ভোলা ময়রা
ভোলা ময়রা বাংলার খ্যাতনামা রসিক কবিয়াল। তিনি কবিগানের জগতে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছিলেন।
প্রারম্ভিক জীবন
ভোলা ময়রার আসল নাম ভোলানাথ মোদক। তার জন্মসাল উদ্ধার করা যায় নি। তিনি হুগলী জেলার গুপ্তিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলে প্রচলিত আছে। পিতার নাম কৃপানাথ। কলকাতার বাগবাজার অঞ্চলে তার মিষ্টির দোকান ছিল। বাল্যকালে পাঠশালায় সামান্য লেখাপড়া করলেও সংস্কৃত, ফারসী ও হিন্দিতে জ্ঞান ছিল। পুরাণ ও ধর্মশাস্ত্র সামান্য পড়েছিলেন। কবির দল তৈরীর আগেও তিনি বহু কবিতা রচনা করেছিলেন।[1]
কবিখ্যাতি
ভোলা ময়রা মুখে মুখে দ্রুত কবিতা বানাতে পারতেন। সমাজের ত্রুটির কথা নির্দেশ করে তার কবিতাগুলি ছিল শ্লেষপূর্ণ। উপস্থিতবুদ্ধি, চটুল ও আক্রমণাত্মক বাগ্ভঙ্গি, লঘু-গুরু বিষয়বস্ত্ত এবং সস্তা রস-রুচি দ্বারা তিনি শ্রোতাকে মন্ত্রমুগ্ধ করতে পারার ক্ষমতা ছিল তার। স্বয়ং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বলেছেন "বাংলাদেশের সমাজকে সজীব রাখিবার জন্য মধ্যে মধ্যে রামগোপাল ঘোষের ন্যায় বক্তা, হুতুম প্যাঁচার ন্যায় লেখক ও ভোলা ময়রার ন্যায় কবিওয়ালার প্রাদুর্ভাব বড়ই আবশ্যক"। ভোলা ময়রা নিজেকে বিখ্যাত কবিয়াল হরু ঠাকুরের শিষ্য বলতেন। হরু ঠাকুর নিজেও ভোলা ময়রার গান বেঁধে দিতেন। তার প্রতিপক্ষ ছিলেন অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি, রাম বসু (কবিয়াল), যজ্ঞেশ্বরী দাসী প্রমুখ কবিয়ালগন। রসগোল্লার উদ্ভাবক নবীনচন্দ্র দাস তার জামাতা।[1][2]
চলচ্চিত্র
ভোলা ময়রার জীবন অবলম্বনে পীযুষ গাঙ্গুলির পরিচালনায় ভোলা ময়রা নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয় ১৯৭৭ সালে। এই ছবিটিতে অভিনয় করেন উত্তম কুমার, সুপ্রিয়া দেবী, বিকাশ রায় প্রমুখ।[3] এছাড়াও অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি সিনেমায় অভিনেতা অসিতবরণ এবং জাতিস্মর সিনেমায় খরাজ মুখোপাধ্যায় ভোলা ময়রার চরিত্রে অভিনয় করেছেন।[4]
তথ্যসূত্র
- প্রথম খন্ড, সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু (২০০২)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ৩৮৫–৩৮৬।
- "ভোলা ময়রা"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৭।
- "BHOLA MOIRA (1977)"। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৭।
- "Jaatishwar Movie Review"। timesofindia.com। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৭।