ভ্রমণ
ভ্রমণ হচ্ছে লোকজনের তুলনামুলকভাবে দূরতম ভৌগোলিক স্থানের মধ্যে গতিবিধি বা চলন, এবং মানুষজন সাধারণত পায়ে হেঁটে, সাইকেলে, গাড়িতে, ট্রেনে, নৌকায় কিংবা প্লেনে ভ্রমণে যায়। ভ্রমণকালে সাথে ব্যাগ বা লাগেজ থাকতেও পারে বা নাও থাকতে পারে এবং ভ্রমণটা একমুখী কিংবা রাউন্ড ট্রীপও হতে পারে। ধারাবাহিক গতিবিধির মাঝে একটুখানি অবকাশ যাপনও ভ্রমণের অংশ হয়ে থাকে।ভ্রমণ ভৌগোলিক, ঐতিহাসিক, ধর্মিয় ইত্যাদি স্থানে হয়ে থাকে। ছাত্রছাত্রিদের জন্যে প্রথম দুটি লিখিত জায়গা উচ্চ শিক্ষায় নিশ্চটয় দরকার। মনের শান্তি, শুদ্ধতা, প্রেরণা প্রভৃতির জন্যে ধর্মিয় স্থান।এছাড়াও আমরা নানা ঐতিহাসিক জায়গায় ভ্রমণ করে জ্ঞানের পিপাসা মেটাতে পারি।এতে আমাদের অভিজ্ঞতা আরো বৃদ্ধি পায।প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের জন্য বন বা পাহাড়ি এলাকায় ঘুরতে যেতে পারি।
ব্যুতপত্তি/ব্যাকরণিক অর্থ
"ভ্রমণ" শব্দটার উৎস ইতিহাসের কালে প্রায় হারিয়েই গেছে। ভ্রমণ বা ট্রাভেল শব্দটার উৎপত্তি হয়েছে আদি ফরাসি শব্দ travail[1] থেকে। মেরিয়াম ওয়েবস্টার ডিকশনারি অনুসারে যতদূর জানা যায় ভ্রমণ শব্দটার ব্যবহার শুরু হয় চতুর্দশ শতাব্দীর দিকে। সেখানে এটাও বলা আছে যে ভ্রমণ শব্দটা প্রথমে আদি ফরাসি শব্দ travailler (যার মানে পরিশ্রমের সাথে কাজ করা) হয়ে পরবর্তীতে ইংরেজি শব্দ travailen, travelen (যার মানে যন্তণা, শ্রম, সংগ্রাম, ভ্রমণ) এর মধ্য দিয়ে উৎপত্তি লাভ করেছে। ইংরেজিতে এখনও মাঝেমাঝে travail এবং travails শব্দদুটো ব্যবহার করা হয়, যার মানে সংগ্রাম। Simon Winchester তার বই The Best Travelers' Tales (2004) এ উল্লেখ করেছেন, travail এবং travel দুটো শব্দই আমাদের সামনে আরও প্রাচীন একটা ব্যাপার তুলে ধরে যেটা হলো tripalium( ল্যটিন ভাষায় যার মানে "৩ টি পুরস্কার") নামক প্রাচীন রোমানদের ব্যবহৃত টর্চার করার যন্ত্র। এটাতে আসলে প্রতিফলিত হয় প্রাচীনকালে ভ্রমণে অনেক কষ্ট এবং প্রতিকূলতা ছিলো, সাথে travailler শব্দটার কষ্টকর জ্ঞাত্যার্থও প্রকাশ করে। বর্তমানকালে ভ্রমণ করাটা খুব সহজ হতে পারে আবার নাও হতে পারে, সেটা নির্ভর করতেছে তোমার গন্তব্যস্থলের উপর (যেমন, মাউণ্ট এভারেস্ট, আমাজন রেইনফরেস্ট) এবং কীভাবে তুমি পরিকল্পনা করছো সেখানে যাওয়ার (বাস,ট্রেন,জাহাজ ইত্যাদি) সেটার উপর। ভ্রমণলেখক Michael Kasum লিখেছেন, "স্বাভাবিক ট্যুরিস্ট বা ভ্রমণকারী আর সত্যিকারের পুরো পৃথিবী চষে বেড়ানো ট্রাভেলার বা ভ্রমণকারীর মধ্যে একটা বড়সড় পার্থক্য আছে।" তথাপি ভ্রমণের সামাজিক এবং সংস্কৃতিগত পার্থক্য এবং বৈশিষ্ট্য যুক্তিপূর্ণভাবে একাডেমিক কাজ হিসেবে নোট করা হলো।.[2]
অভিপ্রায় এবং প্রেরণা
ভ্রমণের বিভিন্ন কারণের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে চিত্তবিনোদন,[3] পর্যটন[3] এবং অবকাশ যাপন,[3] তথ্য জড়ো করার জন্য ভ্রমণ গবেষণা[3], ছুটি কাটানোর জন্য মানুষজনের ভ্রমণ, দাতব্যের জন্য স্বেচ্ছাসেবক ভ্রমণ, অভিবাসনের দ্বারা অন্য কোথাও বসবাস শুরু করা, ধর্মীয় তীর্থযাত্রা[3] and কোনো মিশনে যাত্রা, ব্যাবসায়িক ভ্রমণ,[3] বাণিজ্য,[3] বিনিময়, এবং অন্যান্য কারণে, যেমন চিকিৎসা[3] অথবা যুদ্ধগ্রস্থ জায়গা থেকে আভিবাসী হওয়া অথবা ভ্রমণ উপভোগ করার জন্যে। ভ্রমণ হতে পারে হাঁটা কিংবা সাইক্লিং এর মাধ্যমে, অথবা গাড়িতে, যেমন পাবলিক পরিবহন, প্রাইভেট গাড়ি, রেল এবং বিমান।
ভ্রমণের লক্ষের মধ্রযে আছে আনন্দ[4] চিত্তবিনোদন, উদ্ঘাটন এবং অনুসন্ধান[3] অন্য রীতিনীতি[3] সম্পর্কে জানা এবং কিছু সময় নিজের মতো ব্যয় করা আত্মিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য। ভ্রমণ হতে পারে স্থানীয়, প্রাদেশিক, স্বদেশের ভেতর অথবা আন্তর্জাতিক। কোনো কোনো দেশে এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় যাওয়ার জন্যও দরকার পরে একটা অভ্যন্তরীণ পাসপোর্ট, যেখানে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে সাধারণত পাসপোর্ট এবং ভিসা দরকার হয়। ভ্রমণ হতে পারে রাউন্ড ট্রীপের অংশ যেটা একটা বিশেষ ধরনের ভ্রমণ যেখানে একটা লোক এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যায় এবং ফিরে আসে।.[5]
ভ্রমণকালীন নিরাপত্তা
কর্তৃপক্ষ ভ্রমণকালীন নিরাপত্তার জন্য পূর্ব সতর্কতা নেওয়ার উপর জোর দেয়।[6] বিদেশে ভ্রমণকালীন সময়ে সকল প্রকার খারাপ দিক পরিহার এবং বাজে ঘটনাপূর্ণ ভ্রমণ পরিত্যাগের জন্যই নিরাপত্তার ব্যাপারটা আসে। তাছাড়া দেশের বাইরে ভ্রমণরত অবস্থায় বিভিন্ন ধরনের অসুবিধা, সহিংসতার শিকার হতে পারে।[7] নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মধ্যে আছে আশেপাশের অবস্থা বিবেচনা করা,[6] কোনো একটা ক্রাইম বা অপকর্মের টার্গেট থেকে কৌশলে বেরিয়ে পড়া,[6] বিশ্বস্ত কোনো মানুষের কাছে পাসপোর্ট এবং ভ্রমণপথ বা ভ্রমণবৃত্তান্তের একটা কপি রেখে যাওয়া,[6] যে দেশে ভ্রমণ করা হচ্ছে সে দেশে বৈধ এমন কোনো মেডিকেল ইন্স্যুরেন্স বা চিকিৎসা বীমা বহন করা[6] এবং যখন বাইরের দেশে ভ্রমণ করা হয় তখন সেখানে নিজদেশের দূতাবাসে নিজের নাম লিপিবদ্ধ করা।[6] অনেক দেশই অন্য দেশ কর্তৃক ইস্যুকৃত ড্রাইভিং লাইসেন্স গ্রহণ করে না; কিন্তু বেশিরভাগ দেশই আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিটস অনুমোদন করে থাকে।[8] কোনো দেশের ইস্যু করা গাড়িবীমা অন্যদেশে অবৈধ হয়ে যায়, বাট সেটা প্রায়ই দরকার হয় অস্থায়ী ভাবে সেদেশের ভেতরে বৈধ বীমা পেতে হলে।[8] অবশ্যই যে দেশ ভ্রমণ করা হবে সেদেশের ড্রাইভিং রুলস বা নিয়মগুলো ভালোভাবে জানা প্রয়োজন।[8] নিরাপত্তার জন্য সীটবেল্ট বাঁধাটা অবশ্যই দরকার; অনেক দেশেই সীটবেল্ট না বাঁধলে শাস্তি আর জরিমানার বিধান রয়েছে।[8]
এখানে বিভিন্ন ধরনের ভ্রমণের নিরাপত্তার ব্যাপারগুলো তুলনা করা যায় এরূপ প্রধান ৩ টি পরিসংখ্যান দেখানো হলো (DETR এর অক্টোবর ২০০০ সালের সার্ভের ভিত্তিতে):[9]
|
|
|
|
আরও দেখুন
- বিজ্ঞান ভ্রমণ
- বিমান চালনার উপর পরিবেশের প্রভাব (জলবায়ু পতিবর্তনের প্রভাব)
- ভ্রমণকারীদের তালিকা
- পরিবহনের ধরন
- বিনোদনমূলক ভ্রমণ
- পরিবহন
তথ্যসূত্র
"The World is a book, and those who do not travel read only a page."
Saint Augustine [10]
- Entymoligical dictionary (definition).
- Buzard, J. (1993) The Beaten Track.
- "The Road to Travel: Purpose of Travel."
- (1988).
- "Round-trip — Definition and More from the Free Merriam-Webster Dictionary".
- ""Tips for Traveling Abroad.""। ৭ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১৫।
- ""A Safe Trip Abroad.""। ৬ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১৫।
- ""Road Safety Overseas.""। ২০ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১৫।
- "The risks of travel"। ৭ সেপ্টেম্বর ২০০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১৫।
- Varozza, G. (২০১৫)। 501 Time-Saving Tips Every Woman Should Know। Harvest House Publishers। পৃষ্ঠা 214। আইএসবিএন 978-0-7369-5951-3।
বহিঃসংযোগ
- Wikivoyage – a travel wiki
- কার্লিতে Travel (ইংরেজি)