ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী)
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) বা সিপিআইএমএল ১৯৬৯ সালে কলকাতায় কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের সর্বভারতীয় সমন্বয় কমিটি AICCCR -র একটি কংগ্রেসের মাধ্যমে গঠিত হয়। ২৩ এপ্রিল কলকাতা শহরে একটি গণসমাবেশে সাক্ষেত্রে কানু সান্যাল পার্টি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। সিপিআইএমএল পার্টি প্রকৃতপক্ষে বিপ্লবী অংশ যা নকশালবাড়ি কৃষক আন্দোলনের পরবর্তীতে সিপিআইএম থেকে বিভক্তীকরণের মাধ্যমে গঠিত হয়।
সিপিআইএমএল | |
---|---|
প্রতিষ্ঠাতা | চারু মজুমদার, কানু সান্যাল |
প্রতিষ্ঠা | ২২ এপ্রিল ১৯৬৯ |
ভাঙ্গন | ৩১ জুলাই ১৯৭২ |
বিভক্তি | সিপিআইএম |
পরবর্তী | সিপিআইএমএল লিবারেশন |
মতাদর্শ | মার্কসবাদ-লেনিনবাদ |
আনুষ্ঠানিক রঙ | Red |
ভারতের রাজনীতি রাজনৈতিক দল |
ভারতে সাম্যবাদ |
---|
সিরিজের অংশ |
|
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)
|
CPI (Marxist-Leninist) Liberation |
|
|
|
|
|
সাম্যবাদ প্রবেশদ্বার |
নকশালবাড়ি বিদ্রোহ
দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়িতে নকশালবাড়ি বিদ্রোহ চারু মজুমদার এবং আরো কয়েকজন কমিউনিস্ট নেতার নেতৃত্বে গঠিত হয়, যারা পরে সিপিআই (এমএল) অংশে পরিণত হন।[1] ১৯৬৮-তে কানু সান্যাল, জঙ্গল সাঁওতাল, সুশীতল রায়চৌধুরী প্রমুখের সহযোগিতায় চারু মজুমদার কমিউনিস্ট কনসোলিডেশন গঠন করেন।১৯৬৯-এর ১ মে কলকাতা ময়দানে এক জনসভায় কানু সান্যাল কর্তৃক সিপিআই (এমএল) গঠনের কথা ঘোষণা করা হয়। চারু মজুমদার এদলের সভাপতি নির্বাচিত হন।[2]
শ্রীকাকুলাম কৃষক বিদ্রোহ
অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার মধ্যে, কমিউনিস্ট নেতারা তৎকালীন এআইসিসিসিআর- এর সাথে একত্রিত হন এবং শ্রীকাকুলামে কৃষক বিদ্রোহ প্রবর্তন করেন, যা ১৯৬০-এর দশকের শেষের দিকে এবং ১৯৭০-এর দশকের প্রথম দিকে অব্যাহত ছিল।[1]
১৯৭০ পরবর্তী
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী)-'র প্রথম দলীয় কংগ্রেস ১৯৭০ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয়।[1] উক্ত কংগ্রেসে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়। যাদেরকে নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়েছিল তারা হচ্ছেনঃ
- চারু মজুমদার
- কানু সান্যাল
- সুশীতল রায়চৌধুরী
- সরোজ দত্ত
- সৌরেন বসু
- সুনীতি কুমার ঘোষ
- অসীম চট্টোপাধ্যায়
- সত্যনারায়ণ সিংহ
- গুরুবক্স সিংহ
- রাজকিশোর সিংহ
- শিব কুমার মিশ্র
- মাহিন্দর সিংহ
- ডঃ নাগভূষণ পটনায়েক
- ম আপ্পালাসুরী
- ভেমাপাটাপু সত্য নারায়ণ
- আদিবাঠাল কৈলাসম
- আপ্পু
- কোডাসুদায়ানাম
- জম্মু ও কাশ্মীর:
- আর পি সরফ
- কেরালা:
- ওম্বাড্ডি
সিপিআই (এম-এল)-এ বিভক্তি
ভারত সরকার কর্তৃক সিপিআইএমএল -এর কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কঠোর দমননীতি প্রয়োগ করা হয়। ১৯৭০-এর মাঝামাঝি সময়ে সিপিআই (এমএল) এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল সৃষ্টি হয়। চারু মজুমদারের নেতৃত্বকে অস্বীকার করে অসীম চট্টোপাধ্যায় ও সন্তোষ রাণার দলত্যাগ করে।[3]
১৯৭০ সালে সন্তোষ রানা সিপিআইএমএল থেকে দলত্যাগ করে পিসিসি-সিপিআইএমএল গঠন করেন। পিসিসি-সিপিআইএমএল চারু মজুমদারের অতি-বিপ্লবী লাইনকে অস্বীকার করে নির্বাচনিক রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করে।
চারু মজুমদারের মৃত্যুর পরবর্তিতে সিপিআইএমএল পার্টি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। লিন বায়ো সমর্থিত গ্ৰুপ মহাদেব মুখার্জি নেতৃত্বাধীন সিপিআইএমএল হিসেবে পরিচিত হয় এবং লিন বায়োর রাজনৈতিক মতাদর্শকে অস্বীকার করা রাজনৈতিক দল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) লিবারেশন নামে পরিচিত হয়। পরবর্তীতে মহাদেব মুখার্জি নেতৃত্বাধীন সিপিআইএমএল পার্টি বহু নতুন পার্টিতে বিভক্ত হয়ে যায়। সিপিআইএমএল রেড স্টার, সিপিআইএমএল নিউ ডেমোক্রেসি, সিপিআইএমএল পিপলস ওয়ার অন্যতম। পরবর্তীতে ২০০২ সালে এমসিসি এবং সিপিআইএমএল পিপলস ওয়ার গ্ৰুপ একত্রিত হয়ে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী) গঠত হয় যা আজও ভারত সরকার দ্বারা নিষিদ্ধ একটি রাজনৈতিক দল।
তথ্যসূত্র
- ""The Hindustan Times""। History of Naxalism। ২২ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- বসু, অঞ্জলি (নভেম্বর ২০১৩)। বসু, অঞ্জলি; সেনগুপ্ত, সুবোধচন্দ্র, সম্পাদকগণ। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। ১ (পঞ্চম সংস্করণ, দ্বিতীয় মুদ্রণ সংস্করণ)। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা -২২০-২২১। আইএসবিএন 978-8179551356।
- সেলিনা হোসেন ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত, বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান; বাংলা একাডেমী, ঢাকা, এপ্রিল, ২০০৩; পৃষ্ঠা-১৫৮-৫৯।
বহিঃসংযোগ
- Banned Thought - India documents and statements of CPI (ML)