মীর মদন

মীর মদন (মৃত্যু: ২৩ জুন ১৭৫৭) ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার একজন গোলন্দাজ সেনাপতি।

মীর মদন
মুর্শিদাবাদের রেজিনগরের নিকটে মীর মদনের সমাধি
মৃত্যু২৩ জুন ১৭৫৭
পেশাগোলন্দাজ বাহিনীর প্রধান
পরিচিতির কারণপলাশীর যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য

প্রথম জীবন

মীর মদন প্রথমে হোসেন কুলি খানের ভ্রাতুষ্পুত্র হাসানউদ্দিন খানের অধীনে ঢাকায় কাজ করতেন। তার বিশ্বস্ততা ও কর্মতৎপরতার খবর পেয়ে তরুণ নবাব সিরাজ মীর মদনকে মুর্শিদাবাদে এনে সেনাপতির আসন দেন। তিনি বখশী মীর মদন নামে পরিচিত ছিলেন।[1][2]

পলাশীর যুদ্ধ ও মৃত্যু

পলাশীর আমবাগানে মীর মদন ও মোহন লাল এই দুই সেনাপতি নবাব সিরাজউদ্দৌলার পক্ষে আমৃত্যু লড়াই করেন। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর প্রান্তরে অন্য বিশ্বাসঘাতক সেনাপতিরা নিশ্চেষ্ট থাকলেও মীর মদন ইংরেজ বাহিনীকে আক্রমণ করেন। তার প্রবল আক্রমণে টিকতে না পেরে ইংরেজ সেনাপতি রবার্ট ক্লাইভ তার সেনাবাহিনী নিয়ে আমবাগানে আশ্রয় নেন। মীর জাফর, ইয়ার লুৎফ খান, রায় দুর্লভ প্রমুখ নিস্পৃহ থাকলেও মীর মদনের গোলন্দাজ বাহিনীর প্রতাপে ইংরেজ বাহিনী ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। দুপুরের দিকে হঠাৎ বৃষ্টি নামলে নবাব বাহিনীর গোলাবারুদ ভিজে যায়। তবুও সাহসী মীর মদন এবং অপর সেনাপতি মোহন লাল ইংরেজদের সাথে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন। কিন্তু প্রধান সেনাপতি মীর জাফর সিরাজকে বোঝান যুদ্ধ বন্ধ রাখতে। যুদ্ধ চলাকালীন গোলার আঘাতে মীর মদন মৃত্যুবরণ করেন।[3]

মুর্শিদাবাদের ফরিদপুরে মীর মদনের সমাধি

সমাধি

জানা যায়, মীর মদনের অনুগত কিছু সৈনিক তার মৃতদেহকে গোপনে মুর্শিদাবাদের রেজিনগরের নিকটে ভাগীরথী নদী তীরবর্তী ফরিদপুর গ্রামে কবর দেন। এখনও ফরিদপুরে ফরিদ খানের সমাধির পাশে অবহেলায় সমাধিস্থ আছেন পলাশীর যুদ্ধের অন্যতম বীর মীর মদন। এছাড়াও পলাশীর স্মৃতিসৌধের নিকট চাষজমির ভেতরে তিনটি অনুচ্চ স্মারক আছে, যা মীর মদন, নৌবে সিং হাজারী এবং বাহাদুর খানের স্মৃতিতে প্রোথিত।[4][5]

আরো দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত (২০০২)। মীরমদন। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ৪১৭। আইএসবিএন 81-85626-65-0।
  2. সৌমেন জানা (২০২২)। ছায়ামানব। কলকাতা: বইচই পাবলিকেশন।
  3. রজতকান্ত রায় (১৯৯৪)। পলাশীর ষড়যন্ত্র ও সেকালের সমাজ। কলকাতা: আনন্দ পাবলিশার্স।
  4. ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ। "মীরমদনের সমাধিক্ষেত্র"। সংগ্রহের তারিখ 5.12.16 এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  5. ভারতের ইতিহাস, অতুলচন্দ্র রায় (১৯৯৬)। বাংলায় ইংরাজশক্তির অভ্যুত্থান। কলকাতা: প্রান্তিক। পৃষ্ঠা ২৩৪।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.