বৈদ্যুতিক মস্তিষ্কলেখচিত্রণ
বৈদ্যুতিক মস্তিষ্কলেখচিত্রন (Electroencephalography সংক্ষেপে ইইজি) একটি তাড়িত শারীরবৃত্তীয় পর্যবেক্ষন পদ্ধতি যা দ্বারা মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক সক্রিয়তা লিপিবদ্ধ করা হয়।
এটি সাধারণত ক্ষতিকর নয়, ইলেক্ট্রোড মাথার করোটিতে স্থাপন করা হয়। যদিও কোনো কোনো সময় আক্রমণকর ইলেক্ট্রোড ব্যবহার করা হয় ইলেক্ট্রোকর্টিকোগ্রাফির (আর একটি বৈদ্যুতিক মস্তিষ্কলেখচিত্রন) মত। বৈদ্যুতিক মস্তিষ্কলেখচিত্রন পরিমাপ করা হয় নিউরন এবং মস্তিষ্কের আয়নিক বিদ্যুৎ প্রবাহের ভোল্টেজ ওঠানামা দ্বারা। চিকিৎসায়, এটি একটি নির্দিষ্ট সময়ে মস্তিষ্কের স্বতঃস্ফূর্ত তড়িৎ সক্রিয়তা লিপিবদ্ধ করে, যা পাওয়া যায় একাধিক ইলেক্ট্রোড করোটিতে স্থাপনের মাধ্যমে।[১] ইইজি এর ঘটনা সংক্রান্ত বিভব এবং বর্ণালীর উপর কেন্দ্র করে রোগনির্ণয় করা হয়।[1]
ইইজি সাধারণত মৃগীরোগ নির্ণয় করার জন্য ব্যবহার করা হয়,যা ইইজি এর পাঠে অস্বাভাবিকতা তৈরি করে। ঘুমের গোলযোগ, অবচেতন অবস্থার গভীরতা, কোমা, এনসেফালোপ্যাথিস, মস্তিষ্কের মৃত্যু এসব নির্ণয় করার জন্য ইইজি ব্যবহার করা হয়। টিউমার, স্ট্রোক এবং কেন্দ্রীয় মস্তিষ্কের অন্যান্য অস্বাভাবিকতা নির্নয়ে ইইজি ফার্স্ট লাইন পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করা হয়, কিন্তু এম আর আই এবং সিটি স্ক্যান এর মত উচ্চ রেজ্যুলিউশন পদ্ধতি আবির্ভাবের পর এর ব্যবহার কমে যায়। রেজ্যুলিউশন স্থান সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতা থাকার পর ও এটি গবেষণা এবং রোগ নির্নয়ে মুল্যবান যন্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যে সব সল্প সচল পদ্ধতি মিলিসেকেন্ড পরিসরে সাময়িক রেজোল্যুশন দেয়,সেসবের মধ্যে ইইজি একটি, যা এম আর আই বা সিটি স্ক্যান দ্বারা সম্ভব না।ইইজি এর মত ইপি (Evoked potential) একটি পদ্ধতি যাতে ইইজি এর গতিবিধি গড় করা হয় কিছু শ্রেণীর (দৃশ্যগত, সোমাটোসেন্সরি, শ্রবণগত) উপর ভিক্তি করে। ইভেন্ট রিলেটেড পটেনশিয়াল (ERP) ও ইইজি উদ্দীপনাকে গড় করে এবং এটি উদ্দীপনার একটি সুক্ষ প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে এটি সংজ্ঞানাত্মক বিজ্ঞান, সংজ্ঞানাত্মক শারীরবিজ্ঞান এবং মনোশারীরবৈজ্ঞানিক গবেষণাতে ব্যবহার করা হয়।
ইতিহাস
"Electronchephalography and and Clinical Neurophysiology " বইয়ে বারবারা ই. সওয়ার্টজ, ইইজি এর ইতিহাস সম্পর্কে বিষদ আলোচনা করেন। ১৮৭৫
সালে রিচার্ড ক্যাটোন(একজন ডাক্তার যিনি লিভারপুলে অনুশীলন করছিলেন), বানর এবং খরগোশ এর উন্মুক্ত সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার এ বৈদ্যুতিক ঘটনার প্রভাব সম্পর্কে তার আবিষ্কার British Medical Journal এ বর্ণনা করেন।১৮৯০ সালে পোল্যান্ডের শারীরবিজ্ঞানী এডলফ বেক, খরগোশ এবং কুকুর এর মস্তিষ্কের স্বতঃস্ফূর্ত বৈদ্যুতিক গতিবিধি সম্পর্কে তার গবেষণা প্রকাশ যা আলোর উপস্থিতিতে ছান্দিক ওঠানামা করে। তার মস্তিষ্কের গতিবিধি ওঠানামা করার পর্যবেক্ষনমস্তিষ্কের তরঙ্গ আবিষ্কার এ সহায়তা করে।তিনি ক প্রানীর মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক গতিবিধির ওপর গবেষণা শুরু করেছিলো।বেক সংবেদন উত্তেজনা পরীক্ষার জন্য ইলেক্ট্রোড সরাসরি মস্তিষ্কের উপরিতলে স্থাপন করে।[2]
১৯১২ সালে উইক্রেন এর শারীরবিজ্ঞানী, ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ প্রাভদিচ-নেমিনস্কাই প্রানীর প্রথম বৈদ্যুতিক মস্তিষ্কলেখচিত্রন(EEG) এবং স্তন্যপায়ীর(কুকুর) EP প্রকাশ করেন। ১৯১৪ সালে নেপোলিয়ন সাইবলস্কি এবং জেলেনস্কা ম্যাকিএসজেনা পরীক্ষালব্ধ ভাবে তৈরি করা রোগ এর ইইজি লিপির ছবি তোলেন।
জার্মানির শারীরবিজ্ঞানি এবং মানসিক রোগের চিকিৎসক হ্যানস বার্গার প্রথম মানুষের মস্তিষ্ক লেখচিত্রন লিপিবদ্ধ করেন ১৯২৪ সালে। রিচার্ড ক্যটোন এবং অন্যান্যদের, প্রানীর উপর আগের কাজের বিস্তৃতের ভিত্তিতে, বার্গার ইলেক্ট্রোএন্সেফালোগ্রাম( বৈদ্যুতিক মস্তিষ্কলেখচিত্রন এর যন্ত্র) আবিষ্কার করেন, যা ক্লিনিকাল নিউরোলজির ইতিহাসে সবচেয়ে বিস্ময়কর,অসাধারণ এবং গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন হিসেবে বিবেচিত। তার আবিষ্কার সর্বপ্রথম নিশ্চিত এবং উন্নত করেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী এডগার ডগ্লাস আদ্রিয়ান এবং বি.এইচ.সি ম্যাথিউস ১৯৩৪ সালে।
১৯৩৪ সালে ফিশার এবং লনব্যাক প্রথম মৃগীরোগের পাঠ প্রদর্শন করেন। গিবস, ডেভিস এবং লেনক্স ইন্টেরিকটাল( খিচুনির মাঝামাঝি অবস্থা) এর তরঙ্গ এবং ক্লিনিকাল এবসেন্স সিযার এর বিশ্লেষন করে, যা ক্লিনিকাল ইইজি ক্ষেত্রটি শুরু করে। পরবর্তীকালে, ১৯৩৬ সালে গিবস এবং জ্যাসপার ইন্টেরিকটাল স্পাইক কে মৃগীরোগের কেন্দ্রীয় সিগনেচার হিসেবে জ্ঞাপন করেন। একই বছর, প্রথম ইইজি ল্যাবোরেটরি খোলা হয় ম্যাচাচুসেটস জেনারেল হাসপাতাল এ।
নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় এর বায়োফিজিক্স এর প্রফেসর ফ্রাংকলিন অফনার ইইজি এর একটা আদিরুপ উন্নিত করেন যা ক্রিস্টোগ্রাফ নামক পাইজোইলেক্ট্রিক ইঙ্ক্রাইটার(সম্পূর্ণ যন্ত্রটি অফনার ডাইনোগ্রাফ নামে পরিচিত) এর সাথে যুক্ত।
১৯৪৭ সালে, আমেরিকান ইইজি সোসাইটি সংস্থাপিত করা হয় এবং ইন্টান্যাশনাল ইইজি মহাসভা সংঘটিত হয়েছিলো। ১৯৫৩ সালে এসারিনস্কাই এবং ক্লেইটম্যান REM(র্যাপিড আই মুভমেন্ট) বর্ণিত করেন।
১৯৫০ সালে, উইলিয়াম গ্রে ওয়াল্টার ইইজিতে, ইইজি টোপোগ্রাফী নামক একটি সংযোজন উন্নিত করেন, যা মস্তিষ্কের উপরিতলের বৈদ্যুতিক গতিবিধি ম্যাপিং করতে পারে। এটি ১৯৮০ এর দিকে অনেক জনপ্রিয়তা পায় এবং মনোরোগবিদ্যার জন্য বিষেশভাবে আশাপ্রদ প্রতীয়মান হয়। এটা কখনো নিউরোলোজিস্টরা গ্রহণ করে নি এবং শুধুমাত্র প্রাথমিক গবেষণার যন্ত্র হিসেবে থেকে যায়।
বেকম্যান একটি বৈদ্যুতিক মস্তিষ্কলেখচিত্রন পদ্ধতি তৈরি করেন যা প্রজেক্ট জেমিনির যেকোনো একটি মনুষ্যবাহী মহাশূন্য যাত্রায় (১৯৬৫-১৯৬৬) মহাকাশচারীদের মস্তিষ্ক তরঙ্গ এর তথ্য দিতে ব্যবহার করা হয়। বেকম্যান এর আবিষ্কৃত অনেক যন্রের মধ্যে এটি বিশেষ এবং নাসায় এটি ব্যবহৃত হয়।
২০১৮ এর অক্টোবরে বিজ্ঞানীরা তিনজনের মস্তিষ্কের সংযোগ ঘটায়, চিন্তা ভাগ করার প্রকিয়া নিয়ে গবেষণা করার জন্য। তিনজনের পাচটি গ্রুপ এই গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন,এতে ইইজি ব্যবহার করা হয়। এই গবেষণার সাফল্যের হার ৮১%।[3]
চিকিৎসাবিদ্যাবিষয়ক ব্যবহার
একটি দৈনন্দিন ক্লিনিকাল ইইজি রেকর্ডিং এ সময় লাগে ২০-৩০ মিনিট( সাথে প্রস্তুতির সময়) এবং সাধারণত করোটির ইলেক্ট্রোড থেকে পাঠ লিপিবদ্ধ করা হয়।এটি একটি পরীক্ষা যা মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক গতিবিধি শনাক্ত করে মেটাল ডিস্ক যা মস্তিষ্কের করোটির সাথে যুক্ত থাকে তার সাহায্যে। দৈনন্দিন ইইজি নিম্নোক্ত রোগ সমূহ নির্ণয় করতে সাহায্য করে-
- মস্তিষ্কের টিউমার
- মাথায় আঘাত থেকে মস্তিষ্কের কোনও প্রকার ক্ষতি
- বিভিন্ন কারণে ঘটা মস্তিষ্কের ত্রুটিপূর্ণ ক্রিয়া
- মস্তিষ্কে প্রদাহ
- স্ট্রোক
- ঘুমের বিশৃঙখলা
ইইজি সাধারণত আরো ব্যবহার করা হয়
- মৃগীরোগের পাকড় কে অন্যান্য ধরনের সমস্যা যেমন সাইজোজেনিক নন এপিলেপটিক পাকড়, সিনকোপ, সাব-কর্টিকাল গতিবিধি বিশৃঙখলা, বিভিন্ন ধরনের মাইগ্রেন থেকে আলাদা করার কাজে।
- এটি জৈব এনসেফালোপ্যাথি বা ডেলিরিয়াম কে প্রাথমিক সাইকিয়াট্রিক লক্ষন যেমন ক্যাটাটোনিয়া থেকে আলাদা করতেও ব্যবহার করা হয়
- , এটি আরো ব্যবহার করা হয় মস্তিষ্কের মৃত্যুর সহযোগী পরীক্ষায়, পূর্বলক্ষন দেখতে, নির্দিষ্ট ঘটনায়, কোমা রোগীদের ক্ষেত্রে, মৃগীরোগের ওষধ ছাড়া হয়েছে কিনা তা দেখার জন্য।
মাঝে মাঝে দৈনন্দিন ইইজি সবচেয়ে ভালো গতির কাজ নির্ণয়ে চিকিৎসায় পর্যাপ্ত নয়। এক্ষেত্রে ইইজি রেকর্ডের প্রচেষ্টা করা হয় যখন কোনো পাকড় সংঘটিত হয়।
এটা ইকটাল রেকর্ডিং হিসেবে পরিচিত,যা ইন্টার ইকটাল রেকর্ডিং এর বিপরীত এবং পাকড় এর মধ্যে ইইজি এর পাঠ বোঝায়। ইকটাল রেকর্ডিং পেতে সাধারণত একটি দীর্ঘায়িত ইইজি সম্পাদিত করা হয়, সময় সামঞ্জিত ভিডিও এবং অডিও রেকর্ডিং এর সাহায্যে। এটা সাধারণত করা হয় হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের বা হাসপাতালের বাইরের রোগীদের(বাড়িতে) ক্ষেত্রে, যেখানে এপিলেপসি মনিটরিং ইউনিট, নার্স এবং অন্যান্য ব্যক্তি যারা পাকড় রোগীদের সেবাদানের জন্য প্রশিক্ষিত, উপস্থিতি আবশ্যক। হাসপাতালের বাইরের রোগীদের চলনশীল ভিডিও সাধারণত তিনদিন সময় নেয়। এপিলেপসি মনিটরিং ইউনিট এ ভর্তি হলেসাধারণত কয়েকদিন লাগে কিন্তু এক সপ্তাহ বা বেশি ও লাগতে পারে।হাসপাতালে থাকাকালীন, পাকড় এর চিকিৎসা সাধারণত থামিয়ে দেয়া হয় যাতে পাকড় এর আধিক্য ভর্তির সময় বাড়ে। নিরাপত্তার জন্য ইইজি এর চিকিৎসা হাসপাতালের বাইরে থামিয়ে দেয়া হয় না। ইইজি এর গতিশীল ভিডিওর সুবিধা আছে এবং এটি কম ব্যয়বহুল হাসপাতালে ভর্তির থেকে, কিন্তু কোনো ক্লিনিকাল ঘটনার রেকর্ডিং কমে যাওয়া এটির একটি অসুবিধা।
সাধারণত মৃগীরোগ পর্যবেক্ষন করা হয় মৃগীরোগের পাকড় এবং অন্যান্য রোগ যেমন সাইকোজেনিক নন এপিলেপটিক সিযার, সিনকোপ, সাব কর্টিকাল মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার এবং বিভিন্ন ধরনের মাইগ্রেন পৃথক করার উদ্দেশ্যে, চিকিৎসার জন্য সিযার চিহ্নিত করা, মস্তিষ্কের যে এলাকা থেকে পাকড় উৎপন্ন হয় সে এলাকা নির্দিষ্ট করা, পাকড় এর সার্জারি জন্য।
ইইজি আরো ব্যবহার করা হয় অবচেতন অবস্থার গভীরতা নির্ণয় করার জন্য, ক্যারোটিড এনডারটেরেকটমি অবস্থায় মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন পরোক্ষ নির্দেশক হিসেবে, ওয়াডা টেস্ট এ এমোবার্বিটাল ইফেক্ট নির্ণয় করার জন্য ও ব্যবহৃত হয়।
ইইজি ইনটেন্সিভ কেয়ার ইউনিট এ ব্যবহার করা যায় মস্তিষ্কের কাজ নির্নয়ে যেখানে, খিচুনি ছাড়া পাকড় বা মৃগীরোগ নির্ণয় করা হয়, চিকিৎসাগত ভাবে ঘটানো কোমা রোগীর উপর ঘুমের ওষধ এবং চেতনানাশক এর প্রভাব নির্নয়ের জন্য ও ব্যবহৃত হয়, সাব এরাকনয়েড হিমোরেজ এর দরুন ঘটিত মস্তিষ্কের সেকেন্ডারি ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা যায়।
যদি একটি মৃগীরোগধারী রোগীকে নির্দিষ্ট সার্জারীর জন্য বিবেচিত করা হয়, তবে করোটি ইইজি যে রেজ্যুলিউশন দেয় তার থেকে বেশি রেজ্যুলিউশন দিয়ে মৃগীরোগীর মস্তিষ্কের গতিবিধির কেন্দ্র বা উৎস নির্দিষ্ট করার দরকার। কারণ সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড এবং মাথার খুলি ইইজি দ্বারা রেকর্ড করা বৈদ্যুতিক বিভব লেপন করে। এক্ষেত্রে নিউরোসার্জনরা সাধারণত ইলেক্ট্রোড এর স্ট্রিপস এবং গ্রিড, ড্যুরা ম্যাটার এর নিচে স্থাপন করেন, ক্রানিওটমি বা বার হোল এর মাধ্যমে। এই সংকেত এর রেকর্ডিং কে ইলেক্ট্রোকর্টিকোগ্রাফি বলে, সাবডিউরাল ইইজি বা ইনট্রাক্রানিয়াল ইইজি সব একই। ইকোজি থেকে রেকর্ডকৃত সংকেত, করোটি ইইজি থেকে রেকর্ডকৃত গতিবিধি থেকে ভিন্ন স্কেল এর। কম ভোল্টেজ, উচ্চ তরঙ্গের উপাদান যা করোটি ইইজিতে সহজে দেখা যায় না তা ইকোজি তে ভালো ভাবে দেখা যায়। এছাড়া ছোট ইলেকট্রোড নিম্ন ভোল্টেজ দেয়, যা মস্তিস্কের গতিবিধি দেখার জন্য দ্রুততম উপাদান। কিছু কিছু চিকিৎসার জায়গায় মাইক্রোইলেক্ট্রোড ঢূকিয়ে দেয়া হয়।
মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাম্প্রতিক গবেষণা যেমন নিউরাল নেটওয়ার্ক এর সাথে সাময়িক বৈশিষ্ট্য যা ফ্রন্টাল লোব থেকে নির্গত ইইজি মস্তিষ্ক তরঙ্গ এর তথ্য মানসিক অবস্থা, মানসিক আবেগপূর্ণ অবস্থা, থ্যালামোকর্টিকাল ডিসরিদমিয়া এর শ্রেনীবিভাগ করায় উচ্চ পর্যায়ের সাফল্য দেখিয়েছে।
ইইজি মাথা ব্যথা নির্নয়ের জন্য নির্দিষ্ট না। বারবার মাথাব্যাথা একটি সাধারণ সমস্যা এবং এই প্রকিয়া মাঝে মাঝে মাথাব্যাথা নির্নয়ের জন্য ব্যবহৃত হয় কিন্তু দৈনন্দিন রুটিন এ এর কোনো সুবিধা নেই।
গবেষণায় ব্যবহার
ইইজি এবং ই আর পি এর সংশ্লিষ্ট গবেষণা ব্যাপকভাবে স্নায়ুবিজ্ঞান, সংজ্ঞানাত্মক বিজ্ঞান, সংজ্ঞানাত্মক শারীরবিজ্ঞান, স্নায়ুভাষাবিজ্ঞান এবং মনোশারীরবৈজ্ঞানিক গবেষণাতে ব্যবহার করা হয়, কিন্তু মানুষ্য ক্রিয়া যেমন গ্রাসকরা গবেষণায় ও ব্যবহার হয়। অনেক ইইজি টেকনিক যা গবেষণায় ব্যবহার করা হয় তা ক্লিনিকাল ব্যবহার এর জন্য পর্যাপ্ত প্রমিত নয়। কিন্তু মানসিক বিকলতার গবেষণায়, যেমন অডিটরি প্রসেসিং ডিসঅর্ডার (APD), ADD বা ADHD বেশি ব্যাপকভাবে পরিচিত এবং ইইজি ব্যবহার করা হয় গবেষণা এবং চিকিৎসায়।
সুবিধাসমূহ
মস্তিষ্কের বিদ্যমান কার্যক্রম গবেষণার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে যেমন ফাংশনাল ম্যাগনেটিক রেজোনেন্স ইমেজিং(fMRI),পজিট্রন ইমিশন টোমোগ্রাফি(PET),ম্যাগনেটোএন্সেফালোগ্রাফিই(MEG), নিউক্লিয়ার ম্যাগনেটিক রেজোনেন্স স্পেকট্রোগ্রাফি(NMR or MRS), ইলেক্ট্রোকর্টিকোগ্রাফি(ECoG), সিংগেল ফোটোন ইমিশন কম্পিউটেড টোমোগ্রাফি(SPECT),নিয়ার ইনফ্রারেড স্পেক্ট্রোস্কপি(NIRS) এবং ইভেন্ট রিলেটেড অপটিকাল সিগনাল(EROS)। ইইজি এর স্থান সংক্রান্ত সংবেদনশীলতা কম হওয়া সত্ত্বেও, এটিতে উপর্যুক্ত প্রযুক্তির তুলনায় নিম্নোক্ত সুবিধা গুলো পাওয়া যায়ঃ
- অন্যান্য প্রযুক্তির তুলনায় হার্ডওয়্যর এর খরচ উল্লেখ্যযোগ্যভাবে কম।
- বেশি ভিড়যুক্ত হাসপাতাল এ প্রযুক্তিবিদ এর অভাব প্রতিরোধ করে।
- ইইজি সেন্সর সাধারণত fMRI,SPECT, PET, MRS or MEG, থেকে বেশি ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়,যেহেতু এই পদ্ধতি গুলোতে ভারী এবং অচল উপকরন ব্যবহৃত হয়।
- ইইজিতে উচ্চ সাময়িক রেজুলেশন রয়েছে, যা মিলিসেকেন্ডেই কাজ করে।ক্লিনিকাল এবং গবেষণার কাজে স্যামপ্লিং রেটে ইইজি সাধারণত ২৫০ এবং ২০০০ হার্জ পরিসরে রেকর্ড করা হয়, কিন্তু আধুনিক ইইজি স্যামপ্লিং রেটে ডাটা সংগ্রহ ২০০০০ হার্জ এর উপরে করতে সক্ষম।
- অন্যান্য নিউরোইমেজিং প্রযুক্তির মত,বস্তুর নড়াচড়ায় ইইজিতে কোনো সমস্যা হয় না,।
- ইইজি শব্দহীন, যা অডিটরি উদ্দিপনার সাড়াদান ভালো করে গবেষণার অনুমোদন করে।
- fMRI, PET, MRS, SPECT এবং MEG এর মত ইইজি ক্লসট্রোফোবিয়া বৃদ্ধি করে না।
- পজিট্রন ইমিশন টোমোগ্রাফির মত ইইজি রেডিওলিগান্ড উদ্ঘাটন করায় যুক্ত না।
- ইলেক্ট্রোকর্টিকোগ্রাফির মত এটি অক্ষতিকর।
অসুবিধাসমূহ
- করোটিতে স্থান সংক্রান্ত রেজুলেশন নিম্ন। উদাহরনস্বরুপ fMRI তে মস্তিষ্কের সচল এলাকা সরাসরি প্রদর্শন করে, যেখানে ইইজি তে তীব্র ইন্টারপ্রিটেশন দরকার, যাতে নির্দিষ্ট এলাকা কোন নির্দিষ্ট সাড়া দানে সক্রিয় হয় তা সংবেশিত করতে পারে।
- ইইজি কর্টেক্স এর নিউরাল গতিবিধি ভালোভাবে পরিমাপ করতে পারে না
- PET এবং MRS এর মত এটি বিভিন্ন নিউরোট্রান্সমিটার এবং ড্রাগ এর নির্দিষ্ট জায়গা চিহ্নিত করতে পারে না।
- মাঝে মাঝে বস্তুর সাথে যুক্ত হতে অনেকটা সময় নেয়।
অন্যান্য নিউরোইমেজিং প্রযুক্তির সাথে
সমকালীন ইইজি রেকর্ডিং এবং এফ এম আর আই স্ক্যান সফলভাবে অর্জন করা হয়েছে, যদিও একই সময়ে দুটোর রেকর্ডিং এ কার্যকরভাবে বিভিন্ন যান্ত্রিক অসুবিধা অতিক্রম করা প্রয়োজন, যেমন ব্যালিস্টোকার্ডিওগ্রাফিক আর্টিফ্যাক্ট,এম আর আই পালস আর্টিফ্যাক্ট এবং ইইজি তারে বৈদ্যুতিক প্রবাহের আবেশন যা এম আর আই এর শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্রের সাথে অবস্থান পরিবর্তন করে। চ্যালেঞ্জ করার পরও এগুলো গবেষোনার দ্বারা সফলভাবে অতিক্রম করা হয়েছে।
একইভাবে এম ই জী এবং ইইজি এর এককালীন রেকর্ডিং পরিচালিত করা হয়, যার বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে -
- ইইজি তে সঠিক তথ্য দরকার হয় করোটির নির্দিষ্ট আকৃতি সম্পর্কে, যেমন করোটির ব্যাসার্ধ এবং করোটির বিভিন্ন স্থানের পরিবাহীতা, এম ই জি তে এই ধরনের কোনো সমস্যা নেই।
- এম ই জি এবং ইইজি উভয়ই কর্টেক্স এর নিচের গতিবিধি ভালো করে নির্ণয় করতে পারে না, কর্টেক্স এর যত নিচে যাওয়া যায় ভু্লের পরিমাণ তত বাড়ে।
সম্প্রতি, উৎস পুনর্গঠন কর মৃগীরোগ নির্নয়ের জন্য একটি মিলিত ইইজি/এম ই জি (ই এম ই জি) গবেষণার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ইইজি, পজিট্রন টোমোগ্রাফি এর সাথেও মিলিত করা হয়েছে। এটি গবেষণাকারী দের কিছু সুবিধা প্রদান করে যেমন বিভিন্ন ওষুধের জন্য মস্তিষ্কে কি গতিবিধি হয়, এবং ইইজি কেমন পাঠ দেয়।
যন্ত্র নির্মান পদ্ধতি
মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক চার্জ কয়েক বিলিয়ন নিউরন দ্বারা রক্ষনাবেক্ষন করা হয়। নিউরনগুলো সাধারণত মেমব্রেন ট্রান্সপোর্ট প্রোটিন দ্বারা বৈদ্যুতিকভাবে চার্জড। নিউরনগুলো প্রতিনিয়ত কোষের বাইরের পরিবেশের সাথে আয়ন আদান প্রদান করে। একই চার্জের আয়ন একে অপরকে বিকর্ষন করে, এবং যখন একই সময়ে অনেক নিউরন থেকে অনেক আয়ন বের হয়, তখন এরা পাশের আয়নকে ধাক্কা দেয়,এগুলো তাদের পাশের আয়নকে কে ধাক্কা দেয় এবং এভাবে তরঙ্গ আকারে যায়। এই অবস্থাকে আয়তনিক সঞ্চালন বলে। যখন আয়নের তরঙ্গ করোটিতে পৌছায়, তারা ইলেক্ট্রোড এর ধাতুতে ইলেক্ট্রন দিতে বা নিতে পারে। যেহেতু ধাতু সহজেই ইলেক্ট্রন দেয়া নেয়া করতে পারে, কোনো দুইটি ইলেক্ট্রোড এর মধ্যে এই ইলেক্ট্রন দেয়া নেয়ার ভোল্টেজ এর পার্থক্য ভোল্টমিটার দ্বারা পরিমাপ করা যায়। সময়ের সাথে এই ভোল্টেজ রেকর্ড করা হলে আমরা ইইজি পাই।
পৃথক নিউরন দ্বারা উৎপাদিত বৈদ্যুতিক বিভব ইইজি বা এম ই জি দ্বারা বাছাই করার জন্য যথেষ্ট ছোট। ইইজি সবসময় সক্রিয়ভাবে হাজার হাজার নিউরন এর সিনক্রোনাস গতিবিধির সমষ্টি নির্ণয় করে প্রদর্শন করে, যাদের স্থান সংক্রান্ত সজ্জা একই। ধারণা করা হয় বেশিরভাগক্ষেত্রে কর্টেক্স এর পিরামিডাল নিউরন ইইজি সিগনাল উৎপন্ন করে।
করোটিক ইইজি গতিবিধি বিভিন্ন কম্পাঙ্কের ওঠানামা প্রদর্শন করে। এই আন্দোলন একটি নিউরন নেটওয়ার্ক এর সিনক্রোনাইজড গতিবিধি প্রদর্শন করে।
পদ্ধতি
প্রচলিত করোটির ইইজিতে রেকর্ডিং নেয়া হয়, সাধারণত মৃত কোষ দ্বারা তৈরি ইম্পিডেন্স কমানোর জন্য করোটির এরিয়া কে আলোর ঘর্ষন দিয়ে তৈরি করে,
ইলেক্ট্রোড এর সাথে পরিবাহী জেল বা পেস্ট দিয়ে তা করোটিতে স্থাপন কর্। অনেক পদ্ধতিতে সাধারণত ইলেক্ট্রোড ব্যবহার করা হয়, যার প্রত্যেকটি একটি আলাদা নির্দিষ্ট তারের সাথে সংযুক্ত।ইলেক্ট্রোড এর উচ্চ ঘনত্বের বিন্যাস যখন দরকার তখন কোনো কোনো পদ্ধতিতে ক্যাপ এবং নেট ব্যবহার করা হয়।
ধারাবাহিক পুর্নাঙ্গ্তা
প্রতিটি চ্যানেল দুইটি সংলগ্ন ইলেক্ট্রোড এর পার্থক্য প্রদর্শন করে। পুরোটা এসব চ্যানেল এর ক্রম দ্বারা গঠিত।
নির্দেশক পুর্নাঙ্গতা
প্রতিটি চ্যানেল, একটি নির্দিষ্ট ইলেক্ট্রোড এবং মনোনীত নির্দেশক ইলেকট্রোড এর পার্থক্য প্রদর্শন করে।এই নির্দেশক এর জন্য কোনো নির্দিষ্ট মান নেই; এটা রেকর্ডিং ইলেক্ট্রোড থেকে এর মান ভিন্ন। মিডলাইন এর পজিশন সাধারণত ব্যবহার করা হয় কারণ তারা সিগনাল বিবর্ধিত করে না। যেমন Cz,Oz,Pz হল অনলাইন নির্দেশক। অন্যান্য পরিচিত অফলাইন নির্দেশকঃ
REST নির্দেশকঃ
যা একটি অফলাইন গননীয় নির্দেশক,অসীমে যার বিভব শুন্য। REST(reference electrode standardization technique) মস্তিষ্কে সমতুল্য উৎস দখল করে।
গড় নির্দেশক পুর্নাঙ্গতা
সব বিবর্ধকের আউটপুট, হিসাব এবং গড় করা হয় তারপর এই গড় করা সিগনাল প্রত্যেকটি চ্যানেলের জন্য সার্বজনীন গড় নির্দেশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ল্যাপ্লাশিয়ান পুর্নাঙ্গতা
প্রতিটি চ্যানেল একটি ইলেক্ট্রড এবং পাশের ইলেক্ট্রোড গুলোর ভর গড় করে তাদের মধ্যকার পার্থক্য প্রদর্শিত করে।
ইইজি সাধারণত পাঠ বা ব্যাখা করা হয় ক্লিনিকাল নিউরোফিজিওলজিস্ট বা নিউরো লজিস্ট দ্বারা,সুবিধাজনক ভাবে যাদের ইইজির সংকেত ব্যাখা করার জন্য নির্দিষ্ট প্রশিক্ষন রয়েছে তারা যেকোনো ক্লিনিক্যাল কাজে। এটা করা হয় তরংগের দৃষ্টিলব্ধ পরীক্ষা দ্বারা,যা গ্রাফোইলিমেন্টস নামে পরিচিত। ইইজি তে কম্পিউটার সিগন্যাল প্রসেসিং এর ব্যবহার- যাকে বলা হয় কোয়ান্টিটেটিভ ইইজি,কিছুটা বিতর্কমূলক(যদিও অনেক গবেষণার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়)।
শুষ্ক ইইজি ইলেক্ট্রোড
১৯৯০ শালের শুরুতে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়াতে, বাবাক তাহেরি, ডেভিস, প্রথম এবং মাল্টিচ্যানেল শুষ্ক চলিত ইলেক্ট্রোড শ্রেনীবিন্যাস মাইক্রো ম্যাশিনিং এর সাহায্যে প্রদর্শন করেন। একক চ্যানেল শুষ্ক ইইজি ইলেক্ট্রোড নির্মাণ এবং ফলাফল প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৯৪ সালে।সন্নিবেশিত ইলেক্ট্রোডগুলো সিল্ভার ইলেক্ট্রোড এর তুলনায় ভালো কাজ প্রদর্শন করে। এই ধরনের ইলেক্ট্রোড এর সুবিধা হলঃ ১। ইলেক্ট্রোলাইট এর দরকার হয় না ২। আবরন তৈরির প্রয়োজোন নেই ৩। সেন্সর এর আকার কম ৪। ইইজি পর্যবেক্ষন সিস্টেম এর সাথে সামঞ্জস্য রাখে। ড্রাই ইলেক্ট্রোড এর কর্মক্ষমতা ওয়েট ইলেক্ট্রোড তুলনায় ভালো।
১৯৯৯ সালের Case Western Reserve University, in Cleveland, Ohio যাদের লিডার ছিলো হান্টার পেকহাম, ৬৪ টা ইলেক্ট্রোড ইইজি স্কালক্যাপ ব্যবহার করে কোয়ারড্রিপ্লেজিক যুক্ত জিম জ্যাটিচ এর হাতের সল্প নড়াচড়ার উপর পর্যালোচনা চালানো হয়।
২০১৮ সালে পলিডাইমিথাইলসিলোক্সেন ইলাসটোমার দিয়ে তৈরি একটি ড্রাই ইলেক্ট্রোড রিপোর্ট করা হয় যা পরিবাহী কার্বন ন্যানোফাইবার দিয়ে ভরা। এই গবেষণা করা হয় U.S. Army Research Laboratory তে। ইইজি প্রযুক্তি তে স্কাল্প এ জেল লাগালে সিগনাল এর অনুপাত অনেক ভালো আসে। প্রাপ্ত ফলাফল বেশি গ্রহণযোগ্য। সবশেষে গবেষণা চালনো হয় ড্রাই এবং সেমিড্রাই ইইজি বায়োইলেক্ট্রনিক ইন্টারফেস উন্নত করার জন্য।
ড্রাই ইলেক্ট্রোড সিগনাল যান্ত্রিক যোগাযোগ এর উপর নির্ভর করে।কিছু কিছু ক্ষেত্রে জেল এর পরিবর্তে স্যালাইন ব্যবহৃত হয়। স্প্রিং লোডেড সেট আপ ও কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু এটা ক্ষতিকর হবে যদি রোগি আচমকা তা মাথা নাড়ায়।
ARL ভীজুয়ালাইজেশন টুল উন্নত করে,স্বনির্ধারিত লাইটিং ইন্টারফেস, ইইজি বা ক্লাইভ ভিজুয়ালাইজেশন এর জন্য,যা দুটি মস্তিষ্ক কত ভালো সময়ের সামঞ্জস্য করে তা দেখায়।
সীমাবদ্ধতা
ইইজির বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা আছে।সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল এটার স্থান সংক্রান্ত রেজুলেশন অনেক কম। ইইজি নির্দিষ্ট পোস্ট সিন্যাপটিক পটেনশিয়াল এর প্রতি সংবেদনশীল, এরা কর্টেক্স এর সুপারফিসিয়াল স্তরে তৈরি হয়।ডেনড্রাইট, যা কর্টেক্স এর ভিতরে অবস্থিত,ইইজি এর সিগনাল এর ক্ষেত্রে এর অবদান কম।
ইইজি রেকর্ডিং সরাসরি এক্সনাল একশন পটেনশিয়াল গ্রহণ করে।একটি একশন পটেনশিয়াল সঠিকভাবে কারেন্ট কোয়াড্রূপল এর মত প্রদর্শন করা যায়।এর সাথে যেহেতু ইইজি হাজার এর ও বেশি নিউরিন এর গড় প্রদর্শন করে, বেশি পরিমানের কোষের সময়ের সাথে সামঞ্জস্য বজায় রাখা জরুরি,যাতে রেকর্ডিং এর অর্থপুর্ন বিনিময় করা যায়।
একটি নির্দিষ্ট ইইজি সিগনালের একক ইন্ট্রাক্রেনিয়াল কারেন্ট কে পুনর্গঠন করা ম্যাথম্যাটিকাল্লি অসম্ভব।এটি একটি বিপরীত প্রকিয়া। একটি নির্দিষ্ট ইলেক্ট্রিক ডাইপোল যা কারেন্ট রেকর্ড প্রদর্শন করে এবং ভালো গণনা করে, তা তৈরি করতে যথেষ্ট কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ইইজি বনাম এফ এম আর আই , এফ এন আই আর এস এবং পি ই টি
ইইজির অনেক দৃঢ় আলোচ্য বিষয় আছে মস্তিষ্কের গতিবিধি বিশ্লেষন করার যন্ত্র হিসেবে।
ইইজি বনাম এম ই জি
ইইজি
সাধারণ কার্যকলাপ
ইইজি পটিসমূহের তুলনা
ব্যান্ড | কম্পাঙ্ক (Hz) | অবস্থান | স্বভাবত | রোগতাত্ত্বিকভাবে |
---|---|---|---|---|
ডেল্টা | <৪ | বয়স্কদের সামনের দিকে, বাচ্চাদের পিছনের দিকে ; উচ্চ বিস্তার এর তরঙ্গ |
|
|
থিটা | ৪-৭ | হাত পৌছাতে পারেনা এমন জায়গায় পাওয়া যায় |
|
|
আল্পফা | ৮-১৫ | মাথার পিছনের দিকে, উভয়দিকে, প্রধান পাশে বেশি বিস্তারিত,বিশ্রামের সময় কেন্দ্রে অবস্থান করে। |
|
|
বিটা | ১৬-৩১ | উভয় পাশে, প্রতিসম বণ্টন, সামনের দিকে বেশি স্পষ্ট, কম বিস্তারিত তরঙ্গ |
|
|
গামা | >৩২ | সোমাটোসেন্সরি কর্টেক্স |
|
|
মিউ | ৮-১২ | সেন্সরিমোটর কর্টেক্স |
|
মিউ এর উপস্থিতি নির্দেশ করে মোটর মিরর নিউরন কাজ করছে। মিউ এর ঘাটতি যা মোটর মিরর নিউরন এর ঘাটতি, এর ফলে অটিজম ঘটতে পারে। |
ইইজি কম্পাঙ্ক ব্যান্ডঃ
সংশোধিত সীমানির্দেশ
ব্যান্ড | কম্পাঙ্ক |
---|---|
ডেল্টা | <৪ |
থিটা | >৪ এবং <৮ |
আলফা | >৮ এবং <১৪ |
বিটা | >১৪ |
তরঙ্গের নমুনা
- ডেল্টা ৪ হার্জ পরিসরের কম্পাঙ্ক। ধারণা করা হয় এটি বিস্তারে সর্বোচ্চ এবং ধীর গতির তরঙ্গ। বয়স্কদের ধীর তরঙ্গ ঘুমের মধ্যে সাধারণত এটি দেখা যায়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও দেখা যায়। এটি সাবকর্টিকাল ক্ষতর ক্ষেত্রে,বিস্তৃত ক্ষতের ক্ষেত্রে,মেটাবোলিকত এনসেফালোপ্যাথি হাইড্রোসেফালা,গভীর মিডলাইন ক্ষত এর ক্ষেত্রে দেখা যায়।এটি বয়ষ্কদের সামনের দিকে লক্ষনীয়।
- থিটা ৪-৭ হার্জ পরিসরের কম্পাঙ্ক। এটি সাধারণত ছোট বাচ্চাদের বেশি পরিমাণ থাকে,কিশোর এবং বয়স্কদের তন্দ্রাভাব কালীন, অলসতায়,যেকোনো সাড়া প্রকাশ করায় বাধা প্রদানের সাথে যুক্ত,ধ্যানকালীন। বেশি পরিমাণ থিটা অস্বাভাবিক গতিবিধি দেখায়।কেন্দ্রীয় সাবকর্টিকাল ক্ষত,বিপাকীয় এনসেফালোপ্যাথি,গভীর মিডলাইন ব্যাধি,হাইড্রোসেফালাস এর জরুরি অবস্থায় এটি দেখা যায়।
- আলফা ৭-১৩ পরিসরের কম্পাঙ্ক। হ্যানস বার্গার প্রথম যে ইইজি গতিবিধি পর্যবেক্ষন করেন তার নাম দেন 'আলফা তরঙ্গ। এটা ছিলো পোস্টেরিয়র ব্যাসিক রিদম। যা পাওয়া যায় মাথার পিছনের দিকে, উভয়দিকে, প্রধান পাশে বেশি বিস্তারিত,বিশ্রামের সময় কেন্দ্রে অবস্থান করে।চোখ বন্ধ থাকাকালীন দেখা যায় যার উচ্চ বিস্তার রয়েছে। বাচ্চাদের পোস্টেরিয়র ব্যাসিক রিদম ৮ হার্য এর কম থাকে। এতে মিউ রিদম ও আছে। এরা নির্গত হয় যখন হাত এবং বাহু নিষ্ক্রিয় থাকে। আলফা অস্বাভাভিক হতে পারে যেমন আলফা কোমা ঘটাতে পারে।
নিদর্শন
জীববিজ্ঞাসংক্রান্ত নিদর্শন
বৈদ্যুতিক সিগনাল যা করোটির ইইজি থেকে শনাক্ত করা হয়,কিন্তু উৎপন্ন হয় নন সেরেব্রাল উৎস তে, এদের বলা হয় আর্টিফ্যাক্ট। ইইজি ডাটা এঈ ধরনের আর্টিফ্যাক্ট দ্বারা প্রায়ই আক্রমণ হয় এবং নষ্ট হয়।
বায়োলজিক্যাল আর্টিফ্যাক্ট এ থাকেঃ
- চোখ প্রনোদিত আর্টিফ্যাক্ট
- ECG
- EMG
- গ্লসোকাইনেটিক আর্টিফ্যাক্ট
পরিবেশগত নিদর্শন
শরীরের ভিতর ছাড়া বাইরেও আর্টিফ্যাক্ট তৈরি হয়।রোগীর চলাচল, ইলেক্ট্রোড স্থাপন, এর ফলে।
নিদর্শন সংশোধন
ইইজির ডাটার দূষন দূর করার জন্য independent component analysis (ICA) পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতে কিছু ভিত্তিযুক্ত উপাদানের সংখ্যার সাথে যুক্ত করা হয় ইইজি সিগনাল কে।
অস্বাভাবিক গতিবিধি
অস্বাভাবিক গতিবিধি কে দুইভাগে ভাগ করা যায়, এপিলেটিফর্ম এবং নন এপিলেপটিফর্ম। একে আরো দুইভাগে ভাগ করা যায়, কেন্দ্রীয় বা বিস্তারিত।
কেন্দ্রীয় এপিলেপটিফর্ম নির্গমন তাড়াতাড়ি প্রদর্শিত হয়, অনেক সংখ্যাক নিউরনে সিঙ্ক্রোনাস বিভব মস্তিষ্কের এলাকা কে বিযুক্ত করে।এটা হতে পারে ইন্টেরিকটাল গতিবিধি হিসেবে, পাকড় এর মধ্যে, কর্টিকাল ইরিটাবিলিটি যা মৃগীরোগের পাকড় উৎপন্ন করে।
দুরবর্তী যোগাযোগ
The United States Army Research Office ২০০৯ সালে ৪ মিলিয়ন ডলার বাজেট করে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়াতে গবেষণার জন্য।ইইজি সিগনাল সহ আরো অন্যন্য বিষয় উন্নতির জন্য।
অর্থনীতি
সস্তা ইইজি যন্ত্র কম খরচের গবেষণা এবং ভোক্তা মার্কেট এর জন্য থাকে।
- ২০০৪ সালে
- ২০০৭ সালে
- ২০০৮ সালে
- ২০০৮ সালে
- ২০০৯ সালে
- ২০০৯ সালে
- ২০০৯ সালে
- ২০১০ সালে
- ২০১১ সালে
- ২০১২ সালে
- ২০১৪ সালে
- ২০১৫ সালে
- ২০১৫ সালে
ভবিষ্যৎ গবেষণা
ইইজি ক্লিনিকাল গতানুগতিক রোগনির্ণয় এবং গতানুগতিক সংজ্ঞানাত্মক স্নায়ুবিজ্ঞান-সহ আরও অন্যান্য উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়।
যেসব ওষুধ মস্তিষ্কের কার্যকলাপে বাধা দেয়, সেসবের সাথে ইইজি রদবদল করা হয়েছে। বার্গারের প্রথম গবেষণা ইইজিতে ওষুধের প্রভাব লিপিবদ্ধ করে। ফার্মাকো- ইলেক্ট্রোএন্সেফালোগ্রাফি কিছু পদ্ধতি উন্নিত করেছে যাতে মস্তিষ্কের কার্যকলাপ এ ব্যাঘাত ঘটানো পদার্থ চিহ্নিত করা যায়।
হোন্ডা এমন একটি অপারেটর পদ্ধতি চালু করার চেষ্টায় আছে যা দ্বারা তাদের আসিমো রোবটটিকে ইইজি ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ করবে।
ভারতের মহারাষ্ট্রতে ইইজি অপরাধির বিরুদ্ধে প্রমাণ যোগাড় করায় ব্যবহৃত হয়।
তথ্যসূত্র
- Niedermeyer E.; da Silva F.L. (২০০৪)। Electroencephalography: Basic Principles, Clinical Applications, and Related Fields। Lippincott Williams & Wilkins। আইএসবিএন 978-0-7817-5126-1।
- Coenen, Anton; Edward Fine; Oksana Zayachkivska (২০১৪)। "Adolf Beck: A Forgotten Pioneer In Electroencephalography"। Journal of the History of the Neurosciences। 23 (3): 276–286। এসটুসিআইডি 205664545। ডিওআই:10.1080/0964704x.2013.867600। পিএমআইডি 24735457।
- Jiang, Linxing Preston; Stocco, Andrea; Losey, Darby M.; Abernethy, Justin A.; Prat, Chantel S.; Rao, Rajesh P. N. (২০১৯)। "BrainNet: A Multi-Person Brain-to-Brain Interface for Direct Collaboration Between Brains"। Scientific Reports। 9 (1): 6115। arXiv:1809.08632 । আইএসএসএন 2045-2322। ডিওআই:10.1038/s41598-019-41895-7 । পিএমআইডি 30992474। পিএমসি 6467884 । বিবকোড:2019NatSR...9.6115J।