মোরাভিয়া
মোরাভিয়া (চেক ও স্লোভাক ভাষায়: Morava; জার্মান ভাষায়: Mähren) চেক প্রজাতন্ত্রের একটি ঐতিহাসিক অঞ্চল। অঞ্চলটির উত্তর-পশ্চিমাংশে উৎপত্তি লাভকারী মোরাভা নদী থেকে এর নাম এসেছে। মোরাভিয়ার পশ্চিমে বোহেমিয়া, এবং উত্তরে সাইলেসিয়া নামের অন্য দুইটি ঐতিহাসিক চেক অঞ্চল অবস্থিত। বোহেমিয়া ও চেক সাইলেসিয়া নিয়ে মোরাভিয়া গোটা চেক প্রজাতন্ত্র গঠন করেছে। পূর্বে ক্ষুদ্র ও শ্বেত কার্পেথীয় পর্বতমালা মোরাভিয়াকে স্লোভাকিয়া থেকে পৃথক করেছে। মধ্য মোরাভিয়া মোরাভা নদী ও তার উপনদীসমূহের বিধৌত উর্বর উপত্যকা ও কৃষি অঞ্চল; এটি দক্ষিণে অস্ট্রিয়ার দিকে উন্মুক্ত। মোরাভিয়ার প্রধান শহরগুলির মধ্যে আছে ব্যর্নো, অল্মুট্স, মোরাভ্স্কা, অস্ত্রাভা, ও ম্লিন।
ইতিহাস
মোরাভীয়রা মূলত পশ্চিম স্লাভদের শাখা জাতি। এরা চেক ভাষার বিভিন্ন উপভাষায় কথা বলে। আনুমানিক খ্রিস্টীয় ৬ষ্ঠ শতকে তারা এই অঞ্চলে বসবাস করা শুরু করে। ৯ম শতকের সময় মোরাভিয়ার ডিউকেরা বোহেমিয়া, সাইলেসিয়া, দক্ষিণ পোল্যান্ড ও উত্তর হাঙ্গেরি নিয়ে একটি সাম্রাজ্যের শাসক হন। ৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে সাধু সিরিল ও মেথোডিয়াস এখানে খ্রিস্টধর্ম প্রবর্তন করেন। ১০ম শতকে এই সাম্রাজ্যটি খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে হাঙ্গেরির মজরদের (Magyar) দখলে আসে। ৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট প্রথম অটো মজরদের পরাজিত করেন, ফলে মোরাভিয়া পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের সীমান্তবর্তী একটি প্রদেশে পরিণত হয়। ১১শ শতক থেকে অঞ্চলটি বোহেমিয়ার রাজার দখলকৃত সম্পত্তিতে পরিণত হয়। ১৩শ শতকের পর অঞ্চলটিতে জার্মান সংস্কৃতি প্রভাব ফেলতে থাকে, তবে পল্লী অঞ্চলে চেক প্রভাব রয়ে যায়। ১৫২৬ সালে এটি হাব্সবুর্গ রাজবংশের শাসনাধীনে আসে এবং ১৯১৮ সালে ১ম বিশ্বযুদ্ধ শেষে চেকোস্লোভাকিয়ার অংশে পরিণত হয়। ১৯২৭ সালে মোরাভিয়া ও চেক সাইলেশিয়া একটি প্রদেশে পরিণত হয় এবং এর নাম ছিল মোরাভিয়া ও সাইলেসিয়া প্রদেশ। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে মিউনিখ চুক্তির শর্ত অনুসারে চেক সাইলেসিয়া ও মোরাভিয়ার অংশবিশেষ জার্মানির দখলে চলে যায়। ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত মোরাভিয়া ও সাইলেসিয়া ছিল জার্মানির আশ্রিত রাজ্য। ২য় বিশ্বযুদ্ধ শেষে অঞ্চলগুলি ১৯৩৮-এর সীমানায় ফেরত যায় এবং অধিকাংশ জার্মানভাষীদের এঅঞ্চল থেকে বিতাড়িত করা হয়। ১৯৪৯ সালে মোরাভিয়া ও সাইলেসিয়া প্রদেশ দুটিকে উঠিয়ে দিয়ে চারটি প্রশাসনিক অঞ্চলে ভাগ করা হয়। ১৯৬০ সালে আবার প্রশাসনিক পুনর্গঠন হয় এবং মোরাভিয়াকে উত্তর ও দক্ষিণ --- এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়।
তথ্যসূত্র
- Svoboda, Zbyšek; Fojtík, Pavel; Exner, Petr; Martykán, Jaroslav (২০১৩)। "Odborné vexilologické stanovisko k moravské vlajce" (পিডিএফ)। Vexilologie. Zpravodaj České vexilologické společnosti, o.s. č. 169। Brno: Česká vexilologická společnost। পৃষ্ঠা 3319, 3320। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- Pícha, František (২০১৩)। "Znaky a prapory v kronice Ottokara Štýrského" (পিডিএফ)। Vexilologie. Zpravodaj České vexilologické společnosti, o.s. č. 169। Brno: Česká vexilologická společnost। পৃষ্ঠা 3320–3324। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।