বুদাপেস্ট ওপেন অ্যাক্সেস ইনিশিয়েটিভ

বুদাপেস্ট ওপেন অ্যাক্সেস ইনিশিয়েটিভ (বিওএআই) গবেষণা সাহিত্যে উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার বিষয়ক প্রণীত নীতিমালার একটি উন্মুক্ত বিবৃতি।[1] ২০০২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি এটি সর্বসাধারণের জন্য প্রকাশিত হয়।[2] ২০০১ সালের ১-২ ডিসেম্বর বুদাপেস্টে ওপেন সোসাইটি ইনস্টিটিউট কর্তৃক আয়োজিত একটি সভায় উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার বা ফ্রি অনলাইন স্কলারশিপ-কে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে এই প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়।[3][4] স্বল্প পরিসরে আয়োজিত এই সভায় উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার আন্দোলনের বড় ধরনের অগ্রগতি সাধন হয়েছিল।[1] ২০১২ সালে, উদ্যোগ গ্রহণের দশম বার্ষিকীতে এ-সংক্রান্ত নীতিগুলি পুনর্ব্যক্ত করা হয় এবং সম্পূরক সুপারিশ হিসাবে যোগ করা হয়, "আমাদের নতুন লক্ষ্য, আগামি ১০ বছরের মধ্যে প্রতিটি দেশে, প্রতিটি ক্ষেত্রে পর্যালোচিত গবেষণাকর্ম বিতরণের সময় উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার সাধারণ পন্থা হিসাবে বিবেচিত হবে।"[5][6]

২০০১ সালের ১ ডিসেম্বর বুদাপেস্টের সভায় অংশগ্রহণকারীরা
২০১২ সালে বুদাপেস্ট ওপেন অ্যাক্সেস ইনিশিয়েটিভ-এর ১০ম বার্ষিকী উপলক্ষে তৈরিকৃত লোগো, যাতে বুদাপেস্টে অবস্থিত শেনচেনয়ি সেতু দৃশ্যমান।

উদ্যোগ

বুদাপেস্ট ওপেন অ্যাক্সেস ইনিশিয়েটিভের উদ্বোধনী বাক্যে এর অন্তর্নিহিত সম্ভাবনা ও তাৎপর্য বিদ্যমান:

জনস্বার্থে প্রাচীন ঐতিহ্য এবং আধুনিক প্রযুক্তির এ এক অভূতপূর্ব সম্মিলন। এক্ষেত্রে প্রাচীন ঐতিহ্য হল জ্ঞান বিতরণ ও জ্ঞান অনুসন্ধানের স্বার্থে, সাময়িকীতে প্রকাশিত পাণ্ডিত্যপূর্ণ গবেষণাকর্মের ফলাফল বিনা পারিশ্রমিকে প্রকাশের সদিচ্ছা। আর আধুনিক প্রযুক্তি হলো ইন্টারনেট। এর মাধ্যমে সারা বিশ্বের বিজ্ঞানী, পণ্ডিত, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অন্যান্য অনুসন্ধিৎসু মানুষ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে পর্যালোচনাকৃত গবেষণাকর্মগুলোর ইলেকট্রনিক সংস্করণে অবাধে প্রবেশ করতে পারছেন।

বুদাপেস্ট ওপেন অ্যাক্সেস ইনিশিয়েটিভ[7]

উন্মুক্ত প্রবেশাধিকারের সংজ্ঞা

এই ডকুমেন্টটিতে উন্মুক্ত প্রবেশাধিকারের সার্বজনীন সংজ্ঞা নির্ধারিত করা হয়েছে, যা প্রথম প্রকাশের ১০ বছর পর পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

এক্ষেত্রে "উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার" বলতে আমরা সার্বজনীন ইন্টারনেটে বিনামূল্যে প্রাপ্যতাকে বুঝিয়েছি, যার মাধ্যমে যে কোনো ব্যবহারকারী এ সকল সার্বজনীন নিবন্ধ পড়া, ডাউনলোড করা, কপি করা, বিতরণ করা, প্রিন্ট করা, অনুসন্ধান করা, সূচিপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা, সফটওয়্যারে ডাটা হিসেবে যোগ করা এবং যে কোনো আইনসিদ্ধ কাজে ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। এজন্য তাদের কোনো অর্থনৈতিক, আইনি বা কারিগরি প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হবে না। কপিরাইটের বাধ্যবাধকতা হিসেবে শুধু শর্ত থাকবে, নিবন্ধের সর্বস্বত্ব রচয়িতা কর্তৃক সংরক্ষিত এবং গবেষণাকর্ম পুনঃপ্রকাশ ও বিতরণের ক্ষেত্রে প্রণেতার নাম যথাযথভাবে উল্লেখ ও স্বীকার করতে হবে।

স্বাক্ষরকারী

উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার আন্দোলনের প্রথম দিকের ১৬ জন নেতা বুদাপেস্ট ওপেন অ্যাক্সেস ইনিশিয়েটিভে স্বাক্ষর করেছিলেন: এদের মধ্যে ছিলেন বায়োলাইন ইন্টারন্যাশনালের লেসলি চ্যান, ওপেন সোসাইটি ইনস্টিটিউটের দারিয়ুস কাপলিন্সকাস, মেলিসা হ্যাংগারমেন, রিমা কাপ্রাইট এবং ইস্তভ্যান র‍্যাভ; পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সের মাইকেল অ্যাইসেন, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ফ্রেড ফ্রেন্ড, নেক্সট পেজ ফাউন্ডেশনের ইয়ানা জেনোভা, ইউনিভার্সিটি দ্য মন্ট্রিঅলের জাঁ-ক্লদ গুয়েডন, ইউনিভার্সিটি অব সাউদাম্পটনের স্টিভেন হার্নাড, স্কলারলি পাবলিশিং অ্যান্ড অ্যাকাডেমিক রিসার্চেস কোয়ালিশন (স্পার্ক)-এর রিক জনসন; ইলেকট্রনিক সোসাইটি ফর সোশ্যাল সায়েন্টিস্টের ম্যানফ্রেডি লা মাননা; ইলেকট্রনিক ইনফরমেশন ফর লাইব্রেরিসের প্রজেক্ট কনসালট্যান্ট মনিকা সেগবার্ট; মিউজিক কানাডার ইনফরমেটিক্স ডিরেক্টর সিডনি ডি সুজা, ইয়ারলহাম কলেজের দর্শনতত্ত্বের অধ্যাপক ও বায়োলাইন ইন্টারন্যাশনালের পিটার সুবার এবং বায়োমেড সেন্ট্রালের জ্যান ভ্যালটেরপ[3][8]

২০০২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, জনসাধারণের স্বাক্ষরের জন্য বিওএআইয়ের একটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। ২০১৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৫৯৩২ জনের অধিক ব্যক্তি ও ৮৩৭ টির অধিক প্রতিষ্ঠান এতে স্বাক্ষর করেছে।[9]

তহবিল

উদ্যোগটির পৃষ্ঠপোষক হিসাবে ওপেন সোসাইটি ইনস্টিটিউট প্রায় ৩ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেয়।[10]

তথ্যসূত্র

  1. "Budapest Open Access Initiative, FAQ"। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
  2. "Budapest Open Access Initiative | Read the Budapest Open Access Initiative"www.budapestopenaccessinitiative.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০১-২৭
  3. "Strategies for Preservation of and Open Access to Scientific Data in China ..."। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
  4. "Ten Years On, Researchers Embrace Open Access"। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
  5. "Ten years on from the Budapest Open Access Initiative: setting the default to open"। সেপ্টেম্বর ১১, ২০১২। সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ১২, ২০১২
  6. "BOAI"। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
  7. "Read the Budapest Open Access Initiative"www.budapestopenaccessinitiative.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১০-১৯
  8. "Budapest Open Access Initiative - Budapest Open Access Initiative"। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
  9. "View Signatures"Budapest Open Access Initiative
  10. Noble, Ivan (১৪ ফেব্রুয়ারি ২০০২)। "Boost for research paper access"BBC NewsLondon: BBC। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১২

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.