মতিউর রহমান (বীর প্রতীক)

মো. মতিউর রহমান (জন্ম: অজানা, মৃত্যু: ১৯৯৪ ) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। [1]

মো. মতিউর রহমান
মৃত্যু১৯৯৪
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

মো. মতিউর রহমানের জন্ম নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম তোরাব আলী এবং মায়ের নাম আফিয়া খাতুন। তার স্ত্রীর নাম মিনা রহমান। তাদের চার মেয়ে, এক ছেলে।

কর্মজীবন

মো. মতিউর রহমান চাকরি করতেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২৫ বালুচ রেজিমেন্টে। এর অবস্থান ছিল যশোর সেনানিবাসে। ১৯৭১ সালের মার্চে ছুটিতে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ৩০ মার্চ ময়মনসিংহে সমবেত দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সঙ্গে যোগ দিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে ভারতে যান।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

কাঁচপুর সেতু পেরিয়ে বামে নরসিংদী গামী সড়ক যার মাঝামাঝি পাঁচদোনা। মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে পাঁচদোনায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বড় যুদ্ধ হয়। সে যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে নেতৃত্ব দেন মো. মতিউর রহমান। মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইপিআর বাহিনীর সদস্য। পাঁচদোনায় সড়কের দুই ধারে ছিল ঝোপঝাড় এবং এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধারা আত্মগোপন করেছিলেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় দুঃসাহসী কয়েকজন গ্রামবাসী। অন্যদের সঙ্গে মো. মতিউর রহমানও ঝোপঝাড়ের আড়াল থেকে সড়কে নজর রেখেছিলেন। একসময় তিনি দেখতে পান, সড়কে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সেনাবাহী লরি। পেছনে ছিলো আরও কয়েকটি সেনাবাহী গাড়ি। এর আগে গত কয়েক দিন পাকিস্তানি সেনারা ঢাকা ও আশপাশ এলাকায় তেমন কোনো প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়নি। তাই জনশূন্য পথে তারা বেশ নিশ্চিন্ত মনেই আসছিল। সামনের লরিগুলো অস্ত্রের আওতায় আসামাত্র মো. মতিউর রহমান সংকেত দেন অন্যদের। সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের মর্টার দলের ছোড়া তিনটি মর্টারের গোলার একটা গোলা পড়ে লরির ওপর। একই সময় গর্জে ওঠে অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে থাকা মেশিনগান ও অন্যান্য অস্ত্র। তখন পাকিস্তানি সেনাদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় এবং প্রথম ধাক্কাতেই হতাহত হয় বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা। কিছুক্ষণ পর পাল্টা আক্রমণ শুরু করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। মো. মতিউর রহমান সহযোদ্ধাদের নিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে শত্রু পাকিস্তানি সেনাদের ওপর আক্রমণ অব্যাহত রাখেন এবং সে সময়ে তার সাহসিকতা দেখে সহযোদ্ধারা আরও উজ্জীবিত হয়ে যুদ্ধ করেন। যুদ্ধ চলে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়। হতাহত হয় শতাধিক সেনা এবং তিনটি লরি অচল হয়ে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে হতাহত সেনাদের সচল লরি ও গাড়িতে নিয়ে তারা সন্ধ্যার আগেই পশ্চাদপসরণ চলে যায়। পরদিন সেখানে আবারও যুদ্ধ হয়। [2]

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ০৪-০৭-২০১২
  2. বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ (দলিলপত্র: নবম খন্ড)। তথ্য মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৯৮৪। পৃষ্ঠা ২৯১।

পাদটীকা

বহি:সংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.