ব্রহ্মময়ী কালীমন্দির, মূলাজোড়
ব্রহ্মময়ী কালীমন্দির পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার মূলাজোড় গ্রামে অবস্থিত একটি প্রাচীন কালী মন্দির।
বিবরণ
কথিত আছে, কলকাতার পাথুরিয়াঘাটার গোপীমোহন ঠাকুরের মেয়ে ব্রহ্মময়ী বিবাহের দিন গঙ্গাস্নানের সময় ডুবে গেলে তার স্মৃতিতে গোপীমোহন এই নবরত্ন মন্দির নির্মাণ করেন। মন্দিরপ্রাঙ্গণে বারোটি শিবমন্দির অবস্থিত।[1]:৮৯
প্রতি অমাবস্যায়, রটন্তী-চতুর্দশীতে কালীপূজা এবং গোটা পৌষমাস ব্যাপী এখানে উৎসব হয়। মন্দিরটি একটি সুন্দর বাগানের মধ্যে অবস্থিত। কালীবাড়িতে আনন্দশঙ্কর, গোপীশঙ্কর ও হরশঙ্কর নামে তিনটি বৃহৎ শিবলিঙ্গও আছে। মন্দিরের পিছনে পৃথক দেবালয়ে 'গোপীনাথ জীউ' নামে শ্রীকৃষ্ণের একটি বিগ্রহ আছে।[2]
ঐতিহাসিক কাহিনী
গোপীমোহন এই কালীবাড়িতে সেকালের বিখ্যাত গায়ক কালীমির্জা (কালিদাস চট্টোপাধ্যায়) ও লক্ষ্মীকান্ত বিশ্বাসকে (ল'কে কানা) নিয়ে আসতেন; কালীমির্জা গোপীমোহনকে বিভিন্ন শ্যামাবিষয়ক গান গেয়ে শোনাতেন। শোনা যায়, একদিন মির্জার গান শুনে ভক্তিগদগদ হয়ে মন্দিরপ্রাঙ্গনে বসেই গোপীমোহন একটি শ্যামাসঙ্গীত রচনা করে ফেলেন:
শিবে শবাসনা, লোল রসনা,
ভীষণা দিগ্বসনা বিকট দশনা।
লজ্জারূপা নাহি লজ্জা মেয়ে হয়ে রণসজ্জা
রুধিরে মগনা।
সভয়া অভয়া বরে সতী নিজ পতি 'পরে,
এ কি বিবেচনা
কহিছে গোপীমোহনে এইরূপ জাগে মনে,
কালী ত্রিনয়না।।
গানটি পরবর্তীতে মন্দিরের দেওয়ালে লিপিবদ্ধ করা হয়।[2]
তথ্যসূত্র
- তিন তীর্থে, শিবশঙ্কর ভারতী, সাহিত্যম্, ১৮বি, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিট, কলকাতা-৭৩, প্রথম প্রকাশ- ১৮ই জানুয়ারী, ২০০১
- ঘোষ, বিনয়, "পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি", তৃতীয় খন্ড, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশ ভবন, পৃষ্ঠা: ২০১-২০২