ব্যক্তিস্বাধীনতা
ব্যক্তিস্বাধীনতা (ইংরেজি: Civil liberty বা Personal freedom) হল ব্যক্তিগত অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা। এটি সরকার সাধারণত নির্ধারিত প্রক্রিয়া ব্যতীত আইন বা বিচারিক প্রক্রিয়া প্রয়োগ করে খর্ব করতে পারে না। যদিও ব্যক্তিস্বাধীনতার ব্যাপ্তি রাষ্ট্রভেদে ভিন্ন হতে পারে, তবু মোটামুটি যে জিনিসগুলো ব্যক্তিস্বাধীনতার মধ্যে পড়ে সেগুলো হল, নির্যাতন থেকে বাঁচার অধিকার, বাস্তুচ্যুত হওয়া থেকে বাঁচার অধিকার, আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার, সংবাদ মাধ্যমের সহায়তা পাওয়ার অধিকার, ধর্ম পালনের অধিকার, মত প্রকাশের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, নিরাপত্তার ও স্বাধীনতার অধিকার, নিজস্ব গোপনীয়তা রক্ষা করতে পারার অধিকার, আইনের অধিকার, নিরপেক্ষ আদালতে বিচার পাবার অধিকার, এবং জীবন বাঁচানোর অধিকার। ব্যক্তিস্বাধীনতার মধ্যে আরও আছে সম্পত্তির মালিকানার অধিকার ও আত্নরক্ষার অধিকার এবং শরীরের ব্যক্তিগত শুদ্ধতার অধিকার। ইতিবাচক ও নেতিবাচক স্বাধীনতা ও অধিকারের উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিস্বাধীনতা ও অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের স্বাধীনতার মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য আছে।
সারসংক্ষেপ
অনেক সমসাময়িক রাষ্ট্রে ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষার জন্য সংবিধানে অনুচ্ছেদ, অধিকার সংক্রান্ত বিল ও এরকম বিভিন্ন সাংবিধানিক নথি রয়েছে। অন্য অনেক রাষ্ট্রে অন্যান্য বিবিধ সমন্বয় স্বাক্ষর ও চুক্তির মাধ্যমে এসংক্রান্ত নীতিমালা ও কার্যপ্রণালী প্রয়োগ করে, যেমন ‘ইউরোপিয়ান কনভেনশন অন হিউম্যান রাইটস’ আর ‘ইন্টারন্যাশনাল কভেনেন্ট অন সিভিল এন্ড পলিটিকাল রাইটস’।
ব্যক্তিস্বাধীনতার কিছু অংশের চর্চা নিয়ে কিছু বিতর্ক রয়েছে, যেহেতু সেগুলি অন্য আরও কিছু অধিকার সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সাথে জড়িত। এমন উদাহরণের মধ্যে রয়েছে প্রপার্টি রাইট, প্রজনন অধিকার, সিভিল মেরেজ ইত্যাদি। ভিকটিমবিহীন অপরাধের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বাধীনতার প্রক্রিয়াগুলোর ব্যতিক্রম ঘটে, আরও একটি ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বাধীনতার প্রশ্নবিদ্ধ স্বরূপ দেখা যায়, যুদ্ধকালীন ও জরুরি অবস্থায় কোথায় কি অবস্থায় প্রক্রিয়া চলমান তার উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিস্বাধীনতা বিবর্তিত হয়। ব্যক্তিস্বাধীনতার সাধারণ বিষয়গুলো এসেছে ১২১৫ সালে সম্পাদিত ম্যাগনা কার্টা চুক্তি থেকে, এটি ইংরেজ আইন সংশ্লিষ্ট ও সাংবিধানিক ইতিহাসের এক অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
ব্যক্তিস্বাধীনতা সকল মানুষের জন্মগত অধিকার যা নিশ্চিত করা একটা রাষ্ট্রের অপরিহার্য দায়িত্ব।