মার্ক ভার্মুলেন

মার্ক অ্যান্ড্রু ভার্মুলেন (ইংরেজি: Mark Vermeulen; জন্ম: ২ মার্চ, ১৯৭৯) রোডেশিয়ার সালিশ্‌বুরিতে জন্মগ্রহণকারী সাবেক জিম্বাবুয়ীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।

মার্ক ভার্মুলেন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামমার্ক অ্যান্ড্রু ভার্মুলেন
জন্ম (1979-03-02) ২ মার্চ ১৯৭৯
সালিশ্‌বুরি, রোডেশিয়া
উচ্চতা ফুট ৪ ইঞ্চি (১.৯৩ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাব্যাটসম্যান
সম্পর্করোল্যান্ড ভার্মুলেন (ভ্রাতা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৫৬)
১৬ নভেম্বর ২০০২ বনাম পাকিস্তান
শেষ টেস্ট৯ আগস্ট ২০১৪ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৬১)
২১ অক্টোবর ২০০০ বনাম শ্রীলঙ্কা
শেষ ওডিআই৮ নভেম্বর ২০০৯ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯৭–২০০২ম্যাশোনাল্যান্ড এ
২০০০–২০০৫মাতাবেলেল্যান্ড
২০০৯ওয়েস্টার্নস
২০০৯–মাতাবেলেল্যান্ড তুস্কার্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৪৩ ৭১ ৯৭
রানের সংখ্যা ৪৪৯ ৮৬৮ ৪,৮২২ ২,২৭০
ব্যাটিং গড় ২৪.৯৪ ২২.২৫ ৩৭.০৯ ২৫.২২
১০০/৫০ ১/২ ০/৬ ১১/১৯ ১/১৫
সর্বোচ্চ রান ১১৮ ৯২ ১৯৮ ১০৫
বল করেছে ৯০৫ ৭১
উইকেট ১৫
বোলিং গড় ৫.০০ ৩১.৯৩ ৬৬.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ০/৫ ১/৫ ৩/২৬ ১/৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৬/– ১৯/– ৭২/– ৩৪/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১ অক্টোবর ২০১৭

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ম্যাশোনাল্যান্ড এ, মাতাবেলেল্যান্ড, ওয়েস্টার্নস ও মাতাবেলেল্যান্ড তুস্কার্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে দলের প্রয়োজনে ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন মার্ক ভার্মুলেন

ঘরোয়া ক্রিকেট

জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। জিম্বাবুয়ের ঘরোয়া ক্রিকেটে লোগান কাপ প্রতিযোগিতায় ম্যাশোনাল্যান্ড ঈগলসের পক্ষে খেলেছেন। এ প্রতিযোগিতায় তিনি বেশ দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন।

২০০৪-০৫ মৌসুমে ঘরোয়া ক্রিকেটে ৪৩.৬০ গড়ে রান তুলেন। কিন্তু, অর্থনৈতিক সঙ্কট ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় ক্রিকেটে প্রভাব পড়তে শুরু করে। ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ে এ দলের সদস্যরূপে নামিবিয়া সফর থেকে দেশে ফেরার পর তার খেলার মোড় ঘুরে যায়।[1]

গল্ফেও তার দক্ষতা রয়েছে। ২০১৩-১৪ মৌসুমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হতে সচেষ্ট হন। লোগান কাপে সাত খেলায় ৬৪.৪৪ গড়ে রান তুলে দ্বিতীয় সর্বাধিক রান সংগ্রাহক হন।

খেলোয়াড়ী জীবন

ঘরোয়া ক্রিকেটে দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের প্রেক্ষিতে নভেম্বর, ২০০২ সালে জিম্বাবুয়ে দলের সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৬ নভেম্বর, ২০০২ তারিখে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক ঘটে মার্ক ভার্মুলেনের। তিনি গাই হুইটলের স্থলাভিষিক্ত হন। ২০০৩ সালে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্টে ১১৮ রানের মনোরম সেঞ্চুরি করেন।

একদিনের আন্তর্জাতিক

একদিনের আন্তর্জাতিকে বেশ কিছু স্মরণীয় খেলার স্বাক্ষী ছিলেন তিনি। ২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে তিন খেলায় অংশ নেন। অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ২০০৪ সালের ভিবি সিরিজে ইরফান পাঠানের বলে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন।

জুলাই, ২০০৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওডিআই খেলার জন্য তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[2] বুলাওয়ের কুইন্স স্পোর্টস ক্লাবে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম খেলায় ৯২ রান তুলে রান আউটে ফিরে যান।[3]

২০০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওডিআই সিরিজে সংক্ষিপ্তভাবে ফিরে আসেন। এ সময়ে মাতাবেলেল্যান্ড তুস্কার্স, মিড ওয়েস্ট রাইনোজ, মাউন্টেইনিয়ার্স ও সাউদার্ন রক্সের সদস্য হিসেবে খেলতে থাকেন। এরপর নিজ শহর হারারেতে ম্যাশ ঈগলসের সদস্য হন।

জুলাই, ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতিস্বরূপ জিম্বাবুয়ে এ দলের সদস্যরূপে আফগানিস্তান সফরে যান। প্রথম চারদিনের খেলায় সেঞ্চুরি করেন। এর পরপরই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে তাকে দলে নেয়া হয়। ব্রেন্ডন টেলর তার মাঝে স্থিরতার স্বাক্ষর দেখতে পান। অবশেষে আগস্ট, ২০১৪ সালে এক দশক পর জিম্বাবুয়ের পক্ষে খেলার জন্য মনোনীত করা হয়।[4][5]

বিতর্কিত ভূমিকা

বেশ কয়েকবার নিয়মানুবর্তীতা ভঙ্গ করেছেন মার্ক ভার্মুলেন। দলের বাদ-বাকী সদস্যদের সাথে ভ্রমণে অস্বীকৃতিজ্ঞাপনের প্রেক্ষিতে ২০০৩ সালে ইংল্যান্ড সফর থেকে দেশে ফেরৎ পাঠিয়ে দেয়া হয়।[6] এরপর ২০০৬ সালে সেন্ট্রাল ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে অ্যাশটন ও নিজ ক্লাব ওয়েরনেথের মধ্যকার খেলায় দাঙ্গায় উসকানি দেয়ার প্রেক্ষিতে ইসিবি তাকে সকল স্তরের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। শুরুতে দশ বছরের জন্য শাস্তি প্রদান করা হয়।[7] এরপর আবেদনের প্রেক্ষিতে তিন বছরে নিয়ে আসা হয়। এ নিষেধাজ্ঞা ১ এপ্রিল, ২০০৭ তারিখ থেকে কার্যকর করা হয়।[8]

অক্টোবর, ২০১৫ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বর্ণবাদী মন্তব্যের দায়ে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট কর্তৃপক্ষ সকল স্তরের ক্রিকেটে অংশগ্রহণের অযোগ্য বলে ঘোষণা দেয়।[9]

খেলার ধরন

পেস বোলিংয়ের বিপক্ষে খেলতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কাট, পুল ও হুক শটে পারদর্শী তিনি। এছাড়াও, কভার অঞ্চলেও বল প্রেরণে দক্ষতা দেখিয়ে আসছেন। স্লিপ অঞ্চলে ফিল্ডিং করে থাকেন। মাঝে-মধ্যে অফ ব্রেক বোলিংয়ে অংশ নেন। এছাড়াও, জাতীয় পর্যায়ের তরুণদের বিভাগে বর্শা নিক্ষেপে পদক লাভ করেছেন।

তথ্যসূত্র

  1. "Vermeulen poised for remarkable comeback"। Cricinfo। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৯
  2. "Controversial Vermeulen earns Zimbabwe recall"। Cricinfo। ২১ জুলাই ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০০৯
  3. "Scorecard—1st ODI: Zimbabwe v Bangladesh at Bulawayo, 9 August 2009"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০০৯
  4. Vermeulen returns to Zimbabwe Test squad
  5. Vermeulen given Test return hope
  6. Cricinfo – Vermeulen sent home from Zimbabwe tour
  7. Cricinfo article – Vermeulen banned for 10 years
  8. Vermeulen ban reduced on appeal, BBC Sport, 19 September 2006.
  9. "Mark Vermeulen banned by ZC due to racist 'apes' comment"ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০১৫

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.