মোহনচূড়া
মোহনচূড়া (ইংরেজি: Hoopoe; বৈজ্ঞানিক নাম Upupa epops) বাংলাদেশের একটি বিরল পাখি। তবে এশিয়া ও ইউরোপে এটি প্রচুর দেখা যায় এবং এটি বিলুপ্তির শংকামুক্ত। এর অনেকগুলো উপপ্রজাতি রয়েছে। সেইন্ট হেলেনা প্রজাতিটি সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়েছে। এর অন্যান্য নাম হুদহুদ, কাঠঠোকরা, কাঠকুড়ালি ইত্যাদি। পাখিটির নামকরণ 'মোহনচূড়া' দিয়েছেন কথাসাহিত্যিক বনফুল। এটি 'Upupidae' পরিবারের অন্তর্ভুক্ত একটি পাখি। এই পাখি দেখতে অত্যন্ত সুন্দর, এর ঝুঁটি ও পাখার সৌন্দর্য একে বিশেষায়িত করেছে।
মোহনচূড়া, হুদহুদ, কাঠঠোকরা | |
---|---|
![]() | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | পক্ষী |
বর্গ: | Coraciiformes |
পরিবার: | Upupidae Leach, 1820 |
গণ: | Upupa Linnaeus, 1758 |
প্রজাতি: | ইউ. এপপস্ |
দ্বিপদী নাম | |
উপুপা এপপস্ Linnaeus, 1758 | |
![]() | |
আনুমানিক পরিসীমা। nesting resident (all year) wintering |
বর্ণনা
মোহনচূড়া পাখি ২৫-৩২ সে.মি লম্বা পর্যন্ত লম্বায় হয়। বাদামি শরীর, ডানা ও লেজে সাদা ও কালো দাগ আছে। এর ঠোঁট দীঘল ও কিছুটা বক্র, রং কালচে লম্বা। মাথায় একটি সুন্দর ঝুঁটি আছে,ঝুঁটি দেখতে হলদে বর্ণ। উত্তেজিত হলে পাখিটি ঝুঁটি প্রসারিত করে। বাদামি পালকের মাথাটা কালো।
বৈশিষ্ট্য
এটি মেঠো পাখি, গ্রামে ঘরবাড়ির আঙ্গিনায় দেখতে পাওয়া যায়। বাসা করে গাছের কোটরে, পুরনো দেয়ালের ফাঁক-ফোঁকরে।
খাদ্য
বিভিন্ন কীট-পতঙ্গ, কেঁচো, বিভিন্ন ফল। লম্বা ঠোঁট মাঠের গর্তে ঢুকিয়ে পোকামাকড় বের করে এনে খায়। অভিনব কায়দায় উঁইপোকা বের করে আনে ওরা। উঁইয়ের বাসা বা গর্তে লম্বা ঠোঁট ঢুকিয়ে দেয়। উঁইরা ঠোঁট বেয়ে ওঠে। ঠোঁট বেরিয়ে মাটিতে ঠোকরায়। উঁইয়েরা পড়ে ঝরে। টপটপ গেলে আবারও ঢোকায় ঠোঁট।
বংশবৃদ্ধি
![](../I/Huppe_fasci%C3%A9e_MHNT_ZOO_2010_11_161_Ouzouer-sur-Tr%C3%A9z%C3%A9e.jpg.webp)
এ পাখিটির প্রজনন মৌসুম বৎসরের মার্চ থেকে জুন। বাসা বানিয়ে ডিম দেয় ৪-৫টি। গোলাকার ধরনের। রং সাদা। স্ত্রী পাখি ডিমে ১৮-২০ দিন তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায়। সদ্যোজাত ছানাদের রঙ কিছুটা বাদামি। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পালক থাকে শরীরে।
মানুষের সাথে সম্পর্ক
ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে এটি ফসলের জন্য উপকারি পাখি হিসেবে সমাদৃত। তাই অনেক দেশে আইন করে একে রক্ষা দেয়া হয়েছে। মানব সভ্যতার বিভিন্ন যুগের সংস্কৃতিতে একে সম্পৃক্ত হতে দেখা যায়। প্রাচীন মিসরে একে পবিত্র জ্ঞান করা হত। বাইবেল ও কুরআনে এই পাখির উল্লেখ আছে। কুরআনের সুরা নামলের ২০-২২ নং আয়াতে বলা হয়েছে, একটি হুদহুদ পাখি নবী হযরত সুলাইমান -এর পোষা ছিল এবং এর কাজ ছিল বিভিন্ন স্থান থেকে খবরাখবর সংগ্রহ করে নবীকে জানানো। নবী হজরত সুলাইমান (দঃ) এই পাখির দ্বারা ভূগর্ভস্থ জল ও আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহ করতেন। প্রাচীন পারস্যে এই পাখিকে সততার প্রতীক হিসেবে দেখা হত। তবে ইউরোপে একে চোর হিসেবে গণ্য করা হত। এস্তোনিয়ায় একে মৃত্যুর প্রতীকরূপে দেখা হয়।
তথ্যসূত্র
- Birdlife International (২০০৮)। [[[:টেমপ্লেট:IUCNlink]] "Upupa epops"]
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রু ২০০৯।
বহিঃসংযোগ
![](../I/Commons-logo.svg.png.webp)
- Ageing and sexing (PDF) by Javier Blasco-Zumeta
- Hoopoe videos, photos & sounds on the Internet Bird Collection