ভারতের প্রাণী

ভারত বিশ্বের সর্বাধিক জৈববৈচিত্র্যসম্পন্ন অঞ্চলগুলির অন্যতম। দেশের রাজনৈতিক সীমানার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পরিবেশক্ষেত্র দৃষ্ট হয়: মরুভূমি, উচ্চ পার্বত্য অঞ্চল, উচ্চভূমি, ক্রান্তীয় ও নাতিশীতোষ্ণ বনাঞ্চল, জলাভূমি, সমভূমি, তৃণভূমি, নদী অববাহিকা ও দ্বীপপুঞ্জ। ভারতে তিনটি বায়োডাইভার্সিটি হটস্পট দেখা যায়: পশ্চিমঘাট পর্বতমালা, পূর্ব হিমালয় ও ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত বরাবর প্রসারিত পার্বত্য অঞ্চল। এই হটস্পটগুলিতে অসংখ্য এনডেমিক প্রজাতি দেখা যায়।[1]

৩,১৬৬,৪১৪ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত ভারতের পরিবেশক্ষেত্রগুলিতে বৃষ্টিপাত, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা, টোপোগ্রাফি ও অক্ষাংশের কারণে বিশেষ প্রকারের বৈচিত্র্য লক্ষিত হয়। ভারতের উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ। ভারত ইন্দোমালয় জৈবভৌগোলিক ক্ষেত্রের একটি বৃহত্তর অংশ দখল করে আছে। তাই ভারতের বহু উদ্ভিদ ও প্রাণী সঙ্গে মালয়দেশীয় উদ্ভিদ ও প্রাণীর একরূপতা লক্ষিত হয়; কেবলমাত্র অল্প কয়েকটি টাক্সাকেই ভারতের স্বতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বলা চলে। স্বতন্ত্র্য প্রজাতিগুলির মধ্যে রয়েছে ইউরোপেল্টিডি নামে এক সর্পপ্রজাতি যা কেবল পশ্চিমঘাট ও শ্রীলঙ্কায় পাওয়া যায়। ক্রেটাসিয়াস ফসিল টাক্সা থেকে সেসেলিস ও মাদাগাস্কার দ্বীপপুঞ্জের সঙ্গে ভারতের সংযোগের বিষয়টি অনুমান করা হয়।[2]

ভারতের আয়তনের মাত্র ৫% সংরক্ষিত অঞ্চলের আওতাভুক্ত।

ভারতে বিভিন্ন ধরনের বৃহদাকার স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখা যায়। যেমন, এশীয় হাতি, বেঙ্গল টাইগার, এশীয় সিংহ, চিতাবাঘভারতীয় গণ্ডার। এগুলি কোনো কোনোটি সাংস্কৃতিক প্রতীক; আবার দেবদেবীর বাহন রূপেও কল্পিত। এই সব বৃহদাকার স্তন্যপায়ীরা ভারতের বন পর্যটনের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এইকারণে দেশে বহু জাতীয় উদ্যান ও বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য গড়ে উঠেছে। এই সব সুন্দর প্রাণীদের সংরক্ষণের ধারণাটিও দেশে গভীরভাবে বলবৎ। জাতীয় পশু বাংলা বাঘ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭২ সালে দেশে বাঘ ও বাঘের বাসস্থান সংরক্ষণের লক্ষ্যে ব্যাঘ্র প্রকল্প চালু হয়।[3] হাতি সংরক্ষণের অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত হস্তী প্রকল্প চালু হয় ১৯৯২ সালে।[4] ভারতের অধিকাংশ গণ্ডারই আজ বাস করে কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানে। অপরাপর বৃহদাকার ভারতীয় স্তন্যপায়ীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য জলহস্তী, নীলগাই, গৌর ও বিভিন্ন ধরনের হরিণ। সারমেয় পরিবারের বিভিন্ন ভারতীয় সদস্যরা হল ভারতীয় নেকড়ে, বাংলা শিয়াল, সোনালি খ্যাঁকশিয়াল, ও বুনো কুকুর। এছাড়া চিতল হায়নাও পাওয়া যায়। ছোটো প্রাণীদের মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির বাঁদর দেখা যায়।

তথ্যসূত্র

  1. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৯ নভেম্বর ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০০৯
  2. Jean-Claude Rage (2003) Relationships of the Malagasy fauna during the Late Cretaceous: Northern or Southern routes? Acta Paleontologica Polonica 48(4):661-662 PDF ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ ডিসেম্বর ২০০৪ তারিখে
  3. Project Tiger ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে Accessed Feb, 2007
  4. Project Elephant ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ জানুয়ারি ২০০৭ তারিখে Accessed Feb, 2007

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.