বেলায়েত হুসাইন

বেলায়েত হুসাইন (১৯১০ — ২০১৭) ছিলেন একজন বাংলাদেশি ইসলামি পণ্ডিত, হানাফি সুন্নি আলেম, কারী, শিক্ষাবিদ এবং গবেষক। তিনি নূরানী শিক্ষা পদ্ধতির আবিষ্কারক এবং নূরানী তালিমুল কুরআন বোর্ড বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা। এছাড়াও তিনি কয়েকটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেছেন।[1][2][3][4][5]

শায়খুল কুরআন, কারী

বেলায়েত হুসাইন
সভাপতি, নূরানী তালিমুল কুরআন বোর্ড বাংলাদেশ
অফিসে
১৯৮৪  ২০১৭
অধ্যক্ষ, জামিয়া আরাবিয়া কাসেমুল উলুম জাফরাবাদ
অফিসে
১৯৪৮  ১৯৫৫
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম১৯১০
মৃত্যু২৪ জুন ২০১৭
সমাধিস্থলনূরানী তালিমুল কুরআন মাদ্রাসা, চাঁদপুর
ধর্মইসলাম
জাতীয়তাবাংলাদেশী
পিতামাতা
  • আব্দুল জলীল (পিতা)
  • সাইয়েদা খাতুন (মাতা)
জাতিসত্তাবাঙালি
যুগবিংশ শতাব্দী
আখ্যাসুন্নি
ব্যবহারশাস্ত্রহানাফি
আন্দোলনদেওবন্দি
প্রধান আগ্রহকুরআন গবেষণা
উল্লেখযোগ্য ধারণানূরানী শিক্ষা পদ্ধতি
যেখানের শিক্ষার্থী
  • বড় কাটারা মাদ্রাসা, ঢাকা
ঊর্ধ্বতন পদ
যাদের প্রভাবিত করেন
  • বর্তমান আলেম সমাজ

জন্ম ও বংশ

বেলায়েত হুসাইন ১৯১০ সালে চাঁদপুর জেলার অন্তর্গত শাহারাস্তি উপজেলার সূচীপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের কৃষ্ণপুরের (বর্তমানে বেলায়েত নগর) এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মুনশী আব্দুল জলীল এবং মা সাইয়েদা খাতুন। তিন বছর বয়সে তার বাবা মারা যান এবং ছয় বছর বয়সে তার মা মারা যান।[6]

শিক্ষা জীবন

তিনি ফরিদগঞ্জের বারোপাইকা মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। তারপর পার্শ্ববর্তী ইসলামিয়া মাদ্রাসায় মাধ্যমিক পড়াশোনা সমাপ্ত করেন। ১৯৪৬ সালে ঢাকার জামিয়া হোসাইনিয়া আশরাফুল উলুম বড় কাটারা মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সমাপ্ত করেন। এখানে তার শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছে: শামসুল হক ফরিদপুরী, মোহাম্মদ উল্লাহ হাফেজ্জী সহ প্রমুখ।[6]

কর্ম জীবন

শামসুল হক ফরিদপুরীর পরামর্শে তিনি জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম খাদেমুল ইসলাম গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি জামিয়া আরাবিয়া কাসেমুল উলুম জাফরাবাদ মাদ্রাসার মুহতামিমের (অধ্যক্ষ) দায়িত্ব পান। দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি এটিকে দাওরায়ে হাদিসে (মাস্টার্স) উন্নীত করেন। এছাড়াও তিনি ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়ার সহ-প্রতিষ্ঠাতা।[6]

তিনি প্রায় ৬০ বছর গবেষণা করে “নূরানী শিক্ষা পদ্ধতি” আবিষ্কার করেন।[7]

মোহাম্মদ উল্লাহ হাফেজ্জীর পরামর্শে ১৯৮১ সালে তিনি ঢাকায় নূরানী কেন্দ্রের কাজ শুরু করেন এবং ১৯৮৪ সালে নূরানী তালিমুল কুরআন বোর্ড বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এই বোর্ডের সভাপতি ছিলেন।[8]

চাঁদপুরে নূরানী তালিমুল কুরআন মাদ্রাসা সহ বেশ কয়েকটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেছেন।[8]

তাকে মরণোত্তর শায়খুল কুরআন উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে।[6]

মৃত্যু

২০১২ সাল থেকে ব্রেন স্ট্রোক ও বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন। ২০১৭ সালের ২৪ জুন ঢাকার মোহাম্মদপুরের নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন।[9] তারাবীর নামাযের পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। চাঁদপুরে তার প্রতিষ্ঠিত নূরানী তালিমুল কুরআন মাদ্রাসা সংলগ্ন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।[8]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. ড. রফিক আহমদ, প্রফেসর (২৫ নভেম্বর ২০১৯)। "ইসলামের মৌলিক শিক্ষার প্রসারে ফুরকানিয়া মাদরাসার অবদান"কালের কণ্ঠ
  2. ডেস্ক, ইনকিলাব (২৫ জুন ২০১৭)। "দেশবরেণ্য আলমে দ্বীন মাওলানা ক্বারী বেলায়েত হুসেন এর ইন্তেকাল"দৈনিক ইনকিলাব
  3. "প্রখ্যাত ক্বারী বেলায়েত হোসেন আর নেই"বাংলা ট্রিবিউন। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৬
  4. "নূরানী তা.লিমুল কুরআন বোর্ডের কেন্দ্রীয় পরীক্ষা"দৈনিক আমাদের সময়। ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৬ www.amadershomoy.com-এর মাধ্যমে।
  5. "নূরানী তা'লিমুল কুরআন বোর্ডের ফল প্রকাশ"দৈনিক যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৬
  6. "শায়খুল কুরআন আল্লামা ক্বারী বেলায়েত হুসাইন (রহঃ) এর পরিচিতি, নূরানী তালীমুল কুরআন বোর্ড বাংলাদেশ"nooraniboard.com। ২০২০-০২-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৬
  7. "নূরানী পদ্ধতী, নূরানী তালীমুল কুরআন বোর্ড বাংলাদেশ"nooraniboard.com। ২০২০-০২-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৬
  8. তায়্যিব, মুহাম্মাদ তাওহীদুল ইসলাম (জানুয়ারি ২০২০)। "কুরআনের খেদমতে নিবেদিতপ্রাণ মনীষী-১ : হযরত মাওলানা কারী বেলায়েত হুসাইন রাহ."মাসিক আলকাউসার
  9. "প্রখ্যাত ক্বারী বেলায়েত হোসেন আর নেই | banglatribune.com"বাংলা ট্রিবিউন। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৬

গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.