ভ্যালেন্স জাপ
ভ্যালেন্স উইলিয়াম ক্রিস্প জাপ (ইংরেজি: Vallance Jupp; জন্ম: ২৭ মার্চ, ১৮৯১ - মৃত্যু: ৯ জুলাই, ১৯৬০) সাসেক্সের বার্জেস হিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত শৌখিন ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন।[1] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন ও আট টেস্টে অংশ নিয়েছেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সাসেক্স ও নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে খেলতেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার ছিলেন। ডানহাতে অফ ব্রেক কিংবা মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ব্যাটিং করতেন ভ্যালেন্স জাপ। ১৯২৮ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটারের মর্যাদা লাভ করেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | ভ্যালেন্স উইলিয়াম ক্রিস্প জাপ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | বার্জেস হিল, সাসেক্স, ইংল্যান্ড | ২৭ মার্চ ১৮৯১|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ৯ জুলাই ১৯৬০ ৬৯) স্প্রাটন, নর্দাম্পটনশায়ার, ইংল্যান্ড | (বয়স|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফ ব্রেক ডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৯১) | ২৮ মে ১৯২১ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৪ জুলাই ১৯২৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯০৯–১৯২২ | সাসেক্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯২৩–১৯৩৮ | নর্দাম্পটনশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ক্রিকেটআর্কাইভ, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭ |
কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ
২৭ মার্চ, ১৮৯১ তারিখে সাসেক্সের বার্জেস হিল এলাকায় ভ্যালেন্স জাপের জন্ম। ১৯০৯ সালে সাসেক্সের পক্ষে খেলোয়াড়ী জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৯২১ সালে নর্দাম্পটনশায়ার ক্লাবের সাচিবিক দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে সাসেক্স ছেড়ে চলে যান। ফলশ্রুতিতে আর্থিক সুবিধা লাভ করেন ও ক্রিকেট খেলা থেকে অর্থ লাভ না করায় শৌখিন ক্রিকেটার হিসেবে মর্যাদা লাভ করেন। বসবাসের কারণে নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে খেলোর যোগ্যতা লাভ করেন ও কাউন্টি দলে খেলতে থাকেন। উইজডেনের মতে, ঐ সময়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সেরা শৌখিন অল-রাউন্ডার ছিলেন তিনি।
প্রথম বছর থেকেই সাসেক্সের পক্ষে নিয়মিতভাবে খেলতে থাকেন। সময়ের সাথে সাথে তার ক্রীড়াশৈলীর মানের উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাতে থাকে। ১৯১৪ সালে ওরচেস্টারে ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ অপরাজিত ২১৭ রানের ইনিংসের সন্ধান পান। ঐ মৌসুমে রান সংখ্যার দিক দিয়ে তৃতীয় স্থানে ছিলেন ও ৩৬-এর বেশি গড়ে রান পেয়েছিলেন। ঐ মৌসুমে তিনি দেড় সহস্রাধিক রানসহ একান্ন উইকেট সংগ্রহ করে বোলিংয়ের শীর্ষে আরোহণ করেন। ঐ সময়ে সাসেক্সের অন্যতম সেরা উদীয়মান অল-রাউন্ডার হিসেবে পেয়েছিল।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ডিসেম্বর, ১৯১৪ সালে রয়্যাল ইঞ্জিনিয়ার্সে যোগ দেন ও ফ্রান্স এবং সালোনিকায় কাজ করেন। ক্যাডেট হিসেবে রয়্যাল এয়ার ফোর্সে স্থানান্তরিত হলে ফিলিস্তিনে আসেন।
জুলাই, ১৯১৯ সালে প্রথম-শ্রেণীর খেলা শুরু হলে সাসেক্সের পক্ষে ঐ মৌসুমের বাদ-বাকী খেলায় শৌখিন খেলোয়াড় হিসেবে অংশ নেন। খুব দ্রুত নিজের দক্ষতা প্রদর্শন করে চার বছরেরও অধিক সময় ক্রিকেট থেকে দূরে থাকার অনুপস্থিতি ঘুঁচিয়ে দেন।
১৯২১ সালে প্রায় দুই হাজার রান তুলেন। ৪৭-এর অধিক গড়ে রান তুলে কাউন্টির ব্যাটিংয়ে শীর্ষে ছিলেন। এছাড়াও, ২৩-এর কম রান দিয়ে ৯৩ উইকেট লাভ করেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে এ কাউন্টির পক্ষে পাঁচবার সহস্রাধিক রান ও শতাধিক উইকেট লাভের ন্যায় ডাবল অর্জন করেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
১৯২০-এর গ্রীষ্মের শেষে অস্ট্রেলিয়া গমনের জন্য মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ লাভ করেন। তবে তিনি এ আমন্ত্রণ রক্ষা করতে পারেননি।
২৮ মে, ১৯২১ তারিখে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। ট্রেন্ট ব্রিজ ও হেডিংলি টেস্টে অংশ নেন তিনি। ১৯২২-২৩ মৌসুমে ফ্রাঙ্ক মানের অধিনায়কত্বে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান ও চার টেস্টে অংশ নেন। কিন্তু, ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রাপ্ত সফলতা এখানে পুণরাবৃত্তি ঘটাতে পারেননি। ১৯২৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আরও দুই টেস্ট খেলেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে মিডিয়াম পেস বোলিং করতেন। পরবর্তীতে স্বল্প দূরত্ব নিয়ে স্লো মিডিয়াম বোলাররূপে আবির্ভূত হন। পিচের পরিবর্তিত অবস্থা লক্ষ্য করে নিজেকে প্রস্তুত করে ধূর্ততার পরিচয় দিয়ে সফলতা লাভ করতেন। এছাড়াও, কভার পয়েন্ট অঞ্চলে দক্ষ ফিল্ডার হিসেবেও নিজেকে মেলে ধরতেন।
অর্জনসমূহ
১৯২৭ সালে নর্দাম্পটনশায়ারের অধিনায়ক মনোনীত হন ও ১৯৩১ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্বভার সফলতার সাথে পালন করেন। কাউন্টি দলটির পক্ষে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যান। দশ মৌসুমে সহস্রাধিক রান ও শতাধিক উইকেট লাভে সক্ষমতা দেখান। ফ্রেডি ব্রাউনের সাথে দুইজনের একজনরূপে দুইটি পৃথক দলের পক্ষে এ সাফল্য পান। তবে একবারই বোলার হিসেবে চমৎকার মৌসুম কাটান। ১৯২৮ সালে ২০.১৫ গড়ে ১৯২৮ রান তুলেন তিনি।
ব্যক্তিগত জীবন
১৯৩৮ সাল পর্যন্ত নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে খেলা চালিয়ে যান। তবে, ১৯৩৪ কিংবা ১৯৩৫ সালে খেলায় অংশ নিতে পারেননি। অনুপস্থিতির বিষয়ে উইজডেন মন্তব্য করে যে, তার গাড়ীর সাথে মোটর সাইকেলের সংঘর্ষে মোটর আরোহী নিহত হলে তিনি অভিযুক্ত হয়েছিলেন। এ কারণে তাকে নয় মাস কারাগারে অবস্থান করতে হয়েছিল। তবে, জুন, ১৯৩৫ সালে নির্ধারিত সময়ের অর্ধেক থাকতেই তাকে মুক্তি দেয়া হয়। পরের বছরে অবশ্য খেলার জগতে ফিরে আসেন ভ্যালেন্স জাপ।[2]
নিজ বাড়ীতে বাগান পরিচর্যাকালীন ভূপাতিত হন। এরপর ৯ জুলাই, ১৯৬০ তারিখে ৬৯ বছর বয়সে নর্দাম্পটনশায়ারের স্প্রাটন এলাকায় তার দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
- Vallance William Crisp Jupp; findagrave.com Retrieved November 2, 2017
- Miller, Andrew; Williamson, Martin (৯ নভেম্বর ২০০৬)। "I fought the law"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০০৬।
আরও দেখুন
বহিঃসংযোগ
- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে ভ্যালেন্স জাপ (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে ভ্যালেন্স জাপ (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- Wisden's citation of Jupp as a Cricketer of the Year in 1928, this text, being more than 70 years old is now out of copyright and much of this article has been based on it.