মাইহার ঘরানা

মাইহার ঘরানা হচ্ছে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের খেয়াল অঙ্গে যন্ত্র সঙ্গীত বাজানোর একটি ধরন যার জন্ম হয়েছিল বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে। এ ঘরানার একটি প্রচণ্ড প্রভাব গত পঞ্চাশ বছর ধরে দেখা গেছে ভারতীয় শাস্ত্রীয় যন্ত্র সঙ্গীতে। মূলত রামপুর ঘরানার মধ্যে থেকেই মাইহার ঘরানার সৃষ্টি হয়েছে। রামপুর ঘরানার বিলম্বিত লয়ের গৎ মসিদখানী গৎ এবং দ্রুৎ লয়ের গৎ রাজাখানী গৎ হতেই এই মাইহার ঘরানার সাঙ্গীতিক রূপ বা ধরন গ্রহণ করা হয়েছে। মাইহার ঘরানার সাঙ্গীতিক সৃজনশীলতা এবং এর সৌন্দর্য কৌশল চূড়ান্ত বিকশিত হয়েছিল বাবা আচার্য আলাউদ্দীন খান সাহেবের হাতে। রামপুর ঘরানার সঙ্গীতই শিখিয়েছেন আচার্য আলাউদ্দিন খান সাহেব, তবে তাতে তাঁর যন্ত্র সঙ্গীতের নিজস্ব খেয়াল অঙ্গের প্রাধান্য বজায় থাকতো। তাঁর বেশির ভাগ শিষ্যই পরবর্তীকালে নিজস্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদেরকে স্থাপিত করেছেন, এবং পান্ডিত্য দিয়ে সঙ্গীত জগৎকে সমৃদ্ধ করেছেন। এঁদের মধ্যে বিখ্যাত হলেন সরোদে তাঁর পুত্র ওস্তাদ আলী আকবর খান, সুরবাহারে তাঁর কন্যা অন্নপূর্ণা দেবী, সেতারে জামাতা পণ্ডিত রবি শংকর ও পণ্ডিত নিখিল ব্যানার্জী, বাঁশীতে পান্নালাল ঘোষ

অন্যান্য সঙ্গীত ঘরানার স্রষ্টাদের মতো বাবা আচার্য আলাউদ্দিন খান সাহেব কোন সঙ্গীত ঘরানা হতে আসেন নি। তবে তাঁর পরিবারের অনেকেই সঙ্গীতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি তার সময়ের শ্রেষ্ঠ বীণকার রামপুর সেনী বীণকার ঘরানার ওস্তাদ মোহাম্মদ ওয়াজির খানের কাছে দীক্ষা নিয়েছেন। এই দীক্ষা হতেই বাবা আচার্য আলাউদ্দিন খান সাহেব যন্ত্র সঙ্গীতে নিজস্ব স্টাইলের সৃষ্টি করেছেন, যা খেয়াল ও ধ্রুপদ অঙ্গের সঙ্গীতকে এক অপূর্ব সম্মিলন ঘটিয়ে মাইহার ঘরানার রূপ দিয়েছেন।

মাইহার ঘরানায় মূলত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের রাগই বাজানো হয়; তবে তাঁর সাঙ্গীতিক ধরনে ভিন্নতা প্রকাশ পায়। প্রথম অংশের আলাপ অঙ্গে মূলত রাগের সৃজনশীলতাকে ফুটিয়ে তোলা হয়। এরপর একটি বা দুটি গৎ তবলার সাথে বাজানো হয়। দ্বিতীয় অংশে শিল্পীরা তবলার তালের সাথে গৎ এর বিভন্ন ধরনের উপর ভিত্তি করে রাগের রূপ প্রকাশ করেন।

মাইহার ঘরানার প্রধান প্রধান শিল্পী

তথ্যসূত্র

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.