মিতিন মাসি
মিতিন মাসি হলেন বাংলা গোয়েন্দা সাহিত্যের একজন মহিলা গোয়েন্দা চরিত্র যার স্রষ্টা সাহিত্যিক সুচিত্রা ভট্টাচার্য।
মিতিন মাসি | |
---|---|
প্রথম উপস্থিতি | পালাবার পথ নেই |
শেষ উপস্থিতি | স্যান্ডার্স সাহেবের পুঁথি |
স্রষ্টা | সুচিত্রা ভট্টাচার্য |
চরিত্রায়ণ | ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত,কোয়েল মল্লিক |
তথ্য | |
লিঙ্গ | মহিলা |
পদবি | মিতিন মাসি |
পেশা | গোয়েন্দা |
পরিবার |
|
জাতীয়তা | ভারতীয় |
নিবাস | ঢাকুরিয়া,কলকাতা |
চরিত্র
কলকাতার ঢাকুরিয়ার বাসিন্দা মিতিনের ভাল নাম প্রজ্ঞাপারমিতা মুখার্জী। তবে সে তার বোনঝি টুপুরের কাছে মিতিন মাসি এবং বাঙালি রহস্যপ্রিয় পাঠকের কাছে গোয়েন্দা মিতিনমাসি নামে পরিচিত। টুপুর মিতিনের সহকারী হিসেবে সবসময় মিতিনের কেসে সাহায্য করতে চেষ্টা করে৷ মিতিনের স্বামী পার্থ প্রেসে কাজ করেন। তিনি খ্যাদ্যরসিক ও কল্পনাবিলাসী। মিতিনের কাছে পুলিশের ডি আই জি অনিশ্চয় মজুমদার মাঝে মাঝে পরামর্শ নিতে আসেন। অপরাধ বিজ্ঞান, ফরেন্সিক সায়েন্স, অপরাধীদের মনঃস্তত্ত্ব, নানা রকমের অস্ত্রশস্ত্রের খুঁটিনাটি, অ্যানাটমি, ফিজিওলজি, নানা রকম আইন সব কিছু নিয়েই চর্চা করেন মিতিন। তিনি ক্যারাটে জানেন, রিভলভার সঙ্গে রাখেন আবার রান্নাতেও পটু।[1]
কাহিনী
মিতিন মাসির প্রথম আত্মপ্রকাশ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। প্রথম উপন্যাস ‘পালাবার পথ নেই’ আনন্দবাজার পত্রিকার রবিবাসরীয়তে প্রকাশিত হয়। এছাড়াও ‘বিষ’, ‘মারণ বাতাস’, ‘তৃষ্ণা মারা গেছে’ ও 'মেঘের পরে মেঘ' প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য লেখা উপন্যাস ও বড়গল্প।[2] কিশোরদের জন্য মিতিন কাহিনী প্রথম পুজোসংখ্যা আনন্দমেলা ২০০২ সালে প্রকাশিত হয়। নাম ছিল ‘সারাণ্ডায় শয়তান’। এরপর থেকে মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত নিয়মিতভাবে সুচিত্রা ভট্টাচার্য মিতিনমাসির গোয়েন্দা এডভেঞ্চার কাহিনী আনন্দমেলা পূজাবার্ষিকীতে লিখে গেছেন। মিতিন সিরিজের শেষ উপন্যাস 'স্যান্ডার্স সাহেবের পুঁথি' প্রকাশিত হয় ২০১৫ সালে। আনন্দমেলা পত্রিকার পুজোসংখ্যাগুলিতে প্রকাশিত মিতিন মাসি সিরিজের উপন্যাসগুলি হল:
- সারাণ্ডায় শয়তান
- জোনাথনের বাড়ির ভূত
- কেরালায় কিস্তিমাত
- সর্প-রহস্য সুন্দরবনে
- ঝাও-ঝিয়েন হত্যারহস্য
- ছকটা সুডোকুর
- আরাকিয়েলের হিরে
- গুপ্তধনের গুজব
- হাতে মাত্র তিনটে দিন
- কুড়িয়ে পাওয়া পেনড্রাইভ
- মার্কুইস স্ট্রিটে মৃত্যুফাঁদ
- টিকরপাড়ার ঘড়িয়াল
- দুঃস্বপ্ন বারবার
- স্যান্ডরসাহেবের পুঁথি
প্রাপ্তবয়স্ক কাহিনিসমূহ
- পালাবার পথ নেই
- একটা শুধু রঙ নাম্বার
- বিষ
- মেঘের পরে মেঘ
- মারণ বাতাস
- তৃষ্ণা মারা গেছে
চলচ্চিত্র
অনেকদিন ধরেই মিতিনমাসিকে নিয়ে ছবি করার কথা ভাবছিলেন দুই পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায়। মিতিনমাসি সিরিজের সব চলচ্চিত্র স্বত্ব তারা কিনে নিয়েছেন। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের সাথে এ নিয়ে দীর্ঘ আলাপ আলোচনা হলেও হঠাৎ লেখিকার মৃত্যুতে ছেদ পড়ে পরিকল্পনায়। পূনরায় ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে মিতিনমাসির চরিত্রে ভেবে চিত্রনাট্যের কাজ চলছিল। বাংলা সাহিত্যে গোয়েন্দা চরিত্রের অন্যতমা 'মিতিনমাসি'[3][4] ২০১৯ সালের পুজোতে চলচ্চিত্রায়িত হয়। অরিন্দম শীল এর পরিচালনায় মিতিনমাসি (চলচ্চিত্র) সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কোয়েল মল্লিক।[5]
তথ্যসূত্র
- সহেলী চট্টোপাধ্যায়। "গোলটেবিল: ভালো থেকো মিতিন"। ম্যাজিক ল্যাম্প। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১৭।
- সুচিত্রা ভট্টাচার্য (২০০৮)। তিন মিতিন। কলকাতা: দেজ পাবলিশিং। পৃষ্ঠা ৭, ৪১, ১০৩। আইএসবিএন 978-81-295-0760-0।
- বৃষ্টি চৌধুরী (২১ মে ২০১৫)। "পর্দায় আসছে মিতিন মাসি!"। বেঙ্গল টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১৭।
- অলোকপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় (২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। "বাংলায় গোয়েন্দারাজ"। আজকাল। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০১৭।
- রণিতা গোস্বামী (২৮ মে ২০১৯)। "অরিন্দম শীলের হাত ধরে বাংলা সিনেমায় 'ডেবিউ' হচ্ছে 'মিতিন মাসি'র"। জি নিউজ। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৯।