ভ্যাটিকান সিটির ভূগোল

ইতালির রোম দ্বারা চারদিকে আবদ্ধ ছিটমহল হিসাবে অবস্থানের কারণে ভ্যাটিকান সিটির ভূগোল অনন্য। এর আয়তন ৪৯ হেক্টর (১২১ একর বা ০.১৯ বর্গ মাইল)।[1][2] এটি বিশ্বের ক্ষুদ্রতম স্বাধীন রাষ্ট্র। মূল রাষ্ট্রের বাইরে রোম শহরের তেরটি ভবন এবং কাস্তেল গান্দোলফো (পোপের গ্রীষ্মকালীন আবাস) ভ্যাটিকান সিটির আওতাধীন। এর মধ্যে একটি ভবন (ষষ্ঠ পল মিলনায়তন) ভ্যাটিকান সিটির সীমান্তে অবস্থিত হলেও, ইতালির সীমানার অভ্যন্তরে পড়ে। ভ্যাটিকান সিটিতে কোন বিশেষ প্রাকৃতিক সম্পদ নেই এবং রোমকে প্রভাবিত করে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ (যেমন ভূমিকম্প) ছাড়া কোন দুর্যোগের প্রকোপ নেই।

ভ্যাটিকান সিটির মানচিত্র।

জলবায়ু

ভ্যাটিকান সিটিতে পুরোপুরি রোমের মতো একই ধরনের জলবায়ু বিদ্যমান: নাতিশীতোষ্ণ ও মৃদু। নগর রাষ্ট্রটির শীতকাল (সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য মে) আর্দ্র এবং গ্রীষ্মকাল (মে থেকে সেপ্টেম্বর) উষ্ণ ও শুষ্ক।

ভূখণ্ড

ভ্যাটিকান সিটির উদ্যানের চিত্র।

ভ্যাটিকান সিটি নীচু পাহাড়ের উপর অবস্থিত। খ্রিস্ট ধর্মের অস্তিত্বের অনেক আগে থেকেই এই পাহাড়টিকে ভ্যাটিকান হিল (লাতিন ভাষায়, মনস ভ্যাটিকানাস) বলা হতো। প্রাচীন রোমানদের দ্বারা সাধারণত "ভ্যাটিকান অঞ্চল" (ভ্যাটিকানস অ্যাগার) নামে পরিচিত অঞ্চলে একটি এট্রুস্কান বসতি সম্ভবত বিদ্যমান ছিল, যদিও এর কোনও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কার করা যায় নি।[3]

প্রান্তবিন্দু

ভ্যাটিকান সিটির প্রান্তবিন্দুগুলোর তালিকা এখানে দেওয়া হলো। প্রান্তবিন্দু (extreme points) হলো উচ্চতম ও নিম্নতম স্থানসহ এমন স্থানসমূহ যা অন্যান্য সব স্থান থেকে সবচেয়ে উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিমে অবস্থিত।

ভ্যাটিকান সিটির সর্বনিম্ন বিন্দু একটি নামহীন স্থান, যার উচ্চতা ১৯ মিটার (৩ ফুট)। সর্বোচ্চ বিন্দুটিও একটি নামহীন স্থান, যা ৭৬ মিটার (২৫০ ফুট)। ভ্যাটিকানের সবচেয়ে উঁচু ভবনটি হলো সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকা, যা ১৩৮ মিটার (৪৫২ ফুট) উঁচু।

ভূমিব্যবহার

ভ্যাটিকান সিটির ভূমিপ্রকৃতি মৌলিকভাবে শহুরে এবং ভূখণ্ডের কোন অংশই উল্লেখযোগ্যভাবে কৃষি বা প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের জন্য সংরক্ষিত নয়। নগর রাষ্ট্রটির সীমিত অঞ্চলের কারণে একটি ভালো ভূমি অর্থনীতি বিদ্যমান। এ কারণে নগর উন্নয়নে (যেমন ভবন নির্মাণ) মোট আয়তনের মাত্র অর্ধেক অংশ ব্যবহৃত হয় এবং অবশিষ্ট অংশ ভ্যাটিকান উদ্যান প্রভৃতি উন্মুক্ত স্থানের জন্য সংরক্ষিত। এই অঞ্চলটিতে বিভিন্ন কাঠামো রয়েছে যা সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বায়ত্তশাসনে সহায়তা করে, যেমন রেললাইন, রেলস্টেশন, হেলিপোর্ট, ডাকঘর, রেডিও স্টেশন (যার অ্যান্টেনা ইতালির অভ্যন্তরেও বিস্তৃত), সামরিক ঘাঁটি, সরকারি প্রাসাদ ও কার্যালয়, সীমানা চিহ্নিতকারী প্রাচীন প্রতিরক্ষা প্রাচীর, উচ্চতর শিক্ষার প্রতিষ্ঠান এবং সাংস্কৃতিক / শিল্প কেন্দ্র।

পরিবেশ

২০০৭ সালের জুলাই মাসে ভ্যাটিকান সিটি হাঙ্গেরিতে ভ্যাটিকান জলবায়ু বন অনুদানের একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে, যার ফলে সেই বছর ভ্যাটিকান পৃথিবীর একমাত্র কার্বন নিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত হয়। বনাঞ্চলটির আকার এমন ছিল, যা ভ্যাটিকান সিটির বার্ষিক নির্গমনের সমপরিমাণ কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সক্ষম।[4]

আন্তর্জাতিক চুক্তি

  • অনুমোদিত: ওজোন স্তর সুরক্ষা
  • স্বাক্ষরিত, তবে অনুমোদিত নয়: বায়ু দূষণ, পরিবেশগত উন্নয়ন

আরো দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. De Agostini Atlas Calendar, 1930, p. 99. (ইতালীয় ভাষায়)
  2. De Agostini Atlas Calendar, 1945–46, p. 128. (ইতালীয় ভাষায়)
  3. Lawrence Richardson, A New Topographical Dictionary of Ancient Rome (Johns Hopkins University Press, 1992), p. 405.
  4. "The Vatican to go carbon neutral"। United Press International। জুলাই ১৩, ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ১২, ২০০৯

বহিঃসংযোগ

ভ্যাটিকান সিটি মানচিত্র

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.