বিয়ের ফুল (চলচ্চিত্র)
বিয়ের ফুল হল ১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলাদেশী প্রণয়ধর্মী চলচ্চিত্র। প্রেমের লুকোচুরি নিয়ে 'বিয়ের ফুল' ছবির কাহিনী।এটি একটি বিদেশী ছবি দিওয়ানার গল্প অবলম্বনে নির্মিত। স্বনামধন্য চলচ্চিত্র নির্মাতা মতিন রহমান ছবিটি পরিচালনা করেন। ত্রিভুজ প্রেমের সামাজিক গল্প নিয়ে নির্মিত ছবিটিতে অসাধারন কিছু গান যা খুব সহজেই দর্শকদের মন জয় করে নেয়। শাবনূর, রিয়াজ, শাকিল খান ও কবরী অভিনীত এই ছবিটি দক্ষ নির্মাণ শৈলী কারণে ব্যবসায়িক সাফল্য পেতে সক্ষম হয়।[1]
বিয়ের ফুল | |
---|---|
পরিচালক | মতিন রহমান |
রচয়িতা | যোসেফ শতাব্দী |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল |
চিত্রগ্রাহক | মোস্তফা কামাল |
সম্পাদক | আমজাদ হোসেন |
পরিবেশক | আনন্দ মেলা সিনেমা |
মুক্তি | জানুয়ারি, ১৯৯৯ |
দৈর্ঘ্য | ১৫০ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা ভাষা |
কাহিনী সংক্ষেপ
“নদী” (শাবনূর) প্রেমে পড়ে এবং বিয়ে করে একজন বিখ্যাত গায়ক “আকাশ”কে (শাকিল খান)। তারা সদ্যঃ বিবাহিত জীবন সুখেদঃখে একসঙ্গে বসবাস করতে চায। এদিকে আকাশের লোভী চাচা “রায়হান চৌধুরি” (আহমেদ শরিফ) এবং চাচাতো ভাই “দিদার” (মিশা সওদাগর), যে আকাশের সম্পদে তাদের হাত বসানোর জন্য এটে চলেছে একের পর এক ফন্দী। নদীকে প্রথমে ধর্ষণ করতে চেষ্টা করে আকাশের চাচাতো ভাই, কিন্তু ব্যর্থ হয় যখন আকাশ তাকে পরাজিত করে। অতএব, আকাশের লোভী চাচা আকাশকে হত্যা করতে গুন্ডা পাঠায় এবং তাকে পাহাড় থেকে ফেলে দেয়া হয়। সেইসঙ্গে আকাশের চাচাতো ভাইও মারা যায়। নদীর শ্বাশুড়ী (কবুরী) তাকে স্বামী হারার হতাশা থেকে দূরে রাখতে তারা চলে যান এক নতুন শহরে একটি নতুন জীবন শুরু করার জন্য। এই শহরে এসে সব কষ্টদায়ক অভিজ্ঞতা ভুলে থাকার চেষ্টা করে।
একদিন এক যুবক “সাগর” (রিয়াজ), মোটর সাইকেল দিয়ে যেতে নদীর শ্বাশুড়ীর গায়ে আঘাত লাগে তারপর নদী তাকে চড় মারে। নদীকে বিধবার বেসে দেখে হতভম্ব সাগর চেয়ে থাকে নদীর দিকে, এইতো সেই নদী যাকে একবার দেখে মুগ্ধো হয়েছিল সে, নদীর পিছনে ঘুরতে ঘুরতে- সাগর একসময় নদীর প্রেমে পড়ে যায়। নদীর শ্বাশুড়ী সাগরকে নিজ সন্তান মেনে সে নদীকে সাগরের বিয়ে দিতে চান, সাগরের বাবা “কাশেম মল্লিক” (অমল বোস) একটি বিধবা নারী কমিটির সভাপতি। সাগর তার বাবাকে জানায় সে একজন বিধবা নারীকে ভালোবাসে এবং তাকে বিয়ে করতে চায়, কিন্তু তার বাবা অস্বীকার করে। সাগরের বাবা নদীকে মারতে একদল গুন্ডা পাঠালে সাগর গুন্ডাদের হাত থেকে নদীকে বাচায় এবং জানতে পারে এরা তার বাবার ভাড়া করা গুন্ডা। সাগর তার বাবাকে জিজ্ঞাসা করে উত্তর পায়- সে তার পুত্র তাই পুত্রের ভালোর জন্য আরোও অনেক কিছু করতে পারি, সাগরও সাফ সাফ জানিয়ে দেয় সে নদীকেই বিয়ে করবে। সাগর, নদীর শ্বাশুড়ীকে মা ডেকে নদীকে ভিক্ষা চায়, বিয়ে করতে চায়। তার শ্বাশুড়ী খুব অনুভব করে যে তার পুনরায় বিয়ে করা উচিত এবং সাগরকে বিয়ে করতে তাকে বোঝায় ওর শ্বাশুড়ী।
সাগর এবং নদীর বিয়ে হয়। সাগর তাকে বলে যে- সে তাকে ততক্ষন পর্যন্ত স্পর্শ করবে না যতক্ষন না নদী মন থেকে তাকে গ্রহণ করবে। সাগর একটি কাজের ভ্রাম্যমাণ হোটেলে কাজ নেয়, কাজ করতে গিয়ে- চুলা জ্বালানোর সময় হঠাৎ বিস্ফোরিত হয় চুলা এবং একটি দুর্ঘটনা ঘটে সাগর কিছুটা আঘাত পায়। নদী দূর্ঘটনার খবর শুনে তার মনে একটা ধাক্কা লাগে, সে সাগরকে দেখতে হাসপাতাল যায়। নদী সাগরকে সেবা করতে করতে কোন একসময় সাগরের প্রতি দর্বল হয় এবং তার সঙ্গে প্রেমে পড়ে । সাগর আর নদীর মনের মিল হওয়ার পর তারা বেশ সুখেই দিন কাটাচ্ছে, একদিন হঠাৎ একদল গুন্ডার হামলা থেকে সাগর একটি মানুষকে উদ্ধার করে একটি হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা করে, এবং তার সাথে বন্ধুত্ব হয়।
আকাশকে যখন সাগর বলে যে আজ তার বউয়ের জন্মদিন, আকাশ চমকে উঠে কারণ তারও বউয়ের জন্মদিন এই একই দিনে ছিল। সাগর তার বউয়ের জন্মদিনে বন্ধুকে বাড়িতে নিয়ে আসে এবং নদীর সঙ্গ রপিচয় করিয়ে দেয়, স্বামীর বন্ধুকে মনে বড় ধাক্কা খায় নদী মনে প্রশ্ন জাগে যে আকাশকে তার চাচা ও চাচার লোকজন হত্যা করতে স্পষ্টতঃ দেখেছি, কিন্ত বেচে গিয়েছিল। কখন সত্য প্রকাশ করা হয় না, নদী সাগর একসঙ্গে থাকে। আকাশের চাচা যখন জানতে পারে আকাশ বেচে তাদেরকে হত্যা করতে চেষ্টা করে যখন সাগর সময়মতো আবির্ভূত হয়। সাগর আর আকাশ মিলে ওর চাচার গুন্ডাদের প্রতিহত করছিল। কিন্তু, তারা জানেনা যে কোনখানে নদী আটকে রেখেছে। চাচাকে পরাজিত করার পর, তারা নদীকে খুঁজে পায়, নদীর শরীরে একটি টাইম বোমা বেঁধে রেখেছে। সাগর বন্ধ কক্ষটিতে কাচ ভঙ্গে বোমা বিস্ফোরন বন্ধ করতে বোমার সংযোগ তার কেঁটে উদ্ধার করে। চাচা আবির্ভূত হয় এবং সে সাগর বলে হামলা করে এবং নদীকে পুনরায় বিধবা বানাবে বলে। আকাশ সাগরকে বাচাতে গিয়ে নিজে আত্যহুতী দেয় এবং সে চাচাকেও হত্যা করে মা, সাগর আর নদীর ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে আঁকা পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেয়- সাগর এবং নদীকে একত্রে রেখে।
শ্রেষ্ঠাংশে
- রিয়াজ - সাগর
- শাবনূর - নদী
- শাকিল খান - আকাশ
- কবরী - দিলরুবা
- অমল বোস - কাশেম মল্লিক
- প্রবীর মিত্র - আশরাফী
- আহমেদ শরীফ - রায়হান চৌধুরি
- মিশা সওদাগর - দিদার
- ববি -
- লিপি -
- বিউটি -
- মজিদ বঙ্গবাসি -
- কালেখাঁ -
সংগীত
বিয়ের ফুল ছবির সুর ও সংগীত পরিচালনা করেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল।
সাউন্ড ট্র্যাক
ট্র্যাক | গান | কন্ঠশিল্পী | নোট |
---|---|---|---|
১ | তোমায় দেখলে মন্ হয় | অ্যান্ড্রু কিশোর ও কনক চাঁপা | |
২ | নেশা লাগিলোরে বাঁকা দুই নয়নে | আগুন ও কনক চাঁপা | |
৩ | পায়েল আমার রুমঝুম বাজেরে | অ্যান্ড্রু কিশোর ও কনক চাঁপা | |
৪ | ও নদীর পানিরে দে কইয়া দে | আলমগীর হক | |
৫ | দিল দিল দিল তুমি আমার দিল | অ্যান্ড্রু কিশোর ও কনক চাঁপা | |
৬ | ঐ চাঁদ মুখে যেন লাগেনা গ্রহণ | অ্যান্ড্রু কিশোর | |
৭ | পথের মাঝে খুঁজে পাবি আপন ঠিকানা | জেমস | |
৮ | মন না দিলে হয়কি প্রেম | কুমার শানু ও অলকা ইয়াগনিক |
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- "ফিরে দেখা ঈদের ছবি 'বিয়ের ফুল' (১৯৯৯)"। ৯ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১০।
বহিঃসংযোগ
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে বিয়ের ফুল (ইংরেজি)