মোহাম্মদ জাকারিয়া
মোহাম্মদ জাকারিয়া ( ২২ ফেব্রুয়ারি,১৯২৩ - ৪ এপ্রিল,১৯৯৩) শক্তিমান বাঙালি অভিনেতা ও টেলিভিশন প্রযোজক।[1]
জন্ম
তিনি ১৯২৩ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার সেকেড্ডা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মোহাম্মদ আলি।[1]
শিক্ষা জীবন
শৈশব থেকেই কোরান তেলাওয়াত শিখেছিলেন। জন্ম স্থানের একটি মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। পিতার ইচ্ছা ছিল তাঁকে তিনি কোরানে হাফিজ করে তুলবেন। কিন্তু মায়ের ইচ্ছায় মল্লারপুর ইংরেজি স্কুল এ ভর্তি হন। পরে বীরভূম জেলার সিনিয়র বেণীমাধব ইন্সটিটিউশনে ভর্তি হয়ে সেখান থেকেই ম্যাট্রিক পাশ করেন। আই এ ক্লাসে ভর্তি হন হেতমপুর কলেজে।[1]
কর্মজীবন
শিক্ষাজীবনের ইতি ঘটিয়ে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে চাকুরি গ্রহণ করেন। ওই অফিসের সহকর্মী অশোক মজুমদার ও অমর গাঙ্গুলির উৎসাহে শম্ভু মিত্রের সাথে তার যোগাযোগ ঘটে। শম্ভু মিত্র প্রযোজিত বিজন ভট্টাচার্যের "নবান্ন" নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিনেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি বহুরূপী নামে একটি নতুন নাট্যসংস্থার গঠনেও সবিশেষ উদ্যোগী ভূমিকা পালন করেন। এই নাট্যদলের সঙ্গে তিনি দিল্লি ও ঢাকায় নাট্যসফরে যান এবং এই নাট্যদলে অভিনয় করার মাধ্যমেই সমগ্র ভারতে খ্যাতি লাভ করেন। ১৯৬১ সালে তিনি কলিকাতার থিয়েটার সেন্টার নাট্যদলে অভিনেতা ও নাট্যশিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। থিয়েটার সেন্টারে 'অঘটন আজও ঘটে' নাটকে তার অভিনয় দেখে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে সোনার আংটি উপহার দেন। ১৯৬৪ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (অধুনা বাংলাদেশে) চলে গিয়ে জহির রায়হানের সঙ্গে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন।[1] ১৯৬৬ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি ঢাকা টেলিভিশনের প্রযোজক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭২ সালে তিনি যোগ দেন দেশের বিখ্যাত নাট্যগোষ্ঠী থিয়েটার-এ। এই দলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিও তিনি। ১৯৮১ সালে তিনি টেলিভিশনের সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
অভিনীত নাটক
|
|
|
অভিনীত চলচ্চিত্র
- পথিক
- বাহানা
- বেগানা
- বেহুলা
পুরস্কার ও সম্মাননা
- একুশে পদক (১৯৮১)
- শিল্পকলা একাডেমী পুরস্কার
- মুনীর চৌধুরী সম্মান পদক
- টেনাশিসাস পুরস্কার
থিয়েটার নাট্যগোষ্ঠী তার স্মরণে ১৯৯৭ সালে ‘মোহাম্মদ জাকারিয়া স্মৃতিপদক’ প্রবর্তন করে
মৃত্যু
মোহাম্মদ জাকারিয়া ১৯৯৩ সালের ৪ঠা এপ্রিল প্রয়াত হন।
তথ্যসূত্র
- অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি,২০১৯ পৃষ্ঠা ৩২৪, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬