মহাবীর

শ্রী মহাবীর জৈন, বর্ধমান নামে পরিচিত, হলেন জৈন ধর্মের ২৪তম তীর্থংকর (প্রধান প্রচারক) যিনি জৈনধর্মকে পুনরুজ্জীবিত করেন। তিনি ২৩তম জৈন তীর্থঙ্কর বা আধ্যাত্মিক গুরু পার্শ্বনাথের পরবর্তী জৈন তীর্থঙ্কর।[1] মহাবীর খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতকের গোড়ার দিকে প্রাচীন ভারতের বিহারের রাজকীয় ক্ষত্রিয় জৈন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মাতার নাম ত্রিশলা এবং পিতার নাম রাজা সিদ্ধার্থ। ত্রিশলা এবং সিদ্ধার্থ ছিলেব পার্শ্বনাথের একনিষ্ঠ ভক্ত। মহাবীর ৩০ বছর বয়সে পার্থিব সম্পদ এবং রাজবৈভব পরিত্যাগ করে আধ্যাত্মিক জাগরণের জন্য সাধনায় আত্মনিয়োগ করেন এবং একজন সন্ন্যাসী হয়ে উঠেন। মহাবীর প্রায় ১২ বছরের বেশি সময় ধরে কঠোর ধ্যান-সাধনা এবং তপস্যা করেন। পরবর্তীতে, তিনি কেবল জ্ঞান বা সর্বজ্ঞান লাভ করেন। তিনি প্রায় ৩০ বছর ধরে ধর্ম প্রচার করেন এবং খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শব্দীর দিকে মোক্ষ (জৈন বিশ্বাস) লাভ করেন, যদিও বা এই সময়কাল নিয়ে জৈনসম্প্রদায় সমূহের মধ্যে মতভেদ আছে। মহাবীর শিক্ষা দেনে যে, আধ্যাত্মিক মুক্তির জন্য অহিংসা (অহিংসা), সততা (সত্য), অস্তেয় (চুরি না করা), ব্রহ্মচর্য এবং অপরিগ্রহ (বাসনা ত্যাগ) অঙ্গীকার পালন করা প্রয়োজন। তিনি অনেকান্তবাদ (বহুবিধ বাস্তবতা), স্যাদ্বাদ এবং ন্যায়বাদ এই নীতিগুলো শিক্ষা দেন। মহাবীরের শিক্ষা বা বাণীগুলো তাঁর প্রধান শিষ্য ইন্দ্রভূতি গৌতম কর্তৃক জৈন আগম বা জৈন সাহিত্য হিসেবে সংকলিত হয়েছে। জৈন সন্ন্যাসীগণ এসব বাণী বা শিক্ষাগুলো মুখস্থ করে মনে রাখতেন এবং তাদের শিষ্যদের মধ্যে প্রচার করতেন। মনে করা হয়, সম্ভবত খ্রিষ্টীয় প্রথম শতাব্দীর আগে মহাবীরের এই শিক্ষাগুলো প্রায় হারিয়ে গিয়েছিল। তবে পরবর্তীতে, যেগুলো প্রচলিত ছিল সেগুলো শ্বেতাম্বর পদ্ধতিতে প্রথম লিপিবদ্ধ করা হয়। মহাবীর কর্তৃক প্রচারিত শিক্ষাগুলো জৈন আগম বা সাহিত্যের মূল ভিত্তি। জৈনদের দুটি সম্প্রদায় - শ্বেতাম্বর এবং দিগম্বর সম্প্রদায়ের মধ্যে মহাবীরের শিক্ষাগুলোর মধ্যে যেগুলো লিখিত হয়েছে তা নিয়ে বিস্তর মতভেদ রয়েছে।

মহাবীর
২৪শ জৈন তীর্থঙ্কর
Mahāvīra
রাজস্থানের শ্রীমহাবীরজী মন্দিরের বিখ্যাত মহাবীর বিগ্রহ
অন্যান্য নামবীর, অতিবীর, বর্ধমান, সন্মতি
পূর্বসূরিপার্শ্বনাথ
প্রধান শিক্ষাঅহিংসা, অনেকান্তবাদ, অপরিগ্রহ
রাজপরিবার
রাজবংশ/বংশইক্ষ্বাকু
পরিবার
পিতামাতাসিদ্ধার্থ (পিতা)
ত্রিশলা (মাতা)
্কল্যাণক / গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি
চ্যবন তারিখআষাঢ় সুদ ৬
চ্যবন স্থানবৈশালী
জন্মবর্ধমান
চৈত্র সুদ ১৩
বৈশালী
দীক্ষার তারিখকার্তিক বাদ ১০
দীক্ষার স্থানবৈশালী
কেবল জ্ঞানের তারিখবৈশাখ সুদ ১০
কেবল জ্ঞানের স্থানঋজুবলুক
মোক্ষের তারিখআসো বাদ অমাস (কার্তিক অমাবস্যা / দীপাবলি)
মোক্ষের স্থানপাবাপুরী, বিহার
বৈশিষ্ট্য
বর্ণস্বর্ণালি
প্রতীকসিংহ
বয়স৭২ বছর
বৃক্ষশাল
কেবলকাল
যক্ষমাতঙ্গ
যক্ষিণীসিদ্ধয়িনী বা সিদ্ধয়িকা
গণধরগৌতম

মহাবীর সাধারণত বসা বা দাঁড়ানো ধ্যানের মূর্তি, তার নিচে একটি সিংহ এর প্রতীক সঙ্গে অঙ্কিত হয়। তার প্রাচীনতম অঙ্কিত চিত্র উত্তর ভারতের শহর মথুরার প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়। এটি তৈরি করার সময় সম্ভবত, খ্রিস্টপূর্ব ১শ শতাব্দী থেকে দ্বিতীয় শতাব্দীর দিকে। তার জন্ম মহাবীর জয়ন্তী হিসাবে পালিত হয়, এবং তার নির্বরণ জৈন দ্বারা দীপালি হিসাবে পালন করা হয়।

জীবনী

জৈনধর্মে একজন তীর্থঙ্করকে (নদীপারাপারের কর্তা বা শিক্ষক ঈশ্বর) একটি ‘তীর্থে’র প্রতিষ্ঠাতা মনে করা হয়। ‘তীর্থ’ হল জন্ম ও মৃত্যুর অনন্ত সমুদ্রের (যাকে ‘সংসার’ বলা হয়) মধ্যে দিয়ে পারাপারের জন্য সৃষ্ট একটি অগভীর পথ।[2][3] জৈন ধর্মগ্রন্থ অনুসারে, বিশ্ব কালচক্রের প্রত্যেক অর্ধে চব্বিশ জন তীর্থঙ্কর জীবকে কৃপা করেন। মহাবীর হলেন ‘অবসর্পিণী’র (বর্তমান অধোগামী কালপর্যায়) শেষ তীর্থঙ্কর।[4][lower-alpha 1] খ্রিস্টীয় ২য় শতাব্দীর বিশিষ্ট দিগম্বর সন্ন্যাসী সামন্তভদ্র মহাবীরের ‘তীর্থ’টিকেসর্বোদয়’ (বিশ্বজনীন উন্নতি) নামে চিহ্নিত করেছেন।[6]

মহাবীরকেই সাধারণভাবে জৈনধর্মের প্রতিষ্ঠাতা মনে করা হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা নয়। জৈনধর্মে তার পূর্বসূরিদেরও স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং তাকে ২৪শ তীর্থঙ্কর মনে করা হয়।[7] এছাড়া, ২৩শ তীর্থঙ্কর পার্শ্বনাথ ছিলেন একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব।[5][8][9]

নাম

মহাবীরের ছেলেবেলার নাম ছিল ‘বর্ধমান’ (‘যিনি বৃদ্ধি পান, বৃদ্ধিশীল’)। মহাবীরের জন্মের সময় তার রাজ্যের দ্রুত সমৃদ্ধি ঘটছিল বলে তার এই নামকরণ করা হয়।[10] মহাবীর ছেলেবেলায় একাধিকবার বীরত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। তাই তাকে ‘মহাবীর’ নামে অভিহিত করা হত।[11][12][13][14] মহাবীরকে ‘জিন’ (‘আসক্তি, অহংকার, লোভ প্রভৃতি অন্তঃপ্রবৃত্তিগুলি যিনি জয় করেছেন’) নামেও চিহ্নিত করা হয়। পরবর্তীকালে ‘জিন’ উপাধিটি ‘তীর্থঙ্কর’ নামের সমার্থক শব্দে পরিণত হয়।[15]

বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলিতে মহাবীরকে ‘নিগন্থ জ্ঞাতপুত্ত’ নামে অভিহিত করা হয়েছে।[16] ‘নিগন্থ’ শব্দের অর্থ ‘যাঁর বন্ধন, পিছুটান বা রজ্জু নেই’। ‘জ্ঞাতপুত্ত’ শব্দটি (‘‘নতসে’র পুত্র’) তার ‘জ্ঞাত’ বা ‘নয়’ (প্রাকৃত) নামক বংশ-নামের দ্যোতক।[15][17][18] মহাবীরকে ‘শ্রমণ’ (‘অনুসন্ধানকারী’) নামেও অভিহিত করা হয়।[11]

জন্ম

মহাবীরের জন্ম, কল্পসূত্র থেকে, ১৩৭৫-১৪০০ খ্রিস্টাব্দ।

খ্রিস্টপূর্ব ৫৯৯ অব্দে বীর নির্বাণ সম্বৎ অনুসারে চৈত্র মাসের শুক্লা ত্রয়োদশী তিথিতে[19][20][21][22] কাশ্যপ গোত্রীয়[11][23] এক ক্ষত্রিয় রাজবংশে মহাবীর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতা ছিলেন ইক্ষ্বাকু রাজবংশের[24] রাজা সিদ্ধার্থ ও মাতা ছিলেন রানি ত্রিশলা (বৈশালীর রাজা চেতকের ভগিনী)।[23] গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে এই দিনটি মার্চ বা এপ্রিল মাসে পড়ে। এই দিনটিতেই মহাবীর জয়ন্তী পালিত হয়।[25] প্রথাগত মত অনুসারে, প্রাচীন শহর ক্ষত্রিয় কুন্দ লাচ্চুয়ারের কুন্দলপুরকে তার জন্মস্থান মনে করা হয়। বর্তমানে এই স্থানটি বিহারের জামুই জেলার সিকান্দ্রা মহকুমার অন্তর্গত।[26] জৈন বিশ্বাস অনুসারে, মহাবীরের জন্মের পর ইন্দ্র জম্বুদ্বীপ নামক বিশ্বকেন্দ্রের অক্ষ মেরু পর্বতে তার তৈলার্পণ ও অভিষেক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিলেন এবং তার নামকরণ করা হয়েছিল ‘বর্ধমান’।[27] অধিকাংশ আধুনিক ইতিহাসবিদই মনে করেন, মহাবীরের জন্ম হয়েছিল কুন্দগ্রামে। এই স্থানটি এখন ভারতের বিহার রাজ্যের মুজফফরপুর জেলার বাসোকুন্দ নামে পরিচিত।[23][28] জৈন মতানুসারে, মহাবীর খ্রিস্টপূর্ব ৫৯৯ থেকে ৫২৭ অব্দ পর্যন্ত জীবিত ছিলেন।[20][29] পাশ্চাত্যের ইতিহাসবিদগণ মনে করেন, মহাবীর খ্রিস্টপূর্ব ৪৮০ থেকে ৪০৮ অব্দ পর্যন্ত জীবিত ছিলেন।[30] পাশ্চাত্যের কোনও কোনও গবেষকের মতে, মহাবীর খ্রিস্টপূর্ব ৪২৫ অব্দ নাগাদ মারা যান।[31]

প্রথম জীবন

রাজপুত্র মহাবীর বিলাসব্যসনের মধ্যে বড়ো হয়েছিলেন। শ্বেতাম্বর ধর্মগ্রন্থ আচারাঙ্গ সূত্র-এর দ্বিতীয় অধ্যায় অনুসারে, তার পিতামাতা ছিলেন পার্শ্বনাথের অনুগামী এবং জৈন সন্ন্যাসীদের গৃহস্থ ভক্ত।[32][10] জৈন সম্প্রদায়গুলির মধ্যে তার বিবাহ প্রসঙ্গ নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে।[lower-alpha 2] দিগম্বর সম্প্রদায়ের মতে, মহাবীরের পিতামাতা চেয়েছিলেন, তিনি যশোদাকে বিবাহ করেন। কিন্তু মহাবীর তাতে সম্মত হননি।[34] শ্বেতাম্বর সম্প্রদায়ের মতে, মহাবীর অল্প বয়সে যশোদাকে বিবাহ করেছিলেন এবং প্রিয়দর্শনা নামে তাদের একটি কন্যাসন্তানও ছিল।[27][23]

সন্ন্যাস

৩০ বছর বয়সে মহাবীর রাজকীয় জীবনের সুখ পরিত্যাগ করে গৃহ ও পরিবার ত্যাগ করেন এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞানের অনুসন্ধানে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন।[5] তিনি কঠোর তপস্যা করেন, অশোক বৃক্ষের নিচে ধ্যান করেন এবং পোষাকপরিচ্ছদ সব পরিত্যাগ করেন।[5][12] তিনি যে কঠিন পরিস্থিতি ও অপমানজনক অবস্থার সম্মুখীন হয়েছিলেন, তার বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায় আচারাঙ্গ সূত্র গ্রন্থে।[35][36] কল্পসূত্র অনুসারে, মহাবীর অস্তিকাগ্রাম, চম্পাপুরী, প্রতিচম্পা, বৈশালী, বনীজগ্রাম, নালন্দা, মিথিলা, ভদ্রিকা, অলভীকা, পাণিতাভূমি, শ্রাবস্তীপাবাপুরীতে চল্লিশটি বর্ষাকাল (চতুর্মাস) অতিবাহিত করেছিলেন।[37]

সর্বজ্ঞতা

সাড়ে ১২ বছর কঠোর তপস্যার পর ৪৩ বছর বয়সে একটি শাল গাছের তলায় মহাবীর ‘কেবল জ্ঞান’ (সর্বজ্ঞতা বা অনন্ত জ্ঞান) প্রাপ্ত হন।[38][39] জৈন ধর্মগ্রন্থ উত্তর-পুরাণহরিবংশ-পুরাণ-এ এই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়।[40] আচারাঙ্গ সূত্র মতে, মহাবীর ছিলেন সর্বদর্শী। সূত্রকৃতাঙ্গ গ্রন্থে ‘সর্বজ্ঞতা’ ধারণাটির ব্যাখ্যা এবং মহাবীরের অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলির বিবরণ পাওয়া যায়।[26]

সর্বজ্ঞতা প্রাপ্তির পর ৩০ বছর মহাবীর সারা ভারত পরিভ্রমণ করেন এবং নিজের দর্শন শিক্ষা দেন। জৈন বিশ্বাস অনুসারে, মহাবীরের ১৪,০০০ সন্ন্যাসী, ৩৬,০০০ সন্ন্যাসিনী, ১৫৯,০০০ শ্রাবক (গৃহস্থ) ও ৩১৮,০০০ শ্রাবিকা (গৃহস্থ নারী) অনুগামী ছিল।[41][42] তার অনুগামী রাজন্যবর্গের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন মগধের রাজা শ্রেণিকা (যিনি বিম্বিসার নামে পরিচিত ছিলেন), অঙ্গের রাজা কুণিক ও বিদেহের রাজা চেতক।[37][43]

মোক্ষ (নির্বাণ)

পাবাপুরীতে মহাবীরের নির্বাণের স্মারক জল মন্দির

জৈনরা বিশ্বাস করেন, ৭২ বছর বয়সে মহাবীর মোক্ষ (জন্ম ও মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি) লাভ করেন এবং তার আত্মা এখন ‘সিদ্ধশিলা’য় (মুক্ত আত্মাদের স্থান) অবস্থান করছে। জৈন ধর্মগ্রন্থ অনুসারে, মহাবীর পাবাপুরী (অধুনা বিহারে অবস্থিত) নির্বাণ লাভ করেছিলেন।[20][44] সেই দিনেই তাঁর প্রধান শিষ্য গৌতম স্বামী কেবল জ্ঞান অর্জন করেন। জিনসেনের মহাপুরাণ অনুসারে, তীর্থঙ্করগণের নির্বাণ লাভের পর স্বর্গীয় সত্ত্বাগণ তাঁদের অন্তেষ্টি ক্রিয়া করেন। প্রবচনসার অনুসারে, তীর্থঙ্করদের নখ আর চুলই শুধু পড়ে থাকে। অবশিষ্ট শরীর কর্পূরের মতো হাওয়ায় বিলীন হয়ে যায়।[45][46] মহাবীর যেখানে মোক্ষ লাভ করেছিলেন বলে মনে করা হয়, সেখানে বর্তমানে জল মন্দির নামে একটি জৈন মন্দির রয়েছে।[47]

পূর্বজন্ম

জৈন ধর্মগ্রন্থ মহাপুরাণত্রিষষ্ঠি-শকল-পুরুষ-চরিত্র-এ মহাবীরের পূর্বজন্মগুলির বিবরণ পাওয়া যায়। সংসারের আবর্তনশীল চক্রে একটি আত্মা অসংখ্যবার জন্মগ্রহণ করে। একজন তীর্থঙ্কর যখন কর্মের কারণগুলিকে খুঁজে পান এবং ‘রত্নত্রয় গড়ে তোলেন, তখন থেকেই তার জন্মগ্রহণ করা শুরু হয় বলে জৈনরা বিশ্বাস করেন। জৈন ধর্মগ্রন্থগুলিতে মহাবীরের তীর্থঙ্কর রূপে জন্মের আগে ২৬টি জন্মের কথা আলোচিত হয়েছে।[37] পূর্বের একটি জন্মে মহাবীর ভরত চক্রবর্তীর পুত্র মারীচি রূপে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।[27]

শিক্ষা

জৈন আগম

মহাবীরের প্রধান শিষ্য গৌতমগণধর’ তার উপদেশগুলি সংকলিত করেন। প্রামাণ্য পবিত্র শাস্ত্রগুলি বারো খণ্ডে সংকলিত।[48] বিজয় কে. জৈনের মতে, “প্রতিটি সম্প্রদায়ের মত সম্পর্কে একজনের যা কিছু জিজ্ঞাস্য আছে, তার পরিপূর্ণতম এবং যথাযথ বিবরণ এই শাস্ত্রগুলিতে পাওয়া যায়। এই সকল শাস্ত্রে যা কিছু জ্ঞান দান করা হয়েছে, তা শিক্ষকরা তাঁদের শিষ্য সন্তদের মুখে মুখে শিক্ষা দিতেন এবং মৌখিক প্রথায় তা প্রচলিত থাকত।”[48] দিগম্বর সম্প্রদায়ের মতে, আচার্য ভূতবলীই হলেন শেষ সন্ন্যাসী, যাঁর মূল প্রামাণ্য শাস্ত্র সম্পর্কে আংশিক জ্ঞান ছিল। মহাবীরের যে সব উপদেশ আগম শাস্ত্রের বিষয়বস্তু ছিল, সেইগুলি পরবর্তীকালে কয়েকজন বিশিষ্ট আচার্য পুনরুদ্ধার করে সংকলিত ও লিপিবদ্ধ করেন।[49] খ্রিস্টীয় ১ম শতাব্দীতে আচার্য ধরাসেন দুই জন আচার্যকে এই উপদেশগুলি লিপিবদ্ধ করার কাজে তত্ত্বাবধান করেন। এই দুই আচার্য হলেন আচার্য পুষ্পদন্ত ও আচার্য ভূতবলী। এঁরা তালপাতায় ষটখণ্ডাগম রচনা করেন। দিগম্বর জৈনদের যে প্রাচীন ধর্মগ্রন্থগুলির কথা জানা যায়, এটি তার মধ্যে সবচেয়ে পুরনো। জৈন আগমগুলিতে সন্ন্যাসী ও গৃহস্থদের পালনীয় পাঁচটি প্রধান ব্রতের কথা বলা হয়েছে।[50] এই নৈতিক আদর্শগুলি মহাবীর শিক্ষা দিয়েছিলেন:[51]

  1. অহিংসা—মহাবীরের শিক্ষা অনুসারে প্রত্যেকটি জীবের পবিত্রতা ও আত্মমর্যাদা রয়েছে। তাই একজন যেমন নিজের পবিত্রতা ও আত্মমর্যাদার প্রতি অন্যের সম্মান আশা করেন, তেমনই তার উচিত অন্যের পবিত্রতা ও আত্মমর্যাদাকে সম্মান করে চলা। অহিংসাকেই জৈনধর্মে প্রথম ও প্রধান ব্রত মনে করা হয়। জৈন ধর্মগ্রন্থ তত্ত্বার্থসূত্র অনুসারে, “জীবনীশক্তি বিজাভিত হয় হিংসার প্রতি আসক্তি থেকে।”
  2. সত্য—মিথ্যাচার না করা ও মিথ্যা কথা না বলাই উচিত। [52] জৈন ধর্মগ্রন্থ সর্বার্থসিদ্ধি অনুসারে, “জীবকে কষ্ট দেয়, এমন কিছুই প্রশংসার যোগ্য নয়; তা সে সত্য ঘটনাই হোক, বা অন্য কিছু।”[53]
  3. অস্তেয় (চুরি না করা)— যদি কোনও কিছু যথাযথ রূপে দান করা না হয়, তবে তা গ্রহণ করা উচিত নয়।
  4. ব্রহ্মচর্য (ইন্দ্রিয়-সংযম)— যৌন প্রবৃত্তিগুলিকে স্থায়ী ও কঠোরভাবে দমন করা।
  5. অপরিগ্রহ (অনাসক্তি)— অন্তঃপ্রবৃত্তি (পছন্দ, অপছন্দ) ও বাহ্য প্রবৃত্তির (সম্পত্তি) প্রতি অনাসক্তি।

মহাবীরের দর্শনে আটটি মূলভিত্তি (বিশ্বাসের নীতি), তিনটি অধিবিদ্যা (দ্রব্য, জীব, ও অজীব),[43] ও পাঁচটি নৈতিক আদর্শ বিদ্যমান। এগুলির উদ্দেশ্য জীবনের মান উন্নত করা।[54] মহাবীর বলেছিলেন, সামাজিক শান্তি, নিরাপত্তা ও একটি বুদ্ধিদীপ্ত সমাজ পেতে হলে ব্যক্তি ও সমাজ উভয়কেই আত্ম-সংযম অভ্যাস করতে হবে।[55]

অহিংসা

মহাবীর প্রচার করেছিলেন, অহিংসা হল সর্বোচ্চ নৈতিক আদর্শ।[56] মহাবীর মনে করতেন, কষ্ট কেউই পছন্দ করে না। তাই সকল জীবের প্রতি অহিংসা প্রদর্শনই কর্তব্য।[57] মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী বলেন,

বিশ্বের কোনও ধর্মই অহিংসার আদর্শকে এত গভীরভাগে ও এত পদ্ধতিগতভাবে আলোচনা করেনি, যতটা জৈনধর্ম প্রত্যেক মানুষের জীবনে অহিংসার প্রয়োগ সংক্রান্ত যোগ্যতার কথা আলোচনা করেছে। অহিংসার মহৎ আদর্শটি মানুষের দ্বারা কার্যকর করা হয়েছিল এই জগতে ও তার বাইরে জীবনের তাদের সমাপ্তি অর্জন করার জন্য। জৈনধর্ম অবশ্যই সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে এবং মহাবীরকে অবশ্যই অহিংসা বিষয়ে সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব দিয়ে সম্মান জানানো উচিত।[58][59][60]

অনেকান্তবাদ

মহাবীরের অপর একটি মৌলিক শিক্ষা ছিল ‘অনেকান্তবাদ’ (দৃষ্টিভঙ্গির বহুত্ববাদ ও বিভিন্নতা)।[61] জৈন দার্শনিক ধারণাগুলি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মহাবীর ‘অনেকান্ত’ ধারণাটির প্রয়োগ ঘটিয়েছিলেন। কথিত আছে, একটি আপেক্ষিকতাবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে মহাবীর আত্মার প্রকৃতিকে দুইভাবে ব্যাখ্যা করেন। মূল বস্তুর দৃষ্টিকোণ থেকে আত্মার প্রকৃতিকে নিত্য বলেছেন (‘নীশ্যানয়’)। অন্যদিকে আত্মার আকার ও পরিবর্তনশীলতার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এটিকে তিনি ক্ষণস্থায়ী বলে ব্যাখ্যা করেছেন।[62]

জৈন সাহিত্য

জীবনী গ্রন্থ

যতিবৃষভের তিলোয় পণ্ণত্তি গ্রন্থে মহাবীরের জীবনের সঙ্গে যুক্ত প্রায় সকল ঘটনা মুখস্থ করে রাখার উপযোগী আকারে আলোচনা করা হয়েছে।[63] আচার্য জিনসেনের মহাপুরাণ গ্রন্থটি আদিপুরাণউত্তরপুরাণ গ্রন্থের সংকলন। খ্রিস্টীয় ৮ম শতাব্দীতে তার শিষ্য আচার্য গুণভদ্র এটি সম্পূর্ণ করেন। উত্তরপুরাণ গ্রন্থে মহাবীরের জীবন তিনটি ‘পর্বনে’ (৭৪-৭৬) ১৮১৮টি শ্লোকে বর্ণিত হয়েছে।[64] ৮৫৩ খ্রিষ্টাব্দে অসগ মহাবীরের জীবন অবলম্বনে বর্ধমানচরিত্র নামে একটি সংস্কৃত কাব্য রচনা করেন।[65][66][67]

স্তুতি

  • আচার্য সামন্তভদ্রের স্বয়ম্ভুস্তোত্র হল চব্বিশজন তীর্থঙ্করের একটি স্তুতি কবিতা। এই কবিতায় আটটি শ্লোকে মহাবীরের গুণাবলি কীর্তন করা হয়েছে।[68] তার মধ্যে একটি শ্লোক নিম্নরূপ:

    হে প্রভু জিন! সংসার সমুদ্র পার হতে যে প্রয়োজনীয় গুণাবলির কথা আপনার মতবাদ থেকে পাওয়া যায়, তা এই দুঃখময় কালেও (‘পঞ্চম কাল’) শিরোধার্য। যে সকল গুণী সাধুগণ জগতে বিখ্যাত তথাকথিত দেবদেবীদের মিথ্যা করেছেন, এবং সকল দোষকে অকার্যকর করেছেন, তাঁরা আপনার মতবাদকে সম্মান করেন।[69]

  • আচার্য সামন্তভদ্রের যুক্ত্যানুশাসন হল চৌষট্টিটি শ্লোকে বিন্যস্ত একটি কাব্যিক মহাবীর স্তুতি।[70]
  • জৈন কবি ভগচন্দ মহাবীরাষ্টক স্তোত্র নামে একটি স্তোত্র রচনা করেন।[71]

প্রভাব

মহাবীরের শিক্ষা একাধিক ব্যক্তিত্বকে প্রভাবিত করেছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন:

মহাবীর ভারতে মুক্তির বার্তা ঘোষোনা করেছিলেন। এই বার্তাটি হল এই যে, ধর্ম একটি বাস্তবতা। তা সামাজিক প্রথা মাত্র নয়। এই বার্তাটি হল এই যে, মুক্তি আসে সত্য ধর্মের আশ্রয় গ্রহণ করলে, সমাজের বাহ্যিক অনুষ্ঠানগুলির উদযাপনের মাধ্যমে নয়। এই বার্তাটি হল এই যে, ধর্ম মানুষে মানুষে চিরন্তন বিচ্ছিন্নতার বাধা নয়। বলতে আশ্চর্য লাগে, এই শিক্ষা দ্রুত জাতির সকল বাধা অতিক্রম করে এবং সমগ্র দেশকে জয় করেছিল।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর[59]

১৯৭৪ সালে মহাবীরের নির্বাণ লাভের ২,৫০০ বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পদ্মনাভ জৈনির মতে:[72]

পাশ্চাত্যের খুব অল্প লোকই সম্ভবত জানেন যে এই বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে জৈনদের দীর্ঘ ইতিহাসে প্রথমবার শ্বেতাম্বর, দিগম্বরস্থানকবাসী সন্ন্যাসীরা এক মঞ্চে সমবেত হয়েছেন এবং একটি সাধারণ পতাকা (জৈন ‘ধ্বজা’ ও প্রতীকচিহ্নের (জৈন ‘প্রতীক’) জন্য সহমত প্রকাশ করেছেন এবং সম্প্রদায়ে একটি ঐক্য সাধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এক বছর ধরে চারটি ‘ধর্মচক্র’ বা রথোপরি তীর্থঙ্কর মহাবীরের সমবসরণের (পবিত্র সম্মেলন) প্রাচীন চিহ্ন সংবলিত চাকা ভারতের প্রধান শহরগুলিতে ঘোরাও হবে। বিভিন্ন রাজ্য সরকারের কাছ থেকে বলিদান উপলক্ষ্যে ও অন্যান্য ধর্মীয় উদ্দেশ্যে পশুবলির বিরুদ্ধে আইনি সম্মতি আদায় করা হয়। এই প্রচারাভিজান জৈনদের সমগ্র ইতিহাসে তাদের একটি প্রধান চিন্তার বিষয়।

পদ্মনাভ জৈনি

জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে

মহাবীরের জীবন অবলম্বনে মহাবীর: দ্য হিরো অফ ননভায়োলেন্স নামে একটি সচিত্র ছোটোদের গল্প রচিত হয়েছে।[73]

মূর্তিতত্ত্ব

মহাবীরকে সাধারণত উপবিষ্ট বা দণ্ডায়মান অবস্থায় চিত্রিত করা হয়। তার নিচে থাকে তার প্রতীক সিংহ।[74] প্রত্যেক তীর্থঙ্করের একটি নির্দিষ্ট প্রতীক থাকে, যাতে পূজক একই রকম দেখতে তীর্থঙ্করদের আলাদাভাবে চিনতে পারেন।[75] মহাবীরের চিহ্নটি সাধারণত তীর্থঙ্করের পায়ের নিচে উৎকীর্ণ থাকে। সকল তীর্থঙ্করের মতো মহাবীরেরও একটি ‘শ্রীবৎস’ চিহ্ন থাকে[lower-alpha 3] এবং সকল তীর্থঙ্করের মতো তার চোখও নিচের দিকে থাকে।[76]

ছবি

আরও দেখুন

টীকা

  1. Heinrich Zimmer: "The cycle of time continually revolves, according to the Jainas. The present "descending" (avasarpini) period was preceded and will be followed by an "ascending" (utsarpini). Sarpini suggests the creeping movement of a "serpent" ('sarpin'); ava- means "down" and ut- means up."[5]
  2. On this Champat Rai Jain wrote- "Of the two versions of Mahavira's life — the Swetambara and the Digambara— it is obvious that only one can be true: either Mahavira married, or he did not marry. If Mahavira married, why should the Digambaras deny it? There is absolutely no reason for such a denial. The Digambaras acknowledge that nineteen out of the twenty-four Tirthamkaras married and had children. If Mahavira also married it would make no difference. There is thus no reason whatsoever for the Digambaras to deny a simple incident like this. But there may be a reason for the Swetambaras making the assertion; the desire to ante-date their own origin. As a matter of fact their own books contain clear refutation of the statement that Mahavira had married. In the Samavayanga Sutra (Hyderabad edition) it is definitely stated that nineteen Tirthamkaras lived as householders, that is, all the twenty-four excepting Shri Mahavira, Parashva, Nemi, Mallinath and Vaspujya."[33]
  3. তীর্থঙ্করের বুকে অঙ্কিত একটি বিশেষ চিহ্ন

তথ্যসূত্র

  1. Zimmer 1953, পৃ. 181।
  2. Champat Rai Jain 1930, পৃ. 3।
  3. Sanghvi, Vir (১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩), "Rude Travel: Down The Sages", Hindustan Times, ২৫ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০১৬
  4. Zimmer 1953, পৃ. 224।
  5. Jain ও Upadhye 2000, পৃ. 54।
  6. Wiley 2009, পৃ. 5-7।
  7. von Glasenapp 1999, পৃ. 16–17।
  8. Sangave 2001, পৃ. 103।
  9. Kailash Chand Jain 1991, পৃ. 32।
  10. Heehs 2002, পৃ. 93।
  11. von Glasenapp 1999, পৃ. 30।
  12. von Dehsen 2013, পৃ. 121।
  13. Shanti Lal Jain 1998, পৃ. 50।
  14. Zimmer 1953, পৃ. 223।
  15. Winternitz 1993, পৃ. 408।
  16. von Dehsen 2013, পৃ. 29।
  17. Kailash Chand Jain 1991, পৃ. 31।
  18. Upinder Singh 2008, পৃ. 313।
  19. Zimmer 1953, পৃ. 222।
  20. Wiley 2004, পৃ. 134।
  21. Shah, Pravin K., Lord Mahavira and Jain Religion, Jain Study Center of North Carolina
  22. von Glasenapp 1999, পৃ. 29।
  23. Sunavala 1934, পৃ. 52।
  24. Gupta ও Gupta 2006, পৃ. 1001।
  25. Dundas 2002, পৃ. 25।
  26. Dundas 2002, পৃ. 21।
  27. Chaudhary, Pranava K (১৪ অক্টোবর ২০০৩), "Row over Mahavira's birthplace", The Times Of India, ৫ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০১৬
  28. Jainism: The story of Mahavira, London: Victoria and Albert Museum
  29. Taliaferro ও Marty 2010, পৃ. 126।
  30. Dundas 2002, পৃ. 24।
  31. Dundas 2002, পৃ. 30।
  32. Champat Rai Jain 1939, পৃ. 97।
  33. Shanti Lal Jain 1998, পৃ. 51।
  34. Sen 1999, পৃ. 74।
  35. Dundas 2002, পৃ. 27।
  36. von Glasenapp 1999, পৃ. 327।
  37. Jain ও Upadhye 2000, পৃ. 30।
  38. von Glasenapp 1999, পৃ. 30, 327।
  39. Jain ও Upadhye 2000, পৃ. 31।
  40. Heehs 2002, পৃ. 90।
  41. von Glasenapp 1999, পৃ. 39।
  42. Caillat ও Balbir 2008, পৃ. 88।
  43. Dundas 2002, পৃ. 22-24।
  44. von Glasenapp 1999, পৃ. 328।
  45. Pramansagar 2008, পৃ. 38–39।
  46. "Destinations : Pawapuri"Bihar State Tourism Development Corporation। ২২ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০১৬
  47. Vijay K. Jain 2012, পৃ. xi।
  48. Vijay K. Jain 2012, পৃ. xii।
  49. Sangave 2001, পৃ. 67।
  50. Shah, Umakant Premanand, Mahavira Jaina teacher, Encyclopædia Britannica
  51. Vijay K. Jain 2012, পৃ. 61।
  52. S.A. Jain 1992, পৃ. 197।
  53. Chakravarthi 2003, পৃ. 3–22।
  54. Kailash Chand Jain 1991, পৃ. 16।
  55. Jain ও Jain 2002, পৃ. 13।
  56. Titze 1998, পৃ. 4।
  57. Pandey 1998, পৃ. 50।
  58. Nanda 1997, পৃ. 44।
  59. Great Men's view on Jainism, Jainism Literature Center quote= No religion in the World has explained the principle of Ahimsa so deeply and systematically as is discussed with its applicability in every human life in Jainism. As and when the benevolent principle of Ahimsa or non-violence will be ascribed for practice by the people of the world to achieve their end of life in this world and beyond. Jainism is sure to have the uppermost status and Lord Mahāvīra is sure to be respected as the greatest authority on Ahimsa.
  60. Jalaj 2011, পৃ. 12।
  61. Sethia 2004, পৃ. 80।
  62. Jain ও Upadhye 2000, পৃ. 45।
  63. Jain ও Upadhye 2000, পৃ. 46।
  64. Kailash Chand Jain 1991, পৃ. 59।
  65. Dundas 2002, পৃ. 19।
  66. Jain ও Upadhye 2000, পৃ. 47।
  67. Vijay K. Jain 2015, পৃ. 164–169।
  68. Vijay K. Jain 2015, পৃ. 165।
  69. Gokulchandra Jain 2015, পৃ. 84।
  70. Mahaveerashtak Stotra, ২৫ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০১৬
  71. Jaini 2000, পৃ. 31।
  72. "New Children's Book Mahavira: The Hero of Nonviolence by Wisdom Tales Press", PRLog, ৩০ জুন ২০১৪
  73. Shah 1987, পৃ. 192।
  74. Zimmer 1953, পৃ. 225।
  75. Melton ও Baumann 2010, পৃ. 1553।
  76. Titze 1998, পৃ. 266।

গ্রন্থপঞ্জি

  • Caillat, Colette; Balbir, Nalini (১ জানুয়ারি ২০০৮), Jaina Studies (Prakrit ভাষায়), Motilal Banarsidass, আইএসবিএন 978-81-208-3247-3
  • Chakravarthi, Ram-Prasad (২০০৩), "Non-violence and the other A composite theory of multiplism, heterology and heteronomy drawn from Jainism and Gandhi", Angelaki, 8 (3): 3–22, ডিওআই:10.1080/0969725032000154359
  • Dundas, Paul (২০০২) [1992], The Jains (Second সংস্করণ), Routledge, আইএসবিএন 0-415-26605-X
  • Gupta, K.R.; Gupta, Amita (১ জানুয়ারি ২০০৬), Concise Encyclopaedia of India, 3, Atlantic Publishers & Dis, আইএসবিএন 978-81-269-0639-0
  • Heehs, Peter (২০০২), Indian Religions: A Historical Reader of Spiritual Expression and Experience, C. Hurst & Co. Publishers, আইএসবিএন 978-1-85065-497-1
  • Jain, Champat Rai (১৯৩০), Jainism, Christianity and Science, Allahabad: The Indian Press, এই উৎস থেকে এই নিবন্ধে লেখা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পাবলিক ডোমেইনে রয়েছে।
  • Jain, Champat Rai (১৯৩৯), The Change of Heart, এই উৎস থেকে এই নিবন্ধে লেখা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পাবলিক ডোমেইনে রয়েছে।
  • Jain, Dr. Gokulchandra (২০১৫), Samantabhadrabhāratī (1st সংস্করণ), Budhānā, Muzaffarnagar: Achārya Shāntisāgar Chani Smriti Granthmala, আইএসবিএন 978-81-90468879
  • Jain, Hiralal; Jain, Dharmachandra (১ জানুয়ারি ২০০২), Jaina Tradition in Indian Thought, আইএসবিএন 9788185616841
  • Jain, Hiralal; Upadhye, Adinath Neminath (২০০০) [1974], Mahavira, his times and his philosophy of life, Bharatiya Jnanpith
  • Jain, Kailash Chand (১৯৯১), Lord Mahāvīra and His Times, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন 978-81-208-0805-8
  • Jain, Prof. S.A. (১৯৯২) [First edition 1960], Reality (English Translation of Srimat Pujyapadacharya's Sarvarthasiddhi) (Second সংস্করণ), Jwalamalini Trust, এই উৎস থেকে এই নিবন্ধে লেখা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পাবলিক ডোমেইনে রয়েছে।
  • Jain, Shanti Lal (১৯৯৮), ABC of Jainism, Bhopal (M.P.): Jnanodaya Vidyapeeth, আইএসবিএন 81-7628-000-3
  • Jain, Vijay K. (২০১২), Acharya Amritchandra's Purushartha Siddhyupaya: Realization of the Pure Self, With Hindi and English Translation, Vikalp Printers, আইএসবিএন 978-81-903639-4-5, এই উৎস থেকে এই নিবন্ধে লেখা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পাবলিক ডোমেইনে রয়েছে।
  • Jain, Vijay K. (২০১৫), Acarya Samantabhadra's Svayambhustotra: Adoration of The Twenty-four Tirthankara, Vikalp Printers, আইএসবিএন 978-81-903639-7-6, এই উৎস থেকে এই নিবন্ধে লেখা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পাবলিক ডোমেইনে রয়েছে।
  • Jaini, Padmanabh S. (২০০০), Collected Papers on Jaina Studies, Delhi: Motilal Banarsidass Publ., আইএসবিএন 81-208-1691-9
  • Jalaj, Dr. Jaykumar (২০১১), W-O Berglin, Peter, সম্পাদক, The Basic Thought Of Bhagavan Mahavir (Tenth সংস্করণ), Hindi Granth Karyalay, আইএসবিএন 978-81-88769-41-4
  • Melton, J. Gordon; Baumann, Martin, সম্পাদকগণ (২০১০), Religions of the World: A Comprehensive Encyclopedia of Beliefs and Practices, One: A-B (Second সংস্করণ), ABC-CLIO, আইএসবিএন 978-1-59884-204-3
  • Nanda, R. T. (১৯৯৭), Contemporary Approaches to Value Education in India, Regency Publications, আইএসবিএন 978-81-86030-46-2
  • Pandey, Janardan (১৯৯৮), Gandhi and 21st Century, আইএসবিএন 9788170226727
  • Pramansagar, Muni (২০০৮), Jain Tattvavidya, India: Bhartiya Gyanpeeth, আইএসবিএন 978-81-263-1480-5
  • Sangave, Vilas Adinath (২০০১), Aspects of Jaina Religion, Bharatiya Jnanpith, আইএসবিএন 978-81-263-0720-3
  • Sen, Shailendra Nath (১৯৯৯) [1998], Ancient Indian History and Civilization (2nd সংস্করণ), New Age International, আইএসবিএন 81-224-1198-3
  • Sethia, Tara (২০০৪), Ahimsā, Anekānta, and Jaininsm, Motilal Banarsidass Publ., আইএসবিএন 978-81-208-2036-4
  • Shah, Umakant Premanand (১৯৮৭), Jaina-Rupa Mandana: Jaina Iconography, 1, India: Shakti Malik Abhinav Publications, আইএসবিএন 81-7017-208-X
  • Singh, Upinder (২০০৮), A history of ancient and early medieval India : from the Stone Age to the 12th century, New Delhi: Pearson Education, আইএসবিএন 978-81-317-1120-0
  • Sunavala, A.J. (১৯৩৪), Adarsha Sadhu: An Ideal Monk (First paperback edition, 2014 সংস্করণ), Cambridge University Press, আইএসবিএন 978-1-107-62386-6
  • Taliaferro; Marty (২০১০), A dictionary of philosophy of Religion, আইএসবিএন 978-1-4411-1197-5
  • Titze, Kurt (১৯৯৮), Jainism: A Pictorial Guide to the Religion of Non-Violence (2 সংস্করণ), Motilal Banarsidass, আইএসবিএন 978-81-208-1534-6
  • von Dehsen, Christian (১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩), Philosophers and Religious Leaders, Routledge, আইএসবিএন 978-81-208-1376-2
  • von Glasenapp, Helmuth (১৯৯৯), Jainism: An Indian Religion of Salvation, Delhi: Motilal Banarsidass, আইএসবিএন 81-208-1376-6
  • Wiley, Kristi L. (১ জানুয়ারি ২০০৪), Historical Dictionary of Jainism, Lanham, Maryland: Scarecrow Press, আইএসবিএন 0-8108-5051-6
  • Wiley, Kristi L. (২০০৯), The A to Z of Jainism, Scarecrow Press, আইএসবিএন 978-0-8108-6821-2
  • Winternitz, Moriz (১৯৯৩), History of Indian Literature: Buddhist & Jain Literature, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন 978-81-208-0265-0
  • Zimmer, Heinrich (১৯৫৩) [April 1952], Campbell, Joseph, সম্পাদক, Philosophies Of India, London, E.C. 4: Routledge & Kegan Paul Ltd, আইএসবিএন 978-81-208-0739-6

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.