বিরজা
বিরজা দেবী
বিরজা দেবী হলেন ওড়িশা বা শ্রীক্ষেত্রের অধিষ্ঠাত্রী দেবী । পীঠ নির্ণয় তন্ত্র মতে এখানে দেবীর নাভি পতিত হয়েছিল। বিরজা শক্তিপীঠটি ১০৮ শক্তিপীঠ( অষ্টাদশ মহাশক্তিপীঠ,[1] ৫১ মূল শক্তিপীঠ, ১৮ মহা শক্তিপীঠ ও ৪ আদি শক্তিপীঠ এর অন্তর্ভুক্ত। এটি একাদশ তম মহা শক্তিপীঠ। এটি জাজপুরএ অবস্থিত। পীঠনির্ণয়তন্ত্র তন্ত্রে বলা হচ্ছে, উৎকলে নাভিদেশস্ত বিরজা ক্ষেত্র মুচ্যতে । বিমলা সা দেবী জগন্নাথ স্তু ভৈরবঃ ।।[2]
আদ্যা স্তোত্রমের নবম স্তবকে এর উল্লেখ পাওয়া যায়। রামেশ্বরী সেতুবন্ধে বিমলা পুরুষোত্তমে | বিরজা ঔড্রদেশে চ কামাক্ষ্যা নীলপর্বতে || ৯||
বিরজা | |
---|---|
শক্তি;
সাহস, শান্তি, সময়, পরিবর্তন, সৃজন, ধ্বংস এবং ব্রহ্মাণ্ড | |
উৎসব | নবরাত্রি, দুর্গাপুজো |
সঙ্গী | জগন্নাথ, শিব |
প্রণাম মন্ত্র ॐ মাতঃ শ্রীবিরজাম্বিকে হরিহরব্রহ্মাদিভিঃ সংস্তুতে । ধাতুর্যজ্ঞ সমুদ্ভবে ত্রিজগতাং সৌভাগ্য-সম্পত্প্রদে ।। শ্রীপাদনত বৎসলে তনুভ্রতাং হৃতপদ্মসঞ্চারিনি। দীনোহং প্রণমামি পদ্মচরণে মাং পাহি বিশ্বেশ্বরি ।।
শাক্তমতে জগন্নাথ হলেন এঁর ভৈরব । বিরজা দেবী হলেন লক্ষ্মী বা শক্তির রূপ । বিরজা ও বিমলা আসলে একই শক্তিপীঠ এর দুটি রূপভেদ [3]।
জগন্নাথ হলেন বিষ্ণু । আসলে বিষ্ণু এবং শিব একই দেবতা। বেদে এনাকে পরমপুরুষ বলা হয়েছিল। যাঁর স্ত্রী হলেন হ্রী ( শক্তি ) বা শ্রী ( লক্ষ্মী) ।
আইকনোগ্রাফি
বিরজা দেবীর ধ্যান মন্ত্র: বিঘ্নেশ-নাগ-ভগ-লিঙ্গং বিধুন ললাটে ধৃতবসী সর্বজগতাং প্রকৃতি স্বমাদ্যা। ব্রহ্মাগ্নি যে নিখিলপাপহরে শরণ্যে মাতঃ প্রসীদ বিরজে পরিপাহি বিশ্বং ।।
এই ধ্যানমন্ত্র অনুসারে তিনি মস্তকে গণেশ , শিশ্ন, যোনি এবং নাগ ধারণ করেন । তিনি ডান হাতে ত্রিশূল ধারণ করেছেন যা মহিষের বক্ষস্থল বিদীর্ণ করেছে । মহিষের বক্ষস্থল থেকে বিগলিত রক্তধারা মাটিতে পড়ছে। তিনি বামপদ দিয়ে মহিষকে মর্দন করছেন।
প্রথা
ইনি কৃপাময়ী জগতজননী জগন্নাথ এর সহধর্মিনী। কোন কোন স্থানে বিমলা এবং বিরজা দেবীকে একই রূপ বলা হয়। কিন্ত এই দুটি আদিশক্তির দুটি ভিন্ন রূপ । অনেকে বিরজাদেবীর ভৈরব হিসেবে যজ্ঞ বরাহের নাম করেন । বিরজা দেবীর মন্দিরে নবরাত্রের সময় বলি হয় ।
শ্রীচৈতন্যের প্রভাব
শ্রীচৈতন্য বৈষ্ণব মার্গের অন্যতম প্রবর্তক হলেও বিরজা দেবীর মন্দিরে শাক্তমত ও তন্ত্রাচারে কোন বাধা প্রদান করেননি । তাই এখনও বিষ্ণু দরবারের বিরজা মন্দিরে পশুবলি হয়। তিনি সকল মার্গকেই সম্মান করতেন । এর কারণ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর মামাবাড়ী ছিল শাক্ত পরিবার ।
তথ্যসূত্র
- Ashtadasa Shakti Peethas and Rahasya and mahimas। KS Omniscriptum Publishing। ২০২১। আইএসবিএন 9786200626400।
- Raja Gope (২০১৭)। Devi Pith Tantra। পৃষ্ঠা 98।
- সাপ্তাহিক বর্তমান। বর্তমান। ২০২২।
1) https://m.facebook.com/sanatanscripture/photos/a.265330863572270/549380355167318/?type=3
2) https://www.instagram.com/p/Ci9VXZdKarW/?igshid=YmMyMTA2M2Y=