বিমল ঘোষ

বিমল ঘোষ (১৮ মার্চ, ১৯১০ - ৭ মার্চ ১৯৮২) একজন খ্যাতনামা বাঙালি শিশুসাহিত্যিক।[1][2]

বিমল ঘোষ
জন্ম১৮ মার্চ, ১৯১০
মৃত্যু৭ মার্চ ১৯৮২ (বয়স ৭২)
কলকাতা , ভারত
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তনগভর্নমেন্ট আর্ট কলেজ, কলকাতা
পেশাশিশুসাহিত্যিক
পিতা-মাতাঅনাদিপ্রসন্ন ঘোষ (পিতা) ব্রজবালা দেবী (মাতা)

জন্ম ও শিক্ষা জীবন

বিমল ঘোষের জন্ম পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বেলিয়াতোড়ে। পিতা ছিলেন বেঙ্গল কেমিক্যালের সঙ্গে যুক্ত জাতীয়তাবাদী কেমিস্ট অনাদিপ্রসন্ন ঘোষ। মাতার নাম ব্রজবালা দেবী। কলকাতার নারকেলডাঙা জর্জ হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজে (বর্তমানের গভর্নমেন্ট কলেজ অব আর্ট এন্ড ক্রাফ্ট) ভর্তি হন মুদ্রণ ও বিজ্ঞাপন বিষয়ক ক্ষেত্রে শিক্ষালাভের জন্য।

সাহিত্যকর্ম

বিমল ঘোষ ছাত্রাবস্থাতেই লেখালেখি করতেন। এ সময়েই ছোটদের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখা ছাপা হয়েছে। আর্ট কলেজে শিক্ষালাভের পর কর্মজীবন শুরু করেন 'অ্যাডভান্স' পত্রিকার বিজ্ঞাপন বিভাগে। পরে যোগ দেন আনন্দবাজার পত্রিকায়। তার উদ্যোগে ও ব্যবস্থাপনায় ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে আনন্দবাজার পত্রিকার ছোটদের আসর 'আনন্দমেলা' প্রতিষ্ঠা হয় ও প্রসার ঘটে। এই সময় তিনি 'মৌমাছি' ছদ্মনামে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। তিনি তার ছদ্মনাম আর আনন্দবাজার পত্রিকায় ছোটদের পাতা 'আনন্দমেলা' সম্পর্কে কোন এক সাহিত্যসভায় বলেছেন -

.....আকুল আহ্বানে সাড়া না দিয়ে পারলাম না। আমিই ‘মৌমাছি’ ছদ্মনাম নিয়ে 'আনন্দমেলা'-র পরিচালনা করি। আসল নাম জানাতে চাই না। দু’-চারটি কথা বলে আজই ফিরে যাব। আমি মৌমাছি, আমার কাজই হল দেশের বিভিন্ন পুষ্পোদ্যান থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌচাক অর্থাৎ আনন্দমেলা-য় জমা করা এবং তোমাদের কাছে পরিবেশন করা। তোমাদেরও এই মধু সংগ্রহ করে ছড়িয়ে দিতে হবে শহরের, গ্রামের ও শহরতলির দূরদূরান্তে। এ বিষয়ে আমার বিশেষ পরিকল্পনা 'আনন্দমেলা'-র মারফত তোমাদের জানাব। 'আনন্দমেলা'-র দিকে নজর রেখো। বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ, মহাত্মা গাঁধী, নেতাজি, দেশবন্ধু, বিদ্যাসাগর, রামমোহন রায় প্রমুখ মহাপুরুষেরা যে শিক্ষা সামনে রেখে গিয়েছেন তাকে সার্থক করে তোলাই হবে তোমাদের আদর্শ ও লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে কী ভাবে পৌঁছাবে তাই নিয়ে আমি এবং কয়েক জন সহকারী বন্ধু চিন্তা করছি এবং তোমাদের জানাব আনন্দমেলা-র মাধ্যমে।...”

[3] তিনি বন্ধুদের সাথে শলাপরামর্শ করেই 'আনন্দমেলা' মারফত জানালেন তার পরিকল্পনা অর্থাৎ 'মণিমেলা' নামের সংগঠন গড়ার। আনন্দমেলার মাধ্যমে শিশু ও কিশোরদের জন্য গড়ে ওঠা এই সংগঠন এক সময় বাংলা ও বাংলার বাইরে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করেছিল। বহু স্থানে 'মণিমেলা'র শাখা গড়ে উঠেছিল। ছোটদের জন্য তিনি অজস্র ছড়া কবিতা নাটক গল্প উপন্যাস ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন। তার রচিত শিশু সাহিত্যের সংখ্যা এক-শো চল্লিশ। 'মায়াময়ূর' তার জনপ্রিয় নাটক। 'চেঙাবেঙা' বইটির জন্য তিনি রাষ্ট্রীয় পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে বুখারেস্টে অনুষ্ঠিত বিশ্ব যুব উৎসবে তিনি ভারত সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে যোগ দেন। বিমল ঘোষ আকাশবাণীর সঙ্গে দীর্ঘ দিন যুক্ত ছিলেন।

রচনাবলী

বিমল ঘোষের প্রকাশিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল -

  • ' ইউরোপের অগ্নিকোণে'
  • 'কামাল পরদেশী'
  • 'চেঙাবেঙা'

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. শিশিরকুমার দাশ সংকলিত ও সম্পাদিত, সংসদ বাংলা সাহিত্যসঙ্গী, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৯, পৃষ্ঠা ১৪৮ আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-০০৭-৯ আইএসবিএন বৈধ নয়
  2. সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬, পৃষ্ঠা ৪৮৩, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  3. দিলীপ দাশগুপ্ত। "মৌমাছি উড়ে গেল মৌচাকে'"। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-১২
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.