ভার্সাই চুক্তি

ভার্সাই চুক্তি একটি শান্তিচুক্তি যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরপর যুদ্ধের মিত্রশক্তি ও তৎসংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহ এবং জার্মানির মধ্যে সম্পাদিত হয়।

ভার্সাই চুক্তি
Treaty of Peace between the Allied and Associated Powers and Germany[n. 1]
{{{image_alt}}}
ইংরেজি সংস্করণের প্রথম পাতা
স্বাক্ষর২৮ জুন, ১৯১৯[1]
স্থানভার্সাই, ফ্রান্স
কার্যকর১০ জানুয়ারি, ১৯২০
শর্তRatification by Germany and three Principal Allied Powers.
স্বাক্ষরকারীজার্মানি ভাইমার প্রজাতন্ত্র

যুক্তরাজ্য ব্রিটিশ সাম্রাজ্য
ফ্রান্স ফ্রান্স
ইতালি ইতালি
জাপান জাপান
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমেরিকা

আমানতকারীফরাসি সরকার
ভাষাসমূহফরাসি, ইংরেজি
উইকিসংকলনে Treaty of Versailles

ইতিহাস

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড লয়েড জর্জ, ইতালির ভিট্টোরিও অরল্যান্ডো, ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জর্জেস ক্ল্যামেনকু এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসন

জার্মান সরকার যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসনকে ১৯১৮ সালের অক্টোবরের মাসে একটি সাধারণ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায়। এর প্রেক্ষাপটে উড্রো উইলসন তার বিখ্যাত চৌদ্দ দফা পেশ করেন যাকে সঠিক শান্তির একমাত্র উপায় হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দফা ছিল জার্মানির কাছে যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত সকল মিত্রপক্ষের ক্ষতিপূরণ দাবী। এর মধ্যে নয়টি দফা ছিল নতুন রাষ্ট্রীয় প্রেষিতক বিষয়ে। বেশ কয়েকটি গোপন চুক্তির কারণে এই দফাগুলোর ধারণা জটিল আকার ধারণ করেছিল। এর মধ্যে আছে যুদ্ধের শেষ বছরগুলোতে গ্রিস এবং রুমানিয়ার সাথে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স এবং ইতালির সম্পাদিত চুক্তিসমূহ।

১৯১৯ সালের বসন্তে প্যারিসে অনুষ্ঠিত প্যারিস শান্তি সম্মেলনে চুক্তির খসড়া করা হয়। খসড়ার মূল নকশা করেন চারজন নেতা যারা ইতিহাসে বিগ ফোর হিসেবে খ্যাত। এরা হলেন বৃটেনের ডেভিড লয়েড জর্জ, ফ্রান্সের জর্জেস ক্ল্যামেনকু (Georges Clamenceau), যুক্তরাষ্ট্রের উড্রো উইলসন এবং ইতালির ভিটোরিও অরল্যান্ডো। মূলত প্রথম তিনজনই নকশা তৈরি করেন। কোন পরাজিত জাতি চুক্তির খসড়া তৈরিতে কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি, এমনকি মিত্রশক্তির সহযোগী জাতিসমূহেরও তেমন উল্লেখযোগ্য কোন ভূমিকা ছিলনা। ২৮ জুন তারিখেই এই চুক্তি অনুমোদিত হয়। কিন্তু এতে উপস্থিত জার্মান প্রতিনিধিদল অসন্তোষ প্রকাশ করে, কারণ তাদের মতে এতে সম্মেলন চলাকালে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের ব্যত্যয় হয়েছে এবং মূল সমস্যা ছিল এই যে এই চুক্তিতে জার্মানিকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

প্রধান দিকসমূহ

  • এই চুক্তির মাধ্যমে জার্মানির রাষ্ট্রীয় সীমা এবং জনসংখ্যা শতকরা দশভাগ কমিয়ে আনা হয়।
    • পশ্চিম দিকে অবস্থিত অ্যালসেইসলোরেইন পুনরায় ফ্রান্সকে দেয়া হয় এবং সারল্যান্ড অঞ্চলটি ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত জাতিপুঞ্জের অধীনে বিবেচনাধীন রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
    • পূর্বে অবস্থিত জার্মানির অংশের নাম ছিল পশ্চিম প্রুশিয়া যার নির্দিষ্ট অংশ পোল্যান্ডকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। এর মধ্যে আছে পোসেন, বাল্টিক সাগরের একটি করিডোর এবং আপার সাইলেশিয়ার একটি অংশ (গণভোটের মাধ্যমে)।
    • উত্তরের তিনটি ছোট ছোট এলাকা বেলজিয়ামের সীমানায় অন্তর্ভুক্ত হয়, কিন্তু স্ক্লেসভিগে (Schleswig) একটি গণভোটের ফলাফলের সাপেক্ষে এই অঞ্চলের উত্তরাংশটিকে ডেনমার্কের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
    • ড্যানজিগকে একটি মুক্ত শহর ঘোষণা করা হয়। চীন, প্রশান্ত মহাসাগর এবং আফ্রিকায় অবস্থিত সকল জার্মান কলোনিসমূহ বৃটেন, ফ্রান্স, জাপান এবং অন্যান্য মিত্রশক্তির কুক্ষিগত হয়।
  • জার্মানিকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় এবং মিত্রশক্তির অন্তর্ভুক্ত দেশসমূহে সংঘটিত জীবন, অর্থ ও অবকাঠামোগত সকল ক্ষয়ক্ষতির জন্য জার্মানিকে দায়ী করা হয়।

তথ্যসূত্র

  1. Slavicek 2010, পৃ. 114।
  1. Preamble
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.