বিরাট রাজার ঢিবি

বিরাট রাজার ঢিবি বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের অবস্থিত একটি প্রাচীন স্থাপনা। এটি পরিচিত বিরাট নগর নামে। প্রাচীন কালে এটি দুর্গনগরী ছিল। এখানে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের সকল জেলাসহ সারাদেশ থেকে প্রতিবছর বৈশাখে মাসব্যাপী রাজা বিরাটের তীর্থ মেলায় হিন্দুধর্মের হাজার হাজার লোকজনের আসে। এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর তালিকাভুক্ত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা।

বিরাট রাজার ঢিবি
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
জেলাগাইবান্ধা জেলা
অবস্থান
অবস্থানগোবিন্দগঞ্জ উপজেলা
দেশবাংলাদেশ

অবস্থান

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার পশ্চিমে রাজাহার ইউনিয়নের বিরাট নগরীর প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন। বিরাট নগরের পশ্চিমাংশে প্রাচীনকীর্তির ধ্বংসাবশেষ এখন ঢিবিরূপে আছে।

বিবরণী

বিরাট নগরের পশ্চিমাংশে পাঁচটি ঢিবি আছে। এক একটি ঢিবি প্রায় এক বিঘা জমির উপর অবস্থিত। ১৯১০ সালে ১৯৫ ফুট × ১৫০ ফুট আয়তনে একটি মন্দিরের ভিত্তি দেয়াল খনন করার পরে এটি অবিষ্কৃত হয়েছিল। এখন থেকে পাঁচটি ব্রোঞ্জ নির্মিত বিষ্ণুমুর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে।[1] এখানে ১৯৭৮ সালে পাওয়া যায় সংস্কৃত অক্ষরে খোদাই করা 'নম: নম: বিরাট' লেখা ৯ ইঞ্চি দীর্ঘ মহামূল্যবান একটি শিলালিপি। এছাড়া কালো রঙের শিলা পাথর দ্বারা তৈরি হস্তি মস্তক পাওয়া গিয়েছিল যা এখন রাজশাহী যাদুঘরে ও সিংহদ্বারের একটি পাথরের খাম্বা মহাস্থান যাদুঘরে রয়েছে। এর উত্তরে একটি পুকুর আছে।[2]বিরাট নগরী হল হিন্দু পৌরাণিক উপাখ্যান মহাভারতের বর্ণনায় যে রাজা বিরাট তার নামে।তিনি বিরাট বনে এক উচ্চ ভূমিতে রাজবাড়ী ও নগর স্থাপন করেন তখন থেকে এর নাম বিরাট নগরী। তিনি তার রাজ্যে হাজার হাজার দীঘি-পুষ্করিনী খনন করে মাছ চাষ করতেন তাই 'মৎস্যরাজ বিরাট' নামে খ্যাত হয়েছিলেন।

সঠিক ইতিহাস

প্রাচীন ভারতবর্ষের মানচিত্র পর্যালোচনা করলে রাজা বিরাট এর রাজ্য মৎস্য দেশকে উত্তর ভারতের দিল্লি বা পাঞ্জাব, ভারত অংশে দেখা যায় যার পূর্ব দিক দিয়ে সরস্বতী নদী এবং পশ্চিম দিক দিয়ে যমুনা নদী (ভারত) প্রবাহিত । অর্থাৎ এই মৎস্য দেশ এবং মহাভারতের মৎস্য দেশের বর্ণনা মিলে যায় যার অবস্থান উত্তর ভারত এ । গাইবান্ধার যে অংশে এ নিদর্শন এর কথা বলা হয়েছে তার সাথে মহাভারতের বিরাট রাজার এবং পাণ্ডব বংশের কোন মিল নাই। এছাড়াও বরতমান বাংলাদেশ সেই সময়ে পুণ্ড্র, সুহমা এবং প্রাগ জ্য্যোতিষ রাজ্যের অন্তর্গত ছিল যার বর্ণনা মহাভারত এ ছিল। এত বিপুল পরিমাণ জায়গা ভ্রমণ করে পাণ্ডব দের বঙ্গ দেশে আসার কোন কারণ নেই। এখানে যেসব শিলালিপি বা মূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে তা স্থানীয় কোন রাজাদের ও সম্পত্তি হতে পারে। তাই এখানে যে তীর্থের ক্থা বলা হয়েছে তা আসলে কোন তীর্থস্থান নয়, স্থানীয় লোককথা মাত্র। তদুপরি, এখানে রাজা বিরাটের কোন প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ ও পাওয়া যায় নি। তাই এ স্থান লোককথা ছাড়া আর কিছুই নয়।

প্রাচীন ভারতের মানচিত্র

আরো পড়ুন

তথ্যসূত্র

  1. আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া লেখক; ঝিনুক প্রকাশনী; প্রশ্নোত্তরে বাঙলাদেশের প্রত্নকীর্তি (প্রথম খন্ড); ২০১০; পৃষ্ঠা- ১৪০, ISBN 984- 70112-0112-0
  2. http://archive.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMDlfMzBfMTNfM181N18xXzc1MjMz সোমবার ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৩
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.