মৈদাম

মৈদাম হল আহোম জনগোষ্ঠীর লোকের পরম্পরাগত মৃতদেহ সংস্কার প্রথা। মৈদাম প্রথায় সৎকার করা মৃতের সমাধিকে মৈদাম বলে। আহোম রাজপরিবারের লোক এবং কর্মচারীদেরকে মৈদাম প্রথার মাধ্যমে সমাধিস্থ করা হত। আহোমরা হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করার পরে ধীরে ধীরে মৃতদেহ সংস্কারের এই প্রথা লোপ পায়।

শরাইদেউর মৈদাম

শিবসাগরের কাছের শরাইদেউয়ে আহোম যুগের ১৫০ টারও অধিক মৈদাম দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৩০ টা ভারতীয় পুরাতত্ত্ব অনুসন্ধান এবং অসম সরকারের পুরাতত্ত্ব বিভাগ দ্বারা সংরক্ষিত করা হয়েছে। যোরহাটে শেষ আহোম রাজা পুরন্দর সিংহ এবং শরাইঘাটের যুদ্ধের মূল অসমীয়া সেনাপতি লাচিত বরফুকনের মৈদাম আছে।

মীরজুমলার অসম আক্রমণের সময়ে এবং ইংরাে শাসনকালে মোগল এবং ইংরেজরা বহু মৈদামের ধন-সোনা লুট-পাট করে।

মৈদাম দেওয়ার প্রক্রিয়া

যোরহাটে থাকা শেষ আহোম স্বর্গদেউ পুরন্দর সিংহের মৈদাম। রাজার মৈদাম থাকার জন্য স্থানটি রাজামৈদাম হিসাবে পরিচিত।

মৈদাম প্রথায় মৃতদেহকে স্নান করিয়ে রুংডাং, অর্থাৎ কাঠ দিয়ে সাজানো একটি বিশেষধরনের শয্যার ভিতরে প্রবেশ করিয়ে রাখা হয়। রুংডাং পোতা স্থানে একটি ঘর তৈরি করা হয়। একে রুংডাং কারেং বলে।[1] এর ভিতরে মৃতের জীবিতকালে ব্যবহার করা সামগ্রীসমূহ, যেমন: শালপীরা, হেংদাং, শরা, কাটারী, চূণের টেমী ইত্যাদি, রাখা হয়। শেষে একে নিয়ে এসে মাটির এক অনুচ্চ দৌল সাজানো হয়। এই দৌলটির ওপরভাগকে চাও চালি বলা হয়। মৈদামের ভিতরকে একটি বা ততোধিক ভাগে ভাগ করা যায়।[2] চাং রুং ফুকনের বুরঞ্জীতে মৈদামের গঠন প্রণালীর বিবরণ আছে।[3]

ভারতীয় পুরাতত্ত্ব অনুসন্ধানে চালানো খননকার্যে মৈদামের ভিতরভাগে হাতীদাঁত এবং কাঠের সামগ্রীর অবশিষ্টাংশ উদ্ধার হয়েছে।[2]

তথ্যসূত্র

  1. "বর্ণময় আহোম যুগর মৈদাম প্রথার কিছু আলোকপাত এবং আহোমসকলর বর্তমান অবস্থা"। খ্বন মৌঙ। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫
  2. "Group of Maidams, Chararideo"। Archaeological Survey of India। ১০ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫
  3. লীলা গগৈ (১৯৯৪)। টাই সংস্কৃতির রূপরেখা। বনলতা। পৃষ্ঠা 143–146। আইএসবিএন 81-7339-079-7।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.