ভাইস (২০১৮-এর চলচ্চিত্র)
ভাইস ২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি মার্কিন জীবনীধর্মী হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র। উক্ত চলচ্চিত্রে ক্রিশ্চিয়ান বেল যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক উপরাষ্ট্রপতি ডিক চেনির চরিত্রে অভিনয় করেন। [4] অ্যামি অ্যাডামস, স্টিভ ক্যারেল, স্যাম রকওয়েল, জাস্টিন কার্ক, টাইলার পেরি,অ্যালিসন পিল, লিলি র্যাবে ও জেসি প্লেমনস ছবিটির সহযোগী চরিত্রে অভিনয় করেছেন। চেনি কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ক্ষমতাবান উপরাষ্ট্রপতি বা ভাইস প্রেসিডেন্টে পরিণত হন, সেটিই এ ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে।[5][6] এটি জর্জ ডব্লিউ বুশের রাষ্ট্রপতিত্বকে কেন্দ্র করে নির্মিত দ্বিতীয় ছবি। প্রথমটি হলো অলিভার স্টোন পরিচালিত ডব্লিউ (২০০৮)।
ভাইস | |
---|---|
পরিচালক | অ্যাডাম ম্যাকে |
প্রযোজক |
|
রচয়িতা | অ্যাডাম ম্যাকে |
শ্রেষ্ঠাংশে |
|
সুরকার | নিকোলাস ব্রিটেল |
চিত্রগ্রাহক | গ্রেইগ ফ্রেসার |
সম্পাদক | হ্যাঙ্ক করউইন |
প্রযোজনা কোম্পানি |
|
পরিবেশক |
|
মুক্তি |
|
দৈর্ঘ্য | ১৩২ মিনিট |
দেশ | যুক্তরাষ্ট্র |
ভাষা | ইংরেজি |
নির্মাণব্যয় | $৬০ মিলিয়ন[1][2] |
আয় | $৭৬.১ মিলিয়ন[3] |
২০১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর অন্নপূর্ণা পিকচারস ছবিটি মুক্তি দেয়। বিশ্বজুড়ে এটি ৭৬ মিলিয়ন ডলার আয় করে। অভিনয়শিল্পীদের অনবদ্য অভিনয় (বিশেষত বেল, অ্যাডামস,পেরি,ক্যারেল এবং রকওয়েলের চরিত্রায়ণ) এবং ইতিবাচক পর্যালোচনা সত্ত্বেও সমালোচকদের ছবিটি দ্বিধাবিভক্ত করে ফেলে। কোনো কোনো সমালোচক বলেন, এটি বছরের শ্রেষ্ঠ ছবি। আবার কেউ কেউ বলেন, এটি বছরের অন্যতম নিকৃষ্ট ছবি। ম্যাকের চিত্রনাট্য ও পরিচালনা প্রশংসা এবং ভর্ৎসনা- দুইটিই লাভ করে।[7][8]
ছবিটি অনেকগুলো পুরস্কার ও মনোনয়ন লাভ করে। ৯১তম একাডেমি পুরস্কার অনুষ্ঠানে সেরা চলচ্চিত্রসহ ৮টি বিভাগে এটি মনোনয়ন লাভ করে এবং সেরা রূপসজ্জা ও কেশবিন্যাস বিভাগে অস্কার লাভ করে। ৭৬তম গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার অনুষ্ঠানে এটি ছয়টি মনোনয়ন। ৭২তম ব্রিটিশ একাডেমি ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানেও ভাইস ছয়টি মনোনয়ন লাভ করে। বেল,অ্যাডামস ও রকওয়েল তিনটিতেই মনোনয়ন পান। হাস্যরসাত্মক বা সাংগীতিক ছবিতে সেরা অভিনেতা ক্যাটাগরিতে বেল গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার লাভ করেন।
কাহিনী
আফগানিস্তান যুদ্ধ ও ইরাক যুদ্ধের সৈনিক কার্টের জবানিতে ভাইস চলচ্চিত্রের কাহিনী বিবৃত হয়েছে।
মদ্যপানে আসক্ত ডিক চেনি ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পাট চুকিয়ে উওমিং অঙ্গরাজ্যে লাইনম্যান হিসেবে চাকরি শুরু করেন। মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর সময় এক পুলিশ অফিসার তাকে থামিয়ে দেয়। এসময় তার স্ত্রী লিন চেনি তাকে বলেন, জীবনকে সঠিক রাস্তায় ফিরিয়ে আনতে -নাহলে তিনি তাকে ছেড়ে চলে যাবেন।
১৯৬৯ সালে নিক্সন প্রশাসনের অধীনে ইন্টার্ন হিসেবে হোয়াইট হাউসে চেনি কাজ করা শুরু করেন। নিক্সনের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ডোনাল্ড রামসফেল্ডের অধীনে কাজ করতে করতে চেনি সুদক্ষ রাজনৈতিক কৌশলবিদ হয়ে ওঠেন। স্ত্রী লিন এবং কন্যা লিজ ও মেরি চেনিকেও ডিক সময় দিতে পারেন না। চেনি হেনরি কিসিঞ্জার ও রিচার্ড নিক্সনকে গোপনে কম্বোডিয়ায় বোমা নিক্ষেপের কলাকৌশল নিয়ে আলোচনা করতে শুনে ফেলেন। তখনই তিনি নির্বাহী শাখার ক্ষমতার মাহাত্ম্য অনুধাবন করতে পারেন। রামসফেল্ডের আচরণের ফলে চেনি ও রামসফেল্ডের সাথে নিক্সনের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এটা অবশ্য তাদেরকে উপকৃতই করে। নিক্সনের পদত্যাগের পর চেনি রাষ্ট্রপতি জেরাল্ড ফোর্ডের শাসনামলে হোয়াইট হাউস চিফ অফ স্টাফ হিসেবে নিয়োগ পান। অপরদিকে রামসফেল্ড প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিযুক্ত হন।
ক্রমেই চেনি রক্ষণশীল মতবাদের সমর্থক হয়ে ওঠেন। তিনি রাষ্ট্রপতি জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের অধীনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান। একসময় মেরি চেনি সমকামী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। সংবাদমাধ্যমের বিদ্রূপের হাত থেকে মেরিকে বাঁচাতে চেনি রাজনৈতিক জীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
এরপর চেনি হ্যালিবার্টন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০০০ সালে জর্জ ডব্লিউ বুশ তাকে উপরাষ্ট্রপতি হবার প্রস্তাব দিলে তিনি পুনরায় রাজনৈতিক মঞ্চে আগমন করেন। চেনি বুঝতে পারেন, ক্ষমতার প্রতি বুশের মোহ নেই- বাবাকে খুশি করার জন্যই তিনি রাষ্ট্রপতি হতে যাচ্ছেন। তাই খুব দ্রুতই চেনি সমস্ত ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন।
এরপর ১১ সেপ্টেম্বরের হামলা সংঘটিত হলে চেনি ও রামসফেল্ডের অঙ্গুলিহেলনে আফগানিস্তান ও ইরাকে যুক্তরাষ্ট্র হামলা করে। উক্ত হামলায় হাজারো মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। এর ফলে চেনি অত্যন্ত অজনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এদিকে তার বড় মেয়ে সমকামিতাবিদ্বেষী লিজ চেনি উওমিং এর হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্যপদে নির্বাচনে দাঁড়ান। এটি নিয়েও সমস্যার সৃষ্টি হয়। ক্ষমতাপ্রেমী ডিক চেনির কর্মকাণ্ড রাজনৈতিক রঙ্গমঞ্চকে এভাবেই টালমাটাল করে দেয়।
অভিনয়ে
প্রধান চরিত্র
- ক্রিশ্চিয়ান বেল (ডিক চেনি)
- স্যাম রকওয়েল (জর্জ ডব্লিউ বুশ)
- স্টিভ ক্যারেল (ডোনাল্ড রামসফেল্ড)
- অ্যামি অ্যাডামস(লিন চেনি)
- টাইলার পেরি (কলিন পাওয়েল)
- অ্যালিসন পিল (মেরি চেনি)
- লিলি রাবে (লিজ চেনি)
- জেসি প্লেমনস(কার্ট)
তথ্যসূত্র
- Anthony D'Alessandro (অক্টোবর ১০, ২০১৮)। "The Reasons Behind Annapurna's Tumultuous Week"। Deadline Hollywood। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১০, ২০১৮।
- "Annapurna Upheaval: Megan Ellison Is 'Reevaluating' Film Division Amid Money Woes"। TheWrap। অক্টোবর ১০, ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১০, ২০১৮।
- "Vice (2018)"। Box Office Mojo। IMDb। সংগ্রহের তারিখ মে ১০, ২০১৯।
- Press, Associated (12 এপ্রিল, 2017)। "Christian Bale cast as Dick Cheney in biopic"। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - "Cheney Biopic: Bush Actor & More Revealed"। ScreenRant। 18 আগস্ট, 2017। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - Patten, Dominic; Patten, Dominic (22 আগস্ট, 2017)। "Bill Pullman Joins Adam McKay's Dick Cheney Movie As A Veep Himself"। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - Nickolai, Nate; Nickolai, Nate (17 ডিসেম্বর, 2018)। "'Vice' Reviews: What the Critics Are Saying"। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - Foreman, Alison। "The critics who hated the Dick Cheney biopic 'Vice' really, really hated it"। Mashable।