মিঠুন চক্রবর্তী

মিঠুন চক্রবর্তী ভারতের একজন খ্যাতিমান চলচ্চিত্র অভিনেতা, সমাজ সংগঠক এবং উদ্যোক্তা। মৃগয়া (১৯৭৬) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার অভিষেক ঘটে। এ ছবির মাধ্যমেই তিনি 'সেরা অভিনেতা' হিসেবে ভারতের 'জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার' লাভ করেন। বর্তমানে তিনি পরশ টিভি'র প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন।

মিঠুন চক্রবর্তী
জন্ম
গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী

(1950-06-16) ১৬ জুন ১৯৫০[1][2]
মাতৃশিক্ষায়তনস্কটিশ চার্চ কলেজ
ভারতীয় ফিল্ম ও টেলিভিশন সংস্থা
পেশাঅভিনেতা
মনোরঞ্জক
টিভি উপস্থাপক
ভারতীয় সংসদসদস্য, রাজনৈতিক ব্যক্তি
কর্মজীবন১৯৭৬ - বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গীহেলেনা লুক
(বিবাহ বিচ্ছেদ),

শ্রীদেবী
(বিবাহ বিচ্ছেদ),

যোগিতা বালি
(১৯৭৯ - বর্তমান)
সন্তানমিমোহ চক্রবর্তী
রিমোহ চক্রবর্তী
নমাসী চক্রবর্তী
দিশানী চক্রবর্তী
গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী
(মিঠুন চক্রবর্তী)
Member of Parliament
(Rajya Sabha)
কাজের মেয়াদ
২০১৪-বর্তমান
উত্তরসূরীপদত্যাগ
সংসদীয় এলাকাপশ্চিম বঙ্গ
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৬ জুন ১৯৫০[2]
কলকাতা, পশ্চিম বাংলা[1]
রাজনৈতিক দলবিজেপি

তিনি এ পর্যন্ত ৩০০ টিরও অধিক হিন্দী চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এছাড়াও, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলা, পাঞ্জাবী, তেলুগু, ওড়িয়া, ভোজপুরী চলচ্চিত্রেও অংশ নিয়েছেন। তিনি মনার্ক গ্রুপের স্বত্ত্বাধিকারী, যা অতিথি সেবায় নিয়োজিত রয়েছে।[3]

মিঠুন চক্রবর্তী ২০০৯ সাল থেকে রিয়েলিটি টিভি সিরিজ ডান্স ইন্ডিয়া ডান্সে প্রধান বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন৷

শৈশবকাল ও শিক্ষাজীবন

মিঠুন চক্রবর্তী বাংলাদেশের বরিশালে বাঙালি হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বরিশাল জেলা স্কুলে পড়েছিলেন। পরবর্তীতে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে রসায়নে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়াও ফিল্ম অ্যাণ্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইণ্ডিয়া (এফটিআইআই) থেকে গ্র‍্যাজুয়েশন করেন তিনি।[4]

চলচ্চিত্র জগৎ

তিনি জনপ্রিয় পরিচালক মৃণাল সেনের পরিচালনায় মৃগয়া চলচ্চিত্রের মাধ্যমে রূপালী জগতে প্রবেশ করেন। অসামান্য অভিনয় নৈপুণ্যের জন্য এ ছবির মাধ্যমে তিনি সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। অভিষেকের পর তিনি দো আনজানে (১৯৭৬) এবং ফুল খিলে হ্যায় গুলশান গুলশান (১৯৭৭) ছবি দু'টোয় সহ-চরিত্রে অভিনয় করেন। কিন্তু তাতে তিনি কোন গুরুত্ব ও সফলতা পাননি।

অভিনীত চলচ্চিত্রসমূহ

মিঠুন চক্রবর্তী'র চলচ্চিত্র
সাল চলচ্চিত্র সাল চলচ্চিত্র সাল চলচ্চিত্র
১৯৭৬মৃগয়া, দো আনজানে১৯৭৭মুক্তি১৯৭৮মেরা রক্ষক
১৯৭৯সুরক্ষা, তারানা১৯৮০হাম পাঁচ, সিতারা১৯৮১শাউকীন, ওয়ারদাত, আদাত সে মজবুর, জিনে কি রাহ
১৯৮২ডিস্কো ড্যান্সার, ত্রয়ী, হিরো কা চোর১৯৮৩মুঝে ইনসাফ চাহিয়ে১৯৮৪কসম পয়দা করনে ওয়ালে কি
১৯৮৫পেয়ার ঝুকতা নাহি, গুলামী১৯৮৬এ্যায়সা পেয়ার কাহা, মুদ্দত১৯৮৭ড্যান্স ড্যান্স, পরম ধরম
১৯৮৮পেয়ার কা মন্দির, ওয়াক্ত কি আওয়াজ, জিতে হ্যা শান সে, কমাণ্ডো১৯৮৯মুজরিম, গুরু (১৯৮৯), প্রেম প্রতিজ্ঞা১৯৯০দুশমন, অগ্নিপথ, রোটি কি কিমত
১৯৯১পেয়ার হুয়া চোরি চোরি, ত্রিনেত্র১৯৯২তাহাদের কথা, দিল আশনা হ্যায়, ঘর জামাই১৯৯৩দালাল, আদমি, তাদিপার, ফুল অউর অঙ্গার
১৯৯৪চিতা, নারাজ, ইয়ার গাদ্দার, তিসরা কৌন১৯৯৫জল্লাদ, রাবন রাজঃ এ ট্রু স্টোরী, দ্য ডন১৯৯৬নির্ভয়, মুকাদ্দর, জাং
১৯৯৭লোহা, জদিদর, শপথ, সুরজ১৯৯৮সাহারা জালুচি, যমরাজ, গুণ্ডা১৯৯৯হীরালাল পান্নালাল, আয়া তুফান, আগ হি আগ
২০০০সুলতান, অগ্নিপুত্র২০০১বেঙ্গল টাইগার২০০২তিতলী, সবসে বড়কর হাম
২০০৩এ যুগের কৃষ্ণ সুদমা,[5] চাল বাজ২০০৪বারুদ২০০৫এলান, লাকীঃ নো টাইম ফর লাভ, যুদ্ধ
২০০৬চিঙ্গারি, দিল দিয়া হ্যায়, এমএলএ ফাটাকেষ্ট২০০৭গুরু (২০০৭), তুলকালাম, মিনিস্টার ফাটাকেষ্ট২০০৮ভোল শঙ্কর, হিরোজ, চাঁদনী চক টু চায়না
২০০৯লাক, ফির কাভী, বাবর২০১3বীর, রাখ, রেহমত আলী, শুকনো লঙ্কা, গোলমান থ্রী২০১১জিন্দেগী তেরে নাম, স্পাগীতি ২৪ x ৭, নোবেল চোর

ব্যক্তিগত জীবন

ভারতের সাবেক অভিনেত্রী যোগীতা বালীকে নিয়ে ঘর-সংসার করেন মিঠুন চক্রবর্তী। তাদের ঘরে তিন পুত্র এবং এক কন্যা রয়েছে। জ্যেষ্ঠ পুত্র মিমোহ চক্রবর্তী বলিউডের অভিনেতা। ২০০৮ সালের 'জিমি' চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার অভিষেক ঘটে। ২য় পুত্র রিমোহ চক্রবর্তী মিঠুনের পরিচালনায় ফির কাভি (আবার কখনো) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অংশ নেয়। অন্য দুই সন্তান - নমসী চক্রবর্তী এবং দিশানী চক্রবর্তী এখনো পড়াশোনায় ব্যস্ত রয়েছে।

অনেকগুলো সূত্র দাবী করে যে, মিঠুন চক্রবর্তী দক্ষিণ ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী শ্রীদেবী'র সাথে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল। ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৭ সালের মধ্যে এ সম্পর্ক বজায় ছিল যা শ্রীদেবী পরবর্তীতে সম্পর্ক ছেদ করেন। এর প্রধান কারণ ছিল - প্রথম স্ত্রী যোগীতা বালীকে মিঠুন কর্তৃক বিবাহ-বিচ্ছেদ না ঘটায়। তারা অত্যন্ত গোপনে বিয়ে করেছিলেন বলে জানা যায়, যদিও তা পরবর্তীতে অস্বীকার করা হয়।[6]

ক্রীড়া জগৎ

মিঠুন চক্রবর্তী রয়েল বেঙ্গল টাইগার্স দলের সহ-স্বত্ত্বাধিকারী ছিলেন। পরবর্তীতে দলটি ভারতীয় ক্রিকেট লীগে আর অংশগ্রহণ করেনি ও পরিত্যক্ত ঘোষিত হয়।[7]

পুরস্কার

মিঠুন চক্রবর্তী'র পুরস্কার প্রাপ্তি
সাল বিবরণ স্তর চলচ্চিত্র মন্তব্য
১৯৭৬জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসেরা অভিনেতামৃগয়াপ্রাপ্তি
১৯৯০ফিল্মফেয়ার পুরস্কারসেরা সহঃ অভিনেতাঅগ্নিপথপ্রাপ্তি
১৯৯২জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসেরা অভিনেতাতাহাদের কথাপ্রাপ্তি
১৯৯৫ফিল্মফেয়ার পুরস্কারসেরা খলনায়কজল্লাদপ্রাপ্তি
১৯৯৬জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসেরা সহঃ অভিনেতাস্বামী বিবেকানন্দপ্রাপ্তি

ফিল্মফেয়ার পুরস্কার

আরো দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "Members Page"Rajya Sabha Secretariat। ২৯ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২০
  2. "Mithun Chakraborty"PRS Legislative Research (ইংরেজি ভাষায়)। ২৫ অক্টোবর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২০
  3. TNN, Sep 19, 2006, 10.06am IST (২০০৬-০৯-১৯)। "Times of India article"। Timesofindia.indiatimes.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৬-২২
  4. Seedhi Baat -- Mithun Chakraborty
  5. The Times of India (১১ জুলাই ২০০৩)। "Mithun helps Oriya movie taste success"। timesofindia.indiatimes.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৫
  6. "The Truth About Mithun and Sridevi"। Stardust। Stardust International। মে ১৯৯০।
  7. "Mithun: No clash with Shah Rukh"। The Telegraph, India। ২০০৮-০৩-২৮। ২০১০-০১-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৬-২২

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.