মনোজ দাস
মনোজ দাস (জন্ম: ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৪) একজন ভারতীয় লেখক যিনি ওড়িয়া এবং ইংরেজিতে লেখেন। ২০০০ সালে, মনোজ দাস সরস্বতী সম্মাননায় ভূষিত হয়েছিলেন। তিনি ২০০১ সালে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী,[1], সাহিত্যে ও শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনি ২০২০ সালে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মভূষণ এ ভূষিত হন।[2] এবং তাকে সাহিত্য ক্ষেত্রে ভারতের সর্বোচ্চ পুরস্কার সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।[3]
মনোজ দাস | |
---|---|
স্থানীয় নাম | ମନୋଜ ଦାସ |
জন্ম | শাঁখারী, বালেশ্বর, ওড়িশা, ভারত | ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৪
পেশা | সাহিত্যিক, সম্পাদকের বিভাগীয় লেখক, সম্পাদক, অধ্যাপক |
নাগরিকত্ব | ভারতীয় |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | সামন্ত চন্দ্র শেখর কলেজ, পুরী রাভেনশ কলেজ |
ধরন | উপন্যাস,পুরাণ, জীবন |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | Cyclones A Tiger at Twilight Mystery of the Missing Cap Myths, Legends, Concepts and Literary Antiquities of India |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | পদ্মশ্রী সাহিত্য আকাদেমি ফেলোশিপ সরস্বতী সম্মান |
দাম্পত্যসঙ্গী | প্রতীজ্ঞা দেবী |
স্বাক্ষর | |
ওয়েবসাইট | |
worldofmanojdas |
১৯৭১ সালে, লন্ডন এবং এডিনবার্গের সংরক্ষণাগারগুলিতে তার গবেষণা শ্রী অরবিন্দের নেতৃত্বে বিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের কিছু স্বল্পজ্ঞাত তথ্য প্রকাশ করেছিল যার জন্য তিনি প্রথম শ্রী অরবিন্দ পুরস্কার (কলকাতা) পেয়েছিলেন।
তার গভীর অনুসন্ধান তাকে মরমীবাদের দিকে নিয়ে যায় এবং ১৯৬৩ সাল থেকে তিনি পুদুচেরিতে শ্রী অরবিন্দ আশ্রমে ছিলেন যেখানে তিনি বর্তমানের শ্রী অরবিন্দ আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্য এবং দর্শনশাস্ত্র পড়াতেন।
প্রারম্ভিক জীবন
মনোজ দাস ওড়িশার বালেশ্বর জেলার শাঁখারী নামক ছোট উপকূলীয় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতা মধুসূদন দাস ব্রিটিশ সরকারের অধীনে কাজ করতেন।[4] তার প্রথম রচনাটি ছিল ওড়িয়া কাব্যগ্রন্থ, সাতবদিরা আরতানাদা ১৯৪৯ সালে উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সময় প্রকাশিত হয়।১৯৫০ সালে তিনি দিগন্ত নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা চালু করেন। ১৯৫১ সালে তিনি হাই স্কুল থেকে পাশ করেন। সে বছর সমুদ্রের ক্ষুধা (ক্ষুধার্ত সমুদ্র) তার প্রথম গল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। তিনি কটক কলেজে বিএ পড়ার সময় ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি কলেজের দিনগুলিতে উগ্র দৃষ্টিভঙ্গি সহ এক যুবনেতা ছিলেন এবং তার বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের জন্য এক বছর তাকে জেল খাটতে হয় । ১৯৫৯ সালে তিনি ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং-এ আফ্রো-এশীয় শিক্ষার্থীদের সম্মেলনে প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি তার ডিগ্রি শেষ করতে পারেন নি। শেষ পর্যন্ত ১৯৫৫ সালে পুরী সামন্ত চন্দ্র শেখর কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করেন। কলেজ চলাকালীন লেখালেখি করতেন এবং তিনি জীবনের স্বাদ উপন্যাস, ছোট গল্পের সংকলন বিষকন্যার কাহানি এবং পদধ্বনি কবিতা সংকলন প্রকাশ করেন। ইংরেজি সাহিত্যে ডিগ্রি নিয়ে স্নাতক শেষে রাভেনশো কলেজ থেকে তিনি ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। খ্রিস্ট কলেজে (কটক) প্রভাষক হিসাবে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতার পরে তিনি পুডুচেরিতে শ্রী অরবিন্দ আশ্রমে যোগদান করেছিলেন। ১৯৬৩ সাল থেকে তিনি শ্রী অরবিন্দ আন্তর্জাতিক শিক্ষা কেন্দ্র, পুডুচেরিতে ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক ছিলেন।[5]
তিনি তার সাহিত্য লেখনীতে ফকির মোহন সেনাপতি, ব্যাস এবং বাল্মিকীকে অনুসরণ করতেন।[6]
সম্পাদক ও কলাম লেখক
তিনি ১৯৮৫-১৯৯৯ সালে চেন্নাই থেকে প্রকাশিত দ্য হেরিটেজ একটি সাংস্কৃতিক ম্যাগাজিন সম্পাদনা করেছিলেন।[7] প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ম্যাগাজিনটি এখন আর প্রচলিত নয়।[8]
তিনি টাইমস অফ ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য হিন্দু এবং দ্য স্টেটসম্যানের মতো ভারতের জাতীয় দৈনিকগুলিতে অনাদি সত্যের সন্ধানে কলাম ধরেছিলেন।[9][10]
সৃজনশীল লেখনী ও গল্প
মনোজ দাস মূলত দ্বিভাষিক লেখক যিনি ইংরেজি এবং ওড়িয়া উভয় ভাষায় গল্প ও উপন্যাস রচনা করেন।[11] দুর্দান্ত লিখনশৈলী ও শব্দের দক্ষ ব্যবহারের জন্য আধুনিক ওড়িয়া সাহিত্যে তাকে বিষ্ণু শর্মার সাথে তুলনা করা হয়েছে এবং এটি সত্য যে, তিনি বর্তমানে ভারতের অন্যতম সেরা গল্পকার। কয়েক বছর ধরে অনেক গবেষক মনোজ দাসের রচনায় ডক্টরাল থিসিস করেছেন । এর মধ্যে পি.রাজা ছিলেন প্রথম গবেষক ।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অবস্থান
মনোজ দাস জাতীয় স্তরে সাহিত্যজগৎের বহু গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন । তিনি নয়াদিল্লির সাহিত্য আকাদেমির সদস্য, সাধারণ পরিষদ ছিলেন (১৯৯৮–-২০০২)।আন্তর্জাতিক স্তরে তিনি সিঙ্গাপুর সরকারের পরামর্শদাতা ও শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সদস্য (১৯৮৩-৮৮) এবং চীনে লেখকদের ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতা ছিলেন (১৯৯৯) ।
পুরস্কারসমূহ
উড়িষ্যা সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার, ১৯৬৫ এবং ১৯৬৭
কেন্দ্র সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, ১৯৭২
সরলা পুরস্কার, ১৯৮১
বিশুবা পুরস্কার, ১৯৮৬
সাহিত্য ভারতী পুরস্কার, ১৯৯৫
সরস্বতী সম্মান, ২০০০
সেরা গল্প ২০০১ এর জন্য উড়িষ্যা রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার
পদ্মশ্রী, ২০০১
পদ্মভূষণ ২০২০
সাহিত্য আকাদেমি ফেলোশিপ, ২০০৬
অতিবাদী জগন্নাথ দাস পুরস্কার, ২০০৭
এনটিআর সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৩
অমৃতকীর্তি পুরস্কার, ২০১৩
বেদ ব্যাস সম্মান
মরমী কলিঙ্গ সাহিত্য পুরস্কার ২০২০
নির্বাচিত কর্ম
উপন্যাস সমূহ:-
- The Escapist, ২০০১
- তন্দ্রালোকের প্রহরী,২০০০
- Aakashra Isara, ১৯৯৭
- Amruta Phala, ১৯৯৬ (সরস্বতী সম্মান)
- A Tiger at Twilight, ১৯৯১
- Bulldozers and Fables and Fantasies for Adults, ১৯৯০
- Cyclones, ১৯৮৭
- প্রভঞ্জনা
- গোধূলির বাঘ
- কনক-উপত্যকার কাহানী
- Amruta phala
- Sesha tantrikara sandhanare
ছোটো গল্প সংকলন
- উপকথা শতক
- আবু পুরুষ
- শেষ বসন্তের চিঠি, ১৯৬৬
- মনোজ দাসঙ্ক কথা ও কাহিনী, ১৯৭১
- Dhumabha Diganta O Anyana Kahani, ১৯৭১
- The Crocodile's Lady: A Collection of Stories, ১৯৭৫
- মনোজ পঞ্চ-বিংশতী, ১৯৭৭
- The Submerged Valley and Other Stories, ১৯৮৬
- Farewell to a Ghost: Short Stories and a Novelette, ১৯৯৪
- Legend of the Golden Valley, ১৯৯৬
- সমুদ্র কূলের এক গ্রাম(বাল্য স্মৃতি), ১৯৯৬
- আরণ্যক (adapted to Aranyaka, ১৯৯৪)
- ভিন্ন মনীষা ও অন্যান্য কাহিনী
- আবুপুরুষ অন্যান্য কাহিনী
- লক্ষ্মীর অভিসার
- অবলাকার কাহিনী
- অরণ্য উল্লাস
- Selected Fiction,
- Chasing the Rainbow : growing up in an Indian village, ২০০৪
ভ্রমণকাহিনী
- Kete Diganta (Part I)
- Kete Diganta (Part -II)
- অন্তরঙ্গ ভারত(Part I) (My Little India)
- অন্তরঙ্গ ভারত (Part II)
- দূর-দূরন্তের
- অদূর বিদেশ ,২০০৪
কাব্য
- তুম গান ও অনন্যা কবিতা, ১৯৯২
- কবিতা উৎকল
ইতিহাস ও সংস্কৃতি
- ভারতের ঐতিহ্য: শতেক প্রশ্নের উত্তর,১৯৯৯
- মনোজ দাস পরিবেশিত উপকথা শতক
- দাস পরিবেশিত উপকথা শতক(Tales Told by Mystics), ২০০২
- মহাকালের প্রহেলিকা ও অন্যান্য জিজ্ঞাসা, ২০০৬
- জীবন জিজ্ঞাসা ও Smaraika স্তবক
- প্রজ্ঞা প্রদীপিকা
মন্তব্য
গ্রাহাম গ্রিন একবার বলেছিলেন, আমি মনোজ দাসের গল্পগুলি খুব আনন্দের সাথে পড়েছি। তিনি অবশ্যই আমার বইয়ের তাকে নারায়ণের গল্পগুলির পাশে স্থান নেবেন। আমি ধারণা করি ওড়িশা মালগুডি থেকে অনেক দূরে, তবে তাঁর গল্পগুলিতে সেই একই গুণ রয়েছে সম্ভবত একটি যুক্ত রহস্য নিয়ে।
পাদটীকা
তথ্যসূত্র
- Padma Shri Awards
- "Padma Awards List 2020" (পিডিএফ)। Govt. of India। ২২ মে ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০২০।
- "Akademi Awards"। Sahitya Akademi। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১২।
- Padhi, S.C. (২০০৭)। Historians and historiography: twentieth-century Orissa। Sundeep Prakashan। পৃষ্ঠা 10। আইএসবিএন 978-81-7574-177-5। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-০৯।
- Benson, E.; Conolly, L.W. (২০০৪)। Encyclopedia of Post-Colonial Literatures in English। Taylor & Francis। পৃষ্ঠা 338। আইএসবিএন 978-1-134-46848-5। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১০।
- Kumar, Ramendra (২০১২)। "Tete-A-Tete with A Wizard of the Words by Ramendra Kumar"। boloji.com। ১০ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১২।
Senapati, undoubtedly, was a consciously felt influence
- Raja, P. (১৯৯৩)। Many Worlds of Manoj Das। New world literature series। B.R. Publishing Corporation। পৃষ্ঠা 3। আইএসবিএন 978-81-7018-761-5। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১০।
- ""The Heritage Story""। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০২০।
- "Manoj Das"। batoi.com। ২০১২। ১৭ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১২।
He wrote columns in India's national dailies like The Times of India, The Hindustan Times, The Hindu and The Statesman.
- Mohapatra, Gargee (২০১০)। "Manoj Das is born for literature"। orissabarta.com। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১২।
- blends realism and fantasy in the most artistic way Mishra, Ganeswar "The Short Story" Government of Odisha website ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ মার্চ ২০০৭ তারিখে