মরিস ট্রেমলেট

মরিস ফ্লেচার ট্রেমলেট (ইংরেজি: Maurice Tremlett; জন্ম: ৫ জুলাই, ১৯২৩ - মৃত্যু: ৩০ জুলাই, ১৯৮৪) চেশায়ারের স্টকপোর্ট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন।[1] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।

মরিস ট্রেমলেট
১৯৪৭ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে মরিস ট্রেমলেট
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামমরিস ফ্লেচার ট্রেমলেট
জন্ম(১৯২৩-০৭-০৫)৫ জুলাই ১৯২৩
স্টকপোর্ট, চেশায়ার, ইংল্যান্ড, যুক্তরাজ্য
মৃত্যু৩০ জুলাই ১৯৮৪(1984-07-30) (বয়স ৬১)
সাউদাম্পটন, হ্যাম্পশায়ার, ইংল্যান্ড, যুক্তরাজ্য
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
সম্পর্কটিম ট্রেমলেট (পুত্র), ক্রিস ট্রেমলেট (নাতি)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩৩১)
২১ জানুয়ারি ১৯৪৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ টেস্ট২৭ মার্চ ১৯৪৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৪৭ - ১৯৬০সমারসেট
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩৮৯
রানের সংখ্যা ২০ ১৬,০৩৮
ব্যাটিং গড় ৬.৬৬ ২৫.৩৭
১০০/৫০ –/– ১৬/৮৩
সর্বোচ্চ রান ১৮* ১৮৫
বল করেছে ৪৯২ ২২,০৯৩
উইকেট ৩৫১
বোলিং গড় ৫৬.৫০ ৩০.৭০
ইনিংসে ৫ উইকেট ১১
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/৯৮ ৮/৩১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং –/– ২৫৭/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৭ জুলাই ২০১৭

১৯৪৭ থেকে ১৯৬০ সময়কালে ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সমারসেটের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের পক্ষে খেলেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার ছিলেন। ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন মরিস ট্রেমলেট

প্রারম্ভিক জীবন

চেশায়ারের স্টকপোর্ট এলাকায় ট্রেমলেটের জন্ম।[1] তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের অভিষেক পর্বটি বেশ দূর্দান্ত ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে তিনি সমারসেটের স্টাফ ছিলেন। অবশেষে ১৯৪৭ মৌসুমে প্রথমবারের মতো খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান তিনি। লর্ডসে মিডলসেক্সের বিপক্ষে খেলেন। দলটি ঐ মৌসুমে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে দূর্দান্ত প্রভাববিস্তার করেছিল। প্রথম ইনিংসে তিন উইকেট পান ও দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ ওভারের ব্যবধানে পাঁচ উইকেট তুলে নেন তিনি। খেলায় তার অবদান ছিল ৮/৮৬। এরপর তিনি অপরাজিত ১৯* রান করেন ও শেষ উইকেট জুটিতে প্রয়োজনীয় রান তুলে সমারসেটকে নাটকীয়ভাবে এক উইকেটের জয়ের সন্ধান এনে দেন। প্রথম মৌসুম শেষে ট্রেমলেট ৬৫৬ রানের পাশাপাশি ৬৫ উইকেট দখল করেন। বেশ কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটারের সাথে এমসিসি দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যায়।

টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ

১৯৪৭-৪৮ মৌসুমে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ঐ টেস্টে ১২জন ক্রিকেটারের একযোগে অভিষেক ঘটেছিল। ক্লাইড ওয়ালকট, রবার্ট ক্রিস্টিয়ানি, উইলফ্রেড ফার্গুসন, বার্কলি গ্যাসকিন, জন গডার্ডপ্রায়র জোন্স - এ সাতজন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এবং জিম লেকার, মরিস ট্রেমলেট, ডেনিস ব্রুকস, উইনস্টন প্লেসজেরাল্ড স্মিথসন - এ পাঁচজন ইংল্যান্ডের ছিলেন। ২১ জানুয়ারি, ১৯৪৮ তারিখে ব্রিজটাউনে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টটি ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল।[2] চার টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের তিন খেলায় তিনি বোলিং উদ্বোধনে নামেন। তবে, তিনি তেমন সফলতা পাননি। কেবলমাত্র চার উইকেট পান ও টেস্টগুলোয় অংশ নিয়ে মাত্র ২০ রান তুলেন। সমগ্র সফরে এ উইকেটগুলো লাভে তাকে বেশ রান খরচ করতে হয়েছে ও স্বল্পকিছু রান তুলতে পেরেছিলেন তিনি।

১৯৪৮ মৌসুমে আরও একটি সফলতম কাউন্টি মৌসুম অতিবাহিত করেন। ১০৫৬ রানের পাশাপাশি ৮৬ উইকেট পান যা উভয় ক্ষেত্রেই গড়ে মানানসই ছিল। ফলশ্রুতিতে ১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে এমসিসি দলের সদস্যরূপে যান। পিটারমারিৎজবার্গে নাটাল দলের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সেঞ্চুরি করলেও টেস্ট দলে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি তিনি। এ সফর বিষয়ে উইজডেন এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যে, তিনি বোলিংয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন।[3]

পরবর্তী কয়েক বছর ট্রেমলেটের ব্যাটিংয়ের বৈপ্লবিক উত্তরণ ঘটতে থাকে। ১৯৫১ সালে তিনি দুই সহস্রাধিক রান সংগ্রহ করেন। সর্বমোট দশবার সহস্রাধিক রানের দেখা পান তিনি। কিন্তু তার বোলিংও উত্তরোত্তর নিচের দিকে যেতে থাকে। ১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে তিনি মাঝে-মধ্যে পরিবর্তিত বোলার হিসেবে উপস্থিত হতেন। ১৯৫৬ সাল থেকে সমারসেটের অধিনায়কের দায়িত্বভার লাভ করেন। এরফল প্রথমবারের মতো পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে চ্যাম্পিয়নশীপের টেবিলের সর্বনিম্নে স্থানে থাকা দলকে টেনে তোলার প্রয়াস চালাতে থাকেন। অধিনায়ক হিসেবে বেশ সফলতা পান তিনি। চ্যাম্পিয়নশীপে দলকে ১৯৫৮ সালে তৃতীয় স্থানে নিয়ে যান যা দলের সর্বোচ্চ অবস্থান ছিল। ১৯৫৯ মৌসুম শেষে তিনি নেতৃত্ব থেকে দূরে সরে আসেন। ১৯৬০ সালে কয়েকটি খেলায় অংশগ্রহণ শেষে অবসর নেন ও গিনেসে চাকরি করতে থাকেন।

খেলার ধরন

১৯৪০-এর দশকের শেষার্ধ্বে বেশ কয়েক বছর ট্রেমলেটকে ইংল্যান্ডের যুদ্ধ পরবর্তীকালের ক্রিকেট দূর্ভাগ্যজনক অধ্যায়ের সমুচিত জবাব হিসেবে দেখা হয়েছিল। দীর্ঘদেহী, কুঁকড়ানো চুলের অধিকারী ট্রেমলেট অল-রাউন্ডার ছিলেন। চমৎকার ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং ভঙ্গীমার পাশাপাশি বলকে পিচের অফের দিকে প্রেরণ করতেন ও শক্ত ড্রাইভের মারে ডানহাতি আগ্রাসী ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন তিনি।

ব্যক্তিগত জীবন

তার সন্তান টিম ট্রেমলেট হ্যাম্পশায়ারের পক্ষে ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলেন ও পরবর্তীতে কাউন্টি দলটির কোচের দায়িত্ব পালন করেন। টিমের সন্তান ও মরিসের নাতি ক্রিস ট্রেমলেট হ্যাম্পশায়ার এবং পরবর্তীতে সারের পক্ষে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে উপস্থাপনা ঘটান। তিনি ইংল্যান্ডের পক্ষে টেস্ট ও একদিনের আন্তর্জাতিক - উভয় স্তরের ক্রিকেটেই অংশগ্রহণ করেছেন।

৩০ জুলাই, ১৯৮৪ তারিখে হ্যাম্পশায়ারের সাউদাম্পটনে ৬১ বছর বয়সে মরিস ট্রেমলেটের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 173আইএসবিএন 1-869833-21-X।
  2. Cricinfo, "Scorecard, 1st Test: West Indies v England at Bridgetown, 21–26 Jan 1948" Accessed 4 January 2017
  3. "MCC Team in South Africa 1948–49"। Wisden Cricketers' Almanack (1950 সংস্করণ)। Wisden। পৃষ্ঠা 758–794।

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
জেরি টর্ডফ
সমারসেট কাউন্টি ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৫৬-১৯৫৯
উত্তরসূরী
হ্যারল্ড স্টিফেনসন
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.