মুজিবুল হক (সচিব)

মোঃ মুজিবুল হক (১৯৩০ - ১২ জানুয়ারি ২০১৪)[1] হলেন বাংলাদেশের একজন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এবং নাগরিক অধিকার নেতা। সরকারি চাকরিতে এবং নাগরিক অধিকার রক্ষায় অনন্য সাধারণ অবদানের জন্য ২০০৫ সালে তাকে “সমাজসেবায় স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয়।[2]

মোঃ মুজিবুল হক
৬ষ্ঠ মন্ত্রিপরিষদ সচিব
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ
কাজের মেয়াদ
২৩ নভেম্বর ১৯৮৬  ৩১ ডিসেম্বর ১৯৮৯
রাষ্ট্রপতিহুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ
পূর্বসূরীএম মহবুবউজ্জামান
উত্তরসূরীএম কে আনোয়ার
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম৩১ ডিসেম্বর ১৯৩০
ঝালকাঠি মহকুমা, বাকেরগঞ্জ জেলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সী
মৃত্যু১২ জানুয়ারী ২০১৪
ঢাকা
সমাধিস্থলবনানী কবরস্থান, বনানী, ঢাকা
জাতীয়তাবাংলাদেশী
দাম্পত্য সঙ্গীআরশেদা হক (মৃত্যু ২৮ জুলাই ২০২০)
পেশাসরকারি চাকরি
পুরস্কারস্বাধীনতা পুরস্কার (২০০৫)

জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতি

শেখ মোহাম্মদ মুজিবুল হক ১৯৩০ খ্রীষ্টাব্দে তৎকালীন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির বাকেরগঞ্জ জেলার ঝালকাঠি মহকুমার একটি সম্ভ্রান্ত বাঙ্গালী মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, যারা ভারুকাঠির মজুমদার গোষ্ঠীর “গাভার শেখ বংশ” হিসাবে পরিচিত। তাঁর পূর্বপুরুষ রাম জীবন দাশগুপ্ত বিক্রমপুর হতে বৃহত্তর বরিশালের ভারুকাঠি গাঁওয়ে বসবাস শুরু করেন। দাশগুপ্তের বড় ছেলে রাম গোপাল দাশগুপ্ত চন্দ্রদ্বীপ রাজদরবারে দেওয়ানীর চাকরী পেয়েছিলেন এবং মজুমদার খেতাব অর্জন করেন। রাম গোপাল দাশগুপ্ত চাখারের নিকট বানারীপাড়া রাস্তার পাশে গুয়াচিত্রা দীঘিটি খনন করেন। মজুমদার গোষ্ঠীর আওলাদ-ফরজন্দ থেকে শেখ ইব্রাহীম ইসলাম গ্রহণ করেন এবং মোগল আমলে চন্দ্রদ্বীপের ভূসম্পত্তি পেয়ে গাভা গাঁওয়ে বসতি স্থাপন করেন। গাভার শেখরা আঠারো শতাব্দীর শেষভাগে সমাজে প্রভাবশালী খান্দান বলে সর্দার হিসাবে পরিচিত হন। মুজিবুল হকের বংশলতিকা হল: শেখ মোহাম্মদ মুজিবুল হক ইবনে শেখ মোবারক উদ্দীন ইবনে শেখ মফিজ উদ্দীন ইবনে শেখ কাসাই ইবনে শেখ ছুট ইবনে শেখ চান ইবনে শেখ আজম ইবনে শেখ পাঞ্জু ইবনে শেখ গরীব ইবনে শেখ ইব্রাহীম।[3]

ভাষা আন্দোলনে অবদান

মুজিবুল হক ১৯৫২ সালে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের তৎকালীন ভিপি হিসাবে বাংলা ভাষা আন্দোলনের সাথে সরাসরি জড়িত থাকায় গ্রেফতার হয়ে জেলও খেটেছেন।[4] ১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা জারির প্রেক্ষিতে আবুল হাশিমের সভাপতিত্বে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের সভায় তিনিও উপস্থিত ছিলেন এবং পরের দিন ২১ ফেব্রুয়ারির রক্তাক্ত ঘটনায় তিনি পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শিকার হন।[1]

কর্মজীবন

তিনি বাংলাদেশ সরকারের একাধিক মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[5]

মৃত্যু

তিনি ২০১৪ সালে ১২ জানুয়ারি তারিখে ৮৪ বছর বয়সে ঢাকার বারডেম কার্ডিয়াক সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।[1]

পুরস্কার ও সম্মননা

সরকারি চাকরিতে এবং নাগরিক অধিকার রক্ষায় অসাধারণ অবদানের জন্য ২০০৫ সালে দেশের “সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার”[6][7][8] হিসাবে পরিচিত “স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয় তাকে।[2]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মুজিবুল হক আর নেই"দৈনিক প্রথম আলো অনলাইন। ১৩ জানুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০১৭
  2. "স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের তালিকা"মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ০৯ অক্টোবর ২০১৭ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  3. সিরাজ উদদীন আহমেদ (২০১০)। "ভারুকাঠির জমিদার মজুমদার পরিবার"। বরিশাল বিভাগের ইতিহাসঢাকা: ভাস্কর প্রকাশনী।
  4. "মারা গেছেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মুজিবুল হক"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম অনলাইন। ১২ জানুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০১৭
  5. "এম মুজিবুল হক"দৈনিক বণিক বার্তা অনলাইন। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০১৭
  6. সানজিদা খান (জানুয়ারি ২০০৩)। "জাতীয় পুরস্কার: স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার"। সিরাজুল ইসলাম[[বাংলাপিডিয়া]]ঢাকা: এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশআইএসবিএন 984-32-0576-6। সংগ্রহের তারিখ ০৯ অক্টোবর ২০১৭স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য); ইউআরএল–উইকিসংযোগ দ্বন্দ্ব (সাহায্য)
  7. "স্বাধীনতা পদকের অর্থমূল্য বাড়ছে"কালেরকন্ঠ অনলাইন। ২ মার্চ ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৭
  8. "এবার স্বাধীনতা পদক পেলেন ১৬ ব্যক্তি ও সংস্থা"এনটিভি অনলাইন। ২৪ মার্চ ২০১৬। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৭

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.