মুহাম্মদ মিয়াঁ মনসুর আনসারি
মুহাম্মদ মিয়াঁ মনসুর আনসারি (উর্দু: مولانا محمد میاں منصور انصاری) (১০ই মার্চ ১৮৮৪ - ১১ জানুয়ারী ১৯৪৬) ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা এবং রাজনৈতিক কর্মী। তিনি ১৮৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত দারুল উলুম দেওবন্দের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ কাসিম নানুতভির নাতি ছিলেন।[1] মাহমুদ হাসান দেওবন্দির পাশাপাশি তিনি ব্রিটিশ রাজের বিরূদ্ধে রেশমি রুমাল আন্দোলনের অন্যতম সূচনাকারী ছিলেন।[2]
মুহাম্মদ মিয়াঁ মনসুর আনসারি محمد میاں منصور انصاری | |
---|---|
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | ১৮৮৪ |
মৃত্যু | ১১ জানুয়ারি ১৯৪৬ ৬১–৬২) | (বয়স
ধর্ম | ইসলাম |
যুগ | ব্রিটিশ ভারত |
আন্দোলন | দেওবন্দি আন্দোলন |
দেওবন্দি আন্দোলন |
---|
সিরিজের অংশ |
|
জীবনী
তিনি সাহারানপুর ইউপির সম্ভ্রান্ত আনসারি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি আবদুল্লাহ আনসারির বাড়িতে তিনি বড় হন। মনসুর আনসারি দারুল উলুম দেওবন্দে ফিরে আসেন এবং ধীরে ধীরে পান-ইসলামী আন্দোলনে যুক্ত হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি অন্যতম দেওবন্দি নেতা মাহমুদুল হাসান দেওবন্দির রেশমি রুমাল আন্দোলনের কেন্দ্রীয় শক্তির সমর্থনের জন্য ভারত ত্যাগ করেছিলেন।[3]
রেশমি রুমাল আন্দোলন
এই আন্দোলনের চিঠিগুলি রেশম কাপড়ে লেখা হত, তাই এর নাম রেশমি রুমাল আন্দোলন। এই আন্দোলনের অন্যতম নায়ক হলেন মাওলানা মুহাম্মদ মিয়াঁ মনসুর আনসারি। তিনি ১৯১৫ সালের সেপ্টেম্বরে মাওলানা মাহমুদুল হাসানের সাথে হেজাজে গিয়ে জামায়াতের কোষাধ্যক্ষ হিসাবে কাজ করেন।। ১৯১৬ সালের এপ্রিল মাসে তিনি গালিব নামা (রেশমি চিঠি) নিয়ে ভারতে ফিরে এসেছিলেন, যা তিনি ভারত ও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রদান করেছিলেন এবং তা ১৯১৬ সালের জুনে আফগানিস্তানের কাবুলে নিয়ে যান।[3][4]
পরবর্তি জীবন
মনসুর আনসারি আফগান আমির হাবিবুল্লাহ খানের সমাবেশে যোগদান করতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় কাবুলে যান। ১৯১৫ সালের ডিসেম্বরে তিনি কাবুলে গঠিত অস্থায়ী সরকারে যোগ দিয়েছিলেন এবং যুদ্ধের শেষ অবধি আফগানিস্তানে থেকে যান। তিনি রাশিয়া ভ্রমণ করেছিলেন এবং দু'বছর তুরস্কে কাটিয়েছেন। অন্যান্য অনেক দেশেও তিনি অবস্থান করেছেন।
তিনি ছিলেন মূলত দারুল উলূম দেওবন্দের আলেমদের নেতৃত্বে পরিচালিত ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সক্রিয় এবং শীর্ষস্থানীয় সদস্য ছিলেন।[3]
১৯৪৬ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস তাকে ভারতে ফিরে আসার অনুরোধ জানায় এবং ব্রিটিশ সরকার তাকে আসার অনুমতি দেয়। তবে তিনি কাবুলেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কেননা সেখানে তিনি তাফসিরে শাইখ মাহমুদুল হাসান দেওবন্দি (যা কাবুলী তাফসীর নামে পরিচিত) শেখানো এবং অনুবাদ শুরু করেন।
মৃত্যু
১৯৪৬ সালে মুহাম্মদ মিয়াঁ মনসুর আনসারি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ১৯৪৬ সালের ১১ জানুয়ারি আফগানিস্তানের নঙ্গরহার প্রদেশের জালালাবাদে মৃত্যুবরণ করেন এবং সেখানে সমাহিত হন।[1]
তথ্যসূত্র
- Ahmed, Faiz (২০১৭-১১-০৬)। Afghanistan Rising (ইংরেজি ভাষায়)। Harvard University Press। আইএসবিএন 978-0-674-98216-1।
- "Heritage Times - Silk Letter Movement : A freedom struggle woven in silk"। Heritage Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৯-০৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-৩১।
- "Freedom Fight"। www.darululoom-deoband.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-২৪।
- Silk Letter Movement on deoband.com website ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ আগস্ট ২০১৯ তারিখে Retrieved 28 August 2019
- রিজভী, সাইয়েদ মাহবুব। মুরতাজ হুসাইন এফ কুরাইশী কর্তৃক অনুদিত দারুল উলুম দেওবন্দের ইতিহাস। পৃষ্ঠা ৬২–৬৪।