ব্রাসেল্‌স

ব্রাসেলস (ফরাসি: Bruxelles, [bʁysɛl] (এই শব্দ সম্পর্কেশুনুন); ওলন্দাজ: Brussel, [ˈbrʏsəɫ] (এই শব্দ সম্পর্কেশুনুন)) উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের রাষ্ট্র বেলজিয়াম রাজ্যের রাজধানী ও বৃহত্তম নগরী। এটি বেলজিয়ামের কেন্দ্রভাগে, উত্তর সাগর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে, শেল্ডে নদীর একটি ক্ষুদ্র উপনদী সেনে নদীর উর্বর উপত্যকায় অবস্থিত। সমুদ্রের কাছে অবস্থিত হওয়ার কারণে নগরীর জলবায়ু মৃদু; শীতকালে সাধারণত শূন্যের নিচে তাপমাত্রা নামে না, অন্যদিকে গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা কদাচিৎ ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে ওঠে। ব্রাসেলস ও তার আশেপাশের শহরগুলি মিলে বেলজিয়ামের বৃহত্তম মহানগর এলাকাটি গঠন করেছে, এবং একে ব্রাসেলস রাজধানী অঞ্চলের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। ১৯৯৩ সালে ওলন্দাজভাষী ফ্লান্ডার্স অঞ্চল এবং ফরাসিভাষী ওয়ালোনি অঞ্চলের পাশাপাশি ব্রাসেলস রাজধানী অঞ্চলকে বেলজিয়াম গঠনকারী তিনটি স্বশাসিত যুক্তরাষ্ট্রীয় অঞ্চলের একটি হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। ব্রাসেলস নগরীতে দুইটি দাপ্তরিক ভাষা প্রচলিত – ফরাসিওলন্দাজ। তবে শহরের সিংহভাগ লোক ফরাসি ভাষায় কথা বলে। উত্তর ইউরোপের মধ্যভাগে অবস্থিত ব্রাসেলস নগরী ইউরোপীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়েও গুরুত্বপূর্ণ, কেননা এখানে ইউরোপীয় ঐক্য (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) এবং উত্তর আমেরিকা চুক্তি সংস্থা (নেটো) --- উভয় সংস্থার প্রধান কার্যালয় অবস্থিত।

ব্রাসেল্‌স
  • Bruxelles
  • Brussel
বেলজিয়ামের অঞ্চল
  • ব্রাসেল্‌স-রাজধানী অঞ্চল
  • Région de Bruxelles-Capitale
  • Brussels Hoofdstedelijk Gewest
ব্রাসেলসের বিভিন্ন ছবিসহ একটি আলোকচিত্র, শীর্ষ: উত্তর চতুর্থাংশ ব্যবসা জেলার দৃশ্য, ২য় বামে: গ্র্যান্ড প্লেসে পুষ্পশোভিত কার্পেট ইভেন্ট, ২য় ডানে: ব্রাসেলস সিটি হল এবং মন্ট দেস আর্টস এলাকা, ৩য়: Cinquantenaire পার্ক, ৪র্থ বামে: Manneken Pis, ৪র্থ মধ্যম: সেন্ট মাইকেল এবং সেন্ট গুদুলা ক্যাথিড্রাল, ৪র্থ ডানে: কংগ্রেস কলাম, নিচে: ব্রাসেলসের রাজকীয় প্রাসাদ
ব্রাসেলসের বিভিন্ন ছবিসহ একটি আলোকচিত্র, শীর্ষ: উত্তর চতুর্থাংশ ব্যবসা জেলার দৃশ্য, ২য় বামে: গ্র্যান্ড প্লেসে পুষ্পশোভিত কার্পেট ইভেন্ট, ২য় ডানে: ব্রাসেলস সিটি হল এবং মন্ট দেস আর্টস এলাকা, ৩য়: Cinquantenaire পার্ক, ৪র্থ বামে: Manneken Pis, ৪র্থ মধ্যম: সেন্ট মাইকেল এবং সেন্ট গুদুলা ক্যাথিড্রাল, ৪র্থ ডানে: কংগ্রেস কলাম, নিচে: ব্রাসেলসের রাজকীয় প্রাসাদ
ব্রাসেল্‌সের পতাকা
পতাকা
ব্রাসেল্‌সের অফিসিয়াল লোগো
প্রতীক
ডাকনাম: ইউরোপের রাজধানী[1] Comic city[2][3]
 ব্রাসেল্‌স-এর অবস্থান (red)– the European Union-এ (brown & light brown)– Belgium-এ (brown)
 ব্রাসেল্‌স-এর অবস্থান (red)

 the European Union-এ (brown & light brown)
 Belgium-এ (brown)

স্থানাঙ্ক: ৫০°৫১′০″ উত্তর ৪°২১′০″ পূর্ব
দেশবেলজিয়াম
স্থাপনপ্রায় ৫৮০
প্রতিষ্ঠা৯৭৯
অঞ্চল১৮ই জুন, ১৯৮৯
মিউনিসিপালিটি
তালিকা
  • Anderlecht
  • Auderghem / Oudergem
  • Berchem-Sainte-Agathe / Sint-Agatha-Berchem
  • ব্রাসেলস শহর
  • Etterbeek
  • এভেরে
  • Forest / Vorst
  • গ্যান্সহরেন
  • Ixelles / Elsene
  • ইয়েটে
  • Koekelberg
  • Molenbeek-Saint-Jean / Sint-Jans-Molenbeek
  • Saint-Gilles / Sint-Gillis
  • Saint-Josse-ten-Noode / Sint-Joost-ten-Node
  • Schaerbeek / Schaarbeek
  • উক্কেল
  • Watermael-Boitsfort / Watermaal-Bosvoorde
  • Woluwe-Saint-Lambert / Sint-Lambrechts-Woluwe
  • Woluwe-Saint-Pierre / Sint-Pieters-Woluwe
সরকার
  মন্ত্রী-রাষ্ট্রপতিRudi Vervoort (২০১৩–)
  গভর্ণরজিন ক্লেমেন্ট (ভারপ্রাপ্ত) (২০১০–)
  পার্লামেন্ট সভাপতিEric Tomas
আয়তন
  অঞ্চল১৬১.৩৮ বর্গকিমি (৬২.২ বর্গমাইল)
উচ্চতা১৩ মিটার (৪৩ ফুট)
জনসংখ্যা (১ লা জানুয়ারি, ২০১২)[4]
  অঞ্চল১১,৩৮,৮৫৪
  জনঘনত্ব৭,০২৫/বর্গকিমি (১৬,৮৫৭/বর্গমাইল)
  মহানগর১৮,৩০,০০০
সময় অঞ্চলসিইটি (ইউটিসি+১)
  গ্রীষ্মকালীন (দিসস)সিইএসটি (ইউটিসি+২)
আইএসও ৩১৬৬BE-BRU
ওয়েবসাইটwww.brussels.irisnet.be
বৃহত্তর ব্রাসেলস এলাকার স্যাটেলাইট ছবি

ব্রাসেলস নগরীটি বৃক্ষশোভিত রাজপথ, চমৎকার সব নগর-উদ্যান, জমকালো স্মৃতিসৌধ ও সৌন্দর্যমণ্ডিত ভবনে পরিপূর্ণ। ব্রাসেলসের সাঁ-মিশেল ও গ্যুদ্যুল গির্জাটি ১৩শ শতকে গোথিক স্থাপত্য ঘরানায় নির্মাণ করা হয়; এটি রঞ্জিত কাচের জানালাগুলির জন্য বিখ্যাত। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যাজকীয় ভবনগুলির মধ্যে নোত্র দাম দ্যু ফিনিস্তের এবং সাঁ-জাক স্যুর কুদঁবের-এর নাম উল্লেখযোগ্য। ধর্মসংশ্লিষ্ট নয়, এমন উল্লেখযোগ্য ভবনগুলির মধ্যে আছে ওতেল দ্য ভিল (নগর ভবন), যেটি ১৫শ শতকে গোথিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত হয়; রাজকীয় প্রাসাদ; ১৮শ শতকে নির্মিত পালে দ্য লা নাসিওঁ; ১৯শ শতকে নির্মিত পালে দ্য লা জ্যুস্তিস; এবং বুর্স বা শেয়ার বাজার। উপরের বেশ কিছু ভবন গ্রঁ-প্লাস চত্ত্বর নামক উন্মুক্ত স্থানটিকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে।

এখানকার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে আছে ব্রাসেলসের উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (Vrije Universiteit Brussel; ১৮৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত), যেটি ১৯৭০ সাল থেকে দুইটি পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে --- একটি ফরাসিভাষী (Université Libre de Bruxelles) ও অপরটি আদি ওলন্দাজভাষী বিদ্যালয়। এছাড়া এখানে একটি ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ, একল রোয়াইয়াল মিলিতের (১৮৩৪) নামক সামরিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বহু বিশেষায়িত গবেষণা প্রতিষ্ঠান যেমন কলা, চারুকলা ও চিকিৎসাবিজ্ঞান অ্যাকাডেমি রয়েছে। সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে আছে রাজকীয় গ্রন্থাগার এবং রাজকীয় চারুকলা জাদুঘর। রাজকীয় চারুকলা জাদুঘরে বিখ্যাত পুরাতন ফ্লেমীয় ও ওলন্দাজ ওস্তাদ চিত্রকরদের চিত্রকর্মের উৎকৃষ্ট সংগ্রহ ছাড়াও আধুনিক শিল্পকলার নিদর্শনও রয়েছে। বেশ ও লেসফিতার জাদুঘরে বেলজিয়ামের ঐতিহ্যবাহী লেসফিতা প্রস্তুতকরণ শিল্পকে উদ্‌যাপন করা হয়েছে। বেলিজীয় কমিক স্ট্রিপ শিল্পকলা কেন্দ্র একটি ব্যতিক্রমী জাদুঘর।

ব্রাসেলস ইউরোপের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ ও শিল্পোৎপাদনমূলক অঞ্চলে অবস্থিত। বেলজিয়ামের রেল পরিবহন ব্যবস্থার কেন্দ্রে অবস্থিত ব্রাসেলস খালের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন ব্যবস্থা ও উত্তর সাগরের সাথে সংযুক্ত। নগরীর বন্দর এলাকাটি মূল শহরের উত্তর ভিলভোর্ডে-র কাছে অবস্থিত। ব্রাসেলস থেকে রপ্তানিকৃত প্রধান প্রধান কিছু দ্রব্য হল পেরেক, লোহা, মর্মর, কয়লা, মোমবাতি কাচ ও চিনি। এর বিপরীতে খনিজ পদার্থ, পাম তেল ও কফি প্রধান কিছু আমদানিকৃত দ্রব্য। ব্রাসেলস নগরীটি বহুযুগ ধরে বিলাসবহুল বস্ত্র, বিশেষত এক ধরনের সূক্ষ্ম লেসফিতা উৎপাদনের জন্য সুবিদিত, যার নাম ব্রাসেলস লেসফিতা। এছাড়া তাপিশ্রী বয়ন (নকশাচিত্রিত বা বুটিদার দেয়াল-পর্দা), গালিচা বয়ন ও আসবাবপত্র নির্মাণ শিল্পেরও সুখ্যাতি আছে। অন্যান্য শিল্পের মধ্যে মুদ্রণ, বিয়ার নামক মদ চোলাইকরণ ও শোধন, চকোলেট উৎপাদন, চিনি শোধন, লোহা ও পিতলের ছাঁচে ঢালাইকরণসহ বস্ত্র, ইলেকট্রনীয় যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্রের শিল্পোৎপাদন অন্তর্ভুক্ত। ব্রাসেলসে বেলজিয়ামের ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সরকারী কার্যালয়গুলি অবস্থিত বলে এখানে প্রচুর সরকারী চাকুরিজীবীর বাস।

ব্রাসেলস নগরীর নাম সম্ভবত ওলন্দাজ ভাষার শব্দ ব্রুকসেলে (Broekzelle) থেকে এসেছে, যার অর্থ “জলাভূমির গ্রাম”। ঐতিহ্য অনুযায়ী খ্রিস্টীয় ৬ষ্ঠ শতকের দিকে সেনে নদীর উপরে অবস্থিত একটি দ্বীপে স্থাপিত দুর্গকে ঘিরে নদী-পারস্থ জলাভূমিতে কিছু গাল্লীয়-রোমান বসতি গড়ে ওঠে ও সেখান থেকে এই লোকালয়টির বিকাশ ঘটে। ১২শ শতক নাগাদ লোকালয়টির নিজস্ব বুরূজ ছিল এবং আত্মরক্ষামূলক মজবুত প্রবেশদ্বার ছিল। সেসময় এটি ব্রাবান্টের ডিউকদের অধীনে চলে আসে এবং এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য ও হস্তশিল্পের প্রসার হয়, বিশেষ করে একটি স্থানীয় বস্ত্রশিল্প ও বাণিজ্য হিসেবে ব্রাসেলস গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ১৩১২ ও ১৩৫৬ সালে ব্রাবান্টের ডিউকদের চার্টারগুলি কার্যকর হলে ব্রাসেলসের বাণিজ্য ও শিল্পখাত অনেক সুবিধা ভোগ করে। ঐ নথিগুলিতে কর আরোপ করার উপরে কঠোর সীমা বেঁধে দেওয়া হয় এবং প্রশাসনে জনগণের মতকে গুরুত্ব প্রদান করা হয়। ১৩৫৭ থেকে ১৩৭৯ সালের মধ্যে শহরকে ঘিরে বড় বড় নগরপ্রাচীর নির্মাণ করা হয়। ১৩৮৩ সালে লিউভেন নগরীর পরিবর্তে ব্রাসেলসকে ব্রাবান্ট ডিউকরাজ্যের রাজধানী বানানো হয়। এরপর প্রায় চারশত বছর ধরে ব্রাসেলস ব্রাবান্ট প্রশাসনের কেন্দ্র হিসেবে বজায় ছিল। ১৫শ শতকে ব্রাসেলস শিল্পকলা ও সংস্কৃতির আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ১৪৩০ সালে ব্রাবান্ট অঞ্চলটি বুর্গোইন ডিউকরাজ্যের অংশে পরিণত হয়। বুরগোইনের শাসকদের সময় ব্রাসেলস নিচু দেশসমূহের (বর্তমান বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস ও লুক্সেমবুর্গ) একটি গুরুত্বপূর্ণ নগরীতে পরিণত হয়। এর পরে এটি ১৪৭৭ সালে অস্ট্রীয় হাবসবুর্গ রাজাদের অধীনস্থ অঞ্চলে পরিণত হয়। ১৫৩০ সালে ব্রাসেলসকে হাবসবুর্গদের শাসনাধীন স্পেনীয় নেদারল্যান্ডস রাজ্যের রাজধানী হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। ১৬শ ও ১৭শ শতক জুড়ে ব্রাসেলসের এই মর্যাদা বজায় ছিল।

১৬শ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ব্রাসেলস-সহ নেদারল্যান্ডসের অন্যান্য নগরীতে খ্রিস্টধর্মের প্রতিবাদী মণ্ডলীর মতবাদের প্রচুর অনুসারী হয়। এসময় হাবসবুর্গ রাজপরিবারের স্পেনীয় শাখাটি ব্রাসেলসকে নিয়ন্ত্রণ করত। ধর্মীয় দ্বন্দ্ব-সংঘাত শেষ পর্যন্ত রাজার বিরুদ্ধে বিপ্লবে রূপ নেয়। ১৫৬৭ সালে স্পেনের সামরিক শাসক ফের্নান্দো আলভারেস দে তোলেদো-কে (আলবা-র তৃতীয় ডিউক) বিপ্লবী আন্দোলন পিষ্ট করার জন্য নেদারল্যান্ডসে পাঠানো হয়। তিনি ব্রাসেলসে তাঁর প্রধান কার্যালয় স্থাপন করেন। এরপরে যে ভয়াবহ স্বৈরশাসন শুরু হয়, তাতে ব্রাসেলসে অবস্থিত বহু ফ্লেমীয় দেশপ্রেমিককে হত্যা করা হয়, যাদের মধ্যে এগমন্টের কাউন্ট লামোরাল, হোর্নের কাউন্ট ফিলিপ দ্য মোঁমোরঁসি উল্লেখ্য। ১৫৭৬ সাল পর্যন্ত ব্রাসেলস স্পেনের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ১৫৭৮ থেকে ১৫৮৫ সাল পর্যন্ত কালভাঁবাদী প্রতিবাদী মণ্ডলীর খ্রিস্টানরা ব্রাসেলসের নিয়ন্ত্রণ পেয়েছিল। এরপর নগরীটি ওলন্দাজ নেদারল্যান্ডসের সাথে যোগদান করে। ১৫৮৫ সালে স্পেনীয় সেনাবাহিনী ইতালীয় জেনারেল আলেস্সান্দ্রো ফারনেসে-র নেতৃত্বে ব্রাসেলস নগরীটিকে পুনরায় হস্তগত করে এবং সেটিকে হাবসবুর্গ রাজ্যে ফেরত নিয়ে আসে। ১৬৯৫ সালে স্পেনীয় নেদারল্যান্ডসে ফ্রান্সের আক্রমণের সময় ফরাসিরা ব্রাসেলসের উপরে ভারী বোমাবর্ষণ করে। ১৭১৩ সালের পর থেকে হাবসবুর্গ রাজবংশের অস্ট্রীয় শাখাটি ব্রাসেলসের নিয়ন্ত্রণ হাতে নেয় এবং এটিকে অস্ট্রীয় দক্ষিণ নেদারল্যান্ডসের রাজধানী বানানো হয়। তবে ১৭৪৬ থেকে ১৭৪৮ সাল পর্যন্ত ফরাসি সেনারা শহরটি সাময়িকভাবে দখল করতে সক্ষম হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ১৭৯২ সালে ফরাসি বিপ্লবের সময় ফ্রান্সের সেনাবাহিনী অস্ট্রীয়দেরকে ব্রাসেলস থেকে সম্পূর্ণ হটিয়ে দেয় এবং ১৮১৫ সালে নেপোলিয়নের যুদ্ধসমূহের অবসানের আগ পর্যন্ত এটি ফরাসিদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ঐ বছর নেপোলিয়ন ব্রাসেলস থেকে সামান্য দক্ষিণে ওয়াটারলু নামক স্থানে শেষবারের মতো পরাজয় বরণ করেন। বেলজিয়াম নেদারল্যান্ডস রাজ্যের সাথে সংযুক্ত হয় এবং ১৮১৫ সালের ভিয়েনা চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ব্রাসেলস নগরীকে দা হেগের পাশাপাশি নেদারল্যান্ডস রাজ্যের একটি রাজধানীর মর্যাদা দেওয়া হয়। কিন্তু ১৮৩০ সালে এটি ওলন্দাজ শাসনবিরোধী বেলজীয় স্বাধীনতা বিপ্লবের কেন্দ্রে রূপ নেয়। ১৮৩১ সালে নেদারল্যান্ডস রাজ্যটি পরবর্তীতে ভেঙে আধুনিক বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডস রাজ্যে পরিণত হয়। নতুন বেলজিয়াম রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হলে ব্রাসেলসকে এর রাজধানী বানানো হয়। ১ম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে জার্মানরা ১৯১৪ সালের আগস্ট থেকে ১৯১৮ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত ব্রাসেলস নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানরা আবারও নগরীটি দখল করে রাখে, এবার ১৯৪০ সালের মে মাস থেকে ১৯৪৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত। ১৯৪৪ সালে ব্রিটিশরা বেলজীয় প্রতিরোধ বাহিনীর সাথে একত্রে নাৎসিদেরকে বিতাড়িত করে। ১৯৫৮ সালে নগরীটি সফলভাবে বিশ্বমেলার আয়োজন করে। ১৯৭০ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত বেলজিয়ামের সাংবিধানিক কাঠামোতে ধারাবাহিকভাবে কিছু পরিবর্তন সাধন করা হয়, যাতে বেলজিয়াম সরকারকে একট যুক্তরাষ্ট্রীয় কেন্দ্রীয় সরকারের কাঠামো প্রধান করা হয় এবং দ্বিভাষী ব্রাসেলস-সহ আরও দুইটি প্রশাসনিক অঞ্চলকে অধিকতর ক্ষমতা প্রদান করা হয়।

পরিবহন

আকাশপথ

  • ব্রাসেলস বিমানবন্দর

তথ্যসূত্র

  1. "Brussels"। City-Data.com। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০০৮
  2. Herbez, Ariel (৩০ মে ২০০৯)। "Bruxelles, capitale de la BD"Le Temps (French ভাষায়)। Switzerland। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০১০Plus que jamais, Bruxelles mérite son statut de capitale de la bande dessinée.
  3. "Cheap flights to Brussels"। Easyjet। ৯ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০১০
  4. Population per municipality on 1 January 2012 (XLS; 214 KB)

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.