মহাসু পাহাড়ি ভাষা

মহাসু পাহাড়ি ভাষা (টাকরী: 𑚢𑚩𑚭𑚨𑚱 𑚞𑚩𑚭𑚪𑚯) পশ্চিমা পাহাড়ী ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত একটি ভাষা, যা মূলত উত্তর ভারতের হিমাচল প্রদেশ রাজ্যের সোলান জেলার উত্তরাংশ ও শিমলা জেলাকে কেন্দ্র করে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর ভাষা৷ এটি মহাসুই বা মহাসুবী নামেও পরিচিত৷ ইউনেস্কো এই ভাষাটিকে ভারতের অধিকতর বিপন্ন ভাষাগুলির তালিকাভুক্ত করেছে৷[4] ২০০১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অবধি এই ভাষাটির উল্লেখ নেই৷ আবার ২০১১ খ্রিস্টাব্দে ভাষাটির দক্ষিণের উপভাষা বাঘাটি-কে হিন্দির উপভাষা বলে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ এথ্নোলগ অনুযায়ী ২০০১ খ্রিস্টাব্দে ১০ লক্ষ লোক এই ভাষায় কথা বলতো৷[5] পূর্বে শিমলা ও সোলান জেলা দুটি মহাসু জেলার অংশ ছিলো৷ ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ১লা সেপ্টেম্বর তারিখে হিমাচল প্রদেশের জেলা পুনর্গঠনে মহাসু জেলা অবলুপ্ত করা হয়৷ পূর্বতন মহাসু জেলার সোলান ও অর্কী তহশিল মিলে সোলান জেলা এবং নালাগড়কণ্ডাঘাট তহশিল নিয়ে পাঞ্জাবের শিমলা জেলা গঠিত হয়৷

মহাসু পাহাড়ি
মহাসুই
𑚢𑚩𑚭𑚨𑚰𑚃, महासुई
টাকরী লিপিতে লেখা মহাসুঈ
দেশোদ্ভবভারত
অঞ্চলহিমাচল প্রদেশ
জাতিতত্ত্বমহাসু
মাতৃভাষী
১৫,৮৩৫ (২০১১)[1]
কিছু সংখ্যক মহাসু পাহাড়ি লোক নিজেদের মাতৃভাষা হিন্দি ও পাহাড়ি বলেছেন৷[2]
টাকরী, দেবনাগরী লিপি
ভাষা কোডসমূহ
আইএসও ৬৩৯-৩bfz
গ্লোটোলগmaha1287[3]

লিপি

মহাসু পাহাড়ি ভাষার জন্য ব্যবহৃত মূল লিপি হলো টাকরী লিপির একটি বিশেষ স্থানীয় প্রকার, যা কোচি টাকরী লিপি নামে পরিচিত৷ দক্ষিণ সোলানের হিণ্ডুরী ভাষার জন্যও এই লিপি ব্যবহার করা হতো৷[6] তবে ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর দেবনাগরী লিপি এই লিপিটিকে প্রতিস্থাপিত করে৷

হিণ্ডুরী ও মহাসু পাহাড়ি ভাষার কোচি লিপির নমুনা

অঞ্চল

অঞ্চল ভেদে মহাসু পাহাড়ি ভাষার একাধিক উপভাষা রয়েছে৷ নিম্ন মহাসু পাহাড়ির উপভাষা হলো বাঘাটি, বাঘলিয়ানী এবং কেওন্থালী আবার উচ্চ মহাসু পাহাড়ি উপভাষা হলো রামপুরী, রোহরুরী, নাওয়েরী, জুব্বালী, সিমলা সিরাজি এবং সোদোচি৷ কেওন্থালী উপভাষাটি সর্বজনগ্রাহ্য ও প্রমিত৷ রামপুরী উপভাষাটি কোচি নামেও পরিচিত৷ রোহরুরী তথা সোরাচোলি উপভাষাটি বলা হয় কোটগড় অঞ্চলে৷ উপভাষাগুলির মধ্যে বোধগম্যতা সর্বনিম্ন ৮৫ শতাংশ৷ ভাষাটির সাথে দক্ষিণের সিরমৌরী ও পূর্বের জৌনসারি ভাষায় সাদৃশ্য রয়েছে৷

বর্তমান অবস্থা

মহাসু পাহাড়ি ভাষাটি সাধারণভাবে পাহাড়ি অথবা হিমাচলি ভাষা নামে পরিচিত। তবে কারো কারো মতে বৃহত্তর পাঞ্জাবির ডোগরি ভাষার একটি উপভাষা। এই ভাষাটি কোন সরকারি পদমর্যাদা নেই এবং এটি বর্তমানে হিন্দি ভাষার একটি উপভাষা হিসেবে পরিগণিত হয়। ভাষাটির কোনো সরকারি মর্যাদা নেই৷ ইউনেস্কোর তথ্য অনুসারে এই ভাষাটি বিপন্ন ভাষার তালিকাভুক্ত, অর্থ অধিকাংশ মহাসুই ভাষাভাষী শিশুরা নিজের মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষালাভে অক্ষম।[7]

ভারতের সংবিধানের অষ্টম তফসিলে পাহাড়ী হিমাচলি ভাষাগুলির অন্তর্ভুক্তির জন্য ২০১০ খ্রিস্টাব্দে সিংহভাগ সম্মতিতে বিষয়টি রাজ্য বিধানসভায় উপস্থাপিত হয়৷[8] ছোটো ছোট সংস্থাগুলির দাবীকে বাদ দিতে সরকারীভাবে বিশেষ ঐই ভাষাগুলি সংরক্ষণ ও মান্যতা দানের কোনো বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি৷[9] রাজনৈতিক প্রভাবে ভাষাগুলির অধিকাংশের সাথেই হিন্দি ভাষাগোষ্ঠীর কোনরূপ পারস্পরিক সম্পর্ক না থাকলেও পাহাড়ি এই ভাষাগুলি হিন্দি ভাষার অন্তর্গত একেকটি উপভাষা হয়ে রয়েছে৷[10]

তথ্যসূত্র

  1. এথ্‌নোলগে মহাসু পাহাড়ি (১৮তম সংস্করণ, ২০১৫)
  2. হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "Mahasu Pahari"গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট।
  3. "UNESCO Atlas of the World's Languages in danger"। Unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১২
  4. https://www.language-archives.org/language/bfz&ved=2ahUKEwjY_9q548ztAhVv7HMBHcY0DX4QFjAEegQIBxAB&usg=AOvVaw2JLZr-bnSeoRmo5mV_u579%5B%5D
  5. https://www.researchgate.net/publication/340820409_A_Database_for_Printed_Takri_Class_of_North-West_Indian_Regional_Scripts&ved=2ahUKEwiUhe7K18jtAhUAH7cAHTN7BYcQFjAPegQICBAB&usg=AOvVaw1Y4JKwa71HzsNF-nb6yP87
  6. "Endangered Language"
  7. "Pahari Inclusion"Zee News
  8. "Pahari Inclusion"The Statesman। ১৭ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০২০
  9. "Indian Language Census" (পিডিএফ)
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.