মাধব কন্দলী
মাধব কন্দলী (ইংরেজি: Madhava Kandali; অসমীয়া: মাধৱ কন্দলী) ১৪শ শতিকার অসমের কছাড়ী রাজসভার কবি ছিলেন। তিনি উত্তর ভারতে সর্বপ্রথম বাল্মিকি রচিত রামায়ণ অসমীয়া ভাষায় কথা রামায়ণ নামে অনুবাদ করেন।[1] মহাপুরুষ শ্রীমন্ত শংকরদেব তাঁকে অপ্রমাদী কবি উপাধীতে বিভূষিত করেন।
মাধব কন্দলী | |
---|---|
জন্ম | ১৪শ শতিকা |
পেশা | কবি |
ভাষা | অসমীয়া |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | কথা রামায়ণ |
জীবনকাল
কছাড়ী রাজা মহামাণ্যিকের রাজধানীর স্থান বা রাজত্বের সময়ের কোন ঐতিহাসিক প্রমাণ পাওয়া যায় নাই। কিন্তু হেমচন্দ্র গোস্বামী, কনকলাল বরুয়া, বাণীকান্ত কাকতী ও বেণুধর শর্মার মত অনুযায়ী চতুর্থ শতকের মধ্যভাগে কছাড়ী রাজা মহামাণ্যিক নগাঁওয়ের কপিলী উপত্যকায় শাসন করেন। এই রাজার রাজসভায় প্রাক-শংকরি কবি মাধব কন্দলী কাব্য চর্চা করেন। মাধব কন্দলীর অপর নাম কবিরাজ কন্দলী। সম্ভবত তার কবিত্ব শক্তির জন্য তার এরুপ নামকরণ করা হয়েছে।
কাব্যকৃতি
হিন্দু ধর্মে দিক্ষিত রাজা মহামাণ্যকের অনুরোধে মাধব কন্দলী বাল্মীকি রচিত রামায়ণ অসমীয়া ভাষায় অনুবাদ করেন। তার প্রায় ১০০বছর পর কৃত্তিবাসী রামায়ণ ও তুলসীদাস কর্তৃক রাম-চরিত-মানস রচিত হয়। মাধব কন্দলী সহজ ও সরল ভাষায় কাব্যটি রচনা করেন। এই কাব্যের বিবরনে অসমীয়া ভাষার প্রথম রূপ ও সেই সময়ের প্রচলিত রীতিনীতির আভাস পাওয়া যায়। ভাষার সরলতা ও কাব্যিক গুনের দিকে লক্ষ্য করে মাধব কন্দলী রচিত রামায়ণ কাব্যকে প্রাচীন অসমীয়া সাহিত্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রূপে গন্য করা হয়।
রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার জন্য তার অনুবাদিত রামায়ণের দুইটি কাণ্ড হারিয়ে যায়।পরবর্তী সময়ে বৈষ্ণব ধর্মীয় মহাপুরুষ শ্রীমন্ত শঙ্করদেব ও শ্রীমন্ত মাধবদেব হারিয়ে যাওয়া কাণ্ডটি পুনরায় অনুবাদ করেন ও মূল কাব্যের সাথে সংযুক্ত করেন। একটি পৌরানিক কাহিনীমতে অনন্ত কন্দলী নামক এক ব্যক্তি ভক্তিরসের আধারে রামায়ণের নতুন অনুবাদ করে মাধব কন্দলী অনুবাদিত রামায়ণকে লুপ্ত করার চেষ্টা করেন। মাধব কন্দলী স্বপ্নে শ্রীমন্ত শঙ্করদেবকে দেখা দেন ও কাব্যটি সংরক্ষণ করার অনুরোধ করেন। তারপর শ্রীমন্ত শংকরদেব তার শিষ্য মাধবদেবকে আদিকাণ্ড লেখার আদেশ করেন ও স্বয়ং নিজে উত্তরকাণ্ড রচনা করেন। কিন্তু মাধব কন্দলী কর্তৃক এই দুইটি কাণ্ড আগে রচনা করার কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না।
তথ্যসূত্র
- "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩১ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৪।