ভিক্তোরিয়া, সেশেলস

১৭৫৬ সালে ফ্রেঞ্চরা সেশেল দ্বীপের দখল নেওয়ার পর ১৭৭৮ সালে ভিক্তোরিয়ায় বসতি স্থাপন করে। ১৮৪১ সাল পর্যন্ত শহরটি লা এস্তাবলিশমেঁত নামে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে ব্রিটিশরা রানি ভিক্টোরিয়ার নামানুসারে শহরটির নাম দেয় "ভিক্টোরিয়া" (ফ্রেঞ্চ উচ্চারণ : ভিক্তোরিয়া) [4]

পর্যটন ভিক্তোরিয়ার আয়ের মূল উৎস। এছাড়াও এটি ভ্যানিলা, নারকেল, নারিকেল তেল, মাছ ও গুয়ানো রপ্তানি করে থাকে। [5]

ভিক্তোরিয়ায় সেশেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস অবস্থিত। [6] এছাড়াও শহরটিতে একটি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ অবস্থিত। [3]

লন্ডনের লিটল বেনের আদলে ভিক্তোরিয়ায় একটি ঘড়িস্তম্ভ (ক্লক টাওয়ার) নির্মাণ করা হয়েছে। [7] আদালতভবন, বোটানিক্যাল গার্ডেন বা বনজ উদ্যান, জাতীয় ইতিহাস জাদুঘর, প্রাকৃতিক ইতিহাস জাদুঘর ও স্যার সেলউইন সেলউইন ক্লার্ক মার্কেট ভিক্তোরিয়ার অন্যতম দর্শনীয় স্থান। ভিক্তোরিয়ার বাজার ও এর মাছ ও ফল বিক্রির দোকানে প্রতিদিন প্রচুর জনসমাগম হয়। ১৯৮৫ সাল থেকে ভিক্তোরিয়ায় ক্রিয়ল উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে, যা ২০১১ সালে এটি একটি কার্নিভাল উৎসবে পরিণত হয়। ঐ উৎসবে নৃত্যগীতি ও কুচকাওয়াজের মাধ্যমে সমগ্র সেশেলীয় সমাজ একাত্ম হয়ে ওঠে। [8]

ভিক্টোরিয়া শহরে দুইটি ক্যাথেড্রাল অবস্থিত। এগুলো হলো - ইমাকুলেট কনসেপশন ক্যাথেড্রাল (রোমান ক্যাথলিক) ও সেন্ট পলস ক্যাথেড্রাল (অ্যাংলিকান)।[9] এছাড়াও ভিক্তোরিয়া শহরে ব্যাপটিস্ট ও পেন্টেকোস্টাল চার্চ, মসজিদ ও মন্দির অবস্থিত।

ভিক্তোরিয়ার জাতীয় ক্রীড়াক্ষেত্র স্টাডে লিনিতে স্টেডিয়াম এখানেই অবস্থিত।এখানে সাধারণত ফুটবল খেলা হয়।

১৯৭১ সালে ভিক্টোরিয়ায় সেশেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মিত হয়। ১৯৮১ সালে সদ্য ক্ষমতায় আসা বামপন্থী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার উদ্দেশ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা হতে আগত ৪৫ জন ভাড়াটে সৈন্য বিমানবন্দরটিককে আক্রমণ করে।[8] শহরের পূর্বেই রয়েছে বন্দর এলাকা- টুনা উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ যার বাসিন্দাদের আয়ের প্রধান উৎস। ২০০৪ সালের ভারতীয় মহাসাগরীয় ভূমিকম্পের ফলে শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু ধ্বংস হয়।

সেশেলের ৮টি জেলা ভিক্তোরিয়ার মধ্যে পড়েছে। এগুলো হলো-

ভিক্তোরিয়া প্রপার:

১.ইংলিশ রিভার

২.সেন্ট লুইস

৩. মোঁতে ফ্লুরি

গ্রেটার ভিক্তোরিয়া-

১. মোঁতে ব্যুটন

২. বেল এয়ার

৩.রোশে কাইমান

৪. লে মামেল

৫.প্লাঁসাঁ

ভিক্তোরিয়ার তিনটি ভ্রাতৃশহর রয়েছে। এগুলো হলো-

১.জিবুতি(জিবুতি)

২.দালিয়াত আল কারমেল (ফিলিস্তিন)

৩.হাইকু (চীন)

ভিক্তোরিয়ার জলবায়ু ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্য জলবায়ু ধরনের। সারা বছরই ভিক্তোরিয়ার আবহাওয়া অত্যন্ত উষ্ণ থাকে। শহরে অনেক সময় লক্ষণীয় মাত্রায় আর্দ্র কিংবা শুষ্ক জলবায়ু বিদ্যমান। জুন ও জুলাই এর সবচেয়ে শুষ্ক মাস, যেখানে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এর সবচেয়ে আর্দ্র মাস। ভিক্তোরিয়ার বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ৬০ মিলিমিটার। যেহেতু কোনো মাসেই বৃষ্টিপাত ৬০ মিলিমিটারের নিচে নামে না, তাই বলা যায়- প্রকৃত অর্থে ভিক্তোরিয়ায় কোনো শুষ্ক মৌসুম নেই। কোনো প্রকৃত শুষ্ক মৌসুম না থাকার কারণেই একে ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি জলবায়ুর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রাজধানীতে প্রতি বছর গড়ে ২০০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এত বৃষ্টিপাতের পরও আকাশ আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার থাকে। বৃষ্টিস্নাত মাসগুলোতেও সম্পূর্ণ মেঘাচ্ছন্ন আকাশের দেখা পাওয়া বিরল।