোড সম্প্রসারণে সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। প্রশাসন সূত্রের খবর, পরিকল্পনা রূপায়ণের নকশা তৈরি করতে আজ, শুক্রবার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন, স্থানীয় পুরসভা ও পঞ্চায়েত সমিতির প্রতিনিধিরা বৈঠকে করেছেন। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সুপারিন্টেনডিং ইঞ্জিনিয়ার রাজীব চট্টরাজের অধিনে , ‘‘রাস্তা সম্প্রসারণে সমীক্ষা চলছে।’’ বারাসতের ডাকবাংলো মোড় থেকে বনগাঁর পেট্রাপোল সীমান্ত পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ যশোর রোড (৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক) সম্প্রসারণ করে চার লেন করা হবে। এ ব্যাপারে শাসক দলের জেলা নেতা ও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, রাস্তার কাজ নির্বিঘ্নে এবং দ্রুত শেষ করতে হবে। সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ পরিকল্পনা করেছে যেখানে রাস্তাটির উপর রেলগেট রয়েছে যেমন বারাসতের কাজীপাড়া, অশোকনগর, হাবড়া এবং বনগাঁয় এই সমস্ত রেল গেটের স্থানে উড়ালপুল নির্মাণ করা হবে। কারা এই কাজ করবে, দরপত্র ডেকে তা-ও চূড়ান্ত হয়েছে।

চাঁদপাড়ার কাছে যশোর রোড

কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ৯ কিলোমিটার যাওয়ার পরে বারাসতের ডাকবাংলো মোড়ে যশোর রোড দু’ভাগ হয়ে গিয়েছে। এক দিক চলে গিয়েছে ডালখোলা হয়ে উত্তরবঙ্গে, যার পোশাকি নাম ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। অন্যটি যশোর রোড নামেই (৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক) চলে গিয়েছে বনগাঁর পেট্রাপোলে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত। বর্তমানে অনেক বাধা-নিষেধ পেরিয়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চালু হয়েছে। এ বার ৩৫ নম্বর সম্প্রসারণে হাত দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতিবেশী দেশ ভারতে এই পথ দিয়েই পাড়ি জমিয়েছিল । এছাড়া এই সড়ক ও সড়কের গাছের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক ১৭৪ বছরের ।

দমদমে যশোর রোড

এই সড়ক সম্পর্কে বিদেশী কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ লিখেছেন তাঁর সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড

আরো দেখুন

সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড

তথ্যসূত্র

  1. "যশোর রোডের অবস্থান"। সংগ্রহের তারিখ ২৩-১২-২০১৬ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  2. "যশোর রোডের প্রাচীন গাছের ছায়ায় ছায়ায় সত্তর কিমি সাইকেল যাত্রা"। সংগ্রহের তারিখ ২৩-১২-২০১৬ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.