মাহি নদী

মাহি নদী হল পশ্চিম ভারতের একটি নদী। এর উৎপত্তি মধ্যপ্রদেশে এবং, রাজস্থানের এর ভাগড় অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পরে, এটি গুজরাতে প্রবেশ করেছে এবং তারপর আরব সাগরে গিয়ে পড়েছে। এটি ভারতের অনেকগুলি পশ্চিমে প্রবাহিত নদীগুলির মধ্যে একটি, এদের মধ্যে আছে তাপ্তি নদী, সবরমতি নদী, লুনি নদী (বন্ধ জলবিভাজিকা) এবং নর্মদা নদী। ভারতবর্ষের বেশিরভাগ উপদ্বীপ নদীগুলি পূর্ব মুখে বঙ্গোপসাগরের দিকে প্রবাহিত হয়।

মাহি নদী
দেশভারত
অববাহিকার বৈশিষ্ট্য
মূল উৎসমধ্যপ্রদেশ, বিন্ধ্য পর্বতমালা
মোহনাখাম্বাৎ উপসাগর (আরব সাগর)
আনন্দ জেলা, গুজরাত
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য
দৈর্ঘ্য৫৮০ কিমি (৩৬০ মা) প্রায়
নিষ্কাশন
  • অবস্থান:
    সেবালিয়া[1]
  • সর্বনিম্ন হার:
     মি/সে (০ ঘনফুট/সে)
  • গড় হার:
    ৩৮৩ মি/সে (১৩,৫০০ ঘনফুট/সে)
  • সর্বোচ্চ হার:
    ১০,৮৮৭ মি/সে (৩,৮৪,৫০০ ঘনফুট/সে)
গুজরাতে মাহি নদী, অন্যান্য ভারতীয় নদীর মধ্যে

মুম্বইয়ের মাহি কন্ঠ সংস্থাটির নাম নেওয়া হয়েছে এই নদী থেকে, এছাড়া আরব ইতিহাসে উল্লিখিত মেহওয়াসিস নামে পাহাড়ী লুটেরা মানুষদের নাম এখান থেকেই এসেছে।[2]

মাহি নদীর উৎসের সঠিক অবস্থান হল মিন্দা গ্রাম, যেটি মধ্যপ্রদেশের ধর জেলায় অবস্থিত। মাহি নদী, পশ্চিম ভারতের নদী। এটি সরদারপুরের ঠিক দক্ষিণে, পশ্চিম বিন্ধ্য পর্বতমালা থেকে বেরিয়েছে, এবং মধ্য প্রদেশ রাজ্য দিয়ে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়েছে। এরপর উত্তর-পশ্চিম দিকে ঘুরে, এটি রাজস্থান রাজ্যে প্রবেশ করেছে এবং তারপরে দক্ষিণ পশ্চিমে গুজরাত রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে উত্তরদিকে বড়োদরা শহরের উপকণ্ঠে প্রবাহিত হয়ে খাম্বাতের পাশে প্রশস্ত মোহনা দিয়ে সমুদ্রে গিয়ে পড়েছে[2] প্রায় ৩৬০ মাইল (৫৮০-কিমি) চলার পরে। মাহির নামিয়ে আনা পলি দিয়ে খাম্বাৎ উপসাগর অগভীর হয়ে গেছে এবং এর ফলে একসময়ের সমৃদ্ধ বন্দরগুলির এখন অকেজো হয়ে গেছে। নদীগর্ভ স্থলস্তরের তুলনায় যথেষ্ট নিচু এবং সেচের জন্য এর ব্যবহার হয়না।

প্রচুর লোক মাহি নদীটির উপাসনা করে এবং এর উপকূলে প্রচুর মন্দির এবং উপাসনা স্থান রয়েছে। নদীর বিশালতার কারণে এটি মাহিসাগর নামে জনপ্রিয়। গুজরাতের নবগঠিত মাহিসাগর জেলার নাম এই পুন্যতোয়া নদী থেকে এসেছে। এই নদী দুবার কর্কটক্রান্তি রেখা অতিক্রম করেছে।

বাঁধ

বাঁশওয়ারা বাঁধ

মাহি বাজাজ সাগর বাঁধটি মাহি নদীর ওপরে একটি বাঁধ। এটি ভারতের রাজস্থানের বাঁশওয়ারা জেলার বাঁশওয়ারা শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ও জল সরবরাহের লক্ষ্যে এই বাঁধটি ১৯৭২ থেকে ১৯৮৩ সালের মধ্যে নির্মিত হয়েছিল। এটি রাজস্থানের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাঁধ। শ্রী যমনা লাল বাজাজের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে। এই বাঁধের জলে অনেক কুমির এবং কচ্ছপ রয়েছে। বাঁধের অববাহিকা অঞ্চলে প্রচুর দ্বীপ রয়েছে, তাই বাঁশওয়ারা জনপ্রিয়ভাবে "শত দ্বীপপুঞ্জের শহর" নামে পরিচিত। রাস্তা দিয়ে সহজেই এই বাঁধটিতে পৌঁছোনো যায়। এই বাঁধটির বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৪০ মেগাওয়াট। খাম্বাৎ উপসাগরে প্রবাহিত মাহি নদী দূষণ ও লবণাক্ততার কারণে বিলুপ্তির পথে। গুজরাতের বড়োদরায় জেলেরা এবং বেসরকারী সংস্থাগুলি (এনজিও), এই পরিস্থিতির জন্য, বড়োদরা পৌর কর্পোরেশন কর্তৃক মাহির উপর বাঁধ নির্মাণকে দায়ী করেছে। এনজিওগুলির বক্তব্য "জল সংগ্রহের জন্য নির্মিত বাঁধ নদীর তলদেশের চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে"। ফলস্বরূপ, জোয়ারের সময় সমুদ্রের জলকে ধাক্কা দেওয়ার জন্য কোনও পৃষ্ঠের প্রবাহ না থাকায় নদীটিতে সমুদ্র থেকে লবণাক্ত জলের অনুপ্রবেশ ঘটছে। "অনেক অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ জল এই কারণে লবণাক্ত হয়ে উঠতে পারে। গত বছরে ২০১৬ সালে জলে অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে প্রায় ৬০০-৮০০ কচ্ছপ মারা গেছে। মাহি নদী এখন খুব খারাপ অবস্থায়।"

কাদানা বাঁধ

এটি ১৯৭৯ সালে কাদানা গ্রামে নির্মিত হয়েছিল, তালুক: কাদানা, জেলা: মহিসাগর জেলা, গুজরাত। এটি সেচ, জলবিদ্যুৎ এবং বন্যা থেকে সুরক্ষার জন্য নির্মিত হয়েছিল।[3]

ওয়ানকবুরি বাঁধ (উইয়ার)

ওয়ানকবুরি বাঁধটি (উইয়ার) ওয়ানকবুরি গ্রামের কাছে তৈরি হয়েছে। ওয়ানকবুরি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র মাহি নদীর জল ব্যবহার করে। এখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৭টি ইউনিট রয়েছে।

তথ্যসূত্র

  1. "Mahi Basin Station: Sevalia"। UNH/GRDC। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১০-০১
  2. চিসাম, হিউ, সম্পাদক (১৯১১)। "Mahi"। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ17 (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 396।
  3. "Narmada, Water Resources, Water Supply and Kalpsar Department- Kadana Dam"। ৬ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০২১

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:Hydrography of Gujarat টেমপ্লেট:Hydrography of Rajasthan

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.