মহান আলেকজান্ডার
ম্যাসিডোনিয়ার তৃতীয় আলেকজান্ডার (২০ অথবা ২১ জুলাই ৩৫৬ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ – ১০ অথবা ১১ জুন ৩২৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ) সাধারণত মহান আলেকজান্ডারiii[›])[lower-alpha 2] নামে পরিচিত, ছিলেন প্রাচীন গ্রিক রাজ্য ম্যাসিডনের রাজা।[a] অনেকসময় বাংলায় তাঁকে অলিকসন্দর নামেও অভিহিত করা হয়।[4] ৩৫৬ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে মাত্র বিশ বছর বয়সে তিনি তার পিতা দ্বিতীয় ফিলিপের স্থলাভিষিক্ত হন এবং তার শাসনকালের অধিকাংশ সময় পশ্চিম এশিয়া ও উত্তর-পূর্ব আফ্রিকাজুড়ে দীর্ঘ সামরিক অভিযান পরিচালনায় অতিবাহিত করেন। ত্রিশ বছর বয়সের মধ্যে তিনি মিশর থেকে উত্তর পশ্চিম ভারত পর্যন্ত প্রাচীন বিশ্বের বৃহত্তম সাম্রাজ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠা করেন।[5] তার লড়া সবগুলো লড়াইয়ে তিনি অপরাজিত ছিলেন এবং তাকে ইতিহাসের অন্যতম সেরা ও সফল সেনানায়ক বিবেচনা করা হয়।[6][7]
আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট | |||||
---|---|---|---|---|---|
ম্যাসিডোনিয়ার ব্যাসিলেউস, পারস্যের শাহেনশাহ, মিশরের ফারাও, এশিয়ার অধিপতি | |||||
ম্যাসিডনের রাজা | |||||
রাজত্ব | ৩৩৬ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ - ৩২৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ | ||||
পূর্বসূরি | দ্বিতীয় ফিলিপ | ||||
উত্তরসূরি | চতুর্থ আলেকজান্ডার তৃতীয় ফিলিপ | ||||
মিশরের ফারাও | |||||
রাজত্ব | ৩৩২ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ - ৩২৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ | ||||
পূর্বসূরি | তৃতীয় দারিয়ুস | ||||
উত্তরসূরি | চতুর্থ আলেকজান্ডার তৃতীয় ফিলিপ | ||||
পারস্যের শাহেনশাহ | |||||
রাজত্ব | ৩৩০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ - ৩২৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ | ||||
পূর্বসূরি | তৃতীয় দারিয়ুস | ||||
উত্তরসূরি | চতুর্থ আলেকজান্ডার তৃতীয় ফিলিপ | ||||
এশিয়ার অধিপতি | |||||
জন্ম | ২০ অথবা ২১ জুলাই ৩৫৬ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ[lower-alpha 1] পেল্লা, ম্যাসিডন | ||||
মৃত্যু | ১০ অথবা ১১ জুন ৩২৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ (৩২ বছর) ব্যাবিলন | ||||
দাম্পত্য সঙ্গী | ব্যাক্ট্রিয়ার রৌঃশ্না পারস্যের দ্বিতীয় স্তাতেইরা পারস্যের দ্বিতীয় পারিসাতিস | ||||
বংশধর | চতুর্থ আলেকজান্ডার | ||||
| |||||
গ্রিক |
| ||||
রাজবংশ | আর্গিয়াদরাজবংশ | ||||
পিতা | ম্যাসিডনের দ্বিতীয় ফিলিপ | ||||
মাতা | ইপিরাসের অলিম্পিয়াস | ||||
ধর্ম | গ্রিক বহুঈশ্বরবাদ |
ষোল বছর বয়স পর্যন্ত আলেকজান্ডার অ্যারিস্টটলের নিকট শিক্ষালাভ করেন। ৩৩৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, ম্যাসিডনের সিংহাসনে আরোহনের অল্প সময় পর তিনি বলকান অঞ্চলগুলোতে অভিযান শুরু করেন এবং থ্রেস ও ইলিরিয়ার ওপর ম্যাসিডোনিয়ার নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। এরপর তিনি থিবস শহরের দিকে অগ্রসর হন এবং পরবর্তী একসময় শহরটিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেন। এরপর আলেকজান্ডারকে সমগ্র গ্রিসের সেনানায়ক মনোনীত করা হয়। তিনি এই ক্ষমতাবলে পারস্য আক্রমণে সকল গ্রিকদের নেতৃত্ব দেওয়ার মাধ্যমে তার পিতার পরিকল্পিত প্যান-হ্যালেনিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছিলেন।[8][9]
৩৩৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তিনি হাখমানেশি পারস্যিক সাম্রাজ্য আক্রমণের মাধ্যমে তার ধারাবাহিক সামরিক অভিযান আরম্ভ করেন, যা ১০ বছর স্থায়ী ছিল। তার আনাতোলিয়া অভিযানের পর ইসাস ও গগ্যামিলাসহ কয়েকটি স্থানে অনুষ্ঠিত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে আলেকজান্ডার পারস্যের শক্তি বিনষ্ট করেন। এর ফলশ্রুতিতে তৃতীয় দারয়ূসকে ক্ষমতাচ্যুত করে সমগ্র হাখমানেশি সাম্রাজ্য জয় করেন।[b]পারস্যের পতনের পর ম্যাসিডোনিয় সাম্রাজ্য আড্রিয়াটিক সমুদ্র থেকে সিন্ধু নদ পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে। "পৃথিবীর শেষপ্রান্ত ও মহা-বহিঃসমুদ্রে" পৌছনোর স্পৃহা নিয়ে় আলেকজান্ডার ৩২৬ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ভারত অভিযান শুরু করেন এবং বিতস্তার লড়াইয়ে বর্তমান পাঞ্জাব শাসনকারী ভারতীয় রাজা পুরুর বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ বিজয় লাভ করেন। বাড়ি ফিরতে অধীর সৈন্যবাহিনীর দাবীর প্রেক্ষিতে তাকে বিপাশা নদীর পাড় থেকেই ফিরে যেতে হয়। ৩২৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মেসোপটেমিয়ার শহর ব্যবিলনে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ব্যবিলনকে তার সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেছিলেন। আলেকজান্ডারের মৃত্যুর ফলে তার পরিকল্পিত আরব উপদ্বীপে গ্রিক আক্রমণের মাধ্যমে শুরু করা বাণিজ্যিক ও সামরিক অভিযানগুলো আর বাস্তবায়িত হয়নি। তার মৃত্যুর পর বেশ কিছু বছর ধরে চলা পরপর কয়েকটি গৃহযুদ্ধের সূচনা হয়। এর ফলে ম্যাসিডোনিয় সাম্রাজ্য বিভিন আলেকজান্ডারের সেনাপতিদের হাতে বিভিন্ন খন্ডে বিভক্ত হয়ে যায়।
প্রাথমিক জীবন
জন্ম ও বংশপরিচয়
আলেকজান্ডার ৩৫৬ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে গ্রিক মাস হেকাতোম্বাইওনের ষষ্ঠ দিনে বা ২০ অথবা ২১ শে জুলাই[10] ম্যাসিডন রাজ্যের পেল্লা নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন।[11] তিনি ম্যাসিডনের রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ ও তার চতুর্থ স্ত্রী অলিম্পিয়াসের পুত্র ছিলেন।[12][13][14] দ্বিতীয় ফিলিপের সাত বা আটজন পত্নী থাকলেও আলেকজান্ডারের জন্মদাত্রী হওয়ার কারণে অলিম্পিয়াস ফিলিপের প্রধান পত্নী ছিলেন।[15]
আলেকজান্ডারের জন্ম নিয়ে বেশ কিছু কল্পকথা প্রচলিত রয়েছে।[16] গ্রিক জীবনীকার প্লুতার্কের রচনানুসারে, ফিলিপের সঙ্গে বিবাহের দিনে অলিম্পিয়াসের গর্ভে বজ্রপাত হয়। বিবাহের কয়েকদিন পর ফিলিপ একটি স্বপ্নে দেখেন যে, অলিম্পিয়াসের যোনিদ্বার সিংহের ছাপযুক্ত একটি শীলমোহর দ্বারা বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। প্লুতার্ক এই সমস্ত অলৌকিক ঘটনার বেশ কিছু ব্যাখ্যা দেন এই ভাবে যে, অলিম্পিয়াস বিবাহের পূর্ব হতেই গর্ভবতী ছিলেন এবং আলেকজান্ডার জিউসের সন্তান ছিলেন। যদিও ঐতিহাসিক ইতিহাসবেত্তাদের মতে, উচ্চাকাঙ্খী অলিম্পিয়াস আলেকজান্ডারের ঐশ্বরিক পিতৃত্বের কাহিনী প্রচলিত করেন।[17] আলেকজান্ডারের জন্মের দিন ফিলিপ পটিডিয়া অবরোধের পরিকল্পনা করছিলেন। সেই দিনই তিনি তার সেনাপতি পার্মেনিয়ন দ্বারা ইলিরিয়া ও পীওনিয়া রাজ্যের সেনাবাহিনীর পরাজয়ের এবং অলিম্পিক গেমসে তার অশ্বের জয়লাভের সংবাদ লাভ করেন। কথিত যে, আলেকজান্ডারের জন্মদিবসের প্রাচীন বিশ্বের অন্যতম আশ্চর্য হিসেবে পরিগণিত আর্তেমিসের মন্দির ভস্মীভূত হয়। আর্তেমিস আলেকজান্ডার জন্ম উদ্যাপন করতে যাওয়ায় এই ঘটনা ঘটে বলে কল্পকাহিনী প্রচলিত হয়।[13][18] আলেকজান্ডারকে অতিমানবিক ও মহান কার্যের জন্য নির্দিষ্ট হিসেবে দেখানোর উদ্দেশ্যে তার সিংহাসনলাভের পর এই সমস্ত অলৌকিক কাহিনীর প্রচলন করা হয় বলে মনে করা হয়ে থাকে।[16]
শিক্ষা
শৈশবে আলেকজান্ডারকে লানিকে নামক একজন সেবাব্রতী পালন করেন। পরে অলিম্পিয়াসের আত্মীয় লিওনাইদাস এবং দ্বিতীয় ফিলিপের সেনাপতি লুসিম্যাকোস শিক্ষাপ্রদান করেন।[19] অন্যান্য সম্ভ্রান্ত ম্যাসিডনীয় কিশোরদের মতই তাকে পড়া, যুদ্ধ করা, শিকার করা প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষাপ্রদান করা হয়।[20] তেরো বছর বয়স হলে দ্বিতীয় ফিলিপ আলেকজান্ডারের শিক্ষার জন্য আইসোক্রাতিস ও স্পিউসিপাস নামক দুইজন গ্রিক শিক্ষাবিদকে গণ্য করেন কিন্তু তারা এই কাজে অস্বীকৃত হন। অবশেষে দ্বিতীয় ফিলিপ গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটলকে আলেকজান্ডারের শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করেন এবং মিয়েজার মন্দিরকে শ্রেণীকক্ষ হিসেবে প্রদান করেন। আলেকজান্ডারকে শিক্ষাপ্রদান করায় দ্বিতীয় ফিলিপ অ্যারিস্টটলের শহর স্তাগেইরা পুনর্নির্মাণের ব্যবস্থা করেন। তিনি এই শহরের সকল প্রাক্তন অধিবাসী যারা দাস হিসেবে জীবনযাপন করছিলেন, তাদের ক্রয় করে মুক্ত করেন ও নির্বাসিতদের শাস্তি মুকুব করেন।[21][22][23] মিয়েজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আলেকজান্ডারের সাথে প্রথম টলেমি সোতের, হেফাইস্তিওন, কাসান্দ্রোস ইত্যাদি ম্যাসিডোনিয়ার সম্ভ্রান্ত পরিবারের কিশোরেরা শিক্ষালাভ করেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই পরবর্তীকালে আলেকজান্ডারের বন্ধু এবং সমর অভিযানের সেনাপতি হিসেবে পরিগণিত হন। অ্যারিস্টটল তাদের চিকিৎসাবিদ্যা, দর্শন, নীতি, ধর্ম, তর্কবিদ্যা ও কলা সম্বন্ধে শিক্ষাপ্রদান করেন। তার শিক্ষায় আলেকজান্ডারের হোমারের ইলিয়াড মহাকাব্যের প্রতি প্রগাঢ় প্রেমের উন্মেষ ঘটে, যা তিনি তার ভবিষ্যতের সকল অভিযানে সঙ্গে নিয়ে যেতেন।[24][25][26]
ফিলিপের উত্তরাধিকারী
রাজপ্রতিনিধিত্ব
ষোল বছর বয়সে অ্যারিস্টটলের অধীনে আলেকজান্ডারের শিক্ষালাভ শেষ হয়। এই সময় দ্বিতীয় ফিলিপ তাকে রাজপ্রতিনিধি ও উত্তরাধিকারী হিসেবে নিয়োগ করে বাইজেন্টিয়ন আক্রমণ করেন।[16] ফিলিপের অনুপস্থিতিতে থ্রেস অঞ্চলের মাইদোই জনজাতিরা বিদ্রোহ ঘোষণা করলে, আলেকজান্ডার দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে যাত্রা করে তাদের বিতাড়িত করেন ও তাদের অঞ্চলে আলেকজন্দ্রোপোলিস মাইদিকা নামক একটি নগরীর পত্তন করেন।[27][28][29]
ফিলিপ তার অভিযান থেকে ফিরে এলে তিনি আলেকজান্ডারকে দক্ষিণ থ্রেস অঞ্চলে একটি বিদ্রোহ দমন করতে পাঠান। এই সময় পেরিন্থাস নামক একটি গ্রিক শহরের বিরুদ্ধে অভিযানের সময় আলেকজান্ডার তার পিতার জীবনরক্ষা করেন। ৩৩৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ফিলিপ ও আলেকজান্ডার বহু কষ্টে থিবসের নিকট হতে থার্মোপেলি অধিকার করে আরো দক্ষিণে ইলাতেইয়া নগরী অভিমুখে অভিযান শুরু করেন। এথেনীয়দের পক্ষে দিমোস্থেনিস ম্যাসিডোনীয়দের বিরুদ্ধে থিবসের সহযোগিতা প্রার্থনা করলে, ফিলিপ থিবসের দিকে মিত্রতার প্রস্তাব রাখেন। কিন্তু এথেন্সের সঙ্গে থিবসের মিত্রতা স্থাপিত হলে[30][31][32], ফিলিপ অ্যাম্ফিসা নগরী অধিকার করেন। এরপর ইলাতেইয়া নগরী অভিমুখে পুনরায় যাত্রা শুরু করে শান্তি প্রস্তাব করলে এথেন্সের সঙ্গে থিবস উভয়েই এই প্রস্তাব নাকচ করে দেয়।[33][34][35]
ফিলিপ দক্ষিণে যাত্রা শুরু করলে তার প্রতিপক্ষরা তাকে কাইরেনিয়া নামক স্থানে প্রতিহত করেন এবং যুদ্ধে ফিলিপ ডানদিক হতে ও আলেকজান্দার বামদিক হতে আক্রমণ পরিচালনা করেন। দ্বিতীয় ফিলিপ ইচ্ছাকৃত ভাবে পিছু হটে এথন্সের সমর অনভিজ্ঞ যোদ্ধাদের প্রলুব্ধ করে তাদের প্রতিরক্ষা ভেঙে ফেলেন, অপরদিকে আলেকজান্ডার ও ফিলিপের সেনাপতিরা থিবসের প্রতিরক্ষা ভাঙ্গতে সক্ষম হন। এরপর তাদের দিকে আক্রমণ শুরু করে প্রথমে এথেনীয়দের পরাজিত করে থিবসের সেনাবাহিনীকে ঘিরে ফেলে তাদের পরাজিত করা হয়।[36] এই জয়লাভের পর দ্বিতীয় ফিলিপ তাদের অভিযান স্পার্টা শহর পর্য্যন্ত বজায় রাখেন ও স্পার্টা ব্যতীত প্রত্যেক শহরে সম্মানের সঙ্গে তাদের স্বাগত জানানো হয়।[37] করিন্থ শহরে দ্বিতীয় ফিলিপ স্পার্টা ব্যতীত প্রত্যেক গ্রিক শহরের সঙ্গে একটি 'স্বর্গীয় মৈত্রী' প্রতিষ্ঠা করেন, যার ফলে তাকে ঐ মিত্রগোষ্ঠীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে গণ্য করা হয়।[38][39]
নির্বাসন প্রত্যাবর্তন
সমরাভিযান থেকে ফিরে এসে ফিলিপ তার সেনাপতি আত্তালোসের ভ্রাতুষ্পুত্রী ক্লিওপাত্রা ইউরিদিকেকে বিবাহ করেন।[40] ক্লিওপাত্রার যে কোন সন্তান পিতা-মাতা উভয় দিক থেকেই ম্যাসিডোনিয় হওয়ায় এই বিবাহের ফলে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হিসেবে আলেকজান্ডারের অবস্থান কিছুটা অসুরক্ষিত হয়ে পড়ে, কারণ আলেকজান্ডার পিতার দিক থেকে ম্যাসিডোনিয় হলেও মাতার দিক থেকে এপাইরাসীয় ছিলেন।[41] বিবাহের সময় মদ্যপ অবস্থায় আত্তালোস ফিলিপ ও ক্লিওপাত্রার মিলনের ফলে একজন বৈধ উত্তরাধিকারীর কথা উল্লেখ করলে[40] দৃশ্যতঃ ক্ষুব্ধ আলেকজান্ডার তার মাথায় পানপাত্র ছুঁড়ে মারেন, কিন্তু মদ্যপ ফিলিপ আত্তালোসের পক্ষ গ্রহণ করলে আলেকজান্ডার দোদোনা শহরে তার মাতুল এপাইরাসের রাজা প্রথম আলেকজান্ডারের নিকট তার মাতা অলিম্পিয়াসকে রেখে[42] ইলিরিয়ার রাজার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করেন[42]; যদিও কয়েকমাস পূর্বে আলেকজান্ডার ইলিরিয়াকে একটি যুদ্ধে পরাজিত করেন, তবুও ইলিরিয়ায় তাকে স্বাগত জানানো হয়। যাই হোক, ফিলিপ রাজনৈতিক ও সামরিকভাবে প্রশিক্ষিত পুত্রকে ত্যাজ্য করতে কখনোই রাজী ছিলেন না,[42] ফলে দেমারাতোস নামক পারিবারিক বন্ধুর মধ্যস্থতায় ছয় মাস পরে আলেকজান্ডার ম্যাসিডনে ফিরে যান।[43][44]
পরের বছর, পারস্যের কেয়ারিয়া অঞ্চলের সত্রপ পিক্সোদারোস তার জ্যেষ্ঠা কন্যার সঙ্গে আলেকজান্ডারের জ্যেষ্ঠ সৎভাই আররিদাইওসের বিবাহের প্রস্তান দেন।[42] ফিলিপের উত্তরাধিকারী হিসেবে আররিদাইওসের নাম বিবেচিত হওয়ার আশঙ্কায় আলেকজান্ডার করিন্থ শহরের একজন অভিনেতা থেসেলাসকে পিক্সোদারোসের নিকট পাঠিয়ে বার্তা দেন যে, তিনি যেন তার কন্যার সঙ্গে দ্বিতীয় ফিলিপের অবৈধ সন্তান আররিদাইওসের বিবাহ না দিয়ে আলেকজান্ডারের সঙ্গে বিবাহের সিদ্ধান্ত বিবেচনা করেন। ফিলিপ এই ঘটনার কথা শুনে এই বিবাহ প্রস্তাব নাকচ করে দেন এবং থেসেলাসকে বন্দী করেন।[41][45][46]
ম্যাসিডনের রাজা
সিংহাসন লাভ
৩৩৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এপাইরাসের রাজা প্রথম আলেকজান্ডারের সাথে নিজ কন্যা ক্লিওপাত্রার বিবাহের সময় দ্বিতীয় ফিলিপ তার দেহরক্ষীবাহিনীর প্রধান পাউসানিয়াসের হস্তে খুন হন।vi[›] পালানোর সময় পাউসানিয়াসকে হত্যা করা হয়। ম্যাসিডোনিয়ার সম্ভ্রান্ত ও সেনাবাহিনীর সমর্থনে আলেকজান্ডার মাত্র কুড়ি বছর বয়সে ম্যাসিডোনিয়ার শাসক হিসেবে সিংহাসনলাভ করেন।[47][48][49]
শক্তিসঞ্চয়
আলেকজান্ডার সিংহাসনলাভ করেই তার সম্ভাব্য শত্রুদের সরিয়ে দিতে শুরু করেন। তিনি প্রথমেই ম্যাসিডনের পূর্বতন রাজা চতুর্থ আমুনতাসকে হত্যা করেন।[50] দ্বিতীয় ফিলিপকে হত্যার অভিযোগে হেরোমেনেস ও আরহাবিয়াস নামক দুইজন সম্ভ্রান্ত ম্যাসিডোনীয়কে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আলেকজান্ডারের মাতা অলিম্পিয়াস তার সতীন ক্লিওপাত্রা ইউরিদিকের দুই সন্তান ইউরোপা ও কারানোসকে হত্যা করলে, ক্লিওপাত্রা ইউরিদিকে সম্ভবতঃ আত্মহত্যা করেন। আলেকজান্ডার এশিয়া মাইনর অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাপতি[51] আত্তালোসকেও হত্যার নির্দেশ দেন।[50] আত্তালোস দ্বারা পূর্বের অপমানের প্রতিশোধের কারণেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে মনে করা হয়।[51] মানসিক ভাবে প্রতিবন্ধীতে পরিণত হওয়ায় আলেকজান্ডার আররিদাইওসের কোন ক্ষতি না করেই ছেড়ে দেন।[47][49][52]
দ্বিতীয় ফিলিপের মৃত্যুরে সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই থিবস, এথেন্স, থ্রেস প্রভৃতি রাজ্যে বিদ্রোহ শুরু হলে আলেকজান্ডার দ্রুত পদক্ষেপ নিতে শুরু করেন। তিনি ৩০০০ ম্যাসিডোনিয় অশ্বারোহী বাহিনী নিয়ে থেসালি অভিমুখে দক্ষিণে যাত্রা করেন। থেসালির সেনা অলিম্পাস পর্বত ও ওসা পর্বতের মধ্যবর্তী গিরিখাতে অবস্থান করছিল। আলেকজান্ডার তার বাহিনীকে ওসা পর্বত আরোহণ করতে নির্দেশ দেন। পরের দিন থেসালির সেনা তাদের পশ্চাতে আলেকজান্ডারের বাহিনীকে দেখতে পেয়ে দ্রুত আত্মসমর্পণ করে। আলেকজান্ডারের বাহিনী দ্রুত পেলোপোনেসের দিকে দক্ষিণাভিমুখে যাত্রা করে।[53][54][55][56] থার্মোপাইলি শহরে তাকে স্বর্গীয় মৈত্রী সঙ্ঘের নেতা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। এরপর তিনি করিন্থ অভিমুখে যাত্রা করলে এথেন্স শান্তির জন্য আবেদন করে এবং আলেকজান্ডার বিদ্রোহীদের ক্ষমা করেন। এই শহরেই দার্শনিক ডায়োজেনিসের সঙ্গে তাঁর বিখ্যাত আলাপটি ঘটে।[57][58] এই শহরে তাকে পারস্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
বলকান অভিযান
এশিয়া অভিযানের পূর্বে আলেকজান্ডার তার উত্তর সীমান্ত সুরক্ষিত করতে চেয়েছিলেন। ৩৩৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দের বসন্তকালে তিনি বেশ কিছু বিদ্রোহ দমন করতে অগ্রসর হন। অ্যাম্ফিপোলিস থেকে পূর্বদিকে যাত্রা শুরু করে তিনি হিমাস পর্বতের পাদদেশে থ্রেসের সেনাবাহিনীকে পরজিত করেন।[59] এরপর ম্যাসিডোনিয়ার সেনা ট্রিবাল্লি রাজ্যে পৌঁছে লিগনিয়াস নদীর তীরে সেই রাজ্যের সেনাবাহিনীকে পরজিত করে।[60] এরপর তিনদিন টানা যাত্রা করে আলেকজান্ডার দানিয়ুব নদীর তীরে গেটাই জনজাতির সম্মুখীন হন এবং রাতের বেলা নদী পার হয়ে তাদের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ করে তাদের পরাজিত করেন।[61][62] এই সময় ইলিতিয়ার রাজা ক্লেইতোস ও তাউলান্তিওইর রাজা গ্লাউকিয়াস আলেকজান্ডারের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলে, ম্যাসিডোনিয়ার বাহিনী পশ্চিমে যাত্রা করে এই দুই রাজাকে পরাজিত করলে তার রাজ্যের উত্তর সীমান্ত সুরক্ষিত হয়।[63][64]
আলেকজান্ডারের উত্তরদিকের অভিযানের সময় থিবস ও এথেন্স পুনরায় বিদ্রোহ ঘোষণা করলে তিনি দক্ষিণে যাত্রা করেন।[65] থিবস আলেকজান্ডারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে পরাজিত হয় এবং আলেকজান্ডার থিবস নগরীকে ধ্বংস করেন। এই পরিণতিতে এথেন্স সমর্পণ করে ও গ্রিসে সাময়িক ভাবে শান্তি স্থাপিত হয়।[65] এরপর আলেকজান্ডার আন্তিপাত্রোসকে রাজপ্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত করে এশিয়ার অভিযানে মনোনিবেশ করেন।[66]
পারস্য অভিযান
এশিয়া মাইনর
৩৩৪ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ম্যাসিডোনিয়া ছাড়াও থ্রেস, ইলিরিয়া ও পাইওনিয়া থেকে[67] আনুমানিক ৪৮,১০০ পদাতিক, ৬,১০০ অশ্বারোহী ও ১২০টি জাহাজে ৩৮,০০০ নাবিক নিয়ে আলেকজান্ডারের বাহিনী হেলেস্পোন্ট পার করেন।[65] আলেকজান্ডার এশিয়ার মাটিতে একটি বল্লম ছুঁড়ে ঘোষণা করেন যে, তিনি দেবতাদের নিকট হতে এশিয়াকে উপহার হিসেবে গ্রহণ করেছেন।[65] ৮ই এপ্রিল গ্রানিকাসের যুদ্ধে প্রাথমিক সাফল্যের পর আলেকজান্ডারের নিকট পারস্যের প্রাদেশিক রাজধানী সার্দেয়িস আত্মসমর্পণ করে। এরপর তিনি ইওনিয়ার তীর বরাবর বিভিন্ন শহরকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করেন। পারস্য সেনাবাহিনীর অধিকৃত মাইলিটাসে শহরটি অধিকার করতে তাকে রণকুশলতার পরিচয় দিতে হয়। আরো দক্ষিণে হালিকার্নাসসোসে আলেকজান্ডার তার প্রথম ব্যাপক অবরোধ পরিচালনা করেন ও ধীরে ধীরে পারস্য সত্রপ ওরোন্তোবাতেস ও রোডসের মেমনন সমুদ্রপথে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।[68] আলেকজান্ডার কেয়ারিয়ার শাসনভার আদার ওপর ন্যস্ত করেন।[69]
হালিকার্নাসসোস হতে আলেকজান্ডার পাহাড়ী লাইকিয়া এবং প্যামফিলিয়ার সমতল ভূমি বরাবর চলতে থেকে সকল উপকূলীয় শহর দখল করেন। প্যামফাইলিয়া থেকে সামনে আর কোন গুরুত্বপূর্ণ বন্দর না থাকায় আলেকজান্ডার ভূমির দিকে অভিযান শুরু করেন। তের্মেসোসে আলেকজান্ডার পিসিদিয়া দখল করলেও তেমন ধ্বংসযজ্ঞ করেন নাই।[70] প্রাচীন ফিজিয়ার রাজধানী গর্দিওনে পৌঁছলে আলেকজান্ডার একটি অসমাধেয় গিঁট খোলেন, যা একমাত্র এশিয়ার শাসকের দ্বারাই করা সম্ভব বলে প্রবাদ প্রচলিত ছিল।[71] কথিত আছে। এই গিঁটটি তিনি তার তলোয়ার দিয়ে কেটে ফেলেন।[72]
লেভ্যান্ট ও সিরিয়া
৩৩৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আলেকজান্ডার তার সেনাবাহিনী নিয়ে টরাস হতে সিসিলিয়া পৌঁছান। দীর্ঘ সময় অসুস্থ থাকার পর তিনি সিরিয়ার দিকে রওনা হন। তৃতীয় দারিয়ুসের বিশাল সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হতে না চেয়ে তিনি সিসিলিয়া ফিরে আসেন এবং ইসাসের যুদ্ধে তৃতীয় দারিয়ুসকে পরাজিত করেন। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে তৃতীয় দারিয়ুস তার মাতা সিসিগম্বিস, স্ত্রী, দুই কন্যা এবং ব্যক্তিগত সম্পদের বেশির ভাগ ফেলে নিজের প্রাণ বাচিয়ে পালিয়ে যান।[73] দারিয়ুস আলেকজান্ডারকে একটি শান্তি চুক্তি প্রেরণ করেন, যেখানে তিনি তার হৃত জমি ও তার পরিবারের মুক্তিপণ হিসেবে ১০,০০০ মুদ্রা প্রদানের কথা বলেন, কিন্তু আলেকজান্ডার নিজেকে এশিয়ার অধিপতি ঘোষণা করে তার এই প্রস্তাব নাকচ করে দেন। এরপর আলেকজান্ডার সিরিয়া ও লেভ্যান্টের উপকূল বরাবর যাত্রা করে[69] ৩৩২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তায়ার অবরোধ করে বহুকষ্টে শহরটি দখল করতে সক্ষম হন।[74][75] তিনি শহরের কর্মক্ষম সকল পুরুষকে হত্যা করে নারী ও শিশুদের দাস হিসেবে বিক্রি করে দেন।[76]
মিশর
তায়ার ধ্বংস করার পর মিশর অভিমুখী অধিকাংশ শহর দ্রুত সমর্পণ করে। আলেকজান্ডার জেরুজালেম শহরের কোন ক্ষতি না করে দক্ষিণে মিশরের দিকে যাত্রা করেন।[77] কিন্তু গাজা শহরে তাকে প্রচন্ড বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়। পাহাড়ের ওপর অবস্থিত সুরক্ষিত এই শহর অধিকার করতে তিনবার চেষ্টা করে সফল হলেও আলেকজান্ডার তার কাঁধে গুরুতর ভাবে আহত হন।[78] টায়ারের মতোই গাজা শহরের সকল কর্মক্ষম পুরুষদের হত্যা করে নারী ও শিশুদের দাস হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয়।[79]
৩৩২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আলেকজান্ডার মিশর অভিমুখে যাত্রা করলে তাকে মুক্তিদাতা হিসেবে স্বাগত জানানো হয়।[80] লিবিয়ার মরুভূমিতে সিওয়া মরুদ্যানে তাকে দেবতা আমুনের পুত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আলেকজান্ডারের স্বর্গীয় ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠা করতে মুদ্রায় তার প্রতিচ্ছবিতে তার মাথায় ভেড়ার শিং থাকত।[81] মিশরে থাকার সময় তিনি আলেকজান্দ্রিয়া প্রতিষ্ঠা করেন।[82]
ব্যাবিলন
৩৩১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মিশর ত্যাগ করে আলেকজান্ডার পূর্বে মেসোপটেমিয়া অভিমুখে যাত্রা করে গাউগামেলার যুদ্ধে তৃতীয় দারিয়ুসকে পরাজিত করেন।[83] যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দারিয়ুস আবার পলায়ন করলে আলেকজান্ডার তাকে আরবেলা পর্যন্ত ধাওয়া করেন। গাউগামেলার যুদ্ধ উভয় প্রতিপক্ষের মধ্যে অন্তিম যুদ্ধ ছিল। তৃতীয় দারিয়ুস হাইগমতান পাহাড়ে আশ্রয় নিলে আলেকজান্ডার ব্যাবিলন অধিকার করেন।[84]
পারস্য
ব্যাবিলন থেকে আলেকজান্ডার অন্যতম হাখমানেশী রাজধানী সুসাতে যান এবং এই শহরের প্রবাদপ্রতিম কোষাগার দখল করেন।[84] এরপর সেনাবাহিনীর একটি বড় অংশ শাহী সড়ক হয়ে পারস্যের রাজধানী পার্সেপোলিস পাঠিয়ে দেন। অন্যদিকে, নিজে কয়েকজন বাছাই করা সৈন্য নিয়ে সোজা পথে শহরর দিকের রওনা হন। এই জন্য তাকে আরিওবার্জানেসের নেতৃত্বে পারস্য সেনাকে পরাজিত করে পারস্য দ্বার দখল করতে হয়।[85] পার্সেপোলিস পৌঁছে পরবর্তী বেশ কয়েক দিন ধরে আলেকজান্ডার তার সেনাবাহিনীকে শহরের সম্পদ লুঠ করতে দেন।[86] এই শহরে পাঁচ মাস থাকাকালীন[87] প্রথম জারক্সেসের প্রাসাদে আগুন ধরে শহরের অধিকাংশ ভস্মীভূত হয়ে যায়।[88]
হাখমানেশী সাম্রাজ্যের পতন
আলেকজান্ডার এরপর তৃতীয় দারিয়ুসকে মিদিয়া ও পার্থিয়া পর্য্যন্ত ধাওয়া করেন।[89] এই সময় তৃতীয় দারিয়ুস বেসাস নামক তার ব্যাক্ট্রিয়ার সত্রপ দ্বারা বন্দী হন।[90] আলেকজান্ডারের আগমণে বেসাস তাকে হত্যা করে নিজেকে তৃতীয় দারিয়ুসের উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেন এবং মধ্য এশিয়ায় পিছু হঠে আলেকজান্ডারের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ শুরু করেন।[91] আলেকজান্ডার রাজকীয় সম্মানে পূর্বতন হাখমানেশী সম্রাটদের পাশে তৃতীয় দারিয়ুসের দেহাবশেষ সমাধিস্থ করেন।[92] মৃত্যুর পূর্বে দারিয়ুস তাকেই সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেছেন বলে তিনি দাবী করেন।[93]
আলেকজান্ডার বেসাসকে একজন বিদ্রোহী হিসেবে গণ্য করে তাকে পরাজিত করতে বেরিয়ে পড়েন। এই অভিযানের ফলে মধ্য এশিয়ায় তিনি বেশ কয়েকটি আলেকজান্দ্রিয়া নগরী স্থাপন করেন। এই অভিযান চালাতে গিয়ে আলেকজান্ডার মিদিয়া, পার্থিয়া, আরিয়া, দ্রাগগিয়ানা, আরাকোসিয়া, ব্যাক্ট্রিয়া এবং সিথিয়া জয় করেন।[94] ৩২৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সোগদিয়ানার স্পিটামেনেস নামক জনীক আধিকারিক বেসাসের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করে তাকে প্রথম টলেমী সোটেরের হাতে তুলে দিলে বেসাসকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।[95] কিন্তু কিছুদিন পরে যখন আলেকজান্ডার যখন জাক্সার্টেস অঞ্চলে একটি অশ্বারূঢ় যাযাবর সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন, স্পিতামেনেস সোগদিয়ানায় বিদ্রোহ শুরু করেন। আলেকজান্ডার জাক্সার্তেসের যুদ্ধে সিথিয়াবাসীদের পরাজিত করে গাবাইয়ের যুদ্ধে স্পিতামেনেসকে পরাজিত করলে স্পিতামেনেস নিজের সৈন্যদের দ্বারা নিহত হন।[96]
সমস্যা ও ষড়যন্ত্র
পারস্য জয়ের পর আলেকজান্ডার তার সভায় পারস্যের বেশ কিছু পোশাক এবং হস্তে চুম্বন ও দেবতাদের প্রতি ভূমিতে উল্লম্ব ভাবে শুয়ে সম্মান প্রদর্শন ইত্যাদি রীতিনীতির প্রচলন করেছিলেন।[97] গ্রিকদের মনে এই কারণে অসন্তোষের জন্ম হয়, যে আলেকজান্ডার তার প্রতি এই সব রীতির প্রদর্শন করিয়ে নিজেকে দেবতার আসনে উন্নীত করতে চেয়েছেন। এই অসন্তোষের ফলে আলেকজান্ডারকে এই রীতি বন্ধ করতে হয়।[98]
আলেকজান্ডারকে হত্যার ব্যাপারে একটি ষড়যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়, যে কারণে ফিলোতাস নামক তার এক সেনানায়ককে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। ভবিষ্যতে প্রতিশোধ নেওয়া থেকে রুখতে হাইগমতান অঞ্চলে রাজকোষের দায়িত্বে থাকা ফিলোতাসের পিতা পার্মেনিয়নকেও আলেকজান্ডারের আদেশে হত্যা করা হয়। এরপর মরকন্দ অঞ্চলে মদ্যপ অবস্থায় বাগ-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে, আলেকজান্ডার স্বহস্তে তার সেনানায়ক ক্লেইতোসকে হত্যা করেন, ঘটনাক্রমে যিনি গ্রানিকাসের যুদ্ধে আলেকজান্ডারের প্রাণ রক্ষা করেছিলেন।[99]
পরবর্তীকালে মধ্য এশিয়ার অভিযানের সময়, তাকে হত্যার একটি দ্বিতীয় ষড়যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়। তার সভার ঐতিহাসিক ক্যালিস্থেনিস এই ষড়যন্ত্রে অভিযুক্ত হন, যদিও তার লিপ্ত থাকার ব্যাপারে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।[100]
ভারত অভিযান
ম্যাসিডনের রাজা আলেকজান্ডারের ভারতবর্ষ আক্রমণ ভারতের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। পারস্য বিজয়ে পর শুরু হয় তার ভারত আগ্রাসন। খ্রিস্টপূর্ব ৩৩১ অব্দে তিনি পারস্য সাম্রাজ্য আক্রমণ করেন। সে সময় সিন্ধুনদ পারস্য সাম্রাজ্যের সীমানা ছিল। আলেকজান্ডারের ভারতবর্ষ আক্রমণের প্রাক্কালে উত্তর-পশ্চিম ভারত পরস্পরবিরোধী অনেকগুলো রাজ্যে বিভক্ত ছিল। তাদের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বহিরাক্রমণ ঠেকানো সম্ভবপর ছিল না। খ্রিস্টপূর্ব ৩২৮ অব্দের মধ্যে সমগ্র পারস্য এবং আফগানিস্তান আলেকজান্ডারের দখলে আসে। অত:পর আলেকজান্ডার খ্রিস্টপূর্ব ৩২৭ অব্দে হিন্দুকুশ পর্বত অতিক্রম করে ভারত অভিমুখে অগ্রসর হন। খ্রিস্টপূর্ব ৩২৬ অব্দে তিনি ভারত নাম ভূখণ্ডে পদার্পণ করেন। আলেকজান্ডার পুষ্কলাবতীর রাজা অষ্টককে পরাভূত করেন, অশ্বক জাতিও তার নিকট পরাভূত হয়, তক্ষশীলার রাজা তার নিকট স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে, ঝিলাম রাজ পুরু বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে পরাভব মানতে বাধ্য হন। অত:পর আলেকজান্ডার রাভি নদীর উপকূলবর্তী রাজ্যসমূহ দখল করেন এবং বিপাশা নদী পর্যন্ত অগ্রসর হন। এই স্থলে তার রণক্লান্ত সেনাবাহিনী দেশে প্রত্যাবর্তনে উণ্মুখ হয়ে পড়লে আলেকজাণ্ডার ভারত অভিযান বন্ধ করে গ্রিসে প্রত্যাবর্তন শুরু করেন। প্রত্যাবর্তনের পথে তিনি বেলুচিস্তান ও পাঞ্জাব অধিগত করেন, ঝিলাম ও সিন্ধু নদের অন্তবর্তী সকল রাজ্য তার অধিগত হয়। ভারত ভূখণ্ডে আলেকজান্ডার প্রায় ১৯ মাস অবস্থান করেছিলেন। তিনি ভারত ত্যাগের পর প্রায় দুই বৎসরকাল তার বিজিত অঞ্চলসমূহে গ্রিক শাসন বজায় ছিল। ভারত থেকে প্রত্যাবর্তনের কিছুদিন পর খ্রিস্টপূর্ব ৩২৩ অব্দে ব্যবিলনে তার অকাল মৃত্যু হয়। অন্যদিকে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের নেতৃত্বে মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা পাঞ্জাবে গ্রিক শাসনের অবসান ত্বরান্বিত করে।[101]
আলেকজান্ডার ও গঙ্গারিডই
সম্রাট আলেকজান্ডার সুদূর গ্রিস থেকে একের পর এক রাজ্য জয় করে ইরান আফগানিস্তান হয়ে ভারতের পাঞ্জাবে পৌছে যায়। সুদর্শন তরুণ সম্রাটের চোখে সারা পৃথিবী জয়ের স্বপ্ন। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তিশালী সেনাবাহিনীর অধিকারি তিনি। বিখ্যাত ইরান সম্রাট দারায়ুস থেকে শুরু করে উত্তর পশ্চিম ভারতের পরাক্রমশালী রাজা পুরু পর্যন্ত কেউ তার সামনে দাড়াতে পারে নাই। এখন তার সামনে মাত্র একটা বাধা, বিপাশা নদীর ওপারের গঙ্গারিডই রাজ্য। ভারতের মূল ভূখণ্ড। এটুকু করতলগত হলেই সমগ্র ভারত তার দখল হয়ে গেল। যে স্বপ্ন নিয়ে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন গ্রিক রাষ্ট্র মেসিডোনিয়া থেকে, তা পরিপূর্ণতা পাবে।
এদিকে গঙ্গারিডই রাজ্যের রাজা তার বিশাল বাহিনী নিয়ে নদীর এপাড়ে আলেকজান্ডারকে প্রতিহত করতে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। গঙ্গারিডই সম্পর্কে প্রাচীন গ্রিক ও ল্যাটিন ঐতিহাসিকগণের লেখায় তথ্য পাওয়া যায়।
মেগাস্থিনিস(৩৫০ খ্রিষ্টপূর্ব-২৯০ খ্রিষ্টপূর্ব) আলেকজান্ডারের সেনাপতি ও বন্ধু সেলুকাসের রাজত্বকালে গ্রিক দূত হিসাবে ভারতে এসেছিল। তিনি লিখেন- ‘গঙ্গারিডাই রাজ্যের বিশাল হস্তী-বাহিনী ছিল। এই বাহিনীর জন্যই এ রাজ্য কখনই বিদেশি রাজ্যের কাছে পরাজিত হয় নাই। অন্য রাজ্যগুলি হস্তী-বাহিনীর সংখ্যা এবং শক্তি নিয়া আতংকগ্রস্ত থাকিত’
‘ভারতের সমূদয় জাতির মধ্যে গঙ্গারিডাই সর্বশ্রেষ্ঠ। এই গঙ্গারিডাই রাজার সুসজ্জিত ও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত চার হাজার হস্তী-বাহিনীর কথা জানিতে পারিয়া আলেকজান্ডার তাহার বিরূদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হইলেন না’ - ডিওডোরাস (৯০ খ্রিষ্টপূর্ব-৩০ খ্রিষ্টপূর্ব)
গঙ্গাড়িডই রাজ্যের প্রকান্ড সেনাবাহিনী বর্ণনার ক্ষেত্রে ভারতীয় ও ধ্রুপদী ইউরোপীয় রচনাগুলির উল্লেখে প্রচুর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ডিওডোরাস ও ক্যুইন্টাস কার্টিয়াস রুফাস উভয়েই উল্লেখ করেছেন নন্দরাজের সেনাবাহিনীর বিভিন্ন বিভাগ সম্বন্ধে। যথা- পদাতিক সৈন্য ২ লক্ষ, অশ্বারোহী সৈন্য ২০ হাজার, রথ ২ হাজার, এবং তিন থেকে চার হাজার হাতি।
ধ্রুপদী গ্রিক ও ল্যাটিন বর্ণনায় রাজার নাম আগ্রাম্মেস। তিনি ছিলেন নীচকূলোদ্ভব নাপিতের পূত্র। হিন্দু পুরাণে তিনি মহাপদ্মনন্দন এবং বৌদ্ধ শাস্ত্র মাহাবোধিবংশে উগ্রসেন, অর্থ এমন এক ব্যক্তি যাঁর ‘প্রকান্ড ও পরাক্রান্ত সেনাবাহিনী’ আছে। হেমচন্দ্রের পরিশিষ্টপর্ব নামক জৈন গ্রন্থেও মহাপদ্মনন্দকে বলা হয়েছে নাপিত কুমার। পুরাণে বলা হয়েছে শূদ্রোগর্ভোদ্ভব। আরও বলা হয়েছে, ‘সর্বক্ষত্রান্তক নৃপঃ’ অর্থাৎ সকল ক্ষত্রিয়কে নিধন করে সিংহাসনে বসেছিল।
এই পর্যন্ত আলোচনায় গঙ্গারিডাই নামের পরাক্রান্ত রাজ্যের প্রমাণ পাওয়া গেল। যেটা ছিল পাঞ্জাব পর্যন্ত সমূদয় গঙ্গা অববাহিকায় নিয়ে গঠিত ভারতের সর্বাপেক্ষা শক্তিশালি রাজ্য। বিজিত স্থানীয় ছোট ছোট ভূস্বামীরা আলেকজান্ডারকে জানাল অপর পাড়ের দেশটির ঐশ্বর্যের কথা, অপরাজেয় সৈন্যবাহিনীর কথা।
এরপর পৃথিবী বিখ্যাত এ অসীম সাহসী বীর করণীয় আলোচনার জন্য নিজের সেনাবাহিনীর সাথে পরামর্শে বসলেন এবং গঙ্গাড়িডই জয় করার জন্য উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু সৈন্যরা এমনিতেই বছরের পর বছর যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত। তাছাড়া নদীর ঐপাড়ের ভয়াবহ সেনাবাহিনীর মোকাবেলায় অপরাগতা প্রকাশ করল। বিচক্ষণ সেনাপতি সৈন্যদের পক্ষ হয়ে জানাল সৈন্যরা কেউ বিপাশা পার হয়ে নিজের জীবন দিয়ে আসতে রাজী নয়, তারা পিতামাতা, স্ত্রী, সন্তান ও জন্মভুমিতে ফিরে যাওয়ার হন্য উদ্গ্রীব। এভাবে সৈন্যদের অনাগ্রহের ফলে পাঞ্জাবের বিপাশা নদীর অপর পাড়েই গ্রিক বাহিনীর বিজয় রথ থেমে যায়। আলেকজান্ডার এরপর গ্রিক বাহিনীকে মেসিডোনিয়ার দিকে ফিরতি যাত্রার নির্দেশ দেন।
বিখ্যাত বাঙালি ঐতিহাসিক ড. নীহাররঞ্জন রায় এর লিখেছেন-
আজ এ-তথ্য সুবিদিত যে, ঔগ্রসৈন্যের সমবেত প্রাচ্য-গঙ্গারাষ্ট্রের সুবৃহৎ সৈন্য এবং তাহার প্রভূত ধনরত্ন পরিপূর্ণ রাজকোষের সংবাদ আলেকজান্দারের শিবিরে পৌছিয়াছিল এবং তিনি যে বিপাশা পার হইয়া পূর্বদিকে আর অগ্রসর না হইয়া ব্যাবিলনে ফিরিয়া যাইবার সিদ্ধান্ত করিলেন, তাহার মূলে অন্যান্য কারণের সঙ্গে এই সংবাদগত কারণটিও অগ্রাহ্য করিবার মত নয়।
মৃত্যু ও উত্তরসূরী
আলেকজান্ডার খ্রিস্টপূর্ব ৩২৩ সালের জুন মাসের ১১ অথবা ১২ তারিখে ৩২ বছর বয়সে ব্যাবিলনে দ্বিতীয় নেবুচাদনেজারের প্রাসাদে মৃত্যুবরণ করেন।[102] আলেক্সান্ডারের মৃত্যু নিয়ে দুই ধরনের বর্ণনা পাওয়া যায়, আর দুই বর্ণনার একটি অপরটি থেকে সামান্য কিছুটা ভিন্ন। প্লুতার্কের বর্ণনা অনুযায়ী মৃত্যুর প্রায় ১৪ দিন আগে আলেক্সান্ডার তার অ্যাডমিরাল নিয়ারকাসের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করেন এবং সেদিন রাত ও পরের দিন লারিসার মিডিয়াসের সাথে মদ্যপান করে অতিবাহিত করেন।[103] এরপর আলেক্সান্ডারের জ্বর দেখা দেয় এবং তা ক্রমাগতভাবে খারাপ হতে থাকে। এক পর্যায়ে তিনি বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন। একসময় তার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন সাধারণ সৈনিকদের তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় এবং তিনি তাদের উদ্দেশ্যে নিশ্চুপভাবে হাত নাড়ান।[104] দ্বিতিয় বর্ণনা অনুসারে, হেরাক্লিসের সম্মানে পানি মেশানো ছাড়াই বড় এক পাত্র মদ্যপান করার পর প্রচন্ড যন্ত্রণা অনুভব করেন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পরের ১১ দিন অসুস্থ ছিলেন। এই বর্ণনায় জানা যায় তার কোন জ্বর হয়নি। বরং তিনি তীব্র যন্ত্রণা ভোগের পর মারা যান।[105] আরিয়ানও এই বক্তব্য সমর্থন করেন, তবে প্লুতার্ক এই দাবী অস্বীকার করেন।
ম্যাসিডোনিয়ান অভিজাতবর্গের হত্যাকান্ডে লিপ্ত হওয়ার প্রবণতার দীর্ঘ ইতিহাস বিবেচনায়[106] তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে অনেক জায়গাতেই হত্যাকান্ডের বিষয়টি স্থান পেয়েছে। ডিওডোরাস, প্লুতার্ক, আরিয়ান ও জাস্টিন প্রত্যকেই আলেক্সান্ডারকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছেন। জাস্টিন বলেন আলেক্সান্ডার বিষ প্রয়োগে হত্যার ষড়যন্ত্রের স্বীকার। কিন্তু প্লুতার্ক এই দাবীকে বানোয়াট বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।[107] অন্যদিকে ডিওডোরাস এবং আরিয়ান মন্তব্য করেছেন যে, তারা শুধুমাত্র সম্পূর্ণতার জন্যই এই তত্ত্ব উল্লেখ করেছেন।[105][108] কিন্তু তাসত্ত্বেও, বর্ণনাগুলো যৌক্তিকভাবেই সম্ভাব্য হত্যার মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে অ্যান্টিপেটারকেই ইঙ্গিত করে। কারণ ঘটনার কিছু সময় পূর্বে তাকে ম্যাসিডোনিয়ার ভাইসরয়ের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল এবং অলিম্পিয়াসের সাথেও তার তিক্ত সম্পর্ক ছিল। হয়তো তাকে ব্যবিলনে ডেকে পাঠানোকে মৃত্যুদন্ডের আভাস মনে করে[109] এবং পার্মেনিয়ন ও ফিলোটাসের পরিণতি দেখে[110] অ্যান্টিপেটার তথাকথিতভাবে তার পুত্র ও আলেক্সান্ডারের মদ পরিবেশক আইওলাসের মাধ্যমে আলেক্সান্ডারকে বিষ প্রয়োগ করে।[108][110] এমনকি কেউ কেউ মনে করতেন এরিস্টটলও এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকতে পারেন।[108]
বিষ প্রয়োগ তত্ত্বের বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী যুক্তি হচ্ছে যে, তার অসুস্থ হওয়া থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বারো দিন অতিবাহিত হয়েছিল। আর এই সময় এত দীর্ঘসময় ধরে কাজ করা বিষ সম্ভবত লভ্য ছিলন।[111] যদিও, ২০০৩ সালে আলেক্সান্ডারের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান বিষয়ক বিবিসির এক প্রামাণ্যচিত্রে নিউজিল্যান্ড ন্যাশনাল পয়জনস সেন্টারের লিও শেপ দাবি করেন প্রাচীনকাল থেকে মানুষের কাছে পরিচিত ভেরাট্রাম অ্যালবাম নামে এক ধরনের উদ্ভিদ আলপক্সান্ডারকে বিষ প্রয়োগের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে।[112][113][114] ২০১৪ সালে ক্লিনিকাল টক্সোলজি জার্নালে তার এক লেখায় শেপ বলেছিলেন মদের সাথে ভেরাট্রাম অ্যালবাম মেশানো হয়েছিল এবং এই উদ্ভিদটির বিষক্রিয়ায় সৃষ্ট লক্ষণসমূহ আলেক্সান্ডার রোমান্সে বর্ণিত লক্ষণসমূহের সাথে মিলে যায়।[115] ভেরাট্রাম অ্যালবামের ফলে সৃষ্ট বিষক্রিয়া দীর্ঘসময় ধরে চলতে পারে এবং শেপ বলেন, আলেক্সান্ডার যদি সত্যিই বিষক্রিয়ার ফলে মারা গিয়ে থাকেন তাহলে ভেরাট্রাম অ্যালবামের ব্যবহারই সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত কারণ।[115][116] আলেক্সান্ডারের বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর বিষয়ে ২০১০ সালে প্রস্তাবিত অন্য একটি ব্যখ্যায় বলা হয়, তিনি যেভাবে মৃত্যবরণ করেছেন তা স্টিক্স নদীর (আধুনিকালের গ্রিসের আর্কডিয়ার মাভরোনেরিতে অবস্থিত) পানি পানের ফলে সৃষ্ট বিষক্রিয়ার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। এই নদীতে ব্যকটেরিয়া থেকে উৎপন্ন ক্যালিকেমিসিন নামে এক ধরনের বিপজ্জনক যৌগের উপস্থিতি ছিল।[117]
তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে ম্যালেরিয়া ও টাইফয়েডসহ বেশ কিছু প্রাকৃতিক কারণের কথাও বলা হয়ে থাকে। ১৯৯৮ সালে নিউ ইংল্যান্ড জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এজন্য অসাড়তা ও বাওয়েল পারফরেশনের মাধ্যমে আরও জটিল আকার ধারণ করা টাইফয়েড জ্বরকে দায়ী করা হয়।[118] সম্প্রতি করা অন্য একটি বিশ্লষণ পাইয়োজেনিক (সংক্রামক) স্পনডাইলিটিস বা মেনিনগিটিসকে ইঙ্গিত করে।[119] এছাড়া ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস,[120][121] এবং গালিয়ান-বার সিনড্রোমের[122] সাথে তার অসুস্থতার লক্ষণ মিলে যায়। প্রাকৃতিক কারণে মৃত্যুর তত্ত্বগুলো তার ক্রমশ খারাপ হওয়া স্বাস্থ্যের সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বহুকাল ধরে তার প্রচুর পরিমাণে মদ্যপান ও দেহের মারাত্মক ক্ষতের ওপর জোর দিয়ে থাকে। হেফাইস্তনের মৃত্যুর ফলে সৃষ্ট তীব্র মানসিক যন্ত্রণাও তার স্বাস্থ্যহানীর একটি সম্ভাব্য কারণ হয়ে থাকতে পারে।[118]
মৃত্যু-পরবর্তী ঘটনাবলী
আলেকক্সান্ডারের দেহ প্রথমে মধু দিয়ে পূর্ণ মানবমূর্তি সদৃশ একটি সোনার তৈরী একটি শবধারে রাখা হয়। এরপর তার অন্য একটি সোনার তৈরী কারুকার্যখচিত কফিনে রাখা হয়।[123][124] ইলিয়ানের ভাষ্যমতে, অ্যারিস্টেন্ডার নামক এক গণক ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল যে, যেখানে আলেকক্সান্ডারকে সমাহিত করা হবে সেই জায়গা চিরকালের জন্য সুখী ও বহিঃশত্রুদের কাছে অপরাজেয় থাকবে।[125] তবে সম্ভ্যবত উত্তরসূরীরা তাদের শাসনের বৈধতার প্রতীক হিসেবে প্রত্যেকেই আলেকক্সান্ডারের দেহ নিজেদের অধীনে রাখতে চেয়েছিল। কেননা, তৎকালীন সময়ে পূর্ববর্তী রাজার দেহ সমাধীস্থ করা তার উত্তরসূরীর রাজকীয় অধিকার বলে বিবেচনা করা হতো।[126]
ব্যক্তিগত জীবন
আলেকজান্ডার এর শক্তিশালী ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য তার বাবার সান্নিধ্যে গঠিত। তার মায়ের খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল এবং তিনি আলেকজান্ডারকে বিশ্বাস করতে উৎসাহিত করতেন যে পারস্য সাম্রাজ্য জেতাই তার নিয়তি।
চরিত্র
আলেকজান্ডারের চরিত্র ভালো ছিল বলা কঠিন কেননা তার যুদ্ধ জয় কৌশল ও পরাজিত রাজ্যের সাধারন মানুষের প্রতি তার ব্যবহার ছিল অমানবিক। সুতরাং তাকে বহুমাত্রিক চরিত্রের অধিকারী বলা যায়।
বিভিন্ন ধর্মে আলেকজান্ডার
বিভিন্ন ধর্মে আলেকজান্ডার বা তার সাথে তুলনীয় সমসাময়িক ব্যক্তির উল্লেখ পাওয়া গেছে। এসব নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিভিন্ন মতামত প্রচলিত আছে। পবিত্র কুরআন শরীফে উল্লিখিত জুলকারনাইন আলেকজান্ডার ছিলেন কিনা তা নিয়েও মতপার্থক্য আছে। তবে বেশিরভাগের মতে 'সাইরাস দ্যা গ্রেট' কেই জুলকারনাইন বলা হয়। কারণ আলেকজান্ডার বহু ঈশ্বরবাদী ছিলেন।
পাদটীকা
^ i: তাঁর মৃত্যুর পূর্বে তিনি সমগ্র পারস্য সাম্রাজ্য অধিকার করেন এবং ম্যাসিডনের অন্তর্ভুক্ত করেন; কয়েকজন আধুনিক লেখকের মতে, প্রাচীন গ্রিকদের পরিচিত পৃথিবীর অধিকাংশ এই সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল।[127][128]
^ ii: উদহারণ স্বরূপ, হানিবল আলেকজান্ডারকে সর্বশ্রেষ্ঠ সেনাপতি হিসেবে অভিহিত করেছেন[129]; জুলিয়াস সিজার আলেকজান্ডারের একটি মূর্তি দেখে কান্না রুখতে পারেননি, কারণ একই বয়সে তিনি আলেকজান্ডার অপেক্ষা অনেক কমই অর্জন করতে পেরেছিলেন[130]; পম্পেই নিজেকে সচেতনভাবে 'নব আলেকজান্ডার' হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন[131]; যুবক নেপোলিয়ন বোনাপার্ট আলেকজান্ডারের সঙ্গে নিজের তুলনা পছন্দ করতেন।[132]
^ iii: Αλέξανδρος নামটি গ্রিক ক্রিয়াপদ ἀλέξω (আলেক্সো) থেকে এসেছে, যার অর্থ প্রতিহত করা বা প্রতিরোধ করা[133][134] এছাড়া ἀνδρ- (আন্দ্র্-) শব্দ, [যা ἀνήρ (আনের) "মানব" এর মূলপদ],[135][134] এর অর্থ 'মানবরক্ষক'।[136]
^ iv: পঞ্চম শতাব্দীর প্রথমার্ধে অলিম্পিক গেমসের আধিকারিকেরা ম্যাসিডনের রাজপরিবারকে গ্রিক হিসেবে গণ্য করতেন। একথা অনস্বীকার্য যে ম্যাসিডনের রাজারা নিজেদের জিউসের পুত্র হেরাক্লিসের বংশধর হিসেবে মনে করতেন।[137]
^ v: "AEACIDS Descendants of Aeacus, son of Zeus and the nymph Aegina, eponymous (see the term) to the island of that name. His son was Peleus, father of Achilles, whose descendants (real or supposed) called themselves Aeacids: thus Pyrrhus and Alexander the Great."[138]
^ vi: বহুকাল ধরেই সন্দেহ করে আসা হয়েছে যে, ফিলিপকে হত্যা করার জন্য পাউসানিউসকে ভাড়া করা হয়েছিল। হত্যার ষড়ষন্ত্রে আলেকজান্ডার, অলিম্পিয়াস ও তৃতীয় দারিয়ুসকেও সন্দেহ করা হয়ে থাকে, কারণ এই তিনজনেরই ফিলিপকে হত্যার কারণ ছিল।[139]
তথ্যসূত্র
- Plutarch, Life of Alexander 3.5: "The birth of Alexander the Great"। Livius। ২০ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১১।
Alexander was born the sixth of Hekatombaion.
- David George Hogarth (১৮৯৭)। Philip and Alexander of Macedon : two essays in biography। New York: Charles Scribner's Sons। পৃষ্ঠা 286–287। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০২১।
- Diana Spencer (২২ নভেম্বর ২০১৯)। "Alexander the Great, reception of"। Oxford Research Encyclopedias। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০২১।
Alexander enjoys the epithet the Great for the first time in Plautus's Roman comedy Mostellaria (775–777).
- শাস্ত্রী, শ্রীসত্যচরণ (১৯০৯)। ভারতে অলিকসন্দর। কলিকাতা: শ্রীসত্যচরণশাস্ত্রী।
- Bloom, Jonathan M.; Blair, Sheila S. (2009) The Grove Encyclopedia of Islamic Art and Architecture: Mosul to Zirid, Volume 3. (Oxford University Press Incorporated, 2009), 385; "[Khojand, Tajikistan]; As the easternmost outpost of the empire of Alexander the Great, the city was renamed Alexandria Eschate ("furthest Alexandria") in 329 BCE."Golden, Peter B. Central Asia in World History (Oxford University Press, 2011), 25;"[...] his campaigns in Central Asia brought Khwarazm, Sogdia and Bactria under Graeco-Macedonian rule. As elsewhere, Alexander founded or renamed a number of cities, such as Alexandria Eschate ("Outernmost Alexandria", near modern Khojent in Tajikistan)."
- Yenne 2010, পৃ. 159।
- "Alexander the Great's Achievements"। Britannica। "Alexander the Great was one of the greatest military strategists and leaders in world history."
- Heckel ও Tritle 2009, পৃ. 99।
- Burger, Michael (২০০৮)। The Shaping of Western Civilization: From Antiquity to the Enlightenment। University of Toronto Press। পৃষ্ঠা 76। আইএসবিএন 978-1-55111-432-3।
- "The birth of Alexander the Great"। Livius। ৫ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১১।
Alexander was born the sixth of Hekatombaion.
- Green, Peter (১৯৭০), Alexander of Macedon, 356–323 B.C.: a historical biography, Hellenistic culture and society (illustrated, revised reprint সংস্করণ), University of California Press, পৃষ্ঠা xxxiii, আইএসবিএন 978-0-520-07165-0,
356 – Alexander born in Pella. The exact date is not known, but probably either 20 or 26 July.
- McCarty 2004, পৃ. 10
- Renault 2001, পৃ. 28
- Durant 1966, পৃ. 538
- Roisman ও Worthington 2010, পৃ. 171।
- Roisman ও Worthington 2010, পৃ. 188
- Plutarch 1919, III, 2
- Bose 2003, পৃ. 21
- Renault 2001, পৃ. 33–34
- Roisman ও Worthington 2010, পৃ. 186
- Fox 1980, পৃ. 65
- Renault 2001, পৃ. 44
- McCarty 2004, পৃ. 15
- Fox 1980, পৃ. 65–66
- Renault 2001, পৃ. 45–47
- McCarty 2004, পৃ. 16
- Fox 1980, পৃ. 68
- Renault 2001, পৃ. 47।
- Bose 2003, পৃ. 43।
- Renault 2001, পৃ. 50–51
- Bose 2003, পৃ. 44–45।
- McCarty 2004, পৃ. 23।
- Renault 2001, পৃ. 51
- Bose 2003, পৃ. 47।
- McCarty 2004, পৃ. 24।
- Diodorus Siculus 1989, XVI, 86
- "History of Ancient Sparta"। Sikyon। ১০ ডিসেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০০৯।
- Renault 2001, পৃ. 54
- McCarty 2004, পৃ. 26।
- Roisman ও Worthington 2010, পৃ. 179
- McCarty 2004, পৃ. 27
- Roisman ও Worthington 2010, পৃ. 180
- Bose 2003, পৃ. 75
- Renault 2001, পৃ. 56
- Renault 2001, পৃ. 59
- Fox 1980, পৃ. 71
- McCarty 2004, পৃ. 30–31
- Renault 2001, পৃ. 61–62
- Fox 1980, পৃ. 72
- Roisman ও Worthington 2010, পৃ. 190
- Green 2007, পৃ. 5–6
- Renault 2001, পৃ. 70–71
- McCarty 2004, পৃ. 31
- Renault 2001, পৃ. 72
- Fox 1980, পৃ. 104
- Bose 2003, পৃ. 95
- Stoneman 2004, পৃ. 21
- Dillon 2004, পৃ. 187–188
- Arrian 1976, I, 1
- Arrian 1976, I, 2
- Arrian 1976, I, 3–4
- Renault 2001, পৃ. 73–74
- Arrian 1976, I, 5–6
- Renault 2001, পৃ. 77
- Roisman ও Worthington 2010, পৃ. 192
- Roisman ও Worthington 2010, পৃ. 199
- Arrian 1976, I, 11
- Arrian 1976, I, 20–23
- Arrian 1976, I, 23
- Arrian 1976, I, 27–28
- Arrian 1976, I, 3
- Green 2007, পৃ. 351
- Arrian 1976, I, 11–12
- Arrian 1976, II, 16–24
- Gunther 2007, পৃ. 84
- Sabin, van Wees এবং Whitby 2007, পৃ. 396
- Josephus, Jewish Antiquities, XI, 337 viii, 5
- Arrian 1976, II, 26
- Arrian 1976, II, 26–27
- Ring এবং অন্যান্য 1994, পৃ. 49, 320
- Dahmen 2007, পৃ. 10–11
- Arrian 1976, III, 1
- Arrian 1976, III 7–15
- Arrian 1976, III, 16
- Arrian 1976, III, 18
- Foreman 2004, পৃ. 152
- Morkot 1996, পৃ. 121
- Hammond 1983, পৃ. 72–73
- Arrian 1976, III, 19–20।
- Arrian 1976, III, 21।
- Arrian 1976, III, 21, 25।
- Arrian 1976, III, 22।
- Gergel 2004, পৃ. 81
- Arrian 1976, III, 23–25, 27–30; IV, 1–7।
- Arrian 1976, III, 30।
- Arrian 1976, IV, 5–6, 16–17।
- Arrian 1976, VII, 11
- Gergel 2004, পৃ. 99
- Heckel ও Tritle 2009, পৃ. 47–48
- Invasion of India
- Depuydt, L। "The Time of Death of Alexander the Great: 11 June 323 BC, ca. 4:00–5:00 pm"। Die Welt des Orients। 28: 117–35।
- Plutarch 1919, LXXV, 1
- Wood 2001, পৃ. 2267–70।
- Diodorus Siculus 1989, XVII, 117
- Green 2007, পৃ. 1–2।
- Plutarch 1919, LXXVII, 1
- Arrian 1976, VII, 27
- Green 2007, পৃ. 23–24।
- Diodorus Siculus 1989, XVII, 118
- Lane Fox 2006, chapter 32।
- "NZ scientist's detective work may reveal how Alexander died"। The Royal Society of New Zealand। Dunedin। ১৬ অক্টোবর ২০০৩। ১৬ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৪।
- Cawthorne 2004, পৃ. 138।
- Bursztajn, Harold J (২০০৫)। "Dead Men Talking"। Harvard Medical Alumni Bulletin (Spring)। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১১।
- Schep LJ, Slaughter RJ, Vale JA, Wheatley P (জানুয়ারি ২০১৪)। "Was the death of Alexander the Great due to poisoning? Was it Veratrum album?"। Clinical Toxicology। 52 (1): 72–77। ডিওআই:10.3109/15563650.2013.870341 । পিএমআইডি 24369045।
- Bennett-Smith, Meredith (১৪ জানুয়ারি ২০১৪)। "Was Alexander The Great Poisoned By Toxic Wine?"। The Huffington Post। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৪।
- Squires, Nick (৪ আগস্ট ২০১০)। "Alexander the Great poisoned by the River Styx"। The Daily Telegraph। London। ১০ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১১।
- Oldach, DW; Richard, RE; Borza, EN; Benitez, RM (জুন ১৯৯৮)। "A mysterious death"। N. Engl. J. Med.। 338 (24): 1764–69। ডিওআই:10.1056/NEJM199806113382411। পিএমআইডি 9625631।
- Ashrafian, H (২০০৪)। "The death of Alexander the Great—a spinal twist of fate"। J Hist Neurosci। 13 (2): 138–42। ডিওআই:10.1080/0964704049052157। পিএমআইডি 15370319।
- Marr, John S; Calisher, Charles H (২০০৩)। "Alexander the Great and West Nile Virus Encephalitis" (PDF)। Emerging Infectious Diseases। 9 (12): 1599–1603। ডিওআই:10.3201/eid0912.030288। পিএমআইডি 14725285। পিএমসি 3034319 । সংগ্রহের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর ২০১২।
- Sbarounis, CN (২০০৭)। "Did Alexander the Great die of acute pancreatitis?"। J Clin Gastroenterol। 24 (4): 294–96। ডিওআই:10.1097/00004836-199706000-00031। পিএমআইডি 9252868।
- Owen Jarus (৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)। "Why Alexander the Great May Have Been Declared Dead Prematurely (It's Pretty Gruesome)"। Live Science। সংগ্রহের তারিখ নভে ৩, ২০২১।
- Kosmetatou, Elizabeth (১৯৯৮)। "The Location of the Tomb: Facts and Speculation"। Greece.org। ৩১ মে ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১১।
- "Bayfront Byline Bug Walk"। UCSD। মার্চ ১৯৯৬। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মার্চ ২০১৩।
- Aelian, "64", Varia Historia, XII .
- Green 2007, পৃ. 32।
- Danforth 1997, পৃ. 38, 49, 167
- Stoneman 2004, পৃ. 2
- Goldsworthy 2003, পৃ. 327–28।
- Plutarch 1919, XI, 2
- Holland 2003, পৃ. 176–83।
- Barnett 1997, পৃ. 45।
- Plutarch 1919, IV, 57: ‘ἀλέξω’.
- Liddell ও Scott 1940।
- Plutarch 1919, IV, 57: ‘ἀνήρ’.
- "Alexander"। Online Etymology Dictionary। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০০৯।
- Hammond 1986, পৃ. 516
- Chamoux ও Roussel 2003, পৃ. 396
- Fox 1980, পৃ. 72–73
- Aelian, "7", Varia Historia, XII .
- Arrian 1976, VI, 27
- Arrian 1976, II, 29
- Arrian 1976, VII, 14
- Arrian 1976, VII, 19
- Arrian 1976, VII, 29
- Arrian 1976, VII, 4
- Gergel 2004, পৃ. 120
- Diodorus Siculus 1989, XVII, 77
- Diodorus Siculus 1989, XVII, 114
- Diodorus Siculus 1989, XVIII, 4
- Green 2007, পৃ. 1–2
- Green 2007, পৃ. 4
- Green 2007, পৃ. 15–16
- Green 2007, পৃ. 20–21
- Green 2007, পৃ. 21
- Green 2007, পৃ. 23–24
- Green 2007, পৃ. 24–26
- Green 2007, পৃ. 26–29
- Green 2007, পৃ. 29–4
- Green 2007, পৃ. 56–59
- Bosworth 1988, পৃ. 71–74
- Green 2007, পৃ. xii–xix
- Holt 2003, পৃ. 3
- Tripathi 1999, পৃ. 118–21
- Tripathi 1999, পৃ. 124–25
- Tripathi 1999, পৃ. 126–27
- Tripathi 1999, পৃ. 129–30
- Tripathi 1999, পৃ. 137–38
- Tripathi 1999, পৃ. 141
- Keay 2001, পৃ. 82–85
- Keay 2001, পৃ. 101–9
- McCarty 2004, পৃ. 17
- Plutarch 1919, XXVII, 1
- Plutarch 1919, LXXII, 1
- Bose 2003, পৃ. 96
- Plutarch 1919, IX, IV
- Plutarch 1919, IV, 4
- Plutarch 1919, V, 2
- Plutarch 1919, VI, 5
- Plutarch 1919, VII, 1
- Plutarch 1919, VIII, 1
- Plutarch 1919, IX, 1
- Plutarch 1919, LXII, 1
- Plutarch 1919, LXVI, 1
- Plutarch 1919, LXV, 1
- Fox 1980, পৃ. 64
- Renault 2001, পৃ. 47–49
- Kosmetatou, Elizabeth (১৯৯৮)। "The Aftermath: The Burial of Alexander the Great"। Greece.org। ২৭ আগস্ট ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১১।
আরো পড়ুন
- Arrian (১৯৭৬)। de Sélincourt, Aubrey, সম্পাদক। Anabasis Alexandri (The Campaigns of Alexander)। Penguin Books। আইএসবিএন 0-14-044253-7।
- Quintus Curtius Rufus (১৯৪৬)। Rolfe, John, সম্পাদক। History of Alexander। Loeb Classical Library। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০১৫।
- Siculus, Diodorus (১৯৮৯)। "Library of History"। CH Oldfather, translator। Perseus Project। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০০৯।
- Plutarch (১৯১৯)। Perrin, Bernadotte, সম্পাদক। Plutarch, Alexander। Perseus Project। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১১।
- Plutarch (১৯৩৬)। Babbitt, Frank Cole, সম্পাদক। On the Fortune of Alexander। IV। Loeb Classical Library। পৃষ্ঠা 379–487। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১১।
- Trogus, Pompeius (১৮৫৩)। Justin, সম্পাদক। "Epitome of the Philippic History"। Rev. John Selby Watson, translator। Forum romanum। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০০৯।.
- Barnett, C (১৯৯৭)। Bonaparte। Wordsworth। আইএসবিএন 1-85326-678-7।
- Baynes, Norman G (২০০৭)। "Byzantine art"। Byzantium: An Introduction to East Roman Civilization। Baynes। পৃষ্ঠা 170। আইএসবিএন 978-1-4067-5659-3।
- Berkley, Grant (২০০৬)। Moses in the Hieroglyphs। Trafford। আইএসবিএন 1-4120-5600-4। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০১১।
- Cambon, Pierre; Jarrige, Jean-François (২০০৬)। Afghanistan, les trésors retrouvés: Collections du Musée national de Kaboul [Afghanistan, the treasures found: collections of the Kabul national museum] (French ভাষায়)। Réunion des musées nationaux। পৃষ্ঠা 297। আইএসবিএন 978-2-7118-5218-5।
- Bose, Partha (২০০৩)। Alexander the Great's Art of Strategy। Crows Nest, NSW: Allen & Unwin। আইএসবিএন 1-74114-113-3।
- Bosworth, AB (১৯৮৮)। Conquest and Empire: The Reign of Alexander the Great। New York: Cambridge University Press।
- Cawthorne, Nigel (২০০৪)। Alexander the Great। Haus। আইএসবিএন 1-904341-56-X।
- Chamoux, François; Roussel, Michel (২০০৩)। Hellenistic Civilization। Blackwell। আইএসবিএন 0-631-22242-1।
- Connerney, RD (২০০৯)। The upside-down tree: India's changing culture। Algora। পৃষ্ঠা 214। আইএসবিএন 0-87586-649-2।
- Curtis, J; Tallis, N; Andre-Salvini, B (২০০৫)। Forgotten empire: the world of ancient Persia। University of California Press। পৃষ্ঠা 272। আইএসবিএন 0-520-24731-0।
- Dahmen, Karsten (২০০৭)। The Legend of Alexander the Great on Greek and Roman Coins। Taylor & Francis। আইএসবিএন 0-415-39451-1।
- Danforth, Loring M (১৯৯৭)। The Macedonian Conflict: Ethnic Nationalism in a Transnational World। Princeton University Press। আইএসবিএন 0-691-04356-6।
- Dillon, John M (২০০৪)। Morality and custom in ancient Greece। Indiana University Press। আইএসবিএন 978-0-253-34526-4।
- Durant, Will (১৯৬৬)। The Story of Civilization: The Life of Greece। Simon & Schuster। আইএসবিএন 0-671-41800-9।
- Fermor, Patrick Leigh (২০০৬)। "Mani: Travels in the Southern Peloponnese"। New York Book Review: 358। আইএসবিএন 1-59017-188-8।
- Fischer, MMJ (২০০৪)। Mute dreams, blind owls, and dispersed knowledges: Persian poesis in the transnational circuitry। Duke University Press। পৃষ্ঠা 474। আইএসবিএন 0-8223-3298-1।
- Foreman, Laura (২০০৪)। Alexander the conqueror: the epic story of the warrior king। Da Capo Press। পৃষ্ঠা 217। আইএসবিএন 978-0-306-81293-4। ৩১ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৫।
- Fox, Robin Lane (১৯৮০)। The Search for Alexander। Boston: Little Brown & Co। আইএসবিএন 0-316-29108-0।
- ——— (২০০৬)। Alexander the Great। ePenguin। এএসআইএন B002RI9DYW।
- Gabriel, Richard A (২০০২)। "The army of Byzantium"। The Great Armies of Antiquity। Greenwood। পৃষ্ঠা 277। আইএসবিএন 0-275-97809-5।
- Gergel, Tania, সম্পাদক (২০০৪)। The Brief Life and Towering Exploits of History's Greatest Conqueror as Told By His Original Biographers। Penguin। আইএসবিএন 0-14-200140-6।
- Glick, Thomas F; Livesey, Steven John; Wallis, Faith, সম্পাদকগণ (২০০৫)। Medieval Science, Technology, and Medicine: An Encyclopedia। New York: Routledge। আইএসবিএন 0-415-96930-1।
- Goldsworthy, A (২০০৩)। The Fall of Carthage। Cassel। আইএসবিএন 0-304-36642-0।
- Grafton, Anthony (২০১০)। Most, Glenn W; Settis, Salvatore, সম্পাদকগণ। The Classical Tradition। Harvard University Press। আইএসবিএন 978-0-674-03572-0।
- Green, Peter (২০০৭)। Alexander the Great and the Hellenistic Age। London: Phoenix। আইএসবিএন 978-0-7538-2413-9।
- Grimal, Nicolas (১৯৯২)। A History of Ancient Egypt (reprint সংস্করণ)। Blackwell। আইএসবিএন 978-0-631-17472-1।
- Gunther, John (২০০৭)। Alexander the Great। Sterling। আইএসবিএন 1-4027-4519-2।
- Hammond, NGL (১৯৮৩)। Sources for Alexander the Great। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-71471-6।
- ——— (১৯৮৬)। A History of Greece to 323 BC। Cambridge University।
- Harrison, EF (১৯৭১)। The language of the New Testament। Wm B Eerdmans। পৃষ্ঠা 508। আইএসবিএন 0-8028-4786-2।
- Holland, Tom (২০০৩)। Rubicon: Triumph and Tragedy in the Roman Republic। Abacus। আইএসবিএন 978-0-349-11563-4।
- Holt, Frank Lee (২০০৩)। Alexander the Great and The Mystery of the Elephant Medallions। University of California Press। আইএসবিএন 0-520-23881-8।
- Keay, John (২০০১)। India: A History। Grove Press। আইএসবিএন 0-8021-3797-0।
- Liddell, Henry George; Scott, Robert (১৯৪০)। Jones, Sir Henry Stuart; McKenzie, Roderick, সম্পাদকগণ। A Greek-English Lexicon on Perseus Digital Library। Oxford: Clarendon Press।
- Luniya, Bhanwarlal Nathuram (১৯৭৮)। Life and Culture in Ancient India: From the Earliest Times to 1000 AD। Lakshmi Narain Agarwal। এলসিসিএন 78907043।
- McCarty, Nick (২০০৪)। Alexander the Great। Camberwell, Victoria: Penguin। আইএসবিএন 0-670-04268-4।
- McCrindle, JW (১৯৯৭)। "Curtius"। Singh, Fauja; Joshi, LM। History of Punjab। I। Patiala: Punjabi University।
- McKechnie, Paul (১৯৮৯)। Outsiders in the Greek cities in the fourth century BC। Taylor & Francis। পৃষ্ঠা 54। আইএসবিএন 0-415-00340-7। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০১০।
- Morkot, Robert (১৯৯৬)। The Penguin Historical Atlas of Ancient Greece। Penguin।
- Narain, AK (১৯৬৫)। Alexander the Great: Greece and Rome–12।
- Ogden, Daniel (২০০৯)। "Alexander's Sex Life"। Heckel, Alice; Heckel, Waldemar; Tritle, Lawrence A। Alexander the Great: A New History। Wiley-Blackwell। আইএসবিএন 1-4051-3082-2।
- Pingree, D (১৯৭৮)। "History of Mathematical Astronomy in India"। Dictionary of Scientific Biography। 15। পৃষ্ঠা 533–633।
- Pratt, James Bissett (১৯৯৬)। The Pilgrimage of Buddhism and a Buddhist Pilgrimage। Laurier Books। আইএসবিএন 81-206-1196-9।
- Renault, Mary (২০০১)। The Nature of Alexander the Great। Penguin। আইএসবিএন 0-14-139076-X।
- Ring, Trudy; Salkin, Robert M; Berney, KA; Schellinger, Paul E, সম্পাদকগণ (১৯৯৪)। International dictionary of historic places। Chicago: Fitzroy Dearborn, 1994–1996। আইএসবিএন 978-1-884964-04-6।
- Roisman, Joseph; Worthington, Ian (২০১০)। A Companion to Ancient Macedonia। John Wiley & Sons। আইএসবিএন 1-4051-7936-8।
- Sabin, P; van Wees, H; Whitby, M (২০০৭)। The Cambridge History of Greek and Roman Warfare: Greece, the Hellenistic World and the Rise of Rome। Cambridge University Press। আইএসবিএন 0-521-78273-2।
- Sacks, David (১৯৯৫)। Encyclopedia of the Ancient Greek World। Constable & Co। আইএসবিএন 0-09-475270-2।
- Stoneman, Richard (২০০৪)। Alexander the Great। Routledge। আইএসবিএন 0-415-31932-3।
- Stoneman, Richard (১৯৯৬)। "The Metamorphoses of Alexander Romance"। Schmeling, Gareth L। The Novel in the Ancient World। Brill। পৃষ্ঠা 601–12। আইএসবিএন 90-04-09630-2।
- Studniczka, Franz (১৮৯৪)। Achäologische Jahrbook 9।
- Tripathi, Rama Shankar (১৯৯৯)। History of Ancient India। আইএসবিএন 978-81-208-0018-2।
- Heckel, Waldemar; Tritle, Lawrence A, সম্পাদকগণ (২০০৯)। Alexander the Great: A New History। Wiley-Blackwell। পৃষ্ঠা 47–48। আইএসবিএন 978-1-4051-3082-0।
- Wood, Michael (২০০১)। In the Footsteps of Alexander the Great: A Journey from Greece to Asia। University of California Press। আইএসবিএন 978-0-520-23192-4।
- Worthington, Ian (২০০৩)। Alexander the Great: A Reader। Routledge। পৃষ্ঠা 332। আইএসবিএন 0-415-29187-9।
- Yenne, Bill (২০১০)। Alexander the Great: Lessons From History's Undefeated General। Palmgrave McMillan। আইএসবিএন 978-0-230-61915-9।
বহিঃসংযোগ
- Delamarche, Félix (১৮৩৩), The Empire and Expeditions of Alexander the Great .
- Romm, James; Cartledge, Paul, "Two Great Historians On Alexander the Great", Forbes (conversations) Part 1, Part 2, Part 3, Part 4, Part 5, Part 6.
- কার্লিতে মহান আলেকজান্ডার (ইংরেজি)
- Alexander the Great: An annotated list of primary sources, Livius, ১৪ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২ .
- The Elusive Tomb of Alexander the Great, Archæology .
- Alexander the Great and Sherlock Holmes, Sherlockian Sherlock .
- আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২৬ এপ্রিল ২০১৮, পৃষ্ঠা ৫।
মহান আলেকজান্ডার আর্গিয়াদ রাজবংশ জন্ম: ৩৫৬ খ্রিপূ ৩২৩ খ্রিপূ | ||
রাজত্বকাল শিরোনাম | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী দ্বিতীয় ফিলিপ |
ম্যাসিডনের রাজা ৩৩৬ খ্রিপূ - ৩২৩ খ্রিপূ |
উত্তরসূরী তৃতীয় ফিলিপ ও চতুর্থ আলেকজান্ডার |
পূর্বসূরী তৃতীয় দারিয়ুস |
পারস্যের শাহ ৩৩০ খ্রিপূ - ৩২৩ খ্রিপূ | |
মিশরের ফারাও ৩৩২ খ্রিপূ - ৩২৩ খ্রিপূ | ||
নতুন সৃষ্টি | এশিয়ার অধিপতি ৩৩১ খ্রিপূ - ৩২৩ খ্রিপূ |
টেমপ্লেট:Plutarch