মুঘল সম্রাট

মুঘল সম্রাটরা, ১৬ শতকের শুরু থেকে ১৯ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশে মুঘল সাম্রাজ্যের সম্প্ররসারণ করেন। তাদের সাম্রাজ্য মূলত আধুনিক ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ নিয়ে গঠিত ছিল। মুঘলরা মধ্য এশিয়ার তৈমুর বংশের উত্তর পুরুষ। এই সাম্রাজ্য ১৮ শতকে দুর্বল হয়ে পড়ে। ব্রিটিশ শাসকর কর্তৃক ১৮৫৭ সালে সর্বশেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ কে ক্ষমতাচ্যুত করার মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের অবসান ঘটে। [1] মুঘলরা একই সাথে তৈমুর লং এবং চেঙ্গিস খানের বংশধর ছিলেন। মুঘলদের ভিতরে বেশ কিছু সংখ্যক রাজপুত এবং পারস্যদেশীয় সদস্য ছিল। কারণ অনেক মুঘল সম্রাট পারস্যদেশীয় রাজকন্যা অথবা রাজপুত রাজকন্যাদের গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।[2][3] শুধুমাত্র মুঘল সম্রাট বাবর এবং হুমায়ুন ছিলেন প্রকৃত মধ্য এশীয়। আকবর ছিলেন অর্ধেক ইরানি কারণ তার মা ছিলেন পারস্য বংশোদ্ভূত। জাহাঙ্গীর ছিলেন একজন অর্ধ রাজপুত এবং আংশিক পারস্যদেশীয়। সম্রাট জাহাঙ্গীর ছিলেন এক তৃতীয়াংশ রাজপুত।[4] তারা ভারতীয় উপমহাদেশের একটি বিরাট অংশ জুড়ে তাদের সাম্রাজ্যর বিস্মৃত ছিল। তাদের সাম্রাজ্যের পরিধি বাংলা থেকে কাবুল এবং পশ্চিমের সিন উত্তরের কাশ্মীর এবং দক্ষিণে কাবেরী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।[5] সেই সময় এই বিশাল এলাকার জনসংখ্যা ছিল ১১০ থেকে ১৫০ মিলিয়ন। এই জনসংখ্যা তখনকার পৃথিবীর এক চতুর্থাংশ। মুঘল সম্রাট সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি ছিল ৪ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার অথবা ১.২ মিলিয়ন বর্গ মাইল। [6]

হিন্দুস্তানের বাদশাহ(রাজা)
প্রাক্তন রাজতন্ত্র
দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ
প্রথম সম্রাট বাবর
শেষ সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ
সম্বোধন জাঁহাপনা, বাদশাহ নামদার
সরকারি আবাস লাল কেল্লা
নিয়োগকর্তা বংশানুক্রমিক
রাজতন্ত্রের সূচনা ৩০ এপ্রিল ১৫২৬
রাজতন্ত্রের সমাপ্তি ১৪ সেপ্টেম্বর ১৮৬১
বর্তমান ধারক জাভেদ জাহ বাহাদুর
১৭০০ সালে মুঘল সাম্রাজ্যের মানচিত্র.

মুঘল সাম্রাজ্য

মুঘলদের বংশ তালিকা। শুধুমাত্র সম্রাটদের প্রধান সন্তানদের উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রথম মুঘল সম্রাট বাবর তার পিতার দিক থেকে সরাসরি তৈমুর লং এর বংশধর ছিলেন। এবং মাতার দিক থেকে তিনি চেঙ্গিস খানের বংশধর ছিলেন। [7] বাবর মাত্র ১৪ বছর বয়সে তার পিতার রাজ্য থেকে সেহবাণী খান কর্তৃক বিতাড়িত হবার পর ভারতে আগমন করেন। ১৫২৬ সালে প্রথম পানিপথের যুদ্ধে জয় লাভ করার পর বাবর ভারতে তার রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে।[7] বাবরের পুত্র হুমায়ূনের সময় সাম্রাজ্যের অবস্থা বেশ নাজুক হয়ে পড়ে। বিদ্রোহীরা তাকে ভারতবর্ষ থেকে বিতাড়িত করে। তিনি পারস্যে পলায়ন করেন।[7] ইরানের হুমায়ুনের নির্বাসিত সময় পশ্চিম এশীয় সংস্কৃতির সাথে মুঘল দরবারে একটি যোগসূত্র স্থাপিত হয়। ১৫৫৫ সালে হুমায়ুন যুদ্ধ জয়ের মাধ্যমে ভারতে তার সাম্রাজ্যঃ পুনরুদ্ধার করেন। কিন্তু এর কিছুদিন পরই তিনি একটি মারাত্মক দুর্ঘটনায় মারা যান।[7] সম্রাট হুমায়ুনের শিশুপুত্র আকবর, বৈরাম খান নামে একজন উজিরের তত্বাবধানের সিংহাসনে আরোহণ করেন। সম্রাট বাবর এর আমলে ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য সু সংঘটিত হয়।[7] তিনি ভারতের একটি অনুগত সামরিক অভিজাত শ্রেণী তৈরী করতে পেরেছিলেন এবং একটি আধুনিক সরকার ব্যবস্থা প্রণয়ন করেছিলেন। বাবর এর আমলে ভারতে সাংস্কৃতিক বিকাশক ত্বরান্বিত হয়েছিল।[7] একইসাথে আকবর ইউরোপীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে ব্যবসা বৃদ্ধি করেছিলেন। আব্রাহাম ইরানি নামে একজন ভারতীয় ঐতিহাসিক উল্লেখ করেন সেসময় বিদেশিরা মুঘল সাম্রাজ্যের জাঁকজমকপূর্ণ ঐশ্বর্য দেখে মুগ্ধ হত। সে সময় জাতীয় সম্পদের এক চতুর্থাংশের মালিক ছিল মাত্র ৬৫৫ টি পরিবার। যখন ভারতের ১২০ মিলিয়ন জনসংখ্যা একটি বড় অংশ দারিদ্র্যে নিমজ্জিত ছিল।[8] ১৫৭৮ সালে আকবর বাঘ শিকার করতে গিয়ে কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েন। ধারণা করা হয় তিনি মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সেই সময় ইসলাম ধর্মে তার মোহমুক্তি ঘটে। তিনি হিন্দু এবং ইসলাম ধর্মের মিশ্র একটি ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন।[9] আকবর ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং দ্বীন-ই-ইলাহী নাম একটি নতুন ধর্ম প্রতিষ্ঠা করেন।[7]

আকবরের পুত্র জাহাঙ্গীর মোগল সাম্রাজ্যকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যায়। তিনি আফিমে আসক্ত ছিলেন। মাঝেমধ্যে তিনি রাষ্ট্রীয় কাজে উদাসীনতার পরিচয় দিতেন। এক পর্যায়ে প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের শিকার হন।[7] জাহাঙ্গীরের পুত্র সম্রাট শাহজাহানের আমলে মুঘলরা অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ ও বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। তাজমহল সেসময়কার সবচেয়ে বড় উদাহরণ।[7] সে সময় সরকারের ব্যয়, আয় এর চাইতে অনেক বেশি ছিল।[7]

১৬৫৮ সালে শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারাশিকো রাজ শাসকের প্রতিনিধি হিসেবে ক্ষমতায় আরোহণ করে। শাহজাহানের অপর পুত্র আওরঙ্গজেব কিছু ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠীর সহায়তায় দিল্লির সিংহাসন দখল করেন। ১৬৫৯ সালে আওরঙ্গজেব তার ভাইকে যুদ্ধে পরাজিত করেন এবং মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।[7] যদিও শাহজাহান তখন সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন, তথাপি আওরঙ্গজেব তাকে অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে রাজকার্য পরিচালনা করার অযোগ্য ঘোষণা করে তাকে গৃহবন্দী করে রাখেন।

আরঙ্গজেব এর আমলে মুঘল সাম্রাজ্য রাজনৈতিকভাবে সুসংগঠিত এবং শক্তিশালী থাকলেও ধর্মীয় বিভেদ মুঘল সাম্রাজ্যের স্থায়িত্ব কে অনিশ্চিত করে তোলে।[7] আরঙ্গজেব দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব অঞ্চলেই মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। কিন্তু ১৭০৭ সালে তার মৃত্যুর পর সাম্রাজ্যে বিদ্রোহ দেখা দেয়। [7] আরঙ্গজেব তার পূর্বপুরুষের রাজ্য মধ্য এশিয়ার তুরান জয় করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তাতে সফল হননি। আওরঙ্গজেব দাক্ষিণাত্য বিজয়ের অভিযানে জয়লাভ করলেও যুদ্ধে প্রচুর লোকবল ও সম্পদ ক্ষয় হয়।[10] আরঙ্গজেব এর জন্য আরেকটি সমস্যা ছিল যে তার সেনাবাহিনীর ভিত্তি ছিল মূলত উত্তর ভারতের অভিজাত শ্রেণী তারাই অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় রসদ ও অশ্বারোহী বাহিনী সরবরাহ করত। অটোমান সাম্রাজ্যের মত কোন জেনিসারি বাহিনী মুঘলদের ছিল না।[11] দীর্ঘ দাক্ষিণাত্যের যুদ্ধ আরঙ্গজেব এর অন্যান্য সফলতা কে অনেকটাই ম্লান করে দিয়েছিল। ১৭ শতকের শেষে অভিজাত শ্রেণী মুঘল সম্রাটদের অভিযানে সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য রসদ সরবরাহ করতে অনিচ্ছুক হয়ে পড়ে। এর কারণ হলো অভিযানের সফলতার পর ভূসম্পত্তি এবং অন্যান্য সম্পত্তি প্রাপ্তির যে সম্ভাবনা তা ধীরে ধীরে কমে আসছিল।[12] আওরঙ্গজেবের পুত্র শাহ আলম তার পিতার ধর্মভিত্তিক রাজনীতি পরিহার করে প্রশাসনে একটি সংস্কার আনতে সচেষ্ট হন। ১৭১৯ সালে তার মৃত্যুর পর সমগ্র মুঘল সাম্রাজ্য এক বিশৃংখল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়। পরপর চারজন সম্রাট সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন।[7]

সম্রাট মোহাম্মদ শাহ এর শাসন আমলে মুঘল সাম্রাজ্যের ভাঙ্গন শুরু হয়। মধ্য ভারতের একটি বিরাট অংশ মুঘলদের হাতছাড়া হয়ে মারাঠাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। একটি এলাকার সামরিক নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য মুঘলরা সবসময় একটি কৌশল অবলম্বন করতো। তারা এলাকার একটি দুর্গ দখল করতো এবং সেটি কে কেন্দ্র রূপে ব্যবহার করে আশেপাশের শত্রু সেনাদের প্রতিহত করত। মুঘলরা খোলা যুদ্ধের ময়দানে শত্রুর মোকাবেলা করে তাদের নিশ্চিহ্ন করতে বেশি পারদর্শী ছিল। এই কৌশলটি ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল।[10] অপরদিকে হিন্দু মারাঠারা সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হতো না। বরং তারা গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে এম্বুস এবং ছোটখাটো আক্রমণের মাধ্যমে মুঘল বাহিনীর রসদ সরবরাহ কে পর্যুদস্ত করতো। মারাঠারা কুখ্যাত লুটেরা ছিলো। তারা দ্রুত শত্রুপক্ষ ও তাদের রাজ্য লুটপাত করতো। [10] মারাঠাদের উপযুক্ত গোলন্দাজ বাহিনী এবং অশ্বারোহী সেনাবাহিনী না থাকায় তারা সরাসরি মুঘলদের দুর্গ আক্রমণ করত না। মুঘলদের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ সরবরাহে বাধা প্রদান ও তা ধ্বংস করে দুর্গে অবস্থানরত মুঘল সেনাদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করতো। [10] মুঘল সেনাপতিরা মারাঠাদের এই যুদ্ধ কৌশলের বিরুদ্ধে পাল্টা কোন কৌশল গ্রহণ না করায় ক্রমেই মধ্য ভারতের অনেক এলাকা তাদের হাতছাড়া হয়ে যায়। পারস্য সম্রাট সম্রাট নাদির শাহের ভারত অভিযানের পর মুঘল সাম্রাজ্যের শক্তি এবং গৌরব অনেকটাই কমে আসে।[7] অনেক সামন্ত শাসকরা স্বাধীনভাবে তাদের রাজ্য শাসন করতে থাকে। যদিও শুধু মুসলিম অভিযাত্রায় নয়, মারাঠা হিন্দু এবং শিখ নেতৃবৃন্দ মুঘল সম্রাটকে ভারতের আনুষ্ঠানিক সার্বভৌমত্বের প্রতীক হিসেবে মেনে চলত। [13]

পরবর্তী দশকে আফগান, শিখ এবং মারাঠারা নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম সাম্রাজ্যের অখণ্ডতা রক্ষা করতে ব্যর্থ চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত তাকে বাইরের শক্তির দ্বারস্থ হতে হয়। ১৭৮৪ সালে মারাঠারা দিল্লীর সালতানাতের পরিরক্ষাকারি হিসাবে ঘোষিত হয়। দ্বিতীয় অ্যাংলো মারাঠা যুদ্ধের পূর্ব পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বজায় থাকে। এরপরে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দিল্লির মুঘল বংশের পরিরক্ষাকারী হিসেবে আবির্ভূত হয়।[13] তখন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রাক্তন মুঘল সাম্রাজ্যের একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করতো। ১৮৫৭-৫৮ সালের সিপাহী বিপ্লব ব্যর্থ হলে, ব্রিটিশ সরকার শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহকে সিংহাসনচ্যুত করে এবং রেঙ্গুনে নির্বাসিত করে। সেই সাথে বিলুপ্ত হয় মুঘল সাম্রাজ্যের।[7]

মুঘল সম্রাটদের তালিকা

ছবি পরিচিত নাম জন্মের সময় নাম জন্ম শাসনকাল মৃত্যু টীকা
বাবর
بابر
জহিরউদ্দিন মোহাম্মদ
ظہیر الدین محمد
২৩ ফেব্রুয়ারি ১৪৮৩, আন্দিজান ১ এপ্রিল ১৫২৬ – ২৬ ডিসেম্বর ১৫৩০

৪ বছর ৮ মাস ২৫ দিন

২৬ ডিসেম্বর ১৫৩০ (বয়স ৪৭) মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা।
হুমায়ুন
ہمایوں
নাসির উদ্দিন মুহাম্মদ হুমায়ুন
نصیر الدین محمد ہمایوں
১৭ মার্চ ১৫০৮ ২৬ ডিসেম্বর ১৫৩০ – ১৭ মে ১৫৪০

৯ বছর ৪ মাস ২১ দিন। ২২ ফেব্রুয়ারি ১৫৫৫ - ২৭ জানুয়ারি ১৫৫৬

২৭ জানুয়ারি ১৫৫৬ (বয়স ৪৮) হুমায়ূন ১৫৪০ সালে শেরশাহ কর্তৃক সিংহাসনচ্যুত হন। ১৫৫৫ সালের ২২ জুন সেরহিন্দের যুদ্ধ জয়ের মাধ্যমে তিনি আবার সিংহাসন পুনরুদ্ধার করেন।
আকবর ই আজম
اکبر اعظم
জালাল-উদ্দিন-মোহাম্মদ
جلال الدین محمد اکبر
১৪ অক্টোরব ১৫৪২ ২৭ জানুয়ারি ১৫৫৬ – ২৭ অক্টোবর ১৬০৫

৪৯ বছর ৯ মাস ০ দিন।

২৭ অক্টোবর ১৬০৫ (বস ৬৩) তার মাতা ছিলেন পারস্য রাজকন্যা হামিদা বানু বেগম[14]
জাহাঙ্গীর
جہانگیر
নুরুদ্দিন মোহাম্মদ সেলিম
نور الدین محمد سلیم
২০ সেপ্টেম্বর ১৫৬৯ ১৫ অক্টোবর ১৬০৫ – ৮ অক্টোবর ১৬২৫

২১ বছর ১১ মাস ২৩ দিন

২৮ অক্টোবর ১৬২৬ (বয়স ৫৮) তার মাতা ছিলেন রাজপুত রাজকন্যা মরিয়ম উজ জামানি।[15]
শাহজাহান ই আজম
شاہ جہان اعظم
শাহাবুদ্দিন মোহাম্মদ খুররাম
شہاب الدین محمد خرم
৫ জানুয়ারি ১৫৯২ ৮ নভেম্বর ১৬২৭ – ২ আগস্ট ১৬৫৮

৩০ বছর ৮ মাস ২৫ দিন।

২২ জানুয়ারি ১৬৬৬ (বয়স ৭৪) তার মাতা ছিলেন রাজপুত রাজকন্যা জগৎ গোসাইনি।[16] তিনি তাজমহল তৈরি করেছিলেন।
প্রথম আলমগীর
عالمگیر
মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব
محی الدین محمداورنگزیب
৪ নভেম্বর ১৬১৮ ৩১ জুলাই ১৬৫৮ – ৩ মার্চ ১৭০৭

৪৮ বছর ৭ মাস ০ দিন।

৩ মার্চ ১৭০৭ (বয়স ৮৮) পারস্য রাজকন্যা মুমতাজ মহল তাজমহল ছিলেন তার মাতা। পারস্যের সফাভি রাজবংশের রাজকন্যা দিলারা বানু বেগমের সাথে তার বিয়ে হয়। তার মৃত্যুর পর তার কনিষ্ঠ পুত্র আজম শাহ এক বছরের জন্য সম্রাট ছিলেন।[17]
বাহাদুর শাহ
بہادر شاہ
কুতুব উদ্দিন মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম শাহ আলম
قطب الدین محمد معزام
১৪ অক্টোবর ১৬৪৩ ১৯ জুন ১৭০৮ – ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৭১২

(৩ বছর, ২৫৩দিন)

২৭ ফেব্রুয়ারি ১৭১২ (বয়স ৬৮) তিনি মারাঠাদের সাথে একটি চুক্তিতে আসেন। তিনি রাজপুতদের শান্ত করেন এবং পাঞ্জাবের শিখ দের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করেন।
জাহান্দার শাহ
جہاندار شاہ
মাজ উদ্দিন জাহান্দার শাহ বাহাদুর
معز الدین جہاندار شاہ بہادر
৯ মে ১৬৬১ ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৭১২ – ১১ ফেব্রুয়ারি ১৭১৩

(৩৫০ দিন)

১২ ফেব্রুয়ারি ১৭১৩ (বয়স ৫১) তিনি তার প্রধান উজির জুলফিকার খান এর দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন।
ফাররুকশিয়ার
فرخ سیر
ফর‌রুখসিয়ার
فرخ سیر
২০ আগস্ট ১৬৮৫ ১১ জানুয়ারি ১৭১৩ – ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৭১৯

(৬ বছর, ৪৮দিন)

২৯ এপ্রিল ১৭১৯ (বয়স ৩৩) ১৭১৭ সালে এক রাজকীয় ফরমান বলে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কে বাংলায় বিনাশুল্কে বাণিজ্য করার অধিকার প্রদান, পূর্ব উপকূলে মোগল শক্তি বৃদ্ধি। এই ফরমানবলে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সরকারকে কোনরকম শুল্ক প্রদান না করে বাংলায় পণ্য আমদানি করতে পারতো।
রাফি-উদ-দারজাত
رفیع اُد درجات
রাফি উল-দারজাত
رفیع اُد درجات
৩০ নভেম্বর ১৬৯৯ ২৮ ফেব্রুয়ারি – ৬ জুন ১৭১৯

(৯৮ দিন)

৯ জুন ১৭১৯ (বয়স ১৯) সৈয়দ ভ্রাতাদের উত্থান।
দ্বিতীয় শাহজাহান
شاہ جہاں دوم
রাফি উদ-দৌলত
شاہ جہاں دوم
জুন ১৬৯৬ ৬ জুন ১৭১৯ – ১৯ সেপ্টেম্বর ১৭১৯

(১০৫ দিন)

১৯ সেপ্টেম্বর ১৭১৯ (বয়স ২৩) ----
মোহাম্মদ শাহ
محمد شاہ
রশান আক্তার বাহাদুর
روشن اختر بہادر
১৭ আগস্ট ১৭০২ ২৭ সেপ্টেম্বর ১৭১৯ – ২৬ এপ্রিল ১৭৪৮

(২৮ বছর, ২১২ দিন)

২৬ এপ্রিল ১৭৪৮ (বয়স ৪৫) সৈয়দ ভাতৃদ্বয় এর কাছ থেকে মুক্ত। মারাঠাদের সাথে দীর্ঘ যুদ্ধে অবতীর্ণ। দাক্ষিণাত্য এবং মালবা হাতছাড়া। ১৭৩৯ সালে নাদের শাহ এর আক্রমনের শিকার। শেষ মুঘল সম্রাট যার হাতে প্রকৃতই সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ ছিল।
আহমদ শাহ বাহাদুর
احمد شاہ بہادر
আহমেদ শাহ বাহাদুর
احمد شاہ بہادر
২৩ ডিসেম্বর ১৭২৫ ২৬ এপ্রিল ১৭৪৮ – ২ জুন ১৭৫৪ ১ জানুয়ারি ১৭৭৫ (বয়স ৪৯) সেকান্দেরাবাদ এর যুদ্ধে মুঘল সেনাবাহিনী মারাঠাদের কাছে পরাজিত।
দ্বিতীয় আলমগীর
عالمگیر دوم
আজিজ-উদ-দীন
عزیز اُلدین
৬ জুন ১৬৯৯ ২ জুন ১৭৫৪ – ২৯ নভেম্বর ১৭৫৯

(৫ বছর, ১৮০ দিন)

২৯ নভেম্বর ১৭৫৯ (বয়স ৬০) প্রধান উজির গাজী উদ্দিন খান কর্তৃক প্রভাবিত এবং নিয়ন্ত্রিত।
তৃতীয় শাহজাহান
شاہ جہاں سوم
মহি উল মিল্লাত
محی اُلملت
১৭১১ ১০ ডিসেম্বর ১৭৫৯ – ১০ অক্টোবর ১৭৬০ ১৭৭২ (বয়স ৬০–৬১) বক্সারের যুদ্ধের সময় বাংলা বিহার এবং উড়িষ্যার নিজামের জোট বদ্ধ হওয়া। ১৭৬১ সালে হায়দার আলীর মহীশুরের সুলতান হিসেবে সিংহাসনে আরোহণ।
দ্বিতীয় শাহ আলম
شاہ عالم دوم
আলী গহর
علی گوہر
২৫ জুন ১৭২৮ ১০ অক্টোবর ১৭৬০ – ১৯ নভেম্বর ১৮০৬ (৪৬ বছর, ৩৩০ দিন) ১৯ নভেম্বর ১৮০৬ (বয়স ৭৮) ১৭৯৯ সালে মহীশুরের শাসক, টিপু সুলতানের মৃত্যু।
মোহাম্মদ শাহ বাহাদুর
شاہ جہانمحمد شاه بهادور
Bidar Bakht
 بیدار بخت 
১৭৪৯ ৩১ জুলাই ১৭৮৮ – ২ অক্টোবর ১৭৮৮ (৬৩ দিন) ১৭৯০ (বয়স ৪০-৪১) সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সিংহাসনচ্যুত হবার পর পুতুল সম্রাট হিসেবে সিংহাসনে আরোহণ।[18]
দ্বিতীয় আকবর শাহ
اکبر شاہ دوم
মির্জা আকবর
مرزا اکبر
২২ এপ্রিল ১৭৬০ ১৯ নভেম্বর ১৮০৬ – ২৮ সেপ্টেম্বর ১৮৩৭ (৩০ বছর, ৩২১ দিন) ২৮ সেপ্টেম্বর ১৮৩৭ (বয়স ৭৭) ব্রিটিশ পরিরক্ষণে প্রথম মুঘল সম্রাট।
দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ
بہادر شاہ دوم
আবু জাফর সেরাজ উদ্দিন মোহাম্মদ বাহাদুর শাহ জাফর
ابو ظفر سراج اُلدین محمد بہادر شاہ ظفر
২৪ অক্টোবর ১৭৭৫ ২৮ সেপ্টেম্বর ১৮৩৭ – ২৩ সেপ্টেম্বর ১৮৫৭ (১৯ বছর, ৩৬০ দিন) ৭ নভেম্বর ১৮৬২ (বয়স ৮৭) সর্বশেষ মুঘল সম্রাট। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের পর ব্রিটিশ শাসক কর্তৃক সিংহাসনচ্যুত এবং মিয়ানমারে নির্বাসন।

তথ্যসূত্র

  1. Spear 1990, পৃ. 147–148
  2. Jeroen Duindam (2015), Dynasties: A Global History of Power, 1300–1800, page 105, Cambridge University Press
  3. Mohammada, Malika (জানুয়ারি ১, ২০০৭)। The Foundations of the Composite Culture in India। Aakar Books। পৃষ্ঠা 300। আইএসবিএন 978-8-189-83318-3।
  4. Dirk Collier (২০১৬)। The Great Mughals and their IndiaHay House। পৃষ্ঠা 15।
  5. Chandra, Satish। Medieval India: From Sultanate To The Mughals। পৃষ্ঠা 202।
  6. Richards, John F. (জানুয়ারি ১, ২০১৬)। Johnson, Gordon; Bayly, C. A., সম্পাদকগণ। The Mughal Empire। The New Cambridge history of India: 1.5। I. The Mughals and their Contemporaries। Cambridge: Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 1, 190। আইএসবিএন 978-0521251198। ডিওআই:10.2277/0521251192
  7. Berndl, Klaus (২০০৫)। National Geographic visual history of the world। University of Michigan। পৃষ্ঠা 318–320। আইএসবিএন 978-0521522915।
  8. Eraly, Abraham The Mughal Throne The Sage of India's Great Emperors, London: Phonenix, 2004 page 520.
  9. Eraly, Abraham The Mughal Throne The Sage of India's Great Emperors, London: Phonenix, 2004 page 191.
  10. D'souza, Rohan "Crisis before the Fall: Some Speculations on the Decline of the Ottomans, Safavids and Mughals" pages 3-30 from Social Scientist, Volume 30, Issue # 9/10, September–October 2002 page 21.
  11. D'souza, Rohan "Crisis before the Fall: Some Speculations on the Decline of the Ottomans, Safavids and Mughals" pages 3-30 from Social Scientist, Volume 30, Issue # 9/10, September–October 2002 page 22.
  12. D'souza, Rohan "Crisis before the Fall: Some Speculations on the Decline of the Ottomans, Safavids and Mughals" pages 3-30 from Social Scientist, Volume 30, Issue # 9/10, September–October 2002 pages 22-23.
  13. Bose, Sugata Bose; Ayesha Jalal (২০০৪)। Modern South Asia: History, Culture, Political Economy। Routledge। পৃষ্ঠা 41। আইএসবিএন 978-0203712535।
  14. গুলবদন বেগম (১৯০২)। The History of Humayun (Humayun-Nama)। Royal Asiatic Society। পৃষ্ঠা 237–9।
  15. Marc Jason Gilbert (২০১৭)। South Asia in World HistoryOxford University Press। পৃষ্ঠা 79।
  16. Emperor of Hindustan Jahangir (২০১০)। The Tuzuk-i-Jahangiri; Or, Memoirs of Jahangir Translated by Alexander Rogers Edited by Henry Beveridge। General Books LLC। পৃষ্ঠা 18। আইএসবিএন 978-1-152-49040-6।
  17. Mohammada, Malika (জানুয়ারি ১, ২০০৭)। The Foundations of the Composite Culture in India। Aakar Books। পৃষ্ঠা 300। আইএসবিএন 978-8-189-83318-3।
  18. The Honorary Secretaries, Proceedings of the Asiatic Society of Bengal: 1871, (1871) p.97
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.