মোহাম্মদ লনি মিয়া দেওয়ান
মো. লনি মিয়া দেওয়ান (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৪) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।[1]
মো. লনি মিয়া দেওয়ান | |
---|---|
![]() | |
মৃত্যু | ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৪ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | ![]() ![]() |
পরিচিতির কারণ | বীর প্রতীক |
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
মো. লনি মিয়া দেওয়ানের জন্ম লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার দেবীপুর গ্রামে। তার বাবার নাম বছির উদ্দিন এবং মায়ের নাম ময়না বেগম। তার স্ত্রীর নাম ফুল বানু। তার চার ছেলে, দুই মেয়ে। [2]
কর্মজীবন
ইপিআরে চাকরি করতেন মো. লনি মিয়া দেওয়ান । ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন চট্টগ্রাম ইপিআর সেক্টরে। হেডকোয়ার্টার কোম্পানির একটি প্লাটুনের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যুদ্ধে যোগ দেন। চট্টগ্রামে প্রতিরোধ যুদ্ধ শেষে যুদ্ধ করেন ১ নম্বর সেক্টরে। বিভিন্ন যুদ্ধে দলনেতা হিসেবে তিনি বীরত্ব প্রদর্শন করেন।
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে চট্টগ্রামের অন্তর্গত পাহাড়তলীসহ চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। পাহাড়তলীর যুদ্ধ এর মধ্যে অন্যতম। এ যুদ্ধের বর্ণনা আছে সুকুমার বিশ্বাসের মুক্তিযুদ্ধে রাইফেলস ও অন্যান্য বাহিনী বইতে। অধিনায়কের নির্দেশ পেয়ে মো. লনি মিয়া দেওয়ান সহযোদ্ধাদের নিয়ে প্রতিরক্ষা অবস্থান নিলেন। যেকোনো সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাঁদের আক্রমণ করতে পারে। রাতে পাকিস্তানিরা আক্রমণ করল। সহযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে মো. লনি মিয়া দেওয়ান পাকিস্তানি আক্রমণ সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে থাকলেন। সারা রাত যুদ্ধ চলে। পাঁচলাইশ থানায় অবস্থানরত লনি মিয়া দেওয়ান ২৫ মার্চে রাত ১১টায় রফিকুল ইসলামের, বীর উত্তম নির্দেশক্রমে অবাঙালিদের বন্দী করে তার প্লাটুন নিয়ে পাহাড়তলী স্টেশনে এসে পৌঁছান। ২৬ মার্চ রাতে লনি মিয়া নির্দেশ পেয়ে স্টেশন থেকে প্লাটুন উঠিয়ে পাহাড়তলী রেলওয়ে বিল্ডিংয়ে ডিফেন্স নিলেন। রাত ১০টায় এই প্লাটুনটির ওপর যুদ্ধজাহাজ এন এস জাহাঙ্গীর থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ব্যাপকভাবে গোলা নিক্ষেপ করতে থাকে। ইপিআর বাহিনী যথোচিত জবাব দিতে থাকে এবং সারা রাত উভয় পক্ষের গোলাগুলি বিনিময় হয়। গোলাগুলিতে ইপিআর বাহিনীর অ্যামুনিশন প্রায় নিঃশেষ হয়ে এসেছিল। আর পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের আক্রমণের মাত্রা তীব্র থেকে তীব্রতর করল। অব্যাহত আক্রমণে ইপিআর বাহিনীর পক্ষে টিকে থাকা দুরূহ হয়ে ওঠে। এমতাবস্থায় রফিকুল ইসলামের নির্দেশক্রমে প্লাটুনটি সেখান থেকে কোতোয়ালী এলাকাতে সরে আসে। [3]
পুরস্কার ও সম্মাননা
তথ্যসূত্র
- দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ০৫-০২-২০১২
- একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৪৪১। আইএসবিএন 9789843351449।
- একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা (দ্বিতীয় খন্ড)। ঢাকা: প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা ২৯৮। আইএসবিএন 9789849025375।
পাদটীকা
- এই নিবন্ধে দৈনিক প্রথম আলোতে ১৩-০২-২০১২ তারিখে প্রকাশিত তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না প্রতিবেদন থেকে লেখা অনুলিপি করা হয়েছে। যা দৈনিক প্রথম আলো ক্রিয়েটিভ কমন্স অ্যাট্রিবিউশন-শেয়ার-এলাইক ৩.০ আন্তর্জাতিক লাইসেন্সে উইকিপিডিয়ায় অবমুক্ত করেছে (অনুমতিপত্র)। প্রতিবেদনগুলি দৈনিক প্রথম আলোর মুক্তিযুদ্ধ ট্রাস্টের পক্ষে গ্রন্থনা করেছেন রাশেদুর রহমান (যিনি তারা রহমান নামেও পরিচিত)।